শীতের বিকেল মানেই আমাদের মাঠের জমজমাট সময় কাটানোর মূহুর্তে ।।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে শীতের বিকেল মানেই আমাদের মাঠের জমজমাট সময় কাটানো অনুভুতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

শীতের সময় বিকেলের একটা আলাদা নরম সৌন্দর্য আছে। সারা দিন ব্যস্ততার পর যখন সূর্যটা একটু হেলে পড়ে ।তখন বাতাসটা ঠান্ডা হলেও রোদের গরম টুকু খুব আরাম দেয়। শীতের এই সময়ের বিকেলটা যেন আলাদা এক মায়া নিয়ে আসে। রোদটা কোমল, হাওয়াটা নরম, আর গ্রামের প্রতিটি মানুষ যেন একটু করে বাইরে বেরিয়ে পড়ে এই নরম প্রকৃতি ছুঁয়ে দেখার জন্য। আমাদের বাড়ির পাশের এই বড় খেলার মাঠটিই যেন সে বিকেলের সবচেয়ে জমজমাট জায়গা হয়ে ওঠে। দূর থেকে দেখলেই বোঝা যায়। মাঠ শুধু খেলার জায়গা নয়।এটা হচ্ছে মানুষের মিলনমেলা। আরাম করার জায়গা, আনন্দ ভাগাভাগি করার একটি স্বতঃস্ফূর্ত ঠিকানা। সূর্যটা হেলে পড়ছে, আকাশে কমলা ছোঁয়া।আর তার সামনে ছড়িয়ে আছে এক টুকরো গ্রামের সরল জীবন

মাঠের একদিকে দেখা যায় ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যস্ত কিছু তরুণ। দিনের কাজ শেষ করে, ক্লাস করে, কিংবা শুধু বিকেলটা দারুণভাবে কাটাতে তারা বল বেট নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে। প্রত্যেকের চোখে-মুখে এক ধরনের উচ্ছ্বাস। ঠান্ডা হাওয়ার মধ্যে দৌড়ানোর মজা যেন দ্বিগুণ। গোলপোস্টের দিকে দৌড়ে যাওয়া, পায়ের নিচে বল টেনে নেওয়া, সবার সামনে সেরা খেলাটা দেখানোর চেষ্টায় একটা প্রতিযোগিতা মূলক উত্তেজনাও দেখা যায়। কিন্তু প্রতিযোগিতার ভেতরেও আছে আনন্দ, বন্ধুত্ব আর শরীরচর্চার তৃপ্তি।

মাঠের আরেক পাশে খেলা চলছে ক্রিকেটের। ছোট-ছোট ছেলেরা ব্যাট-বল নিয়ে আলাদা একটা দুনিয়া বানিয়ে ফেলেছে। কেউ বল করছে, কেউ ব্যাটিং করছে, কেউ দূর থেকে চেঁচিয়ে ফিল্ডসেট দিচ্ছে।গ্রামের বিকেলে এই দৃশ্যগুলো খুবই পরিচিত, তবু কখনোই পুরোনো হয় না। ধুলোমাখা মাঠ, কাঠের ব্যাট, প্লাস্টিকের বল। কিন্তু তার মধ্যেও তাদের খেলাটা একদম সিরিয়াস। হয়তো তাদের স্বপ্ন আছে একদিন বড় মাঠে খেলার, আবার হয়তো শুধু খেলাটার মধ্যেই তারা মুক্তি খুঁজে পায়।আরও একটু দূরে চোখ যেতেই দেখা যায় ব্যাডমিন্টনের র‍্যাকেট হাতে কিশোর-কিশোরীরা খেলছে। হালকা বাতাস, শীতের নরম আলো।ব্যাডমিন্টনের মতো খেলাকে আরও উপভোগ্য করে তোলে।মাঝেমধ্যে হাওয়ায় উড়ে গেলেও খেলোয়াড়দের উৎসাহে কোনো ঘাটতি নেই। মেয়েরা, ছেলেরা সবাই মিলে খেলছে, হাসছে, মজা করছে। এ যেন শীতের বিকেলের এক সাংস্কৃতিক ছবি, যেখানে খেলাধুলা শুধু আনন্দ নয়, মানুষের মানসিক প্রশান্তিরও অংশ হয়ে ওঠে।

মাঠের কোণে পরিবার-পরিজন নিয়ে কিছু মানুষ রোদ পোহাচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্করা শীতের রোদকে যেন আলাদা করে উপভোগ করেন। তাদের চোখে-মুখে এক ধরনের শান্তি।হালকা গরম রোদ শরীরে লেগে থাকে।তার মধ্যেই তারা আলাপ করছে, দিনের গল্প শেয়ার করছে। হয়তো পুরোনো দিনের স্মৃতিও মনে পড়ছে। শিশুরা এদিক-সেদিক দৌড়াচ্ছে, খেলছে, লাফাচ্ছে।তাদের হাসির শব্দে পুরো মাঠটাই জীবন্ত হয়ে ওঠে। মা-বোনেরা কেউ বসে গল্প করছে, কেউ আবার হাঁটাহাঁটি করছে। মাঠ যেন একসাথে সব বয়সের মানুষের কাছে আরামের জায়গা হয়ে উঠেছে।

সূর্য যখন ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে, আকাশের রঙ বদলে হয়ে যাচ্ছে সোনালি কমলা.মাঠের দৃশ্যটাও যেন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। দূরের গাছের ওপরে সূর্যের লাল আভা পড়ছে।আর তার নিচে চলমান মানুষের নানান কর্মকাণ্ড যেন প্রকৃতির সঙ্গে একাকার হয়ে যায়। শীতের বিকেল এমনিতেই সুন্দর, কিন্তু গ্রাম্য জীবনের এই সহজ-সরল মুহূর্তগুলো তাকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তোলে।আমার কাছে এই মাঠটা শুধু খেলার মাঠ না।এটা আমাদের এলাকার একটা মিলনমেলা। যেখানে দিনের ক্লান্তি দূর হয়, মানুষ মানুষকে দেখে, কথা বলে, হাসে। গ্রামের জীবনের এই ছোট ছোট আনন্দই আসলে সবচেয়ে বড় সুখ।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।