আমার ছাত্র জীবনের মধুর স্মৃতি // পর্ব- ০৩.

in আমার বাংলা ব্লগ27 days ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ শনিবার। ১১ ই মে, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।


butterflies-1127666_1280.jpg

Source



জোসনা আপুর গান শুনে আমরা সকলেই মুগ্ধ হয়েছিলাম। জোসনা আপু কয়েকটি গান বলার পরে আর কেউ সেই ভাবে গান বললো না। কয়েকজন বড় আপু শুধুমাত্র গানের প্রথম কয়েকটা লাইন গাইলো। এরপরে মাছুরা নামের একটি বড় আপু ছিল। আমাদের সেই বড় আপু শুরু করলো খবর পাঠ করতে। বড় আপুর খবর পাঠ শুনে হাসতে হাসতে আমাদের সকলের পেট ব্যথা হয়ে গিয়েছিল। মাছুরা আপুর পাঠ করা সেই খবরের আজও কয়েকটা লাইন আমার মনে আছে, সেটা হলো-- "মাঝ আকাশে চলন্ত বিমানের সাথে মশার ক্যাপ্টেনের মারাত্মক অ্যাক্সিডেন্ট, ঘটনা স্থলে বিমানটি মারাত্মক আকারে আহত হয়ে এখন হাসপাতালে কিন্তু বিমানের যাত্রীগুলো নিরাপদে আছে, এদিকে মশার ক্যাপ্টেনের শরীর থেকে একটিমাত্র পশম ছিড়ে গেছে, তাই মশার ক্যাপ্টেন হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছে।"

মাছুরা আপুর পাঠ করা এরকম হাস্যকর খবর শুনে বাসের মধ্যে উপস্থিত সকলেই হাসিতে ফেটে পড়েছিল। আমাদের হাসি দেখে বাস ড্রাইভার পর্যন্ত হাসতে শুরু করেছিল। কিন্তু আমাদের একজন সিনিয়র স্যার বলেছিল, ড্রাইভার আপনি সামনের দিকে লক্ষ্য রেখে গাড়ি পরিচালনা করেন। আসলে শিক্ষা সফরে যাওয়ার সময় বড় আপুদের বাসে এসে যে এতোটা পরিমাণ আনন্দ উপভোগ করতে পারবো সেটা আগে কখনোই ভেবেছিলাম না। এদিকে আমাদের বাংলা স্যার ছিল সামাদ স্যার। উনি এরকম খবর পাঠ শুনতে সব থেকে বেশি পছন্দ করতেন। সামাদ স্যার বড় আপুদেরকে উৎসাহ । শুধু তাই নয়, সামাদ স্যার আমাদেরকে পর্যন্ত বলেছিল তোমরাও হাততালি দাও। কিন্তু বড় আপুদের এরকম খবর পাঠ শুনে আমরা হাসির থামাতে পারছিলাম না, আবার লজ্জাও পাচ্ছিলাম।

মাছুরা আপুর খবর পাঠ শেষে রিতু নামের আরো একজন বড় আপু বিশেষ বুলেটিন পাঠ করতে চলে আসলো। ঋতু আপু বিশেষ বুলেটিন পাঠ করার শুরুতেই হেসে পড়লেন। ঋতু আপুর হাসি দেখে আমাদের একজন ম্যাডাম রিতু আপুকে ধমক দিলেন। ম্যাডাম বললেন, তুমি বুলেটিন পাঠ করবে না হাসবে? তুমি যদি হাসো তাহলে শ্রোতারা তোমার কথাগুলো শুনতে পারবে না। ম্যাডাম আরো বললেন, তুমি স্পষ্টভাবে বিশেষ বুলেটিন পাঠ করবা তোমার শ্রোতারা শুনে তারা হাসবে। তারপর ঋতু আপু সুন্দরভাবে বিশেষ বুলেটিন পাঠ করা শুরু করলো, "হাসতে গিয়ে পিঁপড়ার রাজার দাঁত ভেঙে গেছে, দাঁত লাগাতে বড় বড় হাতুড়ে ডাক্তারদের গোলটেবিল বৈঠক, চ্যাম্পিয়ন মদনকে দেশের প্রধানমন্ত্রী মুরগির বাচ্চা উপহার দিয়েছে, পুকুরের পানিতে নিখোঁজ ডুবুরিকে সাগরে উদ্ধার, ডিম দিয়ে বোম বানাতে গিয়ে চপ বানিয়ে খেয়ে ফেলেছে বৈজ্ঞানিক আবুল --এবার শুনবেন বিস্তারিত।"

তারপর ঋতু আপু যখন বিস্তারিত খবর পাঠ করতে শুরু করলো তখন আমরা এক এক প্রকারের খবর শুনে হাসতে হাসতে বাসের সিটের উপর আর বসে থাকতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল যেন শুয়ে শুয়ে হাসতে পারলে ভালো হতো। এদিকে হাসতে হাসতে আমাদের সামাদ স্যার বলেছিল, আমি আর পারছি না। এদিকে আমার বন্ধু রাশিদুলের একটা সমস্যা ছিল, সে একটু বেশি হাসলেই তার চোখ দিয়ে পানি ঝরতে লাগে। মনে হয় সে যেন কান্না করছে। বড় আপুদের খবর পাঠ শুনে আমরা সকলে হাসতে হাসতে একেবারেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছিল যেন আমাদের শরীরে শক্তি আর নেই। আমরা যখন সকলেই হাসির ভুবনে ঠিক তখনই বাসায় ড্রাইভার ব্রেক চেপে ধরলো। আর আমাদের এমন এক বেহাল অবস্থা হলো--বাসের সিট থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে আমরা যারা বাসের পিছনে বসেছিলাম তাদের বেশ কয়েকজনের শরীরে আঘাত লেগেছিল। এভাবে হঠাৎ করে চলন্ত বাসের ব্রেক চেপে ধরার কারণে বেশ কয়েকজন শিক্ষক বাস ড্রাইভার এর উপর চড়াও হয়েছিল।

দ্বিতীয় পর্বটি পড়ার লিংক





আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 71342.73
ETH 3809.46
USDT 1.00
SBD 3.49