ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ-নিজেই নিজের আপন বাকি সবাই স্বার্থপর।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

শুভ সন্ধ্যা,

প্রিয় ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন? আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। বন্ধুরা আজকে আবারো হাজির হয়েছি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। যদিও আজকে শরীরটা তেমন ভালো না কিন্তু কি আর করার কমিউনিটিতে ব্লগ শেয়ার করতে না পারলে একদম ভালো লাগে না। তাই আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেছি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের ব্লগ পড়ে আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি ভিন্ন ধারাবাহিকতায় আপনাদের সাথে মনের ভাবগুলো প্রকাশ করে নিতে। সেগুলো কোন রেসিপি হোক কিংবা ফটোগ্রাফি হোক। অথবা কোন লেখালেখির মাধ্যমে চেষ্টা করি সবার কাছে নিজের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করে নিতে।

vecteezy_a-dad-receiving-a-handmade-card-from-his-child_30622658.jpg
Image Source Location

আজকে বন্ধুরা আমি যে বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করব তা অবশ্যই শিরোনাম দেখে বুঝতে পারছেন। বন্ধুরা আমরা একটা বিষয় খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি এই পৃথিবীতে আসলে আপনজন বলতে কেউ নাই। আমরা যাদেরকে আপন মনে করি একদিন তারাই আমাদেরকে আঘাত করে। আমাদের সমাজে এমন কিছু কিছু ঘটনা দেখা যায় যে পরিবারের যে ছেলে মেয়েরা ইনকাম করে বেশি সেই পরিবারের মা বাবারা তাদেরকে বেশি পছন্দ করে। এমন ধরনের স্বার্থপর মা-বাবাও আমাদের সমাজে রয়েছে। যদিও বলতে বেশ বেমানান কিন্তু বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে যদি আমরা লক্ষ্য করি আসলেই এটা প্রমাণিত হয়।

আমরা যারা সংসারের জন্য প্রতিনিয়ত খাটনি করি সংসারের কাজকর্মগুলো করে থাকি দেখবেন দিন শেষে যারা বেশি পরিশ্রম করে তাদেরকে কথা বেশি শুনতে হয়। যারা সংসারের মধ্যে বেশি তেল ভাজি করতে জানে অভিনয় করতে পারে তারাই সবচাইতে বেশি ভালো। বিশেষ করে দেখবেন যারা বেশি পরিশ্রম করে তারা বেশি শত্রু হয়ে যায়। মানুষ আসলে সবার ক্ষেত্রে কেমন জানি না কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের জন্য নিজের শ্রম কিংবা অর্থ ব্যয় করতে পারবেন ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষের কাছে ভালো থাকবেন। যতক্ষণ দিতে পারবেন ততক্ষণ আপনি ভালো। যখন আপনি দিতে পারবেন না তখনই দেখবেন যে আপনি সবার শত্রু।

স্বার্থপর মানুষগুলো এমনই। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার কাছ থেকে নিতে পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার কাছে ভালো থাকবে এবং আপনার তোষামোদ করবে। তবে বন্ধুরা একটা কথা আমরা সবাই জানি যে হাতের পাঁচ আঙ্গুল কখনো সমান নয়। তেমনি আমাদের সমাজেও সব মানুষ একই রেখার মধ্যে পড়ে না। কিছু কিছু ভালো মানুষ আছে বলে সমাজে এখনো বেঁচে আছে। কিছু কিছু ভালো মানুষ আছে বলেই এখনো সুন্দর পরিবার ঠিকে আছে। কিছু কিছু ভালো মানুষ আছে বলেই এখনো সুন্দর সুন্দর সম্পর্ক রয়ে গেছে।

যদি আমরা ভাই বোনের সম্পর্কের কথা বলি কিংবা মা সন্তানের কথা বলি অথবা স্বামী-স্ত্রীর কথা বলি। এমন অনেক সম্পর্ক আছে যেগুলোতে ভাই বোনের মধ্যে আজীবন অনেক সুন্দর সম্পর্ক রয়ে যায়। আবার যদি বলি মা সন্তানের মধ্যেও এমন সুন্দর সম্পর্ক বিরাজ করে। তাছাড়া ও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অনেক সুন্দর সম্পর্ক আছে। কিন্তু এমন কিছু পরিবার আছেন যে পরিবারের মধ্যে ভাই কিংবা বোন বেশি ইনকাম করতে পারে। যে বেশি টাকা পয়সা রোজগার করে তাদেরকে তারা বেশি আদর-যত্ন করে থাকেন। আবার এমন মা-বাবা রয়েছেন এক সন্তান বেশি ইনকাম করে কিন্তু আরেক সন্তান কম ইনকাম করে কিন্তু সেই ক্ষেত্রে দেখা যায় যে মা-বাবারা খুব সুন্দর একটি সমাধান দিয়ে থাকেন।

যে সন্তানেরা ইনকাম করে সেই বয়সে সবার বড় তার দায়িত্ব বেশি। যে সন্তান ছোট সে সন্তান বড় হলে ইনকাম করবে তখন তার দায়িত্ব ও অনেক বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে মনটা অনেক বেশি খুশি হয়ে যায়। তখন পরবর্তীতে দেখা যাবে যে পারিবারিক শিক্ষা অনুযায়ী সেই ছোট সন্তানের অনেক দায়িত্ব বেড়ে যায়। যেহেতু সেই মা-বাবাদের ইনকামের উপরে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করেছে। যখন ইনকাম দেখে দুই সন্তানের মধ্যে পার্থক্য করবেন দেখা যায় তখন মনে অনেক কষ্ট রয়ে যায়। পরবর্তীতে যখন এসব অবহেলিত সন্তানরা টাকা ইনকাম করে তখন তাদের মধ্যে সেই আগের কথাগুলো অনেক বেশি মনে পড়ে যায়। এমন অনেক স্বামী রয়েছেন তাদের স্ত্রীর ইনকামের উপর অনেক বেশি খুশি হয়। যেসব স্ত্রীরা ইনকাম করে সংসারের দায়ভার বহন করে থাকেন তাদেরকে সবাই একদম মাথায় তুলে নাচানাচি করেন।

আবার এমনও পরিবার রয়েছেন স্বামী অনেক ইনকাম করে কিন্তু স্ত্রীর ইনকাম করে না। তারপরও সেই পরিবারের স্ত্রীকে অনেক সম্মান করে। এক্ষেত্রে আসলে স্বার্থের কিছু থাকে না। স্বামী চাই স্ত্রী ইনকাম করে তার সংসারের হাল ধরুক। আমি নিজেও অনেক কিছুর সাথে বাস্তব প্রমাণিত। এমন কিছু আত্মীয়-স্বজন আছে যারা রক্তের সম্পর্কের ভিতর দেখবেন তাদের সাথে টাকার লেনদেন কিংবা সহযোগিতা করবেন ততক্ষণ ভালো থাকতে পারবেন। যখন সেই সহযোগিতার হাত কমিয়ে দেবেন তখন তারা আপনার শত্রু হয়ে যাবে যেটা আমার ক্ষেত্রে বাস্তবে হয়েছে। মানুষের জীবনে বয়স যত বাড়ে ততই বাস্তব অভিজ্ঞতা গুলো বেড়ে যায়।

কারণ এই পৃথিবীতে হরেক রকমের মানুষ আছে। এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষের মন মানসিকতা ভিন্ন ভিন্ন। কোন মানুষের মনে কি থাকে সেটা আসলে বলা খুবই মুশকিল। তাই আমরা চেষ্টা করি যাতে কারো সাথে কোন অযথা ঝামেলায় জড়িয়ে না যায়। কিন্তু কেন জানি না আমরা মনের অজান্তেই অনেক ধরনের সমস্যায় অনেক ধরনের ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ি। তবে একটা কথা বলব নিজেরা যতক্ষণ সাবধানে থাকতে পারি ততক্ষণ আমরা নিজেদেরকে ভালো রাখতে পারি। আমরা যখন বেখেয়ালি হয়ে যায় অসাবধান হয়ে যাই তখন যত ধরনের বিপদ আমাদের কাছে চলে আসে।

এটাও বোঝা যায় যে যখন টাকা পয়সা কমে যায় কিংবা শরীরে রোগে আর ধরে যায় তখন প্রকৃত মানুষ চেনা যায়। এক অসুস্থ অবস্থায় আপন মানুষগুলোকে চেনা যায়। আরেক দারিদ্র্যের সময় চেনা যায় আপন কে পর কে। আমি মনে করি এই পৃথিবীতে কেউ আপন নয়। শুধুই নিজের প্রতি নিজের ভালোবাসা থাকুক। নিজের প্রতি নিজের যত্ন রাখুক। নিজের প্রতি নিজের খেয়াল থাকুক। আমাদের একমাত্র সহায় হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা। বাকি সবগুলো হচ্ছে একে অপরের প্রতি স্বার্থপরতা।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

লেখার উৎসনিজের অনুভূতি থেকে
ইমেজ সোর্সWiko-T3
অবস্থানকক্সবাজার, বাংলাদেশ
ক্যাটাগরিক্রিয়েটিভ রাইটিং


