অভিনন্দন ঐশী

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো আমার বাংলাব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব অনেক খুশির একটি সংবাদ।

শিক্ষকতা পেশা অনেক মহান,সবাই বলে। কিন্তু কোন কালেই আমার এই পেশা পছন্দ ছিল না। অনেকের স্বপ্ন থাকে শিক্ষক হওয়া। কিন্তু আমার কোন কালেই শিক্ষক হবার ইচ্ছা জাগে না। এর কারন আমি নিজে,আমি একা শিক্ষকদের যে পরিমান জ্বালিয়েছি তার একভাগ ও কেউ আমাকে জ্বালালে আমার পাবনা থাকা লাগবে। তাই আমাকে কেউ যদি বলত তুমি কি হতে চাও,আমি বলতাম শিক্ষক বাদে যে কোন কিছু।

তবে মানুষ ভাবে এক হয় আর এক। আমাকে বেছে নিতে হল শিক্ষকতা। প্রথম প্রথম ভাবতাম আমি নিজেই পড়ি না,আমি আবার কি পড়াবো।মজার বিষয় হল আমাকে প্রথম টিউশন এর দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমার বাংলা শিক্ষক সাজ্জাদ স্যার। আর বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা আমি স্যার কেও এটাই বলেছিলাম।যে স্যার আপনিই সারা দিন বলেন আমি পড়ি না,তাইলে আমি আমার ছাত্রকে পড়াবো কি?

স্যার বলেছিল শিক্ষক যখন হবি, তখন দেখবি সব এমনি চলে আসবে। সেই থেকে শুরু। প্রতিবছরই ভাবি এবার বাদ দেব,এবার বাদ দেব।কিন্তু পরে মনে হয় থাক পড়াই সমস্যা কি। মাস শেষে তো অন্তত কিছু টাকা পকেটে আসতেছে। এতক্ষণে ভাবছেন আমি বেশ বাজে টিচার,পড়াশোনার নাম নাই খালি টাকার ধান্দা।
আপনি হয়ত ঠিক,জানিনা। তবে পড়াতে পড়াতে পেশাটার সাথে এখন একটা টান সৃষ্টি হয়েছে। স্টুডেন্টরা নিজের সন্তান, ভাই বোনের মত হয়ে ওঠে।

আপনারা অনেকেই জানেন আমাদের সম্মানীয় মেম্বার বৃষ্টিচাকী কাকিমার বড় মেয়ে ঐশীকে আমি টিউশন করাই। দেখতে দেখতে দুই বছর হয়ে গেল। সেই নাইন থেকে শুরু। এই দুই বছরে কাকিমারা আমার পরিবার এর মত হয়ে গেছেন। আর ঐশী ও অর্থি বিন্দুর মতই। কিছুদিন আগেই ঐশী ssc পরীক্ষা দিল।আজ ছিল তার রেজাল্ট। শিক্ষার্থীরা যে শিক্ষকদের কত নিজের হয় এটা বুঝি যখন রেজাল্ট এর সময় আসে।

আমি অধিকাংশ ছোট ক্লাস পড়াই। তাই রেজাল্ট নিয়ে টেনশন হলেও অতটা হয়না। আজ অবশ্য ব্যতিক্রম।কারন যে কোন শিক্ষার্থীর জীবনে মাধ্যমিক একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাই চিন্তা টা বেশি। গতকাল রাত থেকে চিন্তায় এমন অবস্থা,যে আজ আমার পরীক্ষা ছিল সেই পড়াও পড়তে পারি নি স্টুডেন্ট এর টেনশনে। আজ সকাল থেকে তো প্রতিটি মিনিট কে এক এক বছর মনে হচ্ছিল।এর মাঝে মড়ার উপর খাড়ার ঘা আমার পরীক্ষা।

যাই হোক অনেক অপেক্ষার পর সকাল ১১টায় রেজাল্ট দিল। দুরু দুরু বুকে মেসেজ দিলাম।মেসেজ এর রিপ্লাই আসার আগেই দেখি কাকিমা মেসেজ দিয়েছে,রেজাল্ট দেখে মন ভরে গেল। ছাত্রী gpa5 পেয়েছে। মনে হচ্ছিল সেই মুহুর্তে দুনিয়ার সব থেকে সুখী মানুষ আমি। এটা আমার ই রেজাল্ট। যাই হোক খুশি মনেই পরীক্ষা দিতে ঢুকলাম। যাই হোক অনেক বকবক করলাম। আসলে মন ভাল থাকলে কথা এমনি চলে আসে। আপনারা আমার ছাত্রীর জন্য দোয়া করবেন যাতে ওর ভবিষ্যত আরো অনেক সুন্দর হয় এবং ও যেন ওর বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।

আজকের পোস্ট এপর্যন্তই। সবাই দোয়া করবেন স্টুডেন্ট এর জন্য।সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।ভুল ত্রুটি মার্জনীয়

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

জি ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন মানুষ ভাবে এক কিন্তু বাস্তবে হয় আরেক। মানুষ যেটা না চাই সৃষ্টিকর্তা যেন তার মাধ্যমে সেটাই করায়। যাই হোক আপনার স্টুডেন্ট জিপিএ-৫ পেয়েছে শুনে অনেক খুশি হলাম। প্রত্যেকটা স্টুডেন্টের কাছেই মাধ্যমিক পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাধ্যমিকে যদি ভালো রেজাল্ট করে তাহলে সামনের গুলো ভালো হওয়ার চান্স থাকে। আপনার ছাত্রীর জন্য আশীর্বাদ করতেছি। সেজন্য মা বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।

