নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন শুরু হলো শুভ বিবাহের আনন্দ উপভোগ করার মধ্য দিয়ে:-পর্ব-০২

in আমার বাংলা ব্লগlast month



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ মঙ্গলবার। ২৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।


IMG_20240414_170255_329.jpg



বরকে শরবত পান করানোর সময় আমি ঝালের শরবত সরিয়ে রাখতে সক্ষম হলেও লবণের শরবত চিনতে পারনি। তাই লবণ দিয়ে তৈরি শরবতের গ্লাসটি থেকে যায়। আর শরবত পান করানোর মুহূর্তে আমাদের নতুন বর প্রথমে লবণের শরবতটি হাতে নিয়েছিল। বেচারা লবণের শরবত মুখে দেওয়ার সাথে সাথে মনে হলো যেন তার জিভে পুড়ে গেল। নতুন বরের লবণের শরবত খাওয়া দেখে সামনে উপস্থিত শ্যালিকারা হাসাহাসিতে মেতে উঠলো। তাদের এরকম আচরণে রেগে গিয়েছিলাম আমি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। বরং বিপদ আরো বেড়েছে। মিষ্টি শরবত ভেবে পরবর্তীতে যে গ্লাসের শরবত পান করতে দিয়েছিলাম সেটা ছিল ঝালের শরবত। ঝালের শরবত মুখে দেয়ার পর বেচারা নতুন বর আমার দিকে তাকালো। বুঝতে পারলাম নতুন বর ঠান্ডা পানি চায়। তাই খুব দ্রুত টিউবয়েল থেকে এক গ্লাস পানি এনে তাকে পান করালাম।

IMG_20240414_173151_175.jpg


এরপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে, নতুন বরকে দিয়ে আর কোন শরবত পান করাবো না। আসলে খুব কৌশল করে নতুন বরকে লবণ ও ঝালের শরবত খাওয়ানোর জন্য টেবিলের উপর কোন মিষ্টি শরবতই রেখেছিল না। বিয়ের দিন গেটের সামনে নতুন বরকে নিয়ে এরকম আনন্দ করবে এটাই স্বাভাবিক। যদিও আনন্দটা হয়ে গিয়েছিল এক তরফা। শুধুমাত্র নতুন বরের শ্যালিরাই মনের মতো করে আনন্দ করতে পেরেছে। যাহোক শরবত পান করানোর পর্ব শেষ করে নতুন বরকে মিষ্টি খাওয়ানোর পর্ব শুরু হলো। বাড়ির বয়স্ক এবং অভিভাবকদের হাত দিয়ে নতুন বরকে মিষ্টি খাওয়ানোর কাজ সম্পন্ন করেছিলাম। যেহেতু পহেলা বৈশাখের দিন বেশ গরম ছিল। তাই উপস্থিত সকলের মধ্যে একপ্রকার বিরক্ত চলে এসেছিল। এর জন্য মিষ্টি খাওয়ানোর কাজ এবং ফিতা কাটার মুহূর্তটি বেশ সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করেছিলাম।

G5tlGAWwnrWTPgLTViaTZvbXKCU.jpg


ফিতা কাটার পরে নতুন বরসহ বরপক্ষের সকলকে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করতে দেওয়ার পূর্বে উপস্থিত ছোট ভাই-বোনেরা ৫ হাজার টাকা দাবি করে বসলো। যদিও গেট সাজানোর প্রধান মানুষ ছিলাম আমি, কিন্তু টাকা আদায় করার পক্ষপাতী আমি ছিলাম না। তাই মনের অজান্তেই বলে ফেলেছিলাম, কোন টাকা পয়সা দেওয়া লাগবে না, আপনারা সবাই ভিতরে চলে আসেন। আর এই কথা বলার সাথে সাথে আমার উপর এক প্রকারের টর্নেডো হয়ে গেল। মনে হলো ওরা আমাকে আসমান ছাড়া করে দেবে। আমার কয়েকজন শালা ও শ্যালিকা সরাসরি বলে দিলো, "দুলাভাই, নতুন বর পক্ষদের টাকা দেওয়া লাগবে না, টাকাটা আপনি আমাদের দিয়ে দেন। শুধু এই কথাই নয়, আরো অনেক প্রকারে কটু কথাও আমাকে শুনতে হল। তারপর আমিও একটু চিন্তা ভাবনা করে বললাম, বিয়ের গেটের টাকা দিতে হয় বিয়ের সময়, তাহলে তোমরা আমার জন্য একটা কনে প্রস্তুত করো অথবা তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে বিয়ে করার জন্য নতুন বউ সেজে প্রস্তুত হও।

IMG_20240414_164617_101.jpg

IMG_20240414_164618_047.jpg


তারপর এক অন্যরকম হাসি আনন্দের আবির্ভাব হয়ে গেল। কেউ দাঁত বের করে হি হি করে হাসতে লাগলো, আবার কেউ মুখে হাত দিয়ে হাসতে হাসতে মাথা নিচু করে ফেললো। যেহেতু বিয়ের দিন, আর বিয়ের দিনে দুলাভাই আর শ্যালিকাদের মধ্যে এরকম হাসির দৃশ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমাদের হাসির মুহূর্তটি নতুন বরপক্ষরাও বেশ আনন্দের সাথে উপভোগ করেছিল। তারপর তিন হাজার টাকার বিনিময়ে গেটের ঝামেলাটি মিটে গেল। তারপর নতুন বরসহ বরযাত্রীদের সম্মানের সাথে বসার জায়গা দেয়া হলো। কিছুক্ষণ পর উপস্থিত সকলের মাঝে নাস্তা পরিবেশন করা হয়েছিল। নাস্তা খাওয়া শেষ হওয়ার আগেই স্থানীয় এলাকার বিয়ে পড়ানোর কাজী ও হুজুর উপস্থিত হয়েছিল।

IMG_20240414_161045_121.jpg

IMG_20240414_161046_463.jpg


নাস্তা শেষ করার পরপরই বিয়ে পড়ানোর কার্যক্রম শুরু হলো। বিয়ে পড়ানোর সময় বিয়ে বাড়ির সকল আনন্দ উল্লাস যেন কিছুটা সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল। উপস্থিত আমরা সকলেই বিয়ে পড়ানোর মুহূর্তে কাজী ও হুজুরদের মূল্যবান কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। একই সাথে সকলের অর্থাৎ ছেলে পক্ষের এবং মেয়ে পক্ষের অভিভাবকদের সম্মতিতে নগদ ১০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়েছিল। তারপর ইসলামী শরীয়াতের বিধান অনুসারে বিয়ে পড়ানোর কার্যক্রম শেষ হয়। বিয়ে পড়ানো শেষে আমরা সকলেই উপস্থিত হুজুরের সাথে মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেছিলাম। যাতে মহান সৃষ্টিকর্তা নতুন দম্পতিদের জীবন অনাবিল সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ করে দেয়।

প্রথম পর্বটি পড়ার লিংক



আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last month 

হাহাহা, আপনি বড়ই রসিক মানুষ ভাই। আসলে বিয়ের গেটে এমন একটু খুনছুটি হয়েই থাকে তবে আপনি এত সুন্দর করে যে পরিবেশটা সামলে নিলেন এটা সত্যি অনেক প্রশংসনীয় একটা বিষয়। যাই হোক ভাইয়ের জন্য দোয়া এবং ভালোবাসা জানাই তাদের সাংসারিক জীবন সুখী হোক।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 67974.72
ETH 3841.39
USDT 1.00
SBD 3.74