হঠাৎ ঘোরাঘুরি
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি হঠাৎ করেই একটি রেস্টুরেন্টে যাওয়ার ঘটনা।
বেশ কিছুদিন আগে বলতে গেলে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে, একদিন সন্ধ্যেবেলায় মন মেজাজ খুবই খারাপ ছিল। সকাল থেকে কলেজে গিয়ে প্র্যাকটিকামের চাপ তারপর স্যারদের অতিরিক্ত প্রাক্টিকামের প্রেসার দেওয়া আমি কিছুতেই আর হজম করতে পারছিলাম না। এই নিয়ে বাড়িতে রীতিমতো বাবার সাথে মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হয়। কারণ আমি প্রথম থেকেই এই এই কলেজে ভর্তি হতে চাইছিলাম না। কিন্তু বাবা এই কলেজটা কাছে আছে বলে এখানে জোর করে ভর্তি করিয়েছে।
আর এখন যত চাপ আমার ঘাড়েই পড়ছে। এসব নিয়ে মাঝেমধ্যেই বাবা মেয়েতে একটু আধটু ঝামেলা বাঁধতে থাকে। সেদিন কেউ তাই হয়েছিল। রাত যখন ন'টা থেকে সাড়ে নটা বাজে মন মেজাজ এতই খারাপ লাগছিল যে আমি জেঠুর বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম।। আসলে জেঠুর বাড়ি হাঁটা পথে মোটামুটি পাঁচ মিনিট। আর ওদিকে দিদিও যেহেতু আমার সাথে এই ট্রেনিং করছে ,তাই ওউ এসব প্রেসার ফেস করছিল। ওর বাড়িতে যাওয়ার আধঘন্টা আগেই ওর সাথে আমার অনেকক্ষণ কথাও হয়েছিল।
ওদের বাড়ির সামনে পৌঁছে দেখি জেঠু বড় গাড়িটা বার করেছে। এবার আমি জানতামই না ওদের বার হওয়ার কথা। আমি ভেবেছি ওরা বাড়িতেই থাকবে। হতে পারে আর একদম মিনিট লেট হলে আমি বাড়ির গেটে তালা ঝুলতে দেখতাম। আমি একেবারে বাড়িতে যেমন নরমাল ভাবে ছিলাম সেরকমই চলে গিয়েছিলাম জেঠুর বাড়ি দেখা করতে। এরা ওদিকে সেজেগুজে গাড়িতে উঠছে। আমাকে দেখে জোর জবরদস্তি গাড়ির মধ্যে তুলল।
আসলে ওরা মাঝেমধ্যেই রাতের দিকে ওদের বড় গাড়িটা নিয়ে ঘুরতে বের হয়। জেঠু যেহেতু খুব ভালো ড্রাইভ করতে পারে। তাই সমস্যা হয় না। আমার বাবা সে তুলনায় সেরকম ড্রাইভ করতেই পারে না। তাই আমাদের যেখানে যেতে হয়, ড্রাইভার লাগে। জেঠুর গাড়িতে উঠে জেঠিন ,জেঠু আর দিদির সাথে সমস্ত কথা শেয়ার করছিলাম। বাবার সাথে ঝামেলা কি নিয়ে সেগুলোও বলছিলাম।
নানারকম হাসিঠাট্টা আর দুঃখের কাহিনী আলোচনা করতে করতে হট করে দেখলাম গাড়িটা এক জায়গায় এসে দাঁড়ালো। তারপর দেখি ডানদিকে একটা বড় রেস্টুরেন্ট। আমার তো দেখেই হয়ে গেছে। কারণ আমি বাড়িতে যে অবস্থাতে ছিলাম সে রকম ভাবেই জেঠুর বাড়িতে এসেছি। ঠিকমত জামা পড়া ছিল না। মানে স্বাভাবিক ঘরে পড়ার জামা কাপড় আলাদা হয়ে থাকে। আর এছাড়া আমার ঠিকভাবে চুলটা পর্যন্ত আঁচড়ানো ছিল না। সব মিলিয়ে কি এক বাজে অবস্থা।
সবার মন মেজাজ ভালো করতে জেঠু এই রেস্টুরেন্টে দাঁড় করিয়েছে। এটা তো খুবই ভালো কথা। কিন্তু আমি এখন গাড়ি থেকে নামি কি করে। আর এদিকে জেঠু আর জেঠিন্ তো নাছোড়বান্দা। অবশেষে জেঠিনের কাছে একটি সাল ছিল। সেটাই মাথা দিয়ে মুড়ি দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে রেস্টুরেন্টের মধ্যে ঢুকলাম। কি এক অদ্ভুত কান্ড কারখানা। যাইহোক আমার তো ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছিল। কারণ ওরা সবাই ঠিকঠাকভাবে এসেছিল।
