ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি কয়লার চুলা

in STEEM FOR TRADITIONN2 years ago

আজ বৃহস্পতিবার
২১সেপ্টেম্বর ২০২৩

আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় স্টিমবাসি সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। স্টিম ফর ট্র্যাডিশনে আপনাদেরকে স্বাগতম। আপনাদের জন্য রইলো অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভালোবাসা এবং শুভকামনা। আজকে আমি আপনাদের দেখাবো কয়লার চুলা, যে চুলা চা বিক্রি এবং পাউরুটি পুড়িয়ে খেতে ব্যবহার করা হয়।

IMG_20230916_094530_931.jpg
কয়লার চুলা

প্রায় ২০০ বছর আগে সৈয়দপুর কারখানা স্থাপন করা হয়, স্থাপন কাল ১৮১০, সৈয়দপুর কারখানার লোহা গলিয়ে বিভিন্ন রকমের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হতো, লোহা গলানোর জন্য কয়লা ব্যবহার করা হতো। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার পাশেই রয়েছে একটি চা এবং রুটির দোকান, সে দোকানে বিশেষ পদ্ধতি একটি চুলা বানানো হয়েছে, যে চুলায় কয়লা ব্যবহার করা হয়। সৈয়দপুর কারখানায় কয়লা ঢুকানোর সময় যে মালবাহী ট্রেন প্রবেশ করে, সেই কয়লা মালবাহী ট্রেন থেকে ছিটকে পরে যায় কিছু কয়লা। সেই কয়লা সংগ্রহ করে আগুন জ্বালানো হয় এই মাটির চুলাতে।

IMG_20230916_094525_436.jpg
IMG_20230916_094523_448.jpg

সৈয়দপুর রেলওয়ের কর্মচারীরা এই দোকান থেকে চা খেয়ে থাকে, এখন যে দোকানটি পরিচালনা করছে তার বয়স প্রায় ৭০ বছর। তার আগে তার বাবাও এখানে চা এবং পাউরুটি বিক্রি করতো। নাস্তা করার জন্য এই দোকান থেকে রেলের কর্মচারীরা চা এবং বিশেষ প্রতিনিধিতে রুটি পুড়িয়ে খেতো।

IMG_20230916_093537_849.jpg

এই চুলায় এত তাপমাত্রা যে, চুলার উপরে কিছু রাখলেই গলে যায়। তাই চুলার সাইডে রাখা হয় তাতেই অনেক গরম থাকে সবকিছু। কয়লার গরমের উপরে রুটি রাখলে রুটি পুড়ে যায়, যে রুটিগুলো খেতে বেশি সুস্বাদু । এ পদ্ধতিতে যুগ যুগ ধরে বিক্রি করে আসছে এই দোকানে রুটি এবং চা।

IMG_20230916_093530_957.jpg

এগুলোর বিশেষ সুবিধা রয়েছে, কখনোই চুলাতে ধোয়া হয় না। চায়ের কেতলিতে কখনো কালি লাগেনা, অনেক সময় এই দোকানের মালিক কয়লা কিনেও নিয়ে আসে। সারা বাংলাদেশের এরকম চুলা আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই।তবে সৈয়দপুরের ভিতর এই একমাত্র মাটির চুলা যে চুলায় কয়লা দিয়ে তাপ তৈরি করা হয়।

IMG_20230916_093542_371.jpg
IMG_20230916_093552_495.jpg
IMG_20230916_094529_943.jpg

এই দোকানের চা এবং রুটি বিক্রি করেই চলে এই দোকানের মালিক এর সংসার। এই চা দোকানে শীতকালে অনেক ভিড় জমে, কারণ তুলনামূলক সৈয়দপুরের শীত বেশি থাকে, আর এই দোকানে কয়লা চুলা থাকার কারণে সারা দোকান গরম থাকে। গরম থাকার কারণে তখন মানুষের অনেক ভিড় লেগে থাকে, এবং বেচা বিক্রি ভালো হয়। এই চুলাটি আমাদের ঐতিহ্যের সাক্ষী, যে চুলায় এখনো টিকে আছে ২০০ বছর ধরে, তবে মাঝেমধ্যে মাটির পলব দিতে হয়।

IMG_20230916_093542_371.jpg

এই চুলাটি দেখতে গোলাকার হলো এর তাপমাত্রা এতটাই যে যেকোনো জিনিস এর উপরে রাখলে, এক মিনিটের ভিতরে অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। ছবিতে আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন চুলার উপরে না রেখে চুলার চারপাশে পাত্র রাখা হয়েছে। আপনাদের চোখে কোথাও যদি কয়লা চালিত চুলা দেখে থাকেন, তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। কেমন লাগলো চুলা নিয়ে আমার এই সামান্য লেখাটা শুধু কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আজ এ পর্যন্তই। আবার লিখবো কোনো বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে।

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
মোবাইল সংক্রান্ত তথ্যঃ

Posted using SteemPro Mobile

মোবাইলঃTECNO CAMON 16 PRO
ধরণমাটির তৈরি কয়লার চুলা
ক্যামেরা৬৪ মেগাপিক্সেল
ফটোগ্রাফার@aslamarfin
অবস্থানসৈয়দপুর
Sort:  
 2 years ago 

মাটির তৈরি কয়লার চুলা সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। এই কয়লার চুলা গুলোর তাপমাত্রা অতিরিক্ত হয়ে থাকে। আপনি ঠিকই বলেছেন যে কোনো জিনিসপত্র এই কয়লা চুল গুলো গলিয়ে দিতে পারে। তবে আমি এখন পর্যন্ত এই কয়লার চুলায় পোড়ানো রুটি কখনো খাইনি। এর স্বাদ কেমন সেটাও আমার জানা নেই। তবে অনেকদিন পর আপনার পোস্টের মাধ্যমে এরকম মাটির তৈরি কয়লার চুলা দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। ঐতিহ্যবাহী অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

এই চুলাটি দেখতে গোলাকার হলো এর তাপমাত্রা এতটাই যে যেকোনো জিনিস এর উপরে রাখলে, এক মিনিটের ভিতরে অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়।

এর প্রধান কারণ হলো এই চুলা গুলো কয়লা দিয়ে জ্বালানো হয় যার কারণে অতিরিক্ত তাপ হয়।

এরকম মাটির তৈরি কয়লাচুলা গুলো সাধারণত চায়ের দোকানে সব থেকে বেশি দেখা যায়। আমার জানামতে সিলেট অঞ্চলে সবথেকে বেশি এরকম মাটি তৈরি চুলাগুলো দেখা যায়। আর এসব চুলার এক অন্যতম জ্বালানি হলো কয়লা যার কারণে অনেক কম সময়ে কোন জিনিস চুলার উপরে রাখলে গরম হয়ে যায়।দারুন একটি পোষ্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

আপনার এই আলোচনার মাধ্যমে আমি নতুন কিছু তথ্য জানতে পারলাম। কয়লা দিয়ে চুলা জ্বালায় সেটি জানতাম কিন্তু রেলওয়ের কারখানার পাশে এই দোকান অবস্থিত হওয়ায় এখানে সেই কয়লা দিয়ে চুলা জ্বালানো হয় যা বেশ ভালো একটি ব্যাপার। এই চুলায় রুটি পুড়িয়ে খাওয়া হয় বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে। এভাবে রুটি, পুড়ে কখনো খাওয়া হয়নি। এর স্বাদ আসলে কেমন আমার জানা নেই তবে আপনার তথ্যমতে মনে হচ্ছে এগুলো খেতে বেশ মজাদার হবে। আমি এই দোকানে গিয়েছি কিনা আমার মনে নেই। কারণ আমি আপনাদের সাথে কয়েকবার এরকম দোকানে চা খেয়েছি সৈয়দপুরে। আপনি বেশ ঐতিহ্যবাহী কিছু তথ্য আমাদের কাছে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ দাদা

 2 years ago 
DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

বিশেষ করে চায়ের দোকানে বা হোটেলে এই ধরনের চুলা গুলো বেশি দেখা যায়। এ ধরনের চুলা গুলো সার্বক্ষণিক জলে বিধায় দেখতে এরকম লাগে। দেখতে একদম টকটকে লাল দেখায়। এই চুলায় হাত বা কোন কিছু করলে সাথে সাথেই পুড়ে ছাই হয়ে যাবে আমার মনে হয়। যাইহোক এসব দোকানের চা কিন্তু সেই মজা লাগে খেতে। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

কয়লার চুলা সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া এবং চুলাটি আসলেই দেখে অনেক ভিন্নধরনের মনে হলো। আসলে কয়লা আমাদের অনেক বড় বড় কাজে ব্যবহার হয় বিশেষ করে লোহা গলানোর সময় এই কয়লা আগে দরকার হয়। বিভিন্ন ধরনের কলকারখানা অথবা ভাটায় বিশেষ করে এই কয়লা বেশি প্রয়োজন হয় সবার আগে। কেননা কয়লা ছাড়া ইট পোড়ানো অসম্ভব। আসলে আপনি যে দোকান সম্পর্কে লিখেছেন তারা আসলেই অনেক সুন্দর পদ্ধতিতে এই চুলা বানিয়েছে এবং এখানে চা এবং রুটি তৈরি করে থাকে। অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

আমিও সৈয়দপুরের স্থানীয়।আপনি অনেক সুন্দর করে সৈয়দপুর কারখানা নিয়ে লিখেছেন।আপনি দোকানটির স্থাপনা নিয়ে অনেক কিছু লিখেছেন।এমন মাটির তৈরি কয়লার চুলা বেশ কিছু দোকানে দেখা যায়।এ দোকানটি আমিও দেখেছি কিন্তু যেয়ে কিছু খাওয়া হয়নি।আপনি দোকানদারের সম্পর্কেও সংক্ষিপ্ত ভাবে কিছু কথা লিখেছেন।মাটির তৈরি কয়লার চুলা নিয়ে অনেক সুন্দর করে বিস্তারিত উপস্থাপন করেছেন।আপনার ছবি গুলো সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

বাহ ভাইয়া!আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অজানা একটি তথ্য জানতে পারলাম। আমার কখনো জানাই ছিল না যে রুটি ও এভাবে পুড়ে খাওয়া হয়। আর কয়লার এই চুলোটি সম্পর্কেও আজকে প্রথম জানতে পারলাম। এই দোকানটি তাদের বংশপরম্পরায় টিকে আছে।সৈয়দপুর রেল কারখানার বাইরে এই দোকানটি অবস্থিত। তার মানে এখানে সেখানকার কর্মচারীরা চা খেয়ে থাকেন। আর সৈয়দপুর রেল কারখানা সম্পর্কেও অজানা কিছু তথ্য জানতে পারলাম। সত্যিই এটি অনেক ইউনিক একটি বিষয়। পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে ব্যতিক্রম ধর্মী পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

অসাধারণ একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ভাই। রাস্তার পাশের ছোট হোটেল গুলোতে এই চুলাটি আমি বেশ কয়েকবার দেখেছি ভাই। কিন্তু , চুলাটি ঠিক কি দিয়ে জ্বালানো হয় বা চুলাটি সম্পর্কে এত বিস্তারিত তথ্য আমি কখনোই জানতাম না। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম এই চুলাটি সম্পর্কে। রুটি ভাজার এই কৌশলটি আমি এর আগে কখনোই দেখিনি। আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে নতুন একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হলাম। এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু