রেসিপি পোস্টঃ ডুমুর ফল ভুনা রেসিপি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব।

🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001

আজ ০৮ মার্চ ২০২৪ ইং: রোজ সোমবার ।

বাংলায় ২৫ চৈত্র ১৪৩০ খ্রিষ্টাব্দ।

আরবি ২৮ শাবান ১৪৪৫ হি:।


আমার বাংলা ব্লগে সকল সদস্য বৃন্দ......

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। দেখতে দেখতে আমাদের মাঝ থেকে রোজার বিদায় নিতে চলেছে। যদি রোজা পরিপূর্ণতা পায় তাহলে দুইটা আর যদি না হয় তাহলে একটি রোজা বাকি থাকলো। জানিনা এই রমজান মাস আর ফিরে পাবো কিনা। আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে রমজানে ওছিলায় আমাদের মাফ করে দেন (আমিন)।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি রেসিপি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। রেসিপি তৈরি করতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। তার থেকে বেশি ভালো লাগে খেতে। আজকে আমি ডুমুর রান্না করা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আমার জীবনের প্রথম আমি ডুমুর রান্না করলাম। এর আগে কখনো রান্না করিনি এবং ডুমুর খাইনি। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে কিভাবে আমি ডুমুরের রেসিপি তৈরি করলাম সেটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।

ফাইনাল লুক

IMG_20240408_145618.jpg


প্রয়োজনীয় উপকরণপরিমান
ডুমুর২৫০গ্রাম
আলু১পিচ
কাঁচা মরিচ৫-৬টা
পেয়াজবড় সাইজের ১ পিচ
আদাপরিমান মতো
রসুন১পিচ
হলুদ১ টেবিল চামুচ
গুড়া ঝাল১ টেবিল চামুচ
ধনিয়ার গুড়া১টেবিল চামুচ
এলাচ২ পিচ
লবনপরিমান মতো
দারুচিনিপরিমান মতো
তেজপাতা২ টা


প্রথম ধাপ

আমি ডুমুর গুলা গোল গোল করে কেটে নিয়েছি। আপনারা চাইলে ডুমুরের বীজগুলো ফেলে দিতে পারেন। অনেকে ডুমুরের বীজ পছন্দ করে না খেতে অনেকটা বালি বালি লাগে। আমি যে ডুমুর রান্না করেছি ডুমুরের ভেতর বীজ তেমন একটা ছিল না যা ছিলো সেগুলা নরম এই জন্য
আমি বীজ সহ কেটে নিয়েছি।

এরপর আমি একটা আলু সুন্দর করে ডুমুরের সাইজে কেটে নিয়েছি

দ্বিতীয় ধাপ

এবার একটি পাত্রে অল্প পরিমাণ পানি নিয়ে তার ভেতরে একটু লবণ ও হলুদের গুড়া দিয়ে ভালোভাবে পানি সাথে মিশিয়ে নিয়েছি। এরপর আগে থেকে কেটে নেওয়া ডুমুর গুলা পানির ভেতরে দিয়ে নাড়াচাড়া করে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিয়েছি৷ এটা করার কারন হলো যেনো তোর থেকে সব আঠা বের হয়ে যায়।

তৃতীয় ধাপ

এরপর ডুমুর গুলা হলুদ পানি থেকে তুলে একটি পাত্রে পানি দিয়ে চুলার উপর বসিয়ে ডুমুর গুলা ৭০% এর মতো সিন্ধ করে নিয়েছি।

চতুর্থ ধাপ

IMG_20240330_122244.jpg

এরপর আমি একটি পাত্র চুলার উপর বসিয়ে তার ভেতরে তেল দিয়ে প্রয়োজনীয় সবগুলো মসলা উপাদান গুলা দিয়ে সুন্দর ভাবে নাড়াচাড়া করে মসলা গুলা একসাথে কষে নিয়েছি।

পঞ্চম ধাপ

IMG_20240408_153235.jpg

মসলার রঙ বাদামী হয়ে গেলে আমি ডুমুর ও আলু পাত্রের ভেতর দিয়ে সুন্দর করে নাড়াচাড়া করে নিয়েছি। এই সময় চুলার আঁচ একটু কমিয়ে রেখেছি। খেয়াল রাখতে হবে যেন ডুমুর এবং আলু কড়াইতে লেগে না যায়। এভাবে অনেকক্ষণ নাড়াচাড়া করতে হবে।