রেস্টুরেন্টটা আমি এর আগে কখনো দেখিনি। আসলে সেদিনকে জেঠু প্রায় কৃষ্ণনগর থেকে অনেকটা দূরেই নিয়ে এসেছিল। নবদ্বীপ ব্রিজ যে তে যে রাস্তা পড়ে সে রাস্তার দিকে। ওদিকে যে এত সুন্দর রেস্টুরেন্ট আছে আমি আগে জানতামই না। রেস্টুরেন্টের পরিবেশটা এতটাই অপূর্ব ছিল যে বলে বোঝাবার নয়। সবাই মিলে আমরা খাওয়া-দাওয়া যা যা করব সেগুলো অর্ডার করলাম।। আমার মুডটা এতই বাজে ছিল যে আমি আর সেরকম কিছু অর্ডার করিনি। ওরা ওদের পছন্দমত অর্ডার করেছে। আর সেগুলোই আমি খেয়েছি। তাও ঠিকভাবে খেতেও পারিনি।
আমরা নিয়েছিলাম ফিশ ফিঙ্গার, চিকেন হারিয়ালি, বাটার নান আর পনির বাটার মশলা। নান টা এরা এত সুন্দর সফট করেছিল। কৃষ্ণনগরে কোন রেস্টুরেন্টে এত ভালো নান আমি খাইনি। সব মিলিয়ে সবার সাথে ঘুরেফিরে খাওয়া-দাওয়া করে মনটা বেশ ঠান্ডা হলো। তারপরে জেঠু আর জেঠিন আবার আমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিল। যাওয়ার পথে জেঠু আমাকে বলল, শোন ঈশা,রাগ হলো লক্ষ্মী, তাই মাঝে মধ্যে একটু রাগ করতে হয়।
আর ওদিকে দিদি আমাকে বলল, ভাগ্যিস তুই এসেছিলি, না হলে বাবা আমাদের এদিক ওদিক ঘুরিয়ে বাড়ি ঢুকিয়ে দিত। তুই গিয়েছিলি বলেই রেস্টুরেন্টে ঢোকা হয়েছে, আর খাওয়া-দাওয়া হয়েছে। বুঝতে পারলাম ঠাকুর যা করে মঙ্গলের জন্যই করে। কি সুন্দর একটা ছোট্ট খাটো ঘোরাঘুরি হয়ে গেল। আর আমার পোস্ট যারা পড়ে থাকেন, তারা হয়তো জানবেন আমি কতটা ভালোবাসি ঘোরাঘুরি করতে। যাইহোক পরবর্তীতে একটু ঠিকঠাক ভাবে মন মেজাজ ঠিকঠাক রেখে বাড়ির সবাইকে নিয়ে এ রেস্টুরেন্টে আবার যাওয়ার ইচ্ছা আছে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন।
প্রথমেই জানি আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার কষ্টের কথাগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। এইটা সত্যিই, অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন কাজ করা ভালো না, আর ওই কাজটি মন দিয়ে করা যায় না। যদি মন দিয়ে না করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল আসেও না। আমি মনে করি, এই কলেজটি আপনার জন্য খুব প্যারা হয়ে উঠেছে বা মাথা ব্যথার কারণ হয়েছে এখন। আপনি যখন ভবিষ্যতে এই কলেজ থেকে ভালো একটি রেজাল্ট নিয়ে বের হবেন। সবচাইতে বেশি এই কলেজ কে আপনি মিস করবেন, কেননা মন খারাপ হলে চলে যেতে পারেন জেঠুর বাসায়। মনের কথাগুলো তাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। পরিবারের সাথে থাকেন তাদের কাছে শেয়ার করতে পারেন। দূরে কোথাও কলেজে গেলে। তখন কাছের মানুষগুলি পাবেন না, মনের কথাগুলো আর বলতেও পারবেন না। আর ঘোরাঘুরি সবারই করা উচিত, ঘোরাঘুরি করলে মন ভালো হয়ে যায় এটা সত্য কথা, আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন।
🤖 @isha.ish - great post as always! 💪 🌟
Come check out your post on my brand new front-end! It's still fresh, so there might be some bugs. View post