নিমকি তৈরির রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজকে বেশ অনেকদিন পর আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি একটা রেসিপি। খাবারের কথা শুনলেই হয়তো সবার জিভে জল আসে। আবার কেউ কেউ বেশি খেতে পছন্দ করে না। আবার কারো খাবারের বাছাই আছে। সেই খাবারগুলো ছাড়া সে খেতেই চায় না। তবে আজকে যে রেসিপিটা শেয়ার করছি, ছোট-বড় মোটামুটি সবাই খুব ভালোবাসে খেতে। তবে হ্যাঁ দাঁত থাকতে হবে এর জন্য। আজকে আমি শেয়ার করতে চলেছি খাস্তা নিমকি রেসিপি।
নিমকি সাধারণত চায়ের সাথে দুর্দান্ত লাগে। আমরা যারা বাঙালি সকাল সন্ধ্যেবেলায় যাদের চা ছাড়া চলেনা। তারা জানে চায়ের সাথে এই টুকটাক খাবারের প্রয়োজনীয়তা। নিমকি কিন্তু সেই ধরনের একটা খাবার। বাঙালির ঘরে ঘরে দুর্গা পুজোর পরপরই নিমকি ঢুকে যায়। আসলে দুর্গাপুজোর পর থাকে লক্ষ্মীপূজো। লক্ষ্মী পূজার আগে বাড়িতে সকলে নাড়ু মোয়া মুড়কি তৈরি করে। এমনকি দুর্গা পুজোর বিজয়া দশমীতে বাড়িতে সদস্যরা আসলে সকলকে এ সকল খাবার এবং মিষ্টিমুখ করানো হয়।
আমি এই নিমকি লক্ষ্মী পূজার আগের দিন বানিয়েছিলাম। আর আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে খুব সুন্দর করে ধাপে ধাপে ভিডিও তৈরি করে নিয়েছিলাম। যেহেতু লোকজন অনেক বাড়িতে। তাই এতো এতো নিমকি বানিয়েছি। অনেক আগে দোকান থেকেই নিমকি কেনা হত। যবে থেকে নিমকি হাতেই তৈরি করতে পারি। তবে থেকে আর দোকানের আশায় বসে থাকি না। বাড়িতেই যখন এত খাস্তা নিমকি তৈরি করতে পারা যায়। তাহলে দোকান থেকে কেনার কোন মানে হয় না।।
লিংক
আপনারা বললে বিশ্বাস করবেন না, আমি বানানোর পরের দিনই আমাদের বাড়িতে নিমকির কৌটো ফাঁকা। আসলে সবাই কুটকুট করে এত খেতে থাকে। আর বাড়িতে লোকজন এত আসে। একদিনেই নিমকি শেষ। যাইহোক এবার আমি ধাপে ধাপে রেসিপিটা শেয়ার করি। আর ভালোভাবে বোঝার জন্য আপনারা অবশ্যই আমার ভিডিওটি আর একবার দেখে নিতে পারেন। প্রথমে উপকরণগুলো শেয়ার করছি ।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | ময়দা | দুই কাপ |
২ | নুন | ছোট এক চামচ |
৩ | চিনি | ছোট এক চামচ |
৪ | কালো তিল | এক চামচ |
৫ | বেকিং সোডা | ১/৪ চা চামচ |
৬ | সাদা তেল | চার চামচ |
৭ | জল | পরিমাণ মত |
৮ | ভাজার জন্য সাদা তেল | পরিমাণ মতো |
প্রথম ধাপ
প্রথমে একটি পাত্রে ময়দা নিয়ে নিলাম। তার মধ্যে দিয়ে দিচ্ছি নুন , কালো তিল এবং চিনি। পরিমাণগুলো উপরে উপকরণের লিস্টে দেওয়া আছে।
দ্বিতীয় ধাপ
এবার দিচ্ছি সাদা তেল,বেকিং সোডা। সাদা তেল দেওয়ার পর ময়দার সাথে হাত দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ
এবার আমি অল্প অল্প জল দিয়ে ময়দার এই শুকনো মিশ্রণটা মেখে নেব।। যেভাবে আমরা আটা ময়দা মাখি ঠিক সেরকম ভাবে মেখে নিতে হবে।
চতুর্থ ধাপ
মেখে নেওয়া হয়ে গেলে, রুটি করার সময় যেমন আমরা বড় সাইজের লেচি করে নিই, তার থেকেও একটু বড় লেচি করে নেব।
পঞ্চম ধাপ
আমি সেদিন যেহেতু ঠাকুরের ভোগের জন্য এই রান্না করছিলাম তাই ঠাকুরের বাসনেই করছিলাম। এ কারণে ইনডাকশনের রান্না হচ্ছিল। তাই আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন আমি ইনডাকশনের উপর একটি কড়াই বসিয়ে তারমধ্যে কিছুটা তেল ঢেলে নিচ্ছি। মোটামুটি এখানে এক কাপের একটু বেশি তেল আমি দিয়েছি। তারপর তেলটা গরম হতে দিলাম।
ষষ্ঠ ধাপ
এবার এক এক করে লেচি গুলো বেলতে থাকবো। ময়দার সাহায্যে একটা বেলে নেব।
সপ্তম ধাপ
রুটির মতন পাতলা করে বেলে নেওয়ার পর , চাকু দিয়ে আপনারা এবার আপনাদের পছন্দমত আকৃতি দিয়ে কেটে নিন। নিমকি যেমন দেখতে হয় আমি সেরকম ভাবেই কেটে নিয়েছি।
অষ্টম ধাপ
এবারে গরম তেলে মিডিয়াম থেকে হাই ফ্লেমে একটা লেচির থেকে যতগুলো নিমকি হল সবকটা একবারে ছেড়ে দেব। আর ভেজে নেব। হালকা হালকা লাল লাল করে ভাজতে হবে।