 2 years ago 

প্রথমে ঐশিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি তার সুন্দর রেজাল্ট করে আপনাদের সকলের মুখ উজ্জল করার জন্য। আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া যখন কোন স্টুডেন্ট ভালো রেজাল্ট করে তখন গর্বে যেন মন ভরে যায়। তেমনটাই আপনার ক্ষেত্রেও হয়েছে। যাই হোক আপনার ছাত্রী ঐশীর জন্য প্রার্থনা করছি আগামীতে সে সফলতার চূড়ায় পৌঁছাতে পারবে।

 2 years ago 

আসলে শিক্ষকতা পেশা অনেক বড় একটি দায়িত্ব। হয়তো অনেকেই সেই দায়িত্বটা নিতে চায় না । এরকম অনেক ঘটনা দেখেছি তাদের কাঁধে সেই দায়িত্ব এসে পড়ে যেমনটা আপনার ক্ষেত্রে হয়েছে। স্যারের নির্দেশনায় প্রাইভেট পড়ানো শুরু করে দিয়েছেন । যেটা এখন ছাড়তে পারছেন না আসলে ধৈর্যের ব্যাপারও বটে। আজকে আপনার স্টুডেন্ট ভালো রেজাল্ট করেছে সেই প্রাপ্তি টা পরিবারের সহ একজন শিক্ষকের
যেটা অনেক বড় আনন্দের ভালো লাগলো। জিপিএ 5 পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন।

 2 years ago 

আপনার সুনাম আমাদের পাড়া জুড়ে।আপনি ছাত্র-ছাত্রীদের বেশ ভালো পড়ান। আর আমাদের মিষ্টি ঐশিকে তো আমরা সবাই চিনি। তার এই রেজাল্টে আমরাও অনেক খুশি।ও সামনে এগিয়ে যাক এটাই একান্ত চাওয়া।শুভকামনা রইল ঐশীর জন্য।

 2 years ago 

ছাত্র-ছাত্রী ভালো রেজাল্ট করলে শিক্ষকদের খুশির সীমা থাকে না। আপনার ছাত্রী অর্থাৎ ঐশী জিপিএ 5 পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে জেনে খুবই খুশি হলাম। আপনার ছাত্রীর জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং আপনার জন্য অনেক শুভকামনা ভাইয়া।

 2 years ago 

প্রথম প্রথম ভাবতাম আমি নিজেই পড়ি না,আমি আবার কি পড়াবো।

টিউশনিতে গিয়ে যখন ছাএকে জ্ঞান দেয় ঠিক তখন আমার মনে হয়। আমি নিজেও তো কখনও এটা করিনি। আর ওকে করতে বলছি হা হা। শিক্ষক পৃথিবীর একমাএ ব‍্যক্তি যে অন‍্যের সাফল্য অনেক বেশি আনন্দিত হয়। শিক্ষকতা অনেক মহান একটা পেশা। আপনার ছাএীর জন্য শুভকামনা এবং অভিনন্দন। খুবই ভালো ফলাফল করেছে সে।

 2 years ago 

শিক্ষকতার দায়িত্ব নিয়ে ভালোই করেছেন ভাইয়া। কারণ আমার কাছে মনে হয় শিক্ষকতা অনেক সম্মানের। আর যখন কোন শিক্ষার্থী সফলতা অর্জন করে তখন আনন্দটা অনেক বেড়ে যায়। ভাইয়া আপনার অনুভূতি জেনে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আর আপনি এভাবেই নিজের স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যান এই প্রার্থনাই করি।

 2 years ago 

প্রথমেই মজা পেলাম আপনার কথাগুলো পড়ে,যেখানে আপনি স্যারকে বলতেছেন আপনিই বা কি পড়াবেন যেখানে আপনাকে স্যার বলে আপনি পড়েনই না,হাহাহা। যাই হোক এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া শিক্ষকতা পেশায় এতটা সহজ নয়।শিক্ষকদের বাচ্চারা যে পরিমাণ জ্বালাতন করে সেই পরিমাণ জ্বালাতন হয়তো অন্য কাউকে করতে পারেনা। আর শিক্ষকেরা ও সন্তানের মত মনে করে। আর রেজাল্টের বিষয়ে যেটা নিজের না হলেও নিজের পড়ানো শিক্ষার্থীর রেজাল্ট হলে তখন নিশ্চয়ই অনেক বেশি টেনশন হয়। ভালো ফলাফল করে কিনা। যাই হোক ঐশীকে অনেক অভিনন্দন জানাই ভবিষ্যতে যেন ভালোভাবে নিজের জীবনটাকে এগিয়ে নিতে পারে।

 2 years ago 

আসলে মানুষ যেটা চায় না, সেটাই সব সময় তার সাথে হয়। হা হা হা... তবে যারা টিউশন পড়ায় তারা প্রত্যেকেই টাকার কথা চিন্তা করে কম বেশি, এটা অন্যায় কিছু নয়। তবে ভাই, আপনি একজন সফল শিক্ষক সেটা বলা যায়। কারণ আপনার ছাত্রী GPA 5 পেয়েছে। অনেকটাই সময় দিয়েছেন ছাত্রীর পড়াশোনার জন্য, সেটা না হলে এত ভালো রেজাল্ট সম্ভব হতো না।