শৈশবের সেই শীতের দিনগুলো!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
এইতো নভেম্বর মাস শুরু হয়েছে কিছুদিন হলো। নভেম্বর মাস মানেই অন্যরকম একটা অনূভুতি কাজ করত ছোটবেলা। এই অনূভুতি বলে বোঝানো যাবে না। নভেম্বরের শুরু থেকেই শীতের আভাস পাওয়া যেত। সকালে উঠলে দেখা যেত কুয়াশা। যদিও শীত খুব বেশি পড়ত না তবে মনের মধ্যে একটা আলাদা আনন্দ হতো না শীত চলে এসেছে। শীত আসলেই প্রতিবছর একটা জিনিসের তোড়জোড় শুরু করে দিতাম আমরা বন্ধুরা। যে এইবার কোথায় ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্ট টা কাটব। যদিও পরবর্তীতে গিয়ে সমস্যা টার সমাধান হয়ে যায়। চিরস্থায়ী একটা জায়গা আমরা পেয়ে যায়। কিন্তু প্রথম দিকে এলাকার মধ্যে ভালো একটা জায়গা দেখে আমরা বন্ধুরা ব্যাডমিন্টন এর কোর্ট কাটতাম।
তারপর থেকেই খেলা শুরু। তবে একটা আক্ষেপ থাকত ফাইনাল পরীক্ষা শেষ না হওয়া পযর্ন্ত বাড়ি থেকে নতুন ব্যাডমিন্টন ব্যাট কিনে দিত না। এইজন্য পুরাতন টা দিয়েই খেলতাম। আর দিন গুণতাম কবে পরীক্ষা শুরু হবে আর কবে শেষ হবে। ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হতো একেবারে ডিসেম্বরের শুরু থেকে। সত্যি বলতে ছোটবেলা পরীক্ষা নিয়ে প্রচণ্ড ভয়য় পেতাম আমি। এখনও ভয় পাই তবে ততটা না। ছোটবেলা পরীক্ষা দেওয়ার পরে রেজাল্টের আগে মনে হতো যদি রেজাল্ট খারাপ হয়। যদি রোল বেশি হয় তাহলে এইবছর নতুন ব্যাডমিন্টন ব্যাটের চিন্তা ছাড়তে হবে হা হা। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে অবশ্য বাড়ি থেকে যথারীতি আবদার গুলো পূরণ হয়ে যেত।
পরীক্ষার পরে ছুটির কদিন চলত জমিয়ে খেলাধুলা। সকাল বিকেল সবসময়। ঐসময় টা এককথায় অসাধারণ কাটত। তবে কীভাবে যেন ছুটির দিনগুলো খুবই দ্রুত চলে যেত। এগিয়ে আসত ফলাফলের দিন। বরাবরের মতোই একটা ফলাফল করতাম আমি। মোটামুটি ঐ ক্লাসের মধ্যে সেরা পাঁচে থাকতাম। কিন্তু তারপরও মাঝে মাঝে আমার মা বলত আরও ভালো করতে হবে। রেজাল্ট দেওয়ার পর অপেক্ষা থাকে নতুন বইয়ের। নতুন বছরের প্রথম দিন হাতে পেয়ে যেতাম নতুন ক্লাসের নতুন বই। পড়ি না পড়ি সত্যি বলতে এই নতুন বইয়ের ব্যাপার টা ছিল একেবারে অন্যরকম। আমাদের সময় ইংরেজি নতুন বছর নিয়ে আমরা খুব একটা মাতামাতি করতাম না। বিশেষ করে যতটা এখন হয় এতটা কখনোই করতাম না।
তবে এলাকার বন্ধুরা মিলে ছোট করে পিকনিক করতাম। ততদিনে তীব্র শীতের প্রভাব শুরু হয়ে যেত। যেহেতু আমি ছোটবেলা থেকে গ্রামে বড় হয়েছি। আমাদের গ্রামে অনেক গুলো খেজুর গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হতো। আর ঐ রস নিয়েও ছোটবেলা অনেক মজার কাহিনী আছে। বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ছোটবেলা বেশ কয়েকবার রস চুরি করে খেয়েছি। একবার ধরা পড়ে আমার মায়ের হাতে খেয়েছিলাম উওম মধ্যম হি হি। সেই দিনগুলো এখন শুধুই অতীত। এখন হয়তো চাইলেও আর দিনগুলো তে ফিরে যেতে পারব না। অনেক গুলো ব্যাডমিন্টন ব্যাট কেনার টাকা আছে পিকনিক করার টাকা আছে। কিন্তু সময় নেই সেই দিনগুলোও নেই।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শীতকাল মানেই প্রচুর শৈশবের স্মৃতি ভাই। শীতকাল মানে বেড়াতে যাওয়া, শীতকাল মানেই লেপ কম্বলের তলায় তাড়াতাড়ি ঢুকে পড়া। আপনার স্মৃতির কথাগুলো বেশ ভালো লাগলো। শীতকাল এলে বড় ভাল লাগা কাজ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় শীতকাল বড় তাড়াতাড়ি চলে যায়।
আপনার আজকের ব্লগটি পড়ে আমার শৈশবের কথা মনে পড়ে গেলো। আমরা কত সুন্দর শীতের সকালটা অনুভব করতাম। রাতের বেলা ব্যাডমিন্টন খেলতাম। সকালবেলা সবাই জড়ো হয়ে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করে নিতাম। কি মধুর শৈশব ছিল আমাদের। ধন্যবাদ।