বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে যাওয়ার গল্প

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামুআলাইকুম/আদাব

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @alif111, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।

bonding-1868513_1280.jpg

source

গ্রীষ্মের এক সকাল। সূর্যটা তখনো পুরোপুরি উঠেনি, হালকা ঠান্ডা বাতাস বইছে। আমি আর আমার বন্ধু রিয়াদ ঠিক করলাম আজ গ্রামের পাশের বড় পুকুরে মাছ ধরতে যাব। হাতে বড়শি, টোপ হিসেবে কিছু কেঁচো, আর এক প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে আমরা রওনা দিলাম। পুকুরের চারপাশে ঘন সবুজ গাছপালা, পাখির ডাক, আর বাতাসে হালকা ঘাসের গন্ধ,সব মিলিয়ে এক অপূর্ব সকাল।

পুকুরের ধারে পৌঁছে আমরা জায়গা বেছে নিলাম। রিয়াদ বলল, এই কোণায় বসলে রুই মাছ বেশি ধরা যায়।” আমি খুব আগ্রহ নিয়ে বড়শি ফেলে দিলাম পানিতে। শুরুতে কিছুই হচ্ছিল না, শুধু জলের ঢেউ দেখেই সময় কাটছিল। হঠাৎ বড়শির সুতোটা একটু নড়ল। আমার মনে একরাশ উত্তেজনা—বড় মাছ টোপে লেগেছে! আমি ধীরে ধীরে টানতে শুরু করলাম, কিন্তু সুতোটা যেন অনেক ভারী হয়ে গেছে। রিয়াদ উৎসাহ দিল, “টান! টান! বড় মাছ ধরা পড়েছে!

আমি প্রাণপণ চেষ্টা করছি টানতে, কিন্তু মাছটা যেন আমাকে নিয়ে টানছে। একসময় ভারসাম্য হারিয়ে হঠাৎ করে ঝপাস! করে পানিতে পড়ে গেলাম। ঠান্ডা পানিতে হাবুডুবু খেতে খেতে মাথা ঘুরে গেল। রিয়াদ তো হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে! সে বলল, “তুই তো মাছ না, নিজেই পানিতে ঝাঁপ দিলি!” আমি কোনো রকমে উঠে এলাম তীরে, ভিজে কাপড় থেকে পানি ঝরছে, শরীরে কাদা লেগে গেছে।তখন বুঝলাম, মাছ নয়, আসলে বড় একটা পানিতে ডোবা গাছের ডাল বড়শিতে জড়িয়ে গিয়েছিল। আমি যেটাকে মাছ ভেবেছিলাম, সেটা ছিল গাছের ডাল! রিয়াদ তখনো হাসছে, বলল, তোর এই বীরত্ব আজ গ্রামের সবাইকে বলব। আমি বললাম, তুই কিছু বলবি না, আমি নিজেই বলব! এমন অভিজ্ঞতা তো রোজ হয় না।

কিছুক্ষণ পর আমরা আবার বসে পড়লাম। এবার আমি একটু সাবধান। আবার বড়শি ফেললাম, মনে মনে বললাম, এবার যেন সত্যি মাছ ধরা পড়ে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর হঠাৎ সুতো আবার নড়ল। এবার আমি শান্তভাবে টানতে লাগলাম। সত্যিই একটা মাঝারি আকারের কাতলা মাছ উঠে এল! রিয়াদ তো লাফিয়ে উঠল আনন্দে। আমরা দুজনেই হাসতে হাসতে একে অপরের হাত চাপড়ালাম।বাড়ি ফেরার পথে আমি ভাবছিলাম, আজকের দিনটা কতটা মজার ছিল। পানিতে পড়ে যাওয়া, বন্ধুর হাসি, আর শেষে সত্যি একটা মাছ ধরা,সবকিছু মিলিয়ে এই দিনটা এক স্মৃতি হয়ে থাকবে। মাঝে মাঝে মনে হয়, জীবনের সবচেয়ে মজার মুহূর্তগুলো ঘটে তখনই, যখন সব কিছু আমাদের পরিকল্পনা মতো হয় না।

সেদিনের ভেজা কাপড়, হাসির আওয়াজ, আর সেই পুকুরের ঠান্ডা পানির ছোঁয়া এখনো মনে পড়লে মনটা হাসি দিয়ে ভরে যায়। আমি শিখেছি, মাছ ধরতে যেমন ধৈর্য লাগে, তেমনি জীবনের মজাও লুকিয়ে থাকে ভুল আর হাসির মাঝে।সেই দিনটার কথা ভাবলেই এখনো মনে হয়, হয়তো আবার কোনো সকালে রিয়াদকে নিয়ে বড়শি হাতে পুকুরের ধারে বসে থাকব,আর যদি আবার পড়ে যাই, তাতেও কোনো দুঃখ নেই, কারণ তাতেও থাকবে এক দারুণ গল্পের শুরু।

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqreqo2XAMzrcrFMezsQ2JYvnkCG8natanTeTWALXvA2X1jsqXD4Nf1w7BTTxEyx7JRMmmeNnz.png

ধন্যবাদ সকলকে✨💖

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZw7HFjCLMfDJx3zXx3jXPRfJr7otFtoRfKMmN9rJzpemZGKH1sKHrmfJREqyC...9xLrN7kkzEr3nKpRPcTj6NSZrBzYGbr93rAK2CAinZaxUP2fFhka9ZrPQeMBYoU2r2avcVEfb5m3uJAqvfZ4UMDVMeWvTdncVc9TonRvS2kneML5dvyoyUQZKC.png

ফোনের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণগল্প ✨
মডেলএম-৩১
ক্যাপচার@alif111
অবস্থানসিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG-20240117-WA0007.jpg
আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।🌹🌻

Sort:  

Congratulations!

Your post has been manually upvoted by the SteemPro team! 🚀

upvoted.png

This is an automated message.

💪 Let's strengthen the Steem ecosystem together!

🟩 Vote for witness faisalamin

https://steemitwallet.com/~witnesses
https://www.steempro.com/witnesses#faisalamin