পাহাড় চূড়ায় – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় || আবৃত্তি -আমি || @shy-fox 10% beneficiary
পাহাড় চূড়ায় – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
অনেকদিন থেকেই আমার একটা পাহাড় কেনার শখ।
কিন্তু পাহাড় কে বিক্রি করে তা জানি না।
যদি তার দেখা পেতাম,
দামের জন্য আটকাতো না।
আমার নিজস্ব একটা নদী আছে,
সেটা দিয়ে দিতাম পাহাড়টার বদলে।
কে না জানে, পাহাড়ের চেয়ে নদীর দামই বেশী।
পাহাড় স্থানু, নদী বহমান।
তবু আমি নদীর বদলে পাহাড়টাই
কিনতাম।
কারণ, আমি ঠকতে চাই।
নদীটাও অবশ্য কিনেছিলামি একটা দ্বীপের বদলে।
ছেলেবেলায় আমার বেশ ছোট্টোখাট্টো,
ছিমছাম একটা দ্বীপ ছিল।
সেখানে অসংখ্য প্রজাপতি।
শৈশবে দ্বীপটি ছিল আমার বড় প্রিয়।
আমার যৌবনে দ্বীপটি আমার
কাছে মাপে ছোট লাগলো। প্রবহমান ছিপছিপে তন্বী নদীটি বেশ পছন্দ হল আমার।
বন্ধুরা বললো, ঐটুকু
একটা দ্বীপের বিনিময়ে এতবড়
একটা নদী পেয়েছিস?
খুব জিতেছিস তো মাইরি!
তখন জয়ের আনন্দে আমি বিহ্বল হতাম।
তখন সত্যিই আমি ভালবাসতাম নদীটিকে।
নদী আমার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিত।
যেমন, বলো তো, আজ
সন্ধেবেলা বৃষ্টি হবে কিনা?
সে বলতো, আজ এখানে দক্ষিণ গরম হাওয়া।
শুধু একটি ছোট্ট দ্বীপে বৃষ্টি,
সে কী প্রবল বৃষ্টি, যেন একটা উৎসব!
আমি সেই দ্বীপে আর যেতে পারি না,
সে জানতো! সবাই জানে।
শৈশবে আর ফেরা যায় না।
এখন আমি একটা পাহাড় কিনতে চাই।
সেই পাহাড়ের পায়ের
কাছে থাকবে গহন অরণ্য, আমি সেই অরণ্য পার হয়ে যাব, তারপর শুধু রুক্ষ
কঠিন পাহাড়।
একেবারে চূড়ায়, মাথার
খুব কাছে আকাশ, নিচে বিপুলা পৃথিবী,
চরাচরে তীব্র নির্জনতা।
আমার কষ্ঠস্বর সেখানে কেউ শুনতে পাবে না।
আমি ঈশ্বর মানি না, তিনি আমার মাথার কাছে ঝুঁকে দাঁড়াবেন না।
আমি শুধু দশ দিককে উদ্দেশ্য করে বলবো,
প্রত্যেক মানুষই অহঙ্কারী, এখানে আমি একা-
এখানে আমার কোন অহঙ্কার নেই।
এখানে জয়ী হবার বদলে ক্ষমা চাইতে ভালো লাগে।
হে দশ দিক, আমি কোন দোষ করিনি।
আমাকে ক্ষমা করো।
আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ব্ল্যাকস ভাইয়ের প্রতি। কারণ তার এই উদ্যোগ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে । যদিও সেদিনের পর থেকে আমি বেশ কয়েকবার কবিতাটি শুনেছি। তবে যত বার শুনেছি এবং যত বার বলার চেষ্টা করেছি, ততবারই আমি কোথায় থেকে কোথায় যেন গুলিয়ে যাচ্ছিলাম এবং মনে হচ্ছিল যেন অন্য রকম একটা অনুভূতি কাজ করছে । সেটা হয়তো প্রকাশ করা আমার মত ছোট মানুষের পক্ষে খুবই কষ্টকর হয়ে যাওয়ার মতো । তবে আমি যতটুকু বুঝেছি, আমি আমার স্বল্প জ্ঞানে ততটুকুই ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব, ভুল ত্রুটি মার্জনীয় ।
আমার প্রথমত মনে হয়েছে, কবির সময়ের সঙ্গে তার জীবনের যে পরিবর্তনগুলো হয়েছে। তা এককভাবে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং চেষ্টা করেছে, কবির জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে কিভাবে বেড়ে উঠেছে, বিশেষ করে তার শৈশব, কৈশোর ও পরবর্তী জীবনের ব্যাপার গুলো নিয়ে ।
হয়তো তার ভালোলাগা গুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে । হয়তো শৈশবে তার যেটা ভালো লাগতো হয়তো কৈশোরে সেটার উল্টোটা হয়েছে। হয়তো এখন শৈশবের ব্যাপার গুলো নিয়ে কৈশোরে অনেকটাই হাসি-ঠাট্টা পেয়েছে, যেমনটা প্রতিনিয়ত হয় আরকি ।
