"অভাব কাকে বলে?" শিক্ষক প্রশ্ন করলেন।
"অভাব কাকে বলে?" শিক্ষক প্রশ্ন করলেন।
"অর্থনীতিতে বস্তুগত বা অবস্তুগত কোনো দ্রব্য পাওয়ার আকাঙ্খাকে অভাব বলে।"
ছাত্রদের মধ্যে একজন উত্তর দিল।
– এটা তো বইয়ের ভাষা, সাধারণভাবে অভাব কাকে বলে? অর্থাৎ অভাব বলতে তুমি ঠিক কি বোঝো?
ছাত্রটি এবার চিন্তায় পড়ে যায়। একটু ভেবে সে বলতে শুরু করে, আমি স্কুলে আসার সময় মা সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজে আমাকে ২০ টাকা বের করে দেন, আর আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আধাঘণ্টা এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে বাড়িতে ফিরে টাকাটা মায়ের হাতে দিয়ে বলি 'মা, আজ স্কুলে ক্লাস হবে না', মা তখন বলেন, 'আগে থেকে খবর নিবি না'! মায়ের সাথে আমার এই লুকোচুরিটাই আমার কাছে অভাব।
বাবা যখন রাত করে বাড়ি ফেরেন, মা তখন জিজ্ঞাসা করেন, 'এত রাত হলো কেন', বাবা দীর্ঘশ্বাস চেপে বলেন, 'ওভারটাইম ছিল'। বাবার এই হাড়ভাঙা খাটুনিটাই হচ্ছে অভাব।
মাকে যখন দেখি ছেঁড়া শাড়ি সেলাই দিতে দিতে বলে "শাড়িটা অনেক ভালো, আরো কিছুদিন পরা যাবে", সেটাই আমার কাছে অভাব।
মাস শেষে টিউশনির পুরো টাকাটা যখন মায়ের হাতে দিয়ে বলি 'মা, এটা তুমি সংসারের কাজে খরচ করো', মা তখন একটা স্বস্তির হাসি হাসেন। এই হাসিটাই হচ্ছে আমার কাছে অভাব।
বন্ধুদের দামী স্মার্টফোনের ভিড়ে নিজের নর্মাল ফোনটা লজ্জায় লুকিয়ে রাখি, এই লজ্জাটাই আমার কাছে অভাব।
গরীব বলে আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব যখন আস্তে আস্তে আমাদের থেকে দূরে সরে যায় — ওই দূরে সরে যাওয়াটাই আমার কাছে অভাব।
বড় বোনের বিয়ের বয়স হয়ে যাবার পরও বাবা বিয়ে দিয়ে দিতে পারছেন না যৌতুকের টাকা জোগাড় হচ্ছে না বলে — আমার কাছে এটাই অভাব।
পুরো ক্লাসে পিনপতন নীরবতা।
