আমাদের ছাদ বাগানের ডালিম গাছের মিষ্টি অভিজ্ঞতা ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে আমাদের ছাদ বাগানের ডালিম গাছের মিষ্টি অভিজ্ঞতার অনুভূতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

আজকের ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে ছাদের উপরে থাকা একটি ডালিম গাছ। যার ডালে ঝুলছে টুকটুকে সুন্দর কিছু ফল। একসময় এই গাছটিতে ফুটেছিল ছোট ছোট লালচে ফুল, আর আজ সেই ফুলের জায়গায় ঝুলছে বড় বড় ডালিম। রোদে তাদের গায়ে মিশেছে লাল আর হলুদের মায়াবী আভা, যা যেন প্রকৃতির হাসি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে।ছবিগুলোতে ধরা পড়েছে এক অনন্য সৌন্দর্য। সূর্যের আলোয় ফলগুলোর গায়ে লাল আর হলুদের মিশ্র রঙ যেন প্রকৃতির তুলির আঁচড়ে আঁকা এক জীবন্ত ছবি। একসময় যে গাছটিতে ছোট ছোট ফুল ফুটত, আজ সেখানে ঝুলছে পরিপূর্ণ ডালিম। এই পরিবর্তন, এই বিকাশ যেন জীবনেরই এক প্রতিচ্ছবি।

ছাদের ছোট্ট কোণায় যত্নে বড় করা এই গাছটি আমার কাছে শুধু একটি গাছ নয়, এটি আমার পরিশ্রম, ভালোবাসা ও ধৈর্যের প্রতীক। প্রতিদিন সকালে জল দেওয়া, শুকনো পাতা তুলে ফেলা, আর কখনও কখনও গাছের ডালে হাত বুলিয়ে দেওয়া।এসব কাজ যেন এক নীরব সম্পর্ক গড়ে তোলে। গাছটি ধীরে ধীরে বড় হয়েছে, আমিও যেন তার প্রতিটি পরিবর্তনের সঙ্গী ছিলাম।প্রথম যখন ফুল ফোটে, মনে হয়েছিল, এ এক নতুন আনন্দের শুরু। কয়েকদিন পর সেই ফুল ঝরে পড়ে, আর তার জায়গায় দেখা দেয় ছোট্ট সবুজ ফল। প্রথমে তারা ছিল দুর্বল, ভঙ্গুর, কিন্তু প্রতিদিন সূর্যের আলো আর আমার যত্নে তারা বেড়ে ওঠে, রঙ বদলায়, আর একসময় ডালে ঝুলে ওঠে গর্বিত ডালিম হয়ে।

প্রতিদিন সকালে যখন ছাদে যাই, গাছটার দিকে তাকিয়ে মনে হয়, প্রকৃতি সত্যিই এক জাদুকর। এক মুঠো মাটি, একটু জল, আর সামান্য ভালোবাসা দিয়েই সে সৃষ্টি করে এমন সৌন্দর্য যা চোখ জুড়িয়ে দেয়। ডালিমের গায়ে যখন লালচে আভা পড়ে, মনে হয় যেন গাছটা হাসছে, বলছে “দেখো, তোমার যত্ন বৃথা যায়নি।”প্রথমে যখন গাছে ছোট ছোট লালচে ফুল ফুটেছিল। তখনই মনে হয়েছিল , হয়তো এ বছর ফল আসবে। প্রতিদিন সকালে উঠে গাছের দিকে তাকালে মনে হতো, প্রকৃতি যেন নীরবে এক আশ্চর্য সৃষ্টি করছে। কিছুদিন পর ফুল ঝরে গিয়ে ছোট সবুজ ফল দেখা দিল। দেখতে তখনো অতি ছোট, কিন্তু সেই ছোট ফলের ভেতরেই যেন আশার আলো লুকিয়ে ছিল। প্রতিদিন একটু একটু করে সেই ফলগুলো বড় হতে লাগল, আর আমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাদের বেড়ে ওঠা দেখতাম।

সময়ের সাথে সাথে ফলগুলোর রং বদলাতে শুরু করল। প্রথমে সবুজ, তারপর ধীরে ধীরে হালকা হলুদ, আর শেষে লালচে আভা মিশে পুরো ফলের গায়ে এক অপূর্ব সৌন্দর্য এনে দিল। সূর্যের আলোয় ডালিমগুলো যেন ঝলমল করে উঠত, মনে হতো যেন তারা হাসছে। গাছের ডালে ঝুলে থাকা সেই ডালিমগুলো প্রকৃতির এক চমৎকার উপহার।
এই দৃশ্য শুধু একটি ফল জন্মানোর নয়, এটি এক গভীর বাস্তবতার প্রতীক। যেমনভাবে একটি ফুল থেকে ধীরে ধীরে ফল তৈরি হয়, তেমনভাবেই জীবনের প্রতিটি সফলতা আসে ধৈর্য, যত্ন আর সময়ের মাধ্যমে। একদিনে কিছুই ঘটে না, প্রতিটি ফলনের পেছনে থাকে ভালোবাসা, যত্ন, নিয়মিত পরিচর্যা এবং অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার ফলেই মেলে তৃপ্তির হাসি।

যখন নিজের চোখের সামনে একটি ফুল থেকে ফল হয়ে ওঠে। তখন সেটি শুধু একটি প্রাকৃতিক ঘটনা নয়, বরং নিজের শ্রম আর স্নেহের ফল। ছাদের ওপরের এই ছোট্ট ডালিম গাছটি তাই এখন শুধু একটি গাছ নয়।এটি আনন্দের উৎস, প্রেরণার প্রতীক, আর প্রতিদিনের জীবনে একটুখানি প্রকৃতির ছোঁয়া।শেষমেশ যখন গাছে পাকা লালচে ডালিম ঝুলতে দেখি, তখন মনে হয়, এ যেন এক ছোট্ট বিজয়। নিজের হাতে লালিত একটি জীবনের বিকাশ দেখে যেমন আনন্দ হয়, ঠিক তেমনই এই ডালিম গাছও মনে করিয়ে দেয়। যত্ন দিলে, ভালোবাসা দিলে, ধৈর্য ধরলে প্রকৃতি একদিন তার প্রতিদান দিয়েই রাখে।

এই ছোট্ট ডালিম গাছ তাই শুধু ছাদের শোভা নয়, এটি আমার জীবনের এক মিষ্টি অভিজ্ঞতা, যা প্রতিদিন মনে করিয়ে দেয়। প্রকৃতির সৌন্দর্য আর ভালোবাসা সবসময় আমাদের চারপাশেই আছে, কেবল চোখ খুলে দেখতে জানতে হয়।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।