ষষ্ঠ ধাপ

এক পর্যায়ে সুন্দরভাবে কষানো হয়ে গেলে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে চুলার তাপ একটু বাড়িয়ে দিয়ে জ্বাল করে নিয়েছি। এবার ডুমুর ও আলু পুরোপুরি সেদ্ধ না পর্যন্ত এভাবেই আস্তে আস্তে জ্বাল করে নিয়েছি। এভাবে জ্বাল করে নেয়ার পর ডুমুর গুলো সেদ্ধ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিয়েছি।

সপ্তম ধাপ

IMG_20240408_154903.jpg

এবার খাবারটি পরিবেশন এর জন্য প্রস্তুত। ডুমুরের তরকারি আমি আমার জীবনে এই প্রথম খেলাম। তাও আবার সেটা নিজের হাতে রান্না করে। এর অনূভুতি বলে শেষ করা যাবে না। ভাবছিলাম খেতে হয়তো তেমন একটা স্বাদ হবে না। কারন এর আগে না কখনো খেয়েছি না রান্না কখনো রান্না করেছি।

যাই হোক রান্নাটা বেশ ভালোই হয়েছিলো। যা ভেবেছিলাম তার থেকে অনেক বেশি স্বাদ হয়েছিলো। যদিও আমি ডুমুরের তরকারি একবারের বেশি খেতে পারি নাই। কারন এই রেসিপিটা রোজার ভেতর করেছিলাম।

পোস্টের ধরনরেসিপি পোস্ট
তৈরিকারকমোঃ আশিকুর রহমান
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনপাবনা


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জুগির গোফা গ্রামে বাস করি। সবুজ শ্যামলে ঘেরা আমাদের গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমি একজন সরকারি চাকরিজীবি। আমি চাটমোহর ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত আছি। আমি বিবাহিত। আমার একটি ছেলে আছে। আমি আমার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বসবাস করি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার করা পোস্টটি দেখার জন্য। সবার জন্য দোয়া রইলো সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিনদের। যারা আমাকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছে। আবারও ধন্যবাদ যানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের সকল কর্মরত সদস্যদের। লেখার ভেতর ভুল ত্রুটি হতে পরে। সেক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । দোয়া করি সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।


১০%প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।



Logo.png

Banner_New.png

20230619_1852241.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 years ago 

ওয়াও আপনি আমাদের মাঝে আজকে নতুন একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন। ডুমুর ফলের কোনদিন ভুনা খাইনি। আজকে প্রথম আপনার পোস্টে এই রেসিপি দেখতে পেলাম। ডুমুর ফলের ভুনার কালার দেখে বুঝা যাচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। ধাপ গুলোও সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনার মুল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ডুমুর ফল রান্না কখনো খেয়েছি বলে মনে হয় না। আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। দেখি এভাবে একদিন অবশ্যই রান্না করে খাব।ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

জ্বি আপু অবশ্যই রান্না করে খাবেন। ভালো করে রান্না করতে পারলে খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। ডুমুর খেকে অনেক রক্ত হয় নাকি।

 2 years ago 

মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ডুমুর ফল ভুনা রেসিপি তৈরি করে। আসলে মামা আমি কখনো এই ডুমুর ফলের রেসিপি তৈরি করে খাইনি তাই তৈরি দেখেই বেশ অবাক হলাম। আপনার রেসিপি তৈরীর পদ্ধতি দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু হবে মামা। এত সুন্দরভাবে ইউনিক একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মামা।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

একদিন রান্না করে খেয়ে দেখতে পারো। আশা করি খারাপ লাগবে না। অসংখ্য ধন্যবাদ মামু তোমার সুন্দর গঠন মূলক মতামতের জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন আমরা কেউই জানিনা আগামী রমজান আমরা পাব কিনা ।যাইহোক আপনার আজকের ডুমুরের ফল ভুনা রেসিপিটি আমার কাছে ভীষণ ইউনিক লেগেছে। ডুমুরের ফল খাওয়া যায় এটি আমি জানতাম না ।আজই আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম। যদিও আপনি এই প্রথম রান্না করেছেন এবং খেয়েছেন ।তবে এটি যে সত্যিই খাওয়া যায় আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না ।যাই হোক আপনার রেসিপিটি দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

তবে এটি যে সত্যিই খাওয়া যায় আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।

হ্যা আপু এই ফল সত্যি খাওয়া যায়। এবং এর অনেক উপকাররিতা রয়েছে। ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

ডুমুর ফলের মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। এই ডুমুর ফল কাঁচা খেতে ও ভীষণ ভালো লাগে। তাছাড়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে ডুমুর ফলের ভুনা তৈরি করেছেন। রেসিপিটি দেখতে ভীষণ লোভনীয় লাগছে। ধন্যবাদ তৈরির প্রতিটি ধাপ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য।

 2 years ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার প্রশংসা মূলক মন্তব্য শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

 2 years ago 

ডুমুর ফল গ্রাম অঞ্চলে অনেক পাওয়া যায়। সাধারণত এই ফল গুলো খাওয়া হয় না। তবে অনেকে কাঁচা অবস্থায় লবণ মরিচ দিয়ে খেয়ে থাকে। ডুমুর ফল ভুনা রেসিপি দেখে খুব ভালো লাগলো। নিশ্চয়ই বেশ মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে। রন্ধন প্রক্রিয়া খুবই দুর্দান্ত হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর রেসিপি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য। লেখার ভেতর একটু ভুল আছে আশা করি দেখে ঠিক করে নিবেন।

 2 years ago 

আপনি অনেক ইউনিক একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। ডুমুর ফল তো এখন দেখা যায় না বিলুপ্ত হয়ে গেছে প্রায়। এর আগে কখনো ডুমুর ফল খাওয়া হয়নি স্বাদ কেমন সেটা জানি না। তবে আপনার রেসিপি দেখে বোঝা যাচ্ছে সুস্বাদু। আপনি খুব সুন্দর ভাবে আপনার রান্নার পদ্ধতি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

হ্যা ভাই মোটামুটি ভালই লাগে খেতে। ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ডুমুরের ফল ভাজি, অনেকদিন খাওয়া হয়নি। আমার মনে আছে অনেক ছোটকালে তোমারে ফল ভাজি খেয়েছি। তবে ডুমরে ফল ভাজি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। ছোটবেলায় যে ডুমরে ফল ভাজি খেয়েছি সেই স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে। আপনি আজকে খুব চমৎকার করে ডুমুরের ফল ভুনা রেসিপি তৈরি করেছেন। রেসিপি ধাপ গুলো সুন্দর করে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

ছোট কালে কার হাতের ডুমুরের রান্না খেয়েছেন ভাই? ধন্যবাদ ভাই আপনার প্রশংসা মুখরিত মতামত শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

খুবই দুর্দান্ত একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাইয়া।ডুমুরের ফুল ভুনার দারুণ একটি রেসিপি তৈরি করেছেন।যদি কখনো খাওয়া হয়নি তবে দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে।বেশ লোভনীয় লাগছে দেখতে।খুবই মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাইয়া।প্রতিটা ধাপ খুবই নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার প্রশংসা মুখরিত মতামত শেয়ার করার জন্য। আপনার মূল্যবান মতামত আমাকে কাজের প্রতি আরও যত্নশীল করে তুলবে। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

 2 years ago 

ডুমুর ফল অনেক উপকারী একটি ফল।আমি কখনো এই ফলের এভাবে ভুনা খাইনি তবে সবজি তরকারিতে খেয়েছি অনেক বছর আগে এবং চাটনি খেয়েছি খুব ভালো লেগেছিলো খেতে।আপনার ডুমুর ফুল ভুনা রেসিপিটি দেখে মন চাচ্ছে এভাবেই একদিন বানিয়ে খেতে হবে।অনেক লোভনীয় হয়েছে রেসিপিটি। ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান অভিমত ব্যাক্ত করার জন্য।