মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলেই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহতালার অশেষ রহমতে এখন মোটামুটি একটু সুস্থ রয়েছি। তবে সকালে আমার সাথে যে ঘটনা ঘটে গেছে মনে হচ্ছিল সাক্ষাৎ মৃত্যুর আগ মুহূর্তের সেই ঘটনাগুলো, যেটা আসলে এখনো মনে পড়লে আমার গা এখনো শিউরে উঠছে।
আজ সকাল আটটা থেকে আমার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তাই সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে ছিলাম। যেহেতু গত রাত থেকেই সামান্য একটু মাথাব্যথা ছিল তাই অনেক তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম এবং সকালবেলা উঠেই প্রতিনিয়ত যে ধরনের কাজ করি সেই কাজকর্ম করি। তবে না খেয়েই বাসা থেকে বের হয়ে পড়েছিলাম। প্রতিনিয়ত একই কাজ করি সকালবেলা বাসা থেকে দ্রুত বের হয়ে গিয়ে পরীক্ষার আগে কিংবা একটা পরীক্ষার পরেই আমি নাস্তা করে থাকি। তাই আজকেও ঠিক একই রুটিন ফলো করছিলাম। আমাদের নতুন বাজার এলাকায় গিয়ে আমি একটি পাঠাও কল করি। পরবর্তীতে সেই বাইকেই আমাকে ভার্সিটিতে নিয়ে যাওয়া শুরু করে। যেতে যেতেই কেন জানি শরীরের মধ্যে একটা আলাদা ধরনের ক্লান্তি এবং মাথা ঘোরা শুরু হয়।
ঠিক এমনটা হয়েছিল আজ থেকে মনে হয় ১৫ বছর আগে। একদিন ঈদের নামাজ পড়তে গিয়ে হঠাৎ করেই মাথা ঘুরে পড়ে যাই এবং অনেকক্ষণ অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকি। যখন ঈদের নামাজ শেষ হয়ে যায় পরবর্তীতে সবাই ধরাধরি করে আমাকে বাসায় নিয়ে আসে, এর পরে আমার জ্ঞান ফেরে। যাইহোক গুলশান ২ গুলশান এক হয়ে আমি মহাখালী রাস্তায় যাচ্ছিলাম তখনই শরীরটা হঠাৎ করে বেশ খারাপ লাগছিল। তারপরও নিজেকে সামলে নিয়ে বাইকের পিছনে বসে ছিলাম। যখন মহাখালী ওয়ারলেস গেটে আমাকে নামিয়ে দিলো আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমার সাথে কি হচ্ছে! আমি আস্তে করে মানিব্যাগ বের করতেই মাথায় এমন জোরে একটি চক্কর মারলো আমি রাস্তার মধ্যে উল্টো হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম।
আশেপাশের লোকজন ধরে আমাকে একটি ভ্যানে শুইয়ে দেয় এবং কোন এক মহৎ ব্যক্তি পানি এনে আমার মুখে পানি ছেটা দেয়। পরবর্তীতে হালকা একটু জ্ঞান ফিরলে সেই পানি দিয়ে একটু মুখ ধুয়ে নেই এবং কিছু পানি পান করি। এরপরে আস্তে আস্তে একটু ভালো লাগা শুরু করে কিন্তু কিন্তু অজ্ঞান হওয়ার আগে সেই অবস্থাটা আসলে কোন ভাবেই আমি লিখে বর্ণনা করতে পারছি না। শুধুমাত্র এতোটুকু আপনাদেরকে বলতে পারি, আমি আসলে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া শুরু করেছিলাম এবং আল্লাহর নামে কলমা পড়া শুরু করেছিলাম। মনে হচ্ছিল এই বুঝি আমার দেহ থেকে প্রাণটা বেরিয়ে যাবে।
আশেপাশের সব মানুষেরা যরো হওয়া শুরু করেছিল এবং সেই জায়গাটা আমাদের ভার্সিটির খুব কাছেই ছিল। আমি ফোন করে এক বন্ধুকে আমার কাছে ডেকে নিলাম, তারা একটু ধরাধরি করে আমাকে ভার্সিটির সামনে নিয়ে গেল এবং পরবর্তীতে সেখান থেকেই আবার সেই বাইকে করেই আমাকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করে দিল। দুর্ভাগ্যের বিষয় আজকে পরীক্ষা গুলো দিতে পারিনি। এই অভিজ্ঞতাটি আমার কাছে একেবারেই নতুন একটি অভিজ্ঞতা। আসলে কিভাবে কি ঘটে গেল সেটা আমি এখন পর্যন্ত ঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারছি না। শুধুমাত্র এটাই মনে হচ্ছিল যে আজকেই আমার এই পৃথিবীতে শেষ দিন।
VOTE @bangla.witness as witness
OR

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ......