খেজুর রসের হালচাল।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি এর আগেও আমি আপনাদের সাথে ১৬ই ডিসেম্বর জিয়া উদ্যানে যাওয়ার গল্প শেয়ার করেছি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, কোথাও গেলে সব অভিজ্ঞতা এক পোস্টে লেখা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে জিয়া উদ্যানের মতো বড় একটা জায়গা যেখানে হেঁটে, দৌড়ে শেষ করতেই অনেক সময় লাগে।জিয়া উদ্যানের সীমানা সত্যিই অনেক বড়। ভেতরে ঢুকলে বোঝা যায়, গাছপালার মধ্যে দিয়ে আঁকাবাঁকা অসংখ্য রাস্তা। সবগুলো রাস্তাই পাকা করা, হাঁটার জন্য বেশ আরামদায়ক। সকালবেলা আর সন্ধ্যার পরে সেখানে মানুষের ভিড় চোখে পড়ে কেউ হাঁটছে, কেউ দৌড়াচ্ছে, কেউ আবার নিরিবিলি পরিবেশে একটু সময় কাটাতে এসেছে। শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে এমন জায়গা সত্যিই স্বস্তির।
সেদিন হাঁটতে হাঁটতে একটা বিষয় চোখে পড়লো। জিয়া উদ্যানে বেশ কিছু খেজুর গাছ রয়েছে। যদিও আমি নিশ্চিত নই, এসব গাছে আদৌ খেজুর ধরে কিনা। তবে হঠাৎ করে দেখলাম, এক ভদ্রলোক রাস্তার পাশে খেজুর রস বিক্রি করছেন। সামনে কয়েকটা কলস, পাশে একটি বালতি আর গ্লাস সব মিলিয়ে বেশ পরিচিত দৃশ্য। কৌতূহল থেকে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এই রস কোথা থেকে এনেছেন? তিনি খুব স্বাভাবিকভাবেই বললেন, উদ্যানে খেজুর গাছের রস।
এখানেই আমার মনে প্রশ্ন জাগলো। উনার কথা কতটুকু সত্যি? এগুলো কি সত্যিই অরিজিনাল খেজুর রস? নাকি কেমিক্যাল মিশিয়ে বানানো কিছু? আমি নিশ্চিত নই। কারণ আমরা জানি, আসল খেজুর রস খুবই সংবেদনশীল একটা জিনিস। এটি সংগ্রহ করা, সংরক্ষণ করা সবকিছুই বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে ঢাকার মতো জায়গায়।
আমি নিজেকে সচেতন মনে করি। তাই কোনো নিশ্চিত তথ্য ছাড়া আমি সেই রস খাইনি। তবে দেখলাম, দু’একজন মানুষ বেশ আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে। প্রতি গ্লাসের দাম রাখা হয়েছে ৫০ টাকা। খাওয়ার সময় তাদের মুখে কোনো দ্বিধা দেখিনি যেন এটাই স্বাভাবিক।
হাঁটতে হাঁটতে আবার খেয়াল করলাম, উদ্যানে সত্যিই কিছু খেজুর গাছ আছে। কিন্তু শুধু গাছ থাকলেই তো রস পাওয়া যায় না। খেজুর রস সাধারণত নির্দিষ্ট মৌসুমে, বিশেষভাবে পরিচর্যা করা গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ঢাকা বিভাগের ভেতরে আদৌ কি বড় কোনো খেজুর গাছের বাগান আছে?
আমাদের এলাকাতেও আমি প্রায়ই দেখি, রাস্তার পাশে খেজুর রস বিক্রি হচ্ছে। অথচ আশপাশে কোনো খেজুর বাগান চোখে পড়ে না। তখনই মনে হয় এই রস আসলে কোথা থেকে আসে? কতটুকু খাঁটি? কতটুকু নিরাপদ?
খেজুর রস আমাদের ঐতিহ্যের অংশ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। শীত এলেই রস, পিঠা, গুড় এইসবের কথা মনে পড়ে যায়। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় এসে প্রশ্ন জাগে সব খেজুর রসই কি খেজুর রস? নাকি অনেক ক্ষেত্রেই আমরা অজান্তেই কেমিক্যাল মেশানো কিছু পান করছি?
আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। শুধু নিজের ভাবনা আর অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করছি। মানুষ সচেতন না হলে আসলে কিছু বলার থাকে না। যে যেটা খেতে চায়, সে খাচ্ছে। কিন্তু অন্তত আমাদের ভাবা উচিত আমরা কী খাচ্ছি, কোথা থেকে আসছে, আর সেটি আমাদের শরীরের জন্য কতটা নিরাপদ।
জিয়া উদ্যানে সেই বিকেলটা ভালোই কেটেছিল। প্রকৃতি, হাঁটা, মানুষের চলাচল সব মিলিয়ে সুন্দর সময়। কিন্তু সেই খেজুর রসের ঘটনা আমাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। হয়তো সচেতন থাকাটাই এখন সবচেয়ে জরুরি।
আপনাদের কী মনে হয়? আপনারা কি রাস্তার পাশের খেজুর রস খান? নাকি এড়িয়ে চলেন? মন্তব্যে জানাতে পারেন আপনার অভিজ্ঞতা।
Photographer- @joniprins
Device- Realme C53
Location-Dhaka
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server





