তারপরেও জীবনের একটা পর্যায়ে এসে কবির হয়তো আবারো নতুন করে সেই অতীত গুলো বিশ্লেষণ করার আগ্রহ জেগেছে এবং জীবনটাকে আবার ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করেছে। হয়তো তার চিন্তা ধারাই এখন মনে হচ্ছে, তার কাছে বর্তমান সময়টা যেভাবে যাচ্ছে তার থেকেও আরো বিকল্পভাবে নিয়ে যাওয়া যেত , যদি শৈশবটাকে আবার ফিরে পাওয়া যেত ।
তবে প্রকৃতির প্রতি কবির যে ভালোবাসা ছিল, তা হয়তো কবি এখানে একটু অন্যভাবে দেখার চেষ্টা করেছে। চেষ্টা করেছে প্রকৃতির মাঝে মনুষ্যকুল প্রচুর অহংকারী ও স্বার্থপর । তারপরেও সে সবাইকে সাক্ষী রেখে বলার চেষ্টা করেছে, এই অহংকারী মানুষ গুলোর ভিতর সহানুভূতির মনোভাব জাগ্রত হোক এবং পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসুক । হয়তো এমনটাই কামনা করেছিলেন । হয়তো এভাবে চিন্তা করেছিলেন যেখানে, মানুষ নিরহংকারী হবে, যেখানে কোনো বৈষম্যবোধের ব্যবধান থাকবে না ।
তাই হয়তো কবি, তার মনের কথাগুলো কবিতার ছলে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন ।।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনার কন্ঠে কবিতা শুনে আমার খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। অসাধারণ হয়েছে ভাইয়া। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে কবিতা আবৃত্তি করেছেন। আসলে এই কবিতাটি এতটাই সুন্দর যে আপনার মিষ্টি গলায় কবিতাটি আরো বেশি সুন্দর হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে কবিতা আবৃত্তি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আশা করছি সকলের অনেক ভালো লেগেছে। বিশেষ করে আমার কাছে দারুন লেগেছে ভাইয়া। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভাইয়া।🥰🥰🥰
সত্যি বলতে কি কবিতাটি পাঠ করা খুবই কঠিন ছিল ,তবে চেষ্টা করেছি আরকি ।
কবিতাটি আমার কাছেও অনেক ভালো লেগেছে আমিও পড়েছি। আপনি খুব চমৎকারভাবে কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন খুবই ভালো লাগলো আমার কাছে। কবিতাটি পড়ে আমারও শৈশবের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল ।আজকে আবার আপনার মুখ থেকে নতুন করে শুনে অন্যরকম ভালো লাগলো।
আমার কাছে তেমনটাই মনে হয়েছে , হয়তো কবি তার জীবনের শৈশব স্মৃতি ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কবিতাটি লেখার চেষ্টা করেছিল ।
দারুন!! অনেক ভালো আবৃত্তি করেছেন আপনি। এখন পর্যন্ত যে ক'জনের আবৃত্তি শুনেছি তাদের মধ্যে সেরা মনে হলো আপনারটা। আসলে কবিতাটির মধ্যে বেশ কিছু অনুভূতি প্রকাশের ব্যাপার আছে। যেগুলো শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করা অনেকটাই কঠিন। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর প্রচেষ্টাকে।
তবে আমার কাছে আপনার বন্ধু @shuvo2021 ভাইয়ের আবৃত্তিটা বেশি ভালো লেগেছে ।
😯😯🤔🤔🤔🧐🧐🧐 বুঝলাম না ভাই!!! আমার বাংলা ব্লগে সবাই সবার বন্ধু এভাবে যদি বলেন তাহলে ঠিক আছে। তা না হলে আপনার জানায় ভুল আছে। তবে উনার আবৃতি আমিও শুনেছি। বেশ ভালো ছিল।
কবিতাটি বৃহস্পতিবা হ্যাংআউট এ আমার প্রথম শোনা। সেদিন কবিতাটি শুনে আমার খুব ভাল লেগেছিল। তারপর থেকে আমিও অনেক কয়েকবার শুনেছিলান। আজকে আবার আপনার কন্ঠে আবৃত্তি শুনে আমার প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। যতক্ষণ শুনছিলাম ততক্ষণ খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম একটিবারের জন্যও মন কোথাও সরে যায়নি। আপনি খুব চমৎকার করে কবিতাটি আবৃতি করে আমাদের শুনিয়েছেন। আপনার মাধ্যমে ব্ল্যাকস ভাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি চমৎকার একটি উদ্যোগ নেয়ার জন্য।
সত্যি বলতে কি আমিও সেই দিনের পর থেকে বেশ কয়েকবার আবৃত্তি করার চেষ্টা করেছিলাম , তবে পুরোপুরি ভালোভাবে করেছি গতকাল, যদিও একটু কঠিন ছিল ।
কি দারুণ ভাবে আবৃত্তি করলেন ভাইয়া।শুনে জাস্ট শুনে থাকতেই ইচ্ছে হচ্ছিলো।
ধন্যবাদ আপু ,আপনার সুন্দর সাবলীল মন্তব্যের জন্য। আমি অনুপ্রাণিত।
খুবই চমৎকার আবৃত্তি করেছেন ভাই, সেইসাথে কবিতাটি সম্পর্কে এর মূলভাব খুব সুন্দর ভাবে ব্যক্ত করেছেন। শুভকামনা অবিরাম আপনার জন্য।
আসলে মূলভাব কতোটা যৌক্তিক ছিল এটা বলতে পারবো না । তবে আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি ভাই ।
আমি একদম নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম ভাইয়া। সত্যি আমি অপেক্ষায় ছিলাম আপনি দারুন কিছু নিয়ে হাজির হবেন। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক শুনে আমি একদমই নিস্তব্ধ।প্রতিটা লাইন মনে হচ্ছিল মনের ভিতরে গেথে যাচ্ছিল।আসলে ব্লাক দাদা অনেক সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়েছেন।তার উদ্যোগকে সম্মান জানায়। তার মাধ্যমে দারুন আবৃত্তি শুনতে পারছি। আপনার জন্য অগ্রিম শুভেচ্ছা রইল ভাইয়া। দোয়া ও ভালোবাসা রইলো।🤲🤲
আমি মনেকরি যারা কবিতা পছন্দ করেন , তাদের কাছে এবারের উদ্যোগটি আসলেই বেশি গ্রহণযোগ্য হবে ।
শৈশব টাকে ফিরে পাওয়া অসম্ভব। কিন্তু সেই সোনালী শৈশব সারাজীবন তাড়া করে বেড়াই🙂। পাহাড় চূড়ায় কবিতা টা অসাধারণ আবৃত্তি করেছেন। প্রতিটা লাইন ছিল হৃদয় ছোয়া। আপনার আবৃত্তি শুনে শরীরের মধ্যে শিহরন দিয়ে উঠল। সত্যি ব্ল্যাকস দাদা এইরকম একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার না করলে কতকিছুই না মিস করতাম।
আমি চেষ্টা করেছি ভাই । কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি ,আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
কবিতাটির প্রত্যেকটি লাইন সত্যি ভালো লাগার মত। আপনি এই সুন্দর কবিতাটি খুবই সুন্দর ভাবে আবৃত্তি করেছেন, আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেলাম ভাইয়া। প্রত্যেকটা লাইন আমি খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। আর কবিতাটি আপনি এতটাই চমৎকারভাবে আবৃত্তি করেছেন যে শুনতে শুনতে আমি কবিতার ভেতরে যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম। সত্যি অসাধারণ ছিল ধন্যবাদ ভাই।
পাঠকের সন্তুষ্টি ,লেখকের আত্মতৃপ্তির বহিঃপ্রকাশ আরকি । শুভেচ্ছা রইল।
ভাই৷ পাহাড় চূড়ায় কবিতাটি আবৃত্তি আপনার কন্ঠ শুনতে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। বরাবরই আপনার কন্ঠ আমার খুবই ভালো লাগে। এই মিষ্টি কন্ঠে পুরো হ্যাংআউট মাতিয়ে রাখেন। আজকে আপনার কন্ঠে পাহাড় চূড়ায় কবিতা আবৃত্তি শুনে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনার আবৃত্তিটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।শুভকামনা রইল আপনার জন্য ভাইয়া।💗🌹
চেষ্টা করেছি ,তবে বেশ ভালোই বেগ পেতে হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনাকে ।