আমার বোনের সার্জারির তারিখ কনর্ফাম হলো।।

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। গত এক সাপ্তাহ ধরে অনেক চাপের মধ্যে আছি। এক তো রমজান মাস, আবার অফিস করতে হয় পাঁচটা পর্যন্ত। তার উপর আবার ছোট বোনটা অসুস্থ। তাকে নিয়ে প্রতিদিন দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। গত শনিবারে শান্তিনগর ম্যালিয়াস হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। সেখানে অনেক গুলো টেস্ট দিয়েছিল। এর মধ্যে ক্যালসিয়াম, FOL টেস্টটি ম্যালিয়াস হাসপাতালে করিয়েছিলাম। বাকি টেস্ট গুলোর জন্য পপুলার হাসপাতালে গিয়েছিলাম।

রবিবার দুপুর তিনটার সময় বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। বাসা থেকে বের হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত খুব সুন্দর ভাবেই পৌঁছে গেছিলাম। তবে গুলিস্তান থেকে শান্তি নগর যাওয়ার পথে কঠিন জ্যামের মধ্যে পতিত হলাম। সবমিলিয়ে প্রায় ৪০/৪৫ মিনিট জ্যামের মধ্যে আটকে ছিলাম।

যায়হোক জ্যাম অতিক্রম করে সাড়ে চারটার দিকে শান্তিনগর পপুলার হাসপাতালে গিয়ে পৌছালাম। সেখানে প্রথমে কাউন্টারে গিয়ে যোগাযোগ করলাম। সেখানে দুটি এক্সে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও FNAC টেস্টের বিল আসলো ৫৩০০ টাকা। ডাক্তার বা হাসপাতাল কোথাও কোন ডিসকাউন্ট দেয়নি। টাকা পেইড করে টোকেন নিয়ে চেয়ারে গিয়ে বসলাম। ইফতারের আগে দুটি এক্সে করে ফেললো। তেমন কোন সময় লাগেনি। লম্বা সিরিয়ালও লাগে নাই। তারপর বাকি দুটি টেস্ট ইফতারের পরে করার কথা বললো। সুতরাং বসে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না।

ঐদিন আবার ইন্ডিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন ট্রফির ফাইনাল খেলা চলতেছিল। সেখানে বসে বসে ডিসপ্লেতে খেলা দেখে সময় অতিক্রম করলাম। সেখানে বসে ইফতার করলাম। ইফতারের পরে আলতাসনোগ্রাফি টা করা হলো। তারপর FNAC ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। তিনি আসলেন সাড়ে সাতটা বাজে। সেখানেও তেমন কোন সিরিয়াল ছিল না, মাত্র পাঁচজন রোগী ছিল। আধা ঘন্টার মধ্যে FNAC এর নমুনা সংগ্রহ করে নিলো। সেখানে বলে দিল তিনদিন পরে রিপোর্ট রেডি হলে মোবাইলে মেসেজ যাবে। আমরা মঙ্গলবারে মোবাইল মেসেজ পেলাম সবগুলো রিপোর্ট রেডি হয়ে গেছে।

মঙ্গলবারে ইফতারের পরে রিপোর্ট আনতে গেলাম। পপুলার থেকে রিপোর্ট নিয়ে আবার ম্যালিয়াস হসপিটালে গেলাম। সেখানে প্রথম দিনের ডা.সাব্বির আহমেদ স্যারকে পেলাম না। তার পরিবর্তে ডা. মামুনুর রশিদ স্যারকে দেখালাম। তিনি সব রিপোর্ট দেখে মেইন সার্জন ডা. বাসুদেব কুমার সাহা স্যারের কাছে পাঠালেন। ডা. বাসুদেব স্যার সব কিছু দেখে বললেন খুব তারাতাড়ি সার্জারি করে নিলে ভালো হয়। আপনারা রাজি থাকলে বুধবারে সার্জারি করে ফেলবো। আমরা বললাম আচ্ছা ঠিক আছে,তবে টাকা পয়সা কেমন লাগবে...? তখন তিনি ম্যানাজার স্যারের কাছে পাঠালেন।

ম্যানাজার স্যার তাদের ডক্টর ও হাসপাতাল প্লাস তাদের স্টাফদের প্রশংসা করে ২ লাখ বিশ হাজার টাকা চাইলো। অথচ আমি অনলাইনে ঘাটাঘাটি করে করে দেখলাম থাইরয়েডের সার্জারি করতে পঞ্চাশ থেকে দেড়লাখ টাকার মত খরচ হয়। তখন তারা আমাদেরকে মাত্র দশ হাজার টাকা ডিসকাউন্ট দিতে রাজি হয়। তখন আমি তাদরকে বললাম এই মুহূর্তে দেড়লাখ টাকা ম্যানেজ করা কঠিন। বাসায় গিয়ে সবার সাথে কথা বলে বুধবারে জানাবো। সেখান থেকে রাত দুটোর সময় বের হলাম।

তারপর গতকাল আরো কয়েক জাগায় যাচাই করলাম, দুই জাগায় ষাট ও এক জাগায় দুই লাখের কথা বললো। তখন চিন্তা করলাম কি করা যায়। তখন এক মামা ডা. আবু ইউসুফ ফকির স্যারের কথা বললো। উনার নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলাম। তিনি অনেক জায়গায় বসেন, ধানমন্ডি, মালিবাগ, মগবাজার সহ অনেক হাসপাতালে। ভাগ্য ভালো গতকাল ফোন করে শান্তিনগর পপুলারে পেলাম।

গতকাল আমার অফিস থাকার কারণে আমার বোন ও তার হাসবেন্ডকে পাঠালাম। তারা গিয়ে ডা. আবু ইউসুফ ফকির স্যারকে সব রিপোর্ট দেখালো। তিনি সব কিছু দেখে সত্তর হাজার টাকার কথা বললেন। যদি আমরা রাজি থাকি তাহলে বুধবার রাতেই সার্জারি হয়ে যেতো। কিন্তু আমি এত তাড়াহুড়ো করতে চাইনি। তিনি আবার বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুইদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল হাসপাতালে বসে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী শনিবারে ইস্কাটনে তাকওয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালে সার্জারি হবে, ইনশাআল্লাহ। আপনাদের সবার কাছে আমার বোনের জন্য দোয়া প্রার্থনা করি।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।