'হৃদয়ের স্পন্দন'গল্প পর্ব:৩

in আমার বাংলা ব্লগ10 hours ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে হৃদয়ের স্পন্দন গল্পের তৃতীয় পর্বটি শুরু করছি। আশা করি, গল্পের তৃতীয় পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-pixabay-258421 (2).jpg
সোর্স


রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে কিন্তু পূজার সেই রাতে আর ঘুম হলো না। সারারাত ধরে জেগে জেগে চিন্তা করতে থাকে আর কি হবে তার স্বপ্নের মানুষের সঙ্গে দেখা। মাঝরাতে ঘুম ভাঙ্গে পূজার ছোট বোনের। পূজার ছোট বোনের নাম ছিল রিমি। রিমি দেখে তার দিদি এখনো ঘুম পরেনি সে আবারও দিদিকে বলে, এত চিন্তা কেন করছিস চুপচাপ ঘুমিয়ে পড় না অনেক রাত হয়েছে। বললাম তো কাল সকালে আমি আর তুই তাকে খুঁজতে বের হব। পূজা বলে, রিমি সত্যি তাকে খুঁজে পাবো তো? রিমি বলে, অবশ্যই পাবো কিন্তু তুই এখন ঘুম পর তা না হলে শরীর খারাপ করবে। পূজা বলে, আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমিয়ে পড়ছি।


সকাল হতেই পূজা ও রিমি তারা দুজনে সেই ছেলেকে খুঁজতে বের হল। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরও তারা সেই ছেলেটিকে খুঁজে পেল না। পূজা খুব ভেঙে পড়ল পূজা মনে মনে চিন্তা করতে থাকলো তার স্বপ্নের মানুষটাকে সে আর খুঁজে পাবেনা। পূজার মন একেবারে ভেঙ্গে গিয়েছিলো। রিমি পূজাকে সান্ত্বনা দেয় কিন্তু কোন সান্তনা পূজার মন শান্ত হচ্ছিল না। রিমি বলে, একটা ছেলের জন্য এতটা ভেঙে পড়লে হয় ওর থেকে আরো কত সুন্দর সুন্দর ছেলে তোর জীবনে আসবে তুই দেখিস। পূজা বলে, আমি অন্য কোন ছেলেকে আমার জীবনে চাই না আমি শুধু তাকে চাই। রিমি বলে, তাকে আমরা চিনি না জানি না সে হয়তো আমাদের মতন এখানে ঘুরতে এসেছে তাকে এখন কোথায় খুঁজে পাবো। পূজা বলে, আমি কিছু শুনতে চাই না আমি শুধু তাকে চাই।


এরপর থেকে পূজা যে কয়টা দিন হোটেলে ছিল সেই দিনগুলো সব সময় বারান্দায় এসে সামনের হোটেলের দিকে তাকিয়ে থাকতো। কেননা সামনের হোটেলে উঠেছিল তার স্বপ্নের মানুষ একদিন তাকে সেখানে দেখতে ও পেয়েছিল। একদিন পর হোটেলের ব্যালকনিতে এসে দেখতে পায় সামনের হোটেলে যে রুমটাতে তার স্বপ্নের মানুষ ছিল সেখানে অন্য কোন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তার বুঝতে দেরি হলো না কারণ তার স্বপ্নের মানুষ সেখান থেকে চলে গিয়েছে। সে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কান্না করতে থাকে এমন সময় রিমি এসে দেখতে পায় তার এই অবস্থা। রিমি বলে কি হয়েছে কান্না করছিস কেন? পূজা বলে, সে চলে গেছে? রিমি বলে, তো কি হয়েছে? পূজা বলে, সে কেন গেল? সে কেন এলো আমার সামনে আমাকে এলোমেলো করে সে চলে গেল। রিমি বলে, তুই সত্যি পাগলরে দিদি।


কিছুদিন পর তারাও সেখান থেকে চলে এলো বাড়িতে। বাড়িতে আসার পর পূজাও রিমি তাদের দৈনন্দিন কাজ শুরু হয়ে গেল। সময় যেতে যেতে পূজা ভুলে গিয়েছিল রকির কথা কিন্তু প্রতি রাতে একটিবার হলেও রকির কথা স্মরণ করত। একদিন পূজা তার বান্ধবীদের সঙ্গে একটি হোটেলে খেতে চায়। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে হোটেল থেকে যখন বের হবে আচমকা দেখতে পায় রকিকে। পূজা রকিকে দেখে চমকে ওঠে সে ভাবতে পারিনি এমনভাবে তার সঙ্গে দেখা হবে। রকিকে দেখার পর পূজা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু তখনই তার ফোনে ফোন আসে। ফোন রিসিভ করতেই ছোট বোন এ রিমি বলে, তুই কোথায় দিদি? তাড়াতাড়ি বাড়িতে আয় মা সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। আমরা মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি তুই তাড়াতাড়ি চলে আয়।


পূজা রকি সঙ্গে কথা না বলে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে সেখান থেকে। পূজা সোজা চলে যায় হাসপাতালে যে দেখতে পায় তার মাকে ডাক্তার চিকিৎসা করছে। সবাই খুব চিন্তিত ছিলো বড় কিছু না হয়। ডাক্তার চিকিৎসার পর ডাক্তার পূজার পরিবারকে বলে, ইটস ওকে, নো প্রবলেম কিছুদিন রেস্টে থাকতে হবে আর কিছু ওষুধ দিয়েছি সেগুলো নিয়মিত খেতে হবে। আশা করি, তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন। এরপর হাসপাতাল থেকে পূজার মাকে বাড়িতে আনা হয়। মা যেহেতু কোন কাজ করতে পারছে না তাই পূজা ও রিমির বাড়ির সব কাজ করতে হয়। রিমি পূজাকে বলে, দিদি তোর কি হয়েছে? বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি তুই একটু চিন্তিত কি হয়েছে তোর কি নিয়ে চিন্তা করছিস? পূজা বলে, আমি তাকে দেখতে পেয়েছি। রিমি বলে কাকে? পূজা বলে, আমার সেই স্বপ্নের মানুষটাকে। রিমি হাসতে হাসতে বলে, কোথায় পেলি থাকে কথা বলেছিস তার সঙ্গে। পূজা সব ঘটনা খুলে বলে রিমি বলে, তাহলে তোর স্বপ্নের মানুষটা এই শহরে বসবাস করে। দিদি তুই চিন্তা করিস না খুব শীঘ্রই তোর স্বপ্নের মানুষটাকে খুঁজে বের করব।

আজ এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।