মৃত্যুই আমাদের একমাত্র সঠিক গন্তব্য...।
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
জন্মগ্রহণ করলেই মৃত্যুবরণ করতে হবেই আর এটাই চিরন্তন সত্য তাই আমাদের কাছ থেকে অনেক মানুষ প্রতিনিয়ত বিদায় নিয়ে যাচ্ছে। এই পৃথিবী থেকে ছেড়ে আর তাই তো এই মানুষগুলোর কথা যখন মনে পড়ে তখন ভিতরটা কেঁদে উঠে মনে হয় আর কখনোই এই মানুষ গুলোকে দেখতে পারবো না ভাবতেই কেমন জানি লাগে।আজ সকালে শাশুড়ী মায়ের ফোন আসলো রিসিভ করার সাথে সাথেই বললেন তোমার গুল্টু দাদা মারা গেছে..কথাটা শুনেই কেমন জানি চুপ হয়ে গেলাম চারিদিকে এতো মানুষের মৃত্যুর খুবর শুনি খুব একটা হৃদয় ছুঁতে পারে না কিন্তু কিছু কিছু মানুষের মৃত্যু মনটা ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে যায়।কয়দিন আগে আমাদের এলাকার ছোট ভাই আবু তাহেরে মৃত্যু টা খুবই কষ্টদায়ক লেগেছে এখনো ভুলতে পারিনা আর হয়তো সারাজীবন মনেও থাকবে।ওর বয়স খুবই কম ছিলো আর বিয়ের পর থেকে আমাদের পাড়ায় ওকে সবসময় দেখেছি আমাদের সবার সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক ছিলো।তাই ওর মৃত্যু টা সত্যিই অনেক কষ্টের ছিলো।
প্ররম শ্রদ্ধেয় সুনির্মল দেব(গুল্টু) দাদার মৃত্যুর খবরটা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।দাদা আমাদের গ্রামের সবচেয়ে বড় ভাশুর ছিলেন পাড়ার সব বউদের,কিন্তু দাদা খুবই আন্তরিক ফ্রি মাইন্ডের মানুষ ছিলেন।দাদা পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন।বাড়িতে সকাল বিকেল প্রচুর প্রাইভেট পড়াতেন তাই দিনের বেশির ভাগ সময় বাহিরের উঠোনের বারান্দায় থাকতেন।আর বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত করা সকল ব্যক্তি দাদা দিদির সাথে বসে গল্প করে এক কাপ চা না খেলে যেতো দিতো না।
আমার বিয়ের পর প্রথম যেদিন দাদার বাড়িতে যাই দাদাকে প্রণাম করি তারপর ওনাদের ড্রইংরুমে বেশকিছু সময় বসে দাদা দিদির সাথে গল্প চলে।দাদা আমাকে একটা প্রশ্ন করেছিলো বলো তো..বাজারে গিয়ে তুমি দুই ধরনের আম দেখতে পাচ্ছো একটা দেখতে খুবই সুন্দর এবং আরেক টা দেখতে খুব একটা ভালো না তুমি কোন আম টি কিনে আনবা???আমি একেবারে নতুন আর তাঁর মতো জ্ঞানী মানুষের সাথে এরক কথা বলার মতো সাহসও ছিলো না,তারপরও ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলাম দাদা আমি দেখতে সুন্দর আমটিই কিনবো..!তখন দাদা আমাকে বললো কেনো সুন্দর আমটি কিনবা ওটা যদি খেতে ভালো না হয়!আর দেখতে খারাপ টাই যদি খেতে ভালো তাহলে তুমি কেনো সুন্দর আমটি কিনবা?ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দাও!!
আমি তো মহা মুশকিলে পড়ে গেলাম!কারণ তখন তো ছোট ছিলাম খুব একটা বুঝি না তাই ভয়ে কি বলি বুঝতে পারছিলাম না।তারপরও ভয়ে ভয়ে বলেই ফেললাম দাদা মানুষ সুন্দরের পূজারী,তাই যেকোনো সুন্দর জিনিসকেই আগে বেঁচে নেয়।তার কারণ হলো যেটা দেখতেই ভালো নয় সেটা খেতে কতোটা সুস্বাদু হবে এটা নিয়ে অবশ্যই মনের মধ্যে সন্দিহান থাকবে।কথায় আছে না..প্রথমে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী এজন্য আমি সুন্দর আমটিই কিনবো।দাদা আমার উত্তরে খুশি হয়েছিলেন এবং তারপর থেকে দাদা আমাকে খুবই ভালোবাসতেন।মাঝে মাঝে দাদা দিদির সাথে গল্প করতাম খুবই ভালো লাগতো।দাদা কখনোই ভাশুরের মতো আচরণ করেনি দাদা সবার সাথে বন্ধুর মতো মিশতো।গ্রামের ভালো মন্দ সবকিছুই দাদা দেখতেন কার কি সমস্যা কি সমাধান লাগবে সবাই আগে দাদার কাছে সমস্যার কথা জানাতো।এরকম মানুষ গুলোর মৃত্যু মেনে নিতে খুবই কষ্ট লাগে।তারপরও মেনে নিতে হয়।ঈশ্বরের কাছে একটাই প্রার্থনা করি দাদা কে স্বর্গবাসী করেন।🙏🙏🙏
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
জন্মগ্রহণ করলেই মৃত্যুবরণ করতে হবেই আর এটাই চিরন্তন সত্য। সৃষ্টির প্রতিটি জীব কে একদিন মৃত্যুর সাদ গ্রহণ করতে হবে। আপনার গুল্টু দাদা মারা গিয়েছেন, জেনে বেশ খারাপ লাগলো। আপনার পোস্ট টি বুঝতে পারলাম আপনার মন অনেক টা খারাপ। যাইহোক, আমি আশা করছি আপনি খুবই তাড়াতাড়ি এই শোক কাটিয়ে উঠবেন। আপনার জন্য আশির্বাদ রইলো।
এইজন্যই হয়তো বলে জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে। মানুষ জন্মের পর থেকে ছুটে যায় মৃত্যুর দিকে। কিছু কিছু মানুষের মৃত্যু খরব সত্যি আমাদের অনেক কষ্ট দেয়। কিন্তু কিছু করার থাকেনা আমাদের। উনি বেশ জ্ঞানী এবং ভালো মানুষ ছিল আপনার পোস্ট টা পড়ে বুঝতে পারলাম।।
সত্যিই মৃত্যু অনেক কিছু কেড়ে নিয়ে চলে যায় জীবন থেকে। দাদার মৃত্যু হঠাৎ করে আনা একটা শোক সংবাদ তোমার জন্য। তবে দাদা যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন। ঈশ্বর তাঁর বিদেহী আত্মার পরম শান্তি প্রদান করুন। আসলে এমন খবরগুলো হঠাৎ এলে সবকিছু যেন স্তব্ধ হয়ে যায়। তবু সব কিছু মেনে নিতে হয় আমাদের। এটাইতো জগতের নিয়ম ।