বাংলাদেশে নিয়ম কানুন না মানার প্রবণতা খুবই উদ্বেগজনক।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন
মানুষ সমাজে বাস করে নিয়ম কানুনের মধ্য দিয়ে। নিয়ম-কানুন না থাকলে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। আর সেই বিশৃঙ্খলা শেষ পর্যন্ত মানুষের জীবনযাপন, নিরাপত্তা এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশের বড় একটি অংশ সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ সবাই নিয়ম মানতে অনীহা প্রকাশ করে। যেন নিয়ম মানা কোনও প্রয়োজনীয় কাজ নয়। নিজের স্বার্থ, তাড়াহুড়া, সুবিধা এই তিনটি বিষয় মানুষের কাছে নিয়মের চেয়েও বড় হয়ে ওঠেছে।
আমাদের দেশে অনেকেই মনে করেন ব্যক্তিগত স্বার্থটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের স্বার্থ, সামগ্রিক নিরাপত্তা, ভবিষ্যত প্রজন্ম এসব যেন কারও চিন্তার মধ্যে তেমনভাবে আসে না। অথচ বাস্তবে দেশের স্বার্থই আমাদের স্বার্থের চেয়ে বড় হওয়া উচিত। দেশ এগিয়ে গেলে দেশের জনগন এগিয়ে যাবে কিন্তু এই সত্যটা যেন আমাদের সমাজের বড় একটি অংশ বুঝতে চায় না।
আজকের দিনের একটি ছোট ঘটনা দিয়ে পুরো সমস্যার চিত্রটি বুঝানোর চেষ্টা করছি। আজকে সন্ধায় কিছু জিনিস কেনাকাটা করে ফেরার পথে রিকশায় উঠেছিলাম। কিন্তু রিকশাওয়ালার আচরণ দেখে মাথা ঘুরে গেল, ট্রাফিক আইন মানার সামান্যও চেষ্টা নেই। তিনি উল্টো পথে রিকশা চালাচ্ছেন শুধু একটু আগে পৌঁছানোর জন্য। এক মিনিট বাঁচাতে গিয়ে তিনি নিজের, যাত্রীর এবং রাস্তার অন্যান্য মানুষের জীবনের ঝুঁকি তৈরি করছেন। আমি রিকশাওলাকে বললাম- মামা আপনি নিয়ম ভঙ্গ করছেন। তিনি বললেন পাশ কাটিয়ে না গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে হবে। তাই উল্টো পথেই চলছে।
মজার ব্যাপার হল, বিদেশে এ ধরনের আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। সেখানে ড্রাইভাররা জানেন যে আইন মানা শুধু বাধ্যবাধকতা নয়, এটা নিরাপত্তা, শৃঙ্খলার অংশ। আমাদের দেশের মানুষ বিদেশ গেলে ঠিকই নিয়ম কানুন মানে। কিন্তু দেশে থাকলেই নিয়ম কানুন মানতে চাই না।
এটাতো গেলো ট্রাফিক বিষয়ে। গতকাল সন্ধার সময় ফল কিনতে গিয়েও জামেলায় পড়লাম দোকানদারকে বললাম আপনি ব্যাগ দেন আমি বেছে বেছে আপেল নিবো। কিন্তু দোকানি আমাকে বলে বেছে বেছে ফল বিক্রি করবে না। তারা তাদের মন আপেল নিবে। এভাবে বাসায় ফল নিয়ে দেখি দুই তিনটি আপেল নস্ট থাকে। কি একটা অবস্থা চিন্তা করেন।
অনেক সময় দেখি ব্যবসায়রা রিজেক্ট বা নষ্ট পণ্যকে ভালো পণ্য হিসেবে চালিয়ে দিতে চান। তাদের কাছে ক্রেতা ঠকানো যেন একধরনের অভ্যাস হয়ে গেছে ফল বিক্রেতারা নষ্ট ফল সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেন যাতে ক্রেতা বুঝতে না পারেন।
আরো ভয়ংকর বিষয় হলো বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অত্যন্ত ক্ষতিকর রাসায়নিক বা কার্বাইড ব্যবহার করে ফল পাকান, সবজি টাটকা রাখতে ব্যবহার করেন। তারা জানেন এই বিষাক্ত উপাদানগুলো মানুষের পাকস্থলী, লিভার, কিডনি সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু মুনাফা তাদের বিবেককে চাপা মেরে রেখেছে। যেন মানুষের জীবনের মূল্য তাদের কাছে কিছুই না।
নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে, অবহেলা করে, নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কোনও জাতি উন্নত হতে পারে না। উন্নত দেশগুলো আজ এগিয়ে আছে, কারণ তারা নিয়মকে গুরুত্ব দিয়েছে। ছোট থেকে বড় সবাই আইন মেনে চলাকে জীবনের অংশ করে নিয়েছে।
যায়হোক আমরা যদি সত্যিই দেশকে ভালোবাসি, নিজেদের প্রজন্মকে নিরাপদ ভবিষ্যত দিতে চাই, তাহলে নিয়ম না মানার এই অভ্যাস বদলাতে হবে। পরিবর্তন শুরু হয় ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে আজ আমি, আপনি যদি নিয়ম মানা শুরু করি, তাহলে একদিন পুরো সমাজ বদলে যাবে। উন্নত দেশগুলোও এভাবেই উন্নত হয়েছে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