নবম ধাপ
এভাবে প্রত্যেকটা লেচি থেকে রুটির মতন করে নিয়ে, নিমকি আকৃতি দিয়ে আবার গরম তেলে ভেজে নিলেই নিমকি তৈরি হয়ে যাবে।
এবার আপনারাই দেখুন, কত সহজে এই রেসিপিটা তৈরি হয়ে গেল। তাহলে কেনই বা আমি বাড়িতে বানাবো না!? নিজের পছন্দের জিনিসগুলোকে নিজের হাতে তৈরি করতে সবথেকে বেশি ভালো লাগে। আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। আপনারাও বাড়িতে ঠিক এইভাবে একই প্রসেসে নিমকি বানিয়ে নিতে পারেন। আজ এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন।
সাধারণত আমাদের এখানে ফুটপাতে দোকানদাররা নিমকি ধরনের অনেক খাবার বিক্রি করে যেটা আমার কাছে স্বাস্থ্যসম্মত একদমই মনে হয় না। যে কারণেই দিনকে দিন এই সমস্ত খাবারের উপর থেকে যেন ভালোবাসা হারিয়ে যাচ্ছে। তবে হ্যাঁ ব্যতিক্রম কোন পরিবেশ বা অনুষ্ঠানের সময় খুব খেতে ইচ্ছে করে।
একদমই তাই আসলে এটা কতটা পরিমাণ খাওয়া হয়ে যাচ্ছে সেটা বোঝা বড় মুশকিল। যে কারণেই হয়তো আপনার তৈরি করে রাখা নিমকির পাত্র ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল।
এ ধরনের খাবার বাড়িতে তৈরি করতে পারলে সেটাই স্বাস্থ্যসম্মত। আপনি একদম সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দোকানে গিয়ে কিনে আনার থেকে বাড়িতে তৈরি করে। নিমকিতে ব্যবহার করা কালোজিরা আমার ভীষণ পছন্দের।
পাশাপাশি নিমকি তৈরির প্রত্যেকটি উপকরণ এবং ধাপ আপনি খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন ভিডিও এবং ছবির সাথে। আশা করি আপনার লেখাটা পরিদর্শন করার পর অনেকেই এটি তৈরি করতে পারবেন। আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম।
Your comment has been supported by THE QUEST TEAM. We support quality posts, good comments anywhere, and any tags
নিমকি গুলো দেখে জিভে জলে জল চলে আসলো। নিমকি খেতে আমি খুব পছন্দ করি ।বাজারে কেনা নিমকির চাইতে ঘরে বানানো নিমকি খেতে খুব সুস্বাদু হয় এবং বাসায় তৈরি নিমকি গুলো স্বাস্থ্যসম্মত। কিন্তু বাজারে তৈরি নিমকি স্বাস্থ্যসম্মত নয় ।আমি বাজারে কেনা নিমকি খাই না। বাসায় তৈরি নিমকিখাই।
আমি ও নিমকি তৈরি করতে পারি। কিন্তু সময়ের অভাবে ইচ্ছে থাকলেও করতে পারিনা ।আপনার মত বয়সে আমিও বাসায় অনেক কিছু তৈরি করতাম কিন্তু এখন আর পারিনা।
যাইহোক, নিমকি তৈরির পদ্ধতি আমাদের সকলের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ।ভাল থাকবেন।
Your post has been supported by THE QUEST TEAM. We support quality posts, good comments anywhere, and any tags
আমাকে মাকে দেখতাম নিমকি বানাতে। আজকে আপনার লেখায় সেই কথায় মনে পরে গেল।
আপনি খুবই চমৎকারভাবে নিমকি বানানোর রেসেপিটা ধাপে ধাপে দেখিয়েছেন।বিশেষ করে আপনার ভিডিওটা খুবই কাজে লাগবে।
ধন্যবাদ এত সুন্দর করে নিমকি বানানোর রেসেপিটা শেয়ার করার জন্য।
নিমকি আমারও খুব পছন্দের একটি খাবার। আমি যখনই সময় পাই তখনই দোকান থেকে নিমকি কিনে নিয়ে আসি।
আমার পরিবারের লোকজনও নিমকি পছন্দ করে। আপনার দেওয়া রেসেপি দেখে এখন বাসায় নিমকি তৈরি করতে বলবো। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর করে নিমকি তৈরি করার রেসেপি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
নিমকি খেতে আমি ভীষণ পছন্দ করি। তবে চায়ের সাথে সন্ধ্যা বেলায় বসে বসে নিমকি খেতে একটা অন্যরকম টেস্ট লাগে। এছাড়াও দুর্গাপুজোর পরে নিমকি মানেই একটা অন্যরকমই অনুভূতি। যাইহোক এই বছরে আমিও নিমকি বানানো শিখে গেছি। নিমকি প্রত্যেকটা উপকরণ ও ছবিসহ ধাপে ধাপে খুব সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছো। সুন্দর রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।