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀


আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

Banner_PUSS1.png

Sort:  
 last year 

পৃথিবীতে হরেক রকমের মানুষ, তাদের হরেক রকমের মন-মানসিকতা! তবে কিছু কিছু বিষয় কিন্তু সার্বজনীন সত্য! যেমনটা আপনি বাবা -মায়ের বেলাতে উদাহরণ দিয়ে বলেছেন। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে সন্তান কম উপার্জন করে, তার প্রতি বাবা/মা বেশি দুর্বলতা দেখিয়েও, যে বেশি উপার্জন করে, তার উপর চাপ দেয়। তবে, পৃথিবীতে খুব কম সম্পর্কই প্রকৃতভাবে স্বার্থহীন, যেটা প্রায় রেয়ার ই বলা চলে। এছাড়া সবাই ই যার যার অবস্থান থেকে কম-বেশি স্বার্থপর।

 last year 

আপনার গঠনমূলক মতামত পড়ে অনেক ভালো লেগেছে আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

যখন একজন মানুষ অসুস্থ হয় অথবা বিপদে পড়ে তখনই বুঝতে পারে দুনিয়াটা কত কঠিন এবং আপনজন কয়জন। যাইহোক আপনার লেখাগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। প্রথমত বড় সন্তানের দায়িত্ব বাড়ে এরপর দেখা যায় এমন একটা পর্যায়ে এসে ছোটর উপর দায়িত্ব বোঝা হয়ে যায়।

 last year 

আমরা যখন অসুস্থ হয়ে পড়ি বিপদে পড়ি তখন আসল মানুষগুলো চিনতে পারি।

 last year 

আপনি ঠিক বলেছেন পৃথিবীতে কেউ কারো আপন নয়।আসলে মানুষ অনেক স্বার্থপর। যত আপনজন হোক না কেন স্বার্থের জন্য মানুষ সব করতে পারে।আর কিছু মানুষ আছে টাকা যতক্ষণ আছে ততোক্ষণ পাশে থাকে। সত্যি বিপদে না পড়লে কখনো আসল মানুষ চেনা যায় না। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।

 last year 

দিন শেষে আমি এটাই বুঝতে পারছি আপু আসলে কেউ আপন নয় নিজে হচ্ছে নিজের আপন।

 last year 

তেলবাজি যারা করতে পারে তারা সবসময়ই ভালো থাকে আপু। এটা তো পৃথিবীর নিয়ম। যতক্ষণ আপনি কারো উপকার করতে পারবেন আপনি ভালো। আর যদি না পারেন তখন আর দেখতে হবে না হা হা। চমৎকার লিখেছেন। কথাগুলো একেবারে বাস্তব সত্য ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথ‍ে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

 last year 

আপনার লেখা মতামত আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। সঠিক কথাগুলো বলছেন আপনি।

 last year 

আসলে এটা একেবারে ঠিক, এই পৃথিবীতে আমাদের আপন কেউই না। আমরা নিজেরাই নিজেদের আপন। আর সব থেকে বেশি আপন হচ্ছে আমাদের সৃষ্টিকর্তা অন্য সবাই স্বার্থপর। সবাই আমাদের আপন সেজে চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু তারা নিজেদের স্বার্থের জন্যই আসে। এই পোস্ট আপনি বাস্তবিক একটা টপিক নিয়ে লিখেছেন দেখে ভালো লাগলো।

 last year 

আমরা যদি কে আপন কে পর সেগুলো ভুলে গিয়ে একমাত্র সৃষ্টিকর্তার উপরে ভরসা করি তাহলেই যথেষ্ট।

 last year 

আপনি খুব সঠিক কথা বলেছেন আপু। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার মনে হয় নিজেও নিজের সাথে বেইমানি করা হয়। আপনি একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেন ক্ষেত্রবিশেষে নিজেও নিজের আপন হতে পারে না।

 last year 

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সময় দিয়ে লেখাগুলো পড়ার জন্য।

 last year 

আপনার গল্পের শিরোনামের সাথে আমি একদম একমত। আর আপনি যে বলেছেন অযথা কারো সাথে ঝামেলায় না জড়িয়ে নিজেকে আলাদা রাখায় সবচেয়ে ভালো। এটি আসলে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে।

 last year 

একদম আপু অন্যদের থেকে যত আলাদা ভাবে থাকা যায় তত নিরাপত্তা মনে করি আমি নিজেকে।

 last year 

খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আসলে মানুষ শুধু মাত্র স্বার্থ নিয়েই পড়ে থাকে এবং তারা সবসময় স্বার্থ রক্ষার জন্য যেকোনো কিছুই করতে পারে৷এর ফলে যদি তাদের আপন মানুষদেরকে ছেড়ে আসতে হয় তাহলেও তারা কোনভাবে কোন ধরনের দ্বিধাবোধ করো না৷ দিনশেষে আমরা সবাই আমাদের নিজেদেরই প্রিয় মানুষ৷ ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷

 last year 

এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি সম্পর্কের মাঝে কিছু না কিছু স্বার্থ লুকিয়ে থাকে। এমন কিছু লোভী মানুষ আছেন যারা স্বার্থ শেষ হয়ে গেলে সেই সম্পর্ক আর রাখতে চায় না। সেটা যেকোনো ধরনের সম্পর্ক হোক।