শহরের ব্যস্ততা পেরিয়ে আত্মীয়তার উষ্ণতায় এক বিকেলের ভ্রমণ।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
জীবনের প্রতিদিনের ব্যস্ততায় আমরা অনেক সময় নিজেদের সীমাবদ্ধ একটি গণ্ডির মধ্যে আটকে ফেলি। অফিস বাসা, বাসা অফিস এই একঘেয়ে চক্রের বাইরে বের হওয়া যেন দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ে। আমার জীবনটাও ঠিক তেমনই। চাকরির সুবাদে দীর্ঘ দশ বছর ধরে আমি ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকায় বসবাস করছি। সময়ের সঙ্গে চাকরি, দায়িত্ব, পরিবার সব মিলিয়ে জীবনটা নিয়মের মধ্যে বন্দি হয়ে গেছে।
ঢাকার মধ্যে আমার তেমন কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। তাই আত্মীয়তার টানটা একটু দূর থেকেই অনুভব করতে হয়। তবে আমার পাঁচ মামার মধ্যে তিন নম্বর মামা প্রায় বারো বছর আগে গাজীপুরের পূবাইল এলাকায় বিয়ে করেন। মামানী এক বাবার এক মেয়ে হওয়ায় মামা শ্বশুরবাড়িতেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। শ্বশুরের মৃত্যুর পর পারিবারিক সম্পত্তির একটি অংশ মামা পেয়েছেন এবং সেখানেই পাঁচতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে দুইতলা বাড়ি সম্পূর্ণ করে এখন পরিবার নিয়ে থাকছেন। পাশাপাশি শ্বশুরের রেখে যাওয়া ব্যবসাটিও তিনি দেখাশোনা করছেন।
আমি বিয়ের আগে একবার মামার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। এরপর দীর্ঘদিন আর যাওয়া হয়নি। কয়েক মাস আগে মামার শ্বশুর মারা গেলে বাধ্য হয়েই আবার সেখানে যাই। সেই যাওয়া-আসার মাঝেই মামা বহুবার বলেছিলেন যেন সময় করে একদিন ফ্যামিলি নিয়ে চলে যায়। কিন্তু সময় আর সুযোগ এই দুইয়ের অভাবেই আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
গতকাল হঠাৎ মামার ফোন। তিনি জানালেন, ১৬ ডিসেম্বর অফিস বন্ধ, এই সুযোগে যেন ফ্যামিলি নিয়ে বেড়াতে আসি। কথার ভেতর যে আন্তরিকতা ছিল, তা আর এড়িয়ে যাওয়ার মতো ছিল না। সিদ্ধান্ত নিলাম, এবার আর না।
আজ বিকেল চারটার দিকে বাসা থেকে বের হলাম। কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে তুরাগ ট্রেনে চড়লাম। ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতাটাও ছিল নতুন। ঢাকার ভেতর ট্রেনে যাতায়াত খুব একটা করা হয় না। স্বল্প ভাড়ার এই ট্রেনযাত্রা যেন পুরোনো দিনের স্মৃতি মনে করিয়ে দিল। জানালার পাশে বসে শহরের দৃশ্য দেখতে দেখতে টঙ্গী পৌঁছে গেলাম।
টঙ্গী স্টেশন থেকে অটোতে চড়ে সরাসরি মামার বাসায়। বাসার সামনে পৌঁছাতেই মামা-মামানীর হাসিমুখে অভ্যর্থনা ক্লান্তি যেন মুহূর্তেই উধাও হয়ে গেল। খাওয়া-দাওয়া, আদর-আপ্যায়ন কোনো কিছুরই কমতি ছিল না। মনে হলো, বহুদিন পর সত্যিকারের আপন পরিবেশে এসেছি।
শহরের কোলাহল, কাজের চাপ, মানসিক ক্লান্তি সবকিছু যেন একটু সময়ের জন্য থেমে গেল। মামার বাসার পরিবেশ, পরিবারের আন্তরিকতা, গ্রামের কাছাকাছি এই শান্ত আবহ সব মিলিয়ে ভেতরটা ভরে উঠল এক অদ্ভুত ভালো লাগায়।
অনেক সময় আমরা ভাবি, কোথাও বেড়াতে যেতে হলে দূরে যেতে হবে, খরচ বেশি হবে। অথচ কাছের মানুষের কাছে যাওয়াটাই অনেক সময় সবচেয়ে বড় ভ্রমণ হয়ে ওঠে। আজকের এই ছোট্ট যাত্রা আমাকে সেটাই আবার মনে করিয়ে দিল।
এই ব্যস্ত জীবনে এমন মুহূর্তগুলো খুব দরকার। আত্মীয়তার টান, পরিবারের উষ্ণতা আর একটু নির্ভার সময় এই তিনের মিলনেই জীবনটা আবার নতুন করে ভালো লাগতে শুরু করে।
Photographer- @joniprins
Device- Realme C53
Location-Gazipur
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















