গল্প :- আত্মহত্যা কোন সমাধান না। (শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমাদের আশেপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেই ঘটনা গুলো অনেক সময় শিক্ষনীয় হয়ে থাকে। কখনো কখনো দুর্ঘটনা, আবার কখনো মর্মান্তিক ঘটনা। এজন্য আজকে আবার ও একটা কাহিনী নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আমার লেখাটা পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


funeral-2511124_1280.jpg

এর আগে আপনাদের মাঝে প্রথম পর্বে শেয়ার করেছিলাম। আজকে আবারো পরের পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। এরপর সেলিনা একদিন তার মাকে বলতেছে তার পছন্দের ছেলের কাছে বিয়ে না দিলে তাহলে সে আত্মহত্যা করবে। তার মা তাকে বোঝানোর অনেক চেষ্টা করল। বলতেছে তোমার বাবা কখনো ওই ছেলের কাছে তোমাকে বিয়ে দেবে না। আর ছেলেটি এখনো লেখাপড়া করতেছে এবং তার কোন কাজকর্ম নেই। আর ছেলেটি তোমার সমবয়সী তার বয়সও তেমন বেশি হয় নাই। তবে সেলিনা এসব কথা শুনতে রাজি না। সে বলতেছে তার কাছেই তাকে বিয়ে দিতে হবে। এদিকে সেলিনার ভালোবাসার মানুষটি গরিব ফ্যামিলি এই কারণে তেমন চালক নয়।

একদিন রাতের বেলা হঠাৎ করে সেলিনা তার মায়ের সাথে আজেবাজে কথা বলতেছে ।এবং জ্যাঠা তো ভাইয়ের কাছে বিয়ে বসবে না। এরপর সেলিনার মা তাকে জোরে একটি থাপ্পড় মারলেন। তুমি মেয়ে হিসেবে আমার সাথে এরকম ব্যবহার করতেছো। তখন মেয়েটি জিদ করে বলতেছে আমার এই জীবন রাখবো না। যদিও সেলিনা দের ঘর হচ্ছে বিল্ডিং। এবং সেলেনার মা দেখতেছে মেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে আছে। আর পরিবারের সবাই খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লেন। ভোরবেলা পাশের বাড়ির একজন লোক এসে চিৎকার করতে করতে বলতেছে। আপনারা ঘুমিয়ে আছেন জলদি উঠুন। সেলিনা আমাদের গাছের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

তবে সবাই কথাগুলো শুনে তাড়াতাড়ি তাদের বাড়ির দিকে যাচ্ছে। আর বিল্ডিং এর কারণে সেলিনার মা কথাগুলো শুনতে পাইনি। পরে সবার আওয়াজ শুনে বাহির হয়ে জিজ্ঞেস করতেছে কি হয়েছে। তখন একজন মহিলা বলতেছে সেলিনা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কথাটি শুনে তার মা পাগলের মত ঐদিকে গেলেন। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে রাত্রে ঘর থেকে বাইর হয়ে সেলিনা আত্মহত্যা করেছে। তবে ঘরে মা নানু কেউ বুঝতে পারে নাই। হয়তোবা রাতের বেলা সবাই খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে গেল। এদিকে এলাকার মানুষ থানার পুলিশ এক হয়ে গেল। সত্যি বলতে সেলিনার মা পাগলের মত হয়ে গেল।

তারপর থানা থেকেও অনুমতি নিয়ে তাকে দাফন করা হলো। তবে মায়ের কান্না যেন পরিবেশ অনেক ভারী হয়ে গেল। কিছুদিন পর সেলিনার বাবা বাড়িতে আসলো। মেয়ের বিয়ের জন্য সব কেনাকাটার জিনিস আমেরিকা থেকে নিয়ে আসলো। বাবা আসার পর সবার সাথে খুব হাসিখুশি কথা বলতেছে। একসময় তার বাবা জিজ্ঞেস করতেছে আমার মেয়েকে কেন দেখতেছি না। তখন সবাই চুপ রইলো। কিছুক্ষণ পরে আবার জিজ্ঞেস যখন করতেছে তখন বলতেছে সেই আত্মহত্যা করেছে। মুহূর্তের মধ্যে তার বাবা পাগলের মত হয়ে গেল। আসলে বাবা চাইলেও তার আত্মীয়ের কাছে বিয়ে দেওয়ার জন্য।

আর এমন ছেলেকে সে পছন্দ করে সেই এখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নাই। এই কারণে তার বাবা মা রাজি ছিল না। হয়তোবা তার মেয়ের পছন্দ কে তারা প্রাধান্য দিলেও পারতেন। কিন্তু তারা প্রাধান্য দিয়েছে ভাইয়ের ছেলের কাছে তাকে বিয়ে দেবে। তবে সেলিনা অনেক জেদি মানুষ ছিল। সে অল্পতেই অনেক রাগ করে। তবে বাড়ির মানুষদের সাথেও মাঝেমধ্যে অনেক রাগ করতেন। আসলে কিছু কিছু প্রেম করা ভালো তবে বেশি আবেগি হওয়া ভালো নয়। সেলিনা এই দুনিয়া থেকে চলে গেলেন ঠিক। তার মা-বাবা দুজনকে পাগল করে দিলেন। সারাক্ষণ মেয়ের জন্য তারা কান্নাকাটি করতেন। যদিও বর্তমান সময়ে তার সম্পূর্ণ পরিবার আমেরিকাতে থাকে। আমার শাশুড়ির মুখ থেকে শুনেছি এখনো বাড়িতে আসলে তার মা মেয়ের জন্য কান্নাকাটি করে। তাই আমি মনে করি আত্মহত্যা কোনো সমাধান না। আশা করি আমার বাস্তব গল্পটি পড়ে আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG-20211226-WA0000.jpg

আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজার নাম @bdwomen। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।

35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 3 days ago 

IMG_20241219_181519.jpg

 3 days ago 

আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছে এই গল্পটা পড়ে। আসলে আত্মহত্যা কখনো কোনো কিছুর সমাধান হয় না। মেয়েটা এরকম ভাবে শেষ পর্যন্ত মারা গেল এটা ভাবতেই তো খারাপ লাগছে। তার বাবা মায়ের কোল খালি করে চলে গেল। এত বছর ধরে তার বাবা-মাতা তাকে পালন করেছে, কিন্তু সে আত্মহত্যা করল। খুব সুন্দর করে লিখেছেন আপনি গল্পটা।

 2 days ago 

এই গল্পের প্রথম পর্বটা পড়া হয়েছিল। আজকে গল্পের দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ শেষ পর্ব পড়তে অনেক ভালো লাগলো আবার অনেক খারাপ লেগেছে। কারণ মেয়েটা শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনটাকে শেষ করে দিয়েছে। তার বাবা-মা তাকে সত্যি অনেক বেশি ভালোবাসতো। শুধুমাত্র ভালোবাসার মানুষটাকে মেনে নিতে পারেনি, কারণ সে প্রতিষ্ঠিত ছিল না।