সঠিক পথ পদর্ষক তারাই যারা নিজেকে জাহির করে নয়, অন্যের উন্নতিকে উন্নত দৃষ্টিতে দেখেন।

in Incredible India2 years ago
IMG_20230212_152741.jpg

প্রিয় বন্ধুরা,
রবিবাসরীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের লেখা শুরু করছি। লেখার মাধ্যমে নিজের কথা প্রকাশের প্রয়াস বলতে পারেন। তবে শুধু মুখে আলোচনা ঠিক জমে না, তাই নিজেও বিকেলের চায়ের টেবিলে আপনাদের স্বাগত জানিয়ে নিজের কথাগুলো আড্ডার ছলে প্রকাশের চেষ্টা করবো।

তাহলে চলুন চায়ে চুমুক দিতে দিতে, আলোচনা এগোনো যাক, তবে জানিয়ে রাখি মন্তব্য আমার কিন্তু অভিমত সকলের ভিন্ন হতেই পারে এবং সেক্ষেত্রে আমার কোনো অভিযোগ নেই।

গতকাল শনিবার ছিল এবং আমার এক বনাধুর বাড়িতে আলোচনা সভা বসেছিল, যেখানে উপরিউক্ত নির্ধারিত শীর্ষকটি ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু।

আপনারা খেয়াল করেছেন গতকাল আমি আমার লেখা ভাগ করে নিতে পারিনি, তার কারণ আজ খুব সকালে বিএনাধুর বাড়ি থেকে ফিরেছি, গতকাল বনাধূর বাড়িতে থেকে যেতে হয়েছিল।

তাই আর নিজের লেখা নিয়ে হাজির হীবার সময় পাই নি, যাইহোক, আমাদের বন্ধুরা সর্বসাকুল্যে ছিল মত ৫জন আমাকে নিয়ে।

তাদের মধ্যে একজন কাল যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেই নিজেকে পারদর্শী সাব্যস্ত করবার একটা প্রয়াস সমানে করে যাচ্ছিল।

অনেকক্ষণ সহ্য করবে পরে আর না থাকতে পেরে বলেই বসলাম যে মানুষ নিজেকে নিজেই বেশি জানে বলে দাবি করে সেটা তার অহঙ্কারের পাশাপশি তার অজ্ঞতার পরিচয় বহন করে।

IMG_20230106_204810.jpg

প্রকৃত পক্ষে আমরা না তো ভগবান আর না গুগল যে সব বিষয় পারদর্শী হবো, আরো জানালাম, যিনি প্রকৃত জ্ঞানী তিনি নিজের জ্ঞানের ঢোল নিজে বাজিয়ে বেড়ায় না, তিনি এবং তার কজের প্রশংসা যেদিন নিঃস্বার্থ ভাবে কেউ করবে সেটাই প্রকৃত জ্ঞানীর পরিভাষা।

কোনো মানুষ অর্থ, ক্ষমতা দিয়ে তার প্রশংসা কিনতে পারেন কিন্তু কখনোই বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ পরমহংস হতে পারেন না।

তারা নিজেদের প্রসংশা পেতে নিজেদের অর্থ, বৈভিবকে কখনো কজে লাগান নি, নিজেরাই সর্বজ্ঞানী বলে জাহির করেনি কখনো।

মানুষ তাদের নীতিকে অনুসরণ করেছিলেন নিঃস্বার্থ ভাবে, তাদের ক্ষমতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নয়।
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলার পরে আমার বন্ধু বেশ কিছুক্ষণ বাকরুদ্ধ ছিল।

কথাটি কেবল এই একটি মানুষ নয় সমগ্র মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, আমি জানিনা, আমার আরো অনেক কিছু শেখা বাকি এটা হলো প্রকৃত জ্ঞানীদের ভাষা।

কিন্তু ক্ষমতার জোরে যারা ভক্তের ভীড় বাড়ান, তারা ভুলে যান এইসকল ভক্তদের টিকি খুঁজে পাওয়া যাবে না যেদিন ক্ষমতাচ্যুত হবেন এইসকল ব্যাক্তিরা।

আরো এক শ্রেণীর মানুষ আছেন যারা অন্যের কর্মের গুণাগুণ নিয়ে সমালোচনা করেন, দেখবেন টিভির পর্দায় বিচারক বসেন, তারা খাদ্য, গান ও নাচের বিষয় নিয়ে নিজেদের মতামত দিয়ে থাকেন।

কার গানের কোথায় কি ঠিক করতে হবে, কার নাচের কোন মুদ্রা সঠিক হয়নি ইত্যাদি ইত্যাদি।

প্রকৃত পথ পদর্ষক হতেও যোগ্যতা প্রয়োজন:-

(ক্ষমতার পদর্শন করে ভক্তের ভীড় বাড়ান কোনো কৃতিত্ব নয়)
IMG_20230130_000252.jpg

IMG_20230118_201731.jpg

আপনারা কোনোদিন দেখেছেন লতা মঙ্গেশকর কোনো গানের প্রতিযোগিতায় বিচারক হয়ে এসেছেন কখনো, তারমানে কি তিনি গান বোঝেন না?

নাকি তিনি গানের জগতে অজ্ঞ, তিনি নিজেকে সারাজীবন একজন ছাত্রী হিসেবে দেখে গেছেন, আর এটাই হলো প্রকৃত জ্ঞানীর পরিচয়।

আমি জানি, একথায় কোনো অহঙ্কার নেই, তবে শুধু আমি জানি, বা আপনার থেকে ভালো জানি এটা মূর্খতার পরিচয় বহন করে।

কারণ এই পৃথিবীতে কেউ দাবি করতে পারে না কোনো বিষয় তার চাইতে জ্ঞানী আর কেউ নেই।
কাজেই আমার মনে হয় শিক্ষা নয় আচরণ একজন মানুষের জ্ঞানের মাপদন্ড।

যারা অন্যের কাজের ভুলকে না ধরিয়ে সেটা নিয়ে নিজের জ্ঞানের প্রচার করেন, তারা প্রকৃত অর্থে মূর্খ এবং ক্ষমতার অহঙ্কার রাঙা তাদের জীবন, আদপেও জ্ঞানের ভাড়ার শূন্য।

উপরিউক্ত মতামত আমার আমার জীবনের অর্জিত অভিজ্ঞতা দ্বারা সঞ্চয় করা, ভিন্ন মতামত থাকতেই পারে।

অবশেষে বলবো, একজন প্রকৃত জ্ঞানী শিক্ষক কখনোই ছাত্রকে শিক্ষা প্রদানের সময় তাকে ছোটো করেন না, বরঞ্চ তার যথাসাধ্য দিয়ে তাকে প্রকৃত মানুষ করে গড়ে তুলবার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।

আজ এখানেই শেষ করলাম, ভালো থাকবেন সবাই।

Sort:  
Loading...
 2 years ago 

আপনার কষ্টে আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনেক কথা শেয়ার করেছেন যেটা পড়ে আমাদের কাছে বেশ ভালও লাগলো এবং অনেক কিছু শিখতেও পারলাম।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা শিক্ষনীয় পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।