বুক রিভিউ " ম‍্যালিস"!!

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ রবিবার, ৫ ই মে , ২০২৪।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000553771.jpg


আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ্ আমি ভালো আছি। কয়েকদিন একেবারে অলস সময় অতিবাহিত করছি। এবং এই সময় টা কাটানোর সবচাইতে ভালো উপায় ছিল আমার কাছে বই পড়া কারণ আমি স‍্যোসাল মিডিয়া থেকে একটু দূরে থাকতে চেয়েছি। জানি না আপনি কী বলবেন তবে স‍্যোসাল মিডিয়া আমাদের মধ্যে সর্বদা একটা নেগেটিভিটি দিয়ে দেয়। যাইহোক গতকাল একটা বই পড়ে শেষ করেছি। বইটা ক্রাইম থ্রীলার বই। জাপানের বিখ‍্যাত থ্রীলার লেখক কিয়েগো হিগাশিনো এর লেখা বইটা। এবং বইয়ের নাম ম‍্যালিস।


1000553776.jpg

1000553777.jpg


লেখক পরিচিতি



প্রখ‍্যাত জাপানিজ থ্রীলার লেখক কিয়েগো হিগাশিনো ১৯৫৮ সালে ওয়াকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে সাধারণ একটা কর্পোরেশন চাকরিতে যোগ দেন। এবং লিখে ফেলেন তার প্রথম উপন‍্যাস আফটার স্কুল। এবং সেই উপন‍্যাস টা পেয়ে যায় জাপানিজ থ্রীলার সাহিত্যের সবচাইতে সম্মানজনক পুরষ্কার। এরপর তিনি চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন।



বই সম্পর্কে তথ‍্য



------------
বইয়ের নামম‍্যালিস
লেখককিয়েগো হিগাশিনো
অনুবাদকসালমান হক, ইশরাক অর্নব
প্রকাশনীবাতিঘর প্রকাশনী
প্রথম প্রকাশমার্চ, ২০২৩
মূল‍্য৪০০ টাকা


বইয়ের কাহিনি সংক্ষেপ


1000553778.jpg

1000553779.jpg


কানাডা পাড়ি জমানোর আগের দিন রাতে নিজ বাড়িতে খুন হয় দেশ সেরা লেখক কুহিনিকো হিদাকা। তার মৃতদেহ টা তার ঘর থেকে আবিস্কার করে তার বউ রাই হিদাকা এবং তার বাল‍্যবন্ধু ওসামু নুনোগুচি। প্রাথমিকভাবে এই খুনের তদন্তের দায়িত্ব এসে পড়ে কাগার উপর। কাগা প্রথম দেখাতেই চিনে ফেলে নুনোগুচি কে। আজ থেকে সাত বছর আগে তারা দুজন একই স্কুলে শিক্ষকতা করত। শিক্ষকতা বাদ দিয়ে কাগা পরবর্তীতে ডিটেকটিভ এর চাকরিতে যোগদান করে অন‍্যদিকে নুনোগুচি বন্ধু হিদাকার সাহায্য শিশু সাহিত্য রচনা শুরু করে। কিন্তু কেন খুন হলো কুহিনিকো হিদাকা। কে তাকে খুন করল। শুরু হয় তদন্ত।

তদন্তে কাউকেই খুনি বলতে পারছিল না কাগা। তবে সন্দেহের তীরটা যাচ্ছিল মিয়াকো ফুজিও এর দিকে। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় না সে খুনি না। কিন্তু খুনি যে হিদাকার বাল‍্যবন্ধু ওসামু নুনোগুচি সেটা ধরতে বেশি সময় লাগেনি কাগার। তবে নুনোগুচির কাছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য অনেক গুলো অ‍্যালিবাই ছিল। কিন্তু সেগুলোর কোনটাই কাজে আসেনি। একে একে সব অ‍্যালিবাই দূর করে দেয় ডিটেকটিভ কাগা। একপর্যায়ে গিয়ে খুনের দায় স্বীকার করে নুনোগুচি। কিন্তু সে কেন খুন করেছে সেটা বলতে চাই না। অনেক জোড়াজুড়ির পরও বলতে চাই না। সেজন্য কাগা বাধ‍্য হয় তাদের অতীত ঘাটতে। কাগা হিদাকা এবং নুনোগুচির স্কুল জীবন নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করে।


