দীর্ঘ এক বছর পর গ্রামের ছেলেদের সাথে পুকুরে গোসল
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
বুধবার, ১৬ ই আগস্ট ২০২৫ ইং
দীর্ঘ এক বছর পর গ্রামের ছেলেদের সাথে পুকুরে গোসলের আনন্দ সত্যিই এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে রইল। শহরের ব্যস্ত জীবনে দিনযাপনের ভিড়ে আমরা প্রায়ই গ্রামীণ জীবনের সহজ সরল আনন্দগুলোকে ভুলে যাই। অথচ সেই আনন্দগুলোই আমাদের হৃদয়কে সবচেয়ে বেশি টানে। গ্রামের পুকুর যেন শুধু পানির আধার নয়, এটি আমাদের শৈশবের হাসি খেলায় ভরা এক বিশাল স্মৃতির ভাণ্ডার।আমাদের গ্রামে একাধিক বড় বড় পুকুর রয়েছে। চারপাশে বিশাল সবুজ গাছপালা, পাখির কলরব আর শান্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে পুকুরগুলো যেন এক বিশেষ রূপ ধারণ করে। এ বছর বর্ষায় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে, ফলে প্রতিটি পুকুরে পানি একেবারে কানায় কানায় ভরে গেছে।
গভীর নীল আকাশের ছায়া আর চারপাশের গাছের সবুজ রঙ মিশে পুকুরের জলে তৈরি করেছে মনোরম দৃশ্য। গতকাল শুক্রবার ছিল ছুটির দিন, তাই আমরা গ্রামের ছেলেরা আগেভাগেই ঠিক করেছিলাম একসাথে গোসল করতেই হবে।সকাল থেকেই যেন উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রত্যেকে মনে মনে অনেকটা দিন গুনছিল এই মুহূর্তটির জন্য। দুপুরের দিকে সবাই একত্রিত হলো। কারো হাতে ছিল গামছা, কারো হাতে সাবান, আবার কেউ শুধু প্যান্ট পরেই ছুটে এসেছিল। পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে একে অপরকে ডাকাডাকি করতে করতে যেন চারপাশ কেঁপে উঠছিল। সবাই মিলে হইচই করে একসাথে ঝাঁপ দিলাম পুকুরে, আর তখনই শুরু হলো সত্যিকারের আনন্দ।
ঠান্ডা পানিতে ডুব দেওয়ার সেই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। মনে হচ্ছিল, শরীরের সমস্ত ক্লান্তি ধুয়ে মুছে যাচ্ছে। একে অপরের দিকে পানি ছিটানো, সাঁতার প্রতিযোগিতা করা, কিংবা হঠাৎ কারো মাথা জোরে নিচে ডুবিয়ে দেওয়া সব মিলিয়ে হাসি আনন্দের কলরব চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছিল। কেউ গান ধরেছিল, কেউ আবার ডুবসাঁতার দেখাচ্ছিল। ছোট বড় নির্বিশেষে সবাই মেতে উঠেছিল এই আনন্দ উৎসবে।অনেকের সাথেই দীর্ঘদিন পরে দেখা হলো। শহরে পড়াশোনা বা চাকরির কারণে যারা দূরে থাকে, তারাও এই দিনে ফিরে এসেছিল গ্রামে। গোসলের পাশাপাশি চলছিল গল্প।
পুরনো দিনের স্মৃতি , আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভাগাভাগি করা। যেন আমরা ফিরে গিয়েছিলাম সেই শৈশবের দিনে, যখন সময়ের কোনো হিসাব ছিল না ছিল শুধু খেলা আর আনন্দ।সূর্য যখন ধীরে ধীরে পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ছিল, পুকুরের জলে তখন সোনালি রঙের ঝিলিক পড়ছিল। আমরা তখনও পানির মধ্যে হাসি ঠাট্টা করে যাচ্ছিলাম। ধীরে ধীরে যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, তখন ক্লান্ত শরীর আর ভরা মনে আমরা সবাই পুকুর থেকে উঠলাম। কারো গায়ে তখনও পানির ফোঁটা চকচক করছিল, আর সেই দৃশ্য যেন আনন্দের প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।সেদিনের গোসল শুধু শরীরকে শীতল করেনি, বরং মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি এনে দিয়েছিল।
আমাদের বোঝায়, প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে ছোট ছোট মুহূর্তের আনন্দই জীবনের আসল সম্পদ। শহরের কোলাহল, যান্ত্রিকতা কিংবা আধুনিকতার ঝলকানি কোনোদিনই সেই আনন্দ এনে দিতে পারে না, যা একসাথে গ্রামের ছেলেদের নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে।এই স্মৃতিগুলো শুধু একদিনের নয়, এগুলো আমাদের সারা জীবনের জন্য অমূল্য হয়ে থাকবে। যখনই ক্লান্তি বা একঘেয়েমি আসবে, তখনই এই দিনের হাসি, আনন্দ আর পুকুরের ঠান্ডা জলের স্পর্শ মনে করিয়ে দেবে জীবন আসলে খুবই সুন্দর, যদি আমরা একে উপভোগ করতে জানি।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Daily task
https://x.com/riyadx2p/status/1956625485217320990?s=46
https://x.com/riyadx2p/status/1956625962260443277?s=46
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পুকুরে গোসল করতে অনেক ভালো লাগে। অনেক আগে পুকুরে গোসল করেছিলাম। সেই মুহূর্ত গুলো মনে পরে গেল। আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।
যারা শহরে থাকে তারা গ্রামে এসে সবাই মিলে পুকুরে গোসল করলে অন্যরকম মজা লাগে। আর গ্রামাঞ্চলে পুকুর গুলোর পাশে গাছপালা থাকে তখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চমৎকার থাকে। আর এ ধরনের অনুভূতিগুলো সব সময় মনে থাকে। আপনার পোস্ট দেখে কিন্তু অনেক ভালো লাগলো আমার কাছে।