"চিন্তিত মনে আমরা সবাই"
নমস্কার
চিন্তিত মনে আমরা সবাই:
বন্ধুরা, গ্রামের বাড়ি তার উপরে আবার আশেপাশে বিস্তর মাঠ।ফসলের মাঠে সবাই ধান কাটার কাজে ব্যস্ত কিন্তু আমাদের এখানে বরাবরই একটু সাপের উপদ্রব বেশি।
তার কারণটা হলো এদিকে কোথাও কোথাও বসতি খুবই কম ও কৃষিজমি বেশি তাই শিয়াল ও সাপের কমতিও নেই।প্রতিনিয়ত তিন থেকে চারজন সাপুড়ে আসে সাপ ধরার জন্য। তারা সাপ ধরেই তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে।যে সাপ যত বেশি বিষাক্ত তার দাম ততটাই বেশি।
আপনারা সবাই জানেন, আমাদের দুটি পোষ্য বিড়াল রয়েছে।তবে এখন তিনে দাঁড়িয়েছে কারণ তাদের ছোট্ট বাচ্চা লিও রয়েছে।যেহেতু এখানে বনবিড়াল ও শিয়ালের উপদ্রব বেশি।তাই আমরা বিড়ালকে ঘরের মধ্যে বন্দি অবস্থায় রাখি রাতের বেলা।ঘরের মধ্যে বাচ্চা ও তার মাকে পাখির খাঁচায় আটকে রাখি।সেইমতো আজ রাতে খাওয়া দাওয়া করার পর দুটি বিড়ালকে আটকিয়ে রেখে দাদার রুমে সন্তুকে নিতে গেছে মা তখনই সাপ সাপ বলে চিৎকার শুরু করে দিয়েছে।আমিও বিছানা থেকে উঠে আমার রুম দৌড়ে গেলাম।আর দাদা তখন দিব্যি সেই রুমে খাটের উপর ঘুম দিচ্ছে।তারপর মা চেঁচামেচি করে দাদাকে উঠতে বললো।
ইয়া বড় একটি সাপ।সাপটির গায়ের রং হলুদ এবং কালো ঠিক শঙ্খের ন্যায়।তখনই ইউটিউব ঘেঁটে বুঝলাম,এই সাপের নাম হচ্ছে শাঁখামুঠি, অহিরাজ,শঙ্কিনী ও রাজসাপ। এরা এশিয়ার মধ্যে খুবই বিষধর একটি সাপ।যেটা মানুষের জন্য খুবই উপকারী একটি সাপ।কৃষিজমি,ড্রেন কিংবা মানুষের আশেপাশে থাকতে পছন্দ করে এই সাপ।শাঁখামুঠি সাপগুলি হলুদ ও কালো রঙের হয় বলে দেখতে খুবই সুন্দর হয়ে থাকে।যেকোনো বিষাক্ত সাপকে ধরে এই শাঁখামুঠি খেয়ে ফেলে।এমনকি তারা এতটাই শান্ত যে মানুষ দেখলে মুখ লুকিয়ে ফেলে।মানুষকে খুবই কম বাইট করে এরা।দাদার রুমে আমাদের সন্তু তো বসেছিল সাপের পাশে কিন্তু অন্যান্য সাপ ধরার মতো অতটা আগ্রহ প্রকাশ করেনি।সাপটি হা করাতে সন্তু কিছুই বলছিল না তারপর আমরা ডাকলে চলে এসেছিল।সাপটি আমাদের রুমে ঢুকেছিল বটে কিন্তু বের হওয়ার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিল না চলাচল করছিল। এতটাও লম্বা সাপটি যে দেখে আমরা শিউরে উঠছিলাম।আমরা অবশ্য সাপ মারি না তাই সাপুরের ফোন নাম্বার পাওয়া যায় কিনা অনেকের কাছেই ফোন করে দেখলাম।
সবাই আমাদের ভালো আশ্বাস দিয়েছিল ,আবার কেউ সাপকে মেরে ফেলার।কিন্তু সাপ মারলে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয় তাই কখনো আমরা সাপ মারি না।সাপটি ঘোরাঘুরির সময় বাবা তার চোখে লাইটের আলো মারতেই সে নিজ জায়গায় আবার লুকিয়ে নেয়।মনে হয় বের হওয়ার চেষ্টা করছে তবে পারছে না তাই ফ্যানের নিচে কয়েকদিন ধরেই আশ্রয় নিয়েছে।যদিও এই সাপটি মানুষের জন্য উপকারী হওয়াতে কেউ মারে না একে।আমরা আর কি করবো সাপুরের ফোন নম্বর না পেয়ে সবাই রাত জেগে বসে আছি।মা নজর রাখছিল আবার কখনো বের হয়ে কোথাও যাচ্ছে কিনা।এভাবে আমরা সবাই নজর রাখছিলাম।তারপর ভালোভাবে লাইট মেরে দেখলাম সাপটি খোস ছাড়িয়েও রেখেছে,তাতেই বোঝা গেল সাপটি বেশ কয়েকদিন ধরেই এখানে আস্তানা গেড়েছে অথচ আমরা টের-ই পায়নি।এখন আমরা সবাই অনেকটাই চিন্তিত হয়ে ঘরের আলো জ্বেলে বসে আছি,আমার তো বেশ ভয়ও করছে। আমাদের জন্য সবাই আশীর্বাদ করবেন।।
পোষ্ট বিবরণ:
| শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
|---|---|
| ডিভাইস | poco m2 |
| অভিবাদন্তে | @green015 |
| লোকেশন | বর্ধমান |
| আমার পরিচয় |
|---|

আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।



টুইটার লিংক
আপনাদের সাহস দেখে তো আমি পুরোপুরি অবাক হয়ে গিয়েছি আপু। সাপটা যতই উপকারী হোক না কেনো, মানুষের ক্ষতি না ই করুক, তবুও সাপ তো,আমি হলে তো ভয়ে শেষ হয়ে যেতাম। হ্যাঁ এটা ঠিক, সাপ মারলে নাকি পরবর্তীতে অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনাদের দিকে যেহেতু সাপের উপদ্রব বেশি, সবসময় সাপুড়ের ফোন নম্বর রাখবেন। যাইহোক পরবর্তীতে সাপটি কিভাবে বের হয়েছে বা কি হলো, সেটা অবশ্যই জানাবেন আপু। আপনাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল আপু।
ভাইয়া, আসলে সাপের ভয়ে ওই রুমে কেউ ছিল না সেদিন।আর আমরা অনেক রাত অব্দি জেগে থাকার পর রুমটাই সারারাত আলো জ্বেলে রেখেছিলাম,পরদিন আর দেখতে পায়নি।তবে আমরা অনেকের পরামর্শে ঘরের আশেপাশে কার্বোলিক এসিড দিয়েছি যাতে গন্ধে সাপ না আসে।ধন্যবাদ আপনাকে।