1000553782.jpg

1000553781.jpg


কারাগারে থাকার একপর্যায়ে ধরা পড়ে নুনোগুচি লিভার ক‍্যান্সারে আক্রান্ত। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে সব সমাধান করে ফেলার পরে নুনোগুচি হত‍্যার কারণ বলতে রাজি হয়। তবে নুনোগুচি তার স্বীকারোক্তিতে দাবি করে সে হিদাকার গোস্টরাইটার ছিল। অর্থাৎ হিদাকা যে উপন‍্যাস গুলো দিয়ে দেশ সেরা লেখক হয়েছে সেগুলো সব তার লেখা। পাশাপাশি হিদাকার প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক ছিল। কিন্তু হিদাকার সেই স্ত্রী অনেক আগে দূর্ঘটনায় মারা গেছে। এসব কারণেই সে খুন করেছে হিদাকা কে। নুনোগুচির লিখিত স্বীকারোক্তির পরেও ডিটেকটিভ কাগা শুরু করে তদন্ত। কাগা দেখতে পাই না এবারেও নুনোগুচি মিথ্যা বলেছে। বইয়ের রিভিউয়ে এর চেয়ে বেশি বলে দিলে আপানারা পড়ার আকর্ষণ হারিয়ে ফেলতে পারেন। আপনার কী মনে হয় সত্যি কী হিদাকার গোস্টরাইটার ছিল নুনোগুচি। সত্যি কী এই কারণেই হত‍্যা করেছে নাকী অন্য কোন কারণ আছে। এইসব প্রশ্নের উওর জানতে হলে আপনাদের বইটা পড়তে হবে। আর যদি কারো খুবই কৌতূহল হয় কমেন্ট করেন আমি বলে দিব।



ব‍্যক্তিগত মতামত



আমি সাইকোলজিক‍্যাল থ্রীলার পড়তে বেশি পছন্দ করি। তবে ক্রাইম থ্রীলারও আমার ভালো লাগে। এটা ঠিক এইরকমই একটা বই। বইয়ের নামটার মধ্যেই খুনের কারণ লুকিয়ে আছে। তবে বইটা শেষ করার একমূহূর্ত আগেও খুনের আসল কারণটা ধরতে পারবে না পাঠক। লেখক এখানে একাধিক বার থ্রীল রেখেছে। । এটাই আমার কাছে সবচাইতে বেশি ভালো লেগেছে। অসাধারণ একটা বই এটা। আপনারা যারা থ্রীলার পছন্দ করেন বইটা পড়তে পারেন।





সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

বইটি ক্রাইম নিয়ে তৈরি করা হয়েছে, আসলে এই ধরনের বইগুলো পড়তে খুব ভালো লাগে কারণ বই পড়ার মধ্যে একটা রহস্য পাওয়া যায় এবং এর রহস্য যখন উন্মোচন করা যায় তখন অন্যরকম একটা ভালো লাগার কাজ করে। যাই হোক বইটি এর আগে কখনো পড়া হয়নি। তবে বইটির রিভিউ দেখে খুব ভালো লাগল

 6 months ago 

খুব সুন্দর ভাবে বই রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন। এ ধরনের বই পড়তে আমার ও ভীষণ ভালো লাগে। বইটি শেষ না করা পর্যন্ত বোঝা যাবে না আসল খুনি কে, এ ধরনের রহস্যের বই পড়তে আমার ভীষণ ভালো লাগে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর ভাবে বুক রিভিউটি শেয়ার করার জন্য।