আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ প্রকৃতি ও দাবদাহ ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। যদিও প্রকৃতি ও পরিবেশ যেভাবে পাল্টে যাচ্ছে, তাতে আমরা কতটা ভালো এবং সুস্থ্য আছি তা খুব সহজেই অনুমেয়। আসলে কিছু বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না, বরং পরিস্থিতি দেখেই সেটা অনুমান করে নেয়া যায়। বর্তমান পরিবেশ ও পরিস্থিতি ঠিক তেমন পর্যায়ে আছে, খুব সহজেই অনুমান করতে পারছি আপনারা কতটা ভালো আছেন। আজকে আবোল-তাবোল জীবনের গল্পে প্রকৃতি নিয়ে কিছু কথা বলার চেষ্টা করবো।
আমরা সবাই প্রকৃতির দোষ দিচ্ছি, বার বার বলছি প্রকৃতি পরিবর্তন হয়ে গেছে। যার কারনে গরমের সিজনে যেমন অতিরিক্ত গরম সহ্য করছি ঠিক তেমনি শীতের সিজনেও আমরা অতিরিক্ত শীতকে সহ্য করেছি কারন আমাদের কাছে বিকল্প কোন উপায় নেই। হ্যাঁ, একটা বিকল্প অবশ্য আছে যেমন গরমের দিনে আমরা সবাই ঋন করে হলেও এসির দোকানে দৌড়াই আর শীতের সিজনে দৌড়াই রুম হিটারের দোকানে। কারন আমরা ভাবছি এবং চিন্তা করছি এভাবে হয়তো আমাদের গরম/শীতের সমস্যার সামাধান আসবে। অতি গরমের মাঝেও এসির শীতলতায় নিজেকে সতেজ রাখতে পারবো, অতি ঠান্ডায় রুম হিটারের মাধ্যমে দারুণভাবে শীত উপভোগ করতে পারবো!
কিন্তু বাস্তবতা কি বলে? আসলে বাস্তবতাকে আমরা প্রায় কঠিন শব্দ দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করি। যে কোন ঘটনা বা সমস্যার কথা শেয়ার করে তার সাথে বাস্তবতাকে জুড়ে দেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু বাস্তবতা কি আসলেই কঠিন বা নির্মম? কি মনে হয় আপনাদের? আমার কাছে কিন্তু মোটেও এমনটা মনে হয় না, কারন আমাদের কার্যাবলী এবং মানসিকতাই বাস্তবতাকে আরো কঠিন এবং নির্মম হিসেবে উপস্থাপন করছে। একটু চিন্তা করুন, না গভীরভাবে চিন্তা করুন? আপনার শহরে বা গ্রামে যে সড়কটা আপনার কাছে সবচেয়ে বেশী পছন্দনীয় ছিলো, যেখানে গেলে আপনি একটু সতেজতা অনুভব করতেন কিংবা সেখানে গেলে আপনার মনটা ভালো হয়ে যেতো।
সেই পরিবেশটা কি এখনো আছে? কিছু পার্থক্য কি স্পষ্ট হয়ে আপনার সামনে আসছে না? বেশী না মাত্র পাঁচ-সাত বছরের আগের বিষয়টি চিন্তা করুন, পার্থক্যটা স্পষ্ট করার চেষ্টা করুন, তাহলে হয়তো বুঝতে পারবেন বাস্তবতা নাকি আমরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যাগুলোকে নির্মম ও কঠিন করেছি। কতটা সবুজ ছিলো পাঁচ-সাত বছর পূর্বে এবং কত গাছ ছিলো সেখানে, কিন্তু এখন কতটা উন্নত হয়েছে, কতগুলো গাছের জীবন নির্মমভাবে আমরা হত্যা করেছি শুধুমাত্র নিজেদেরকে উন্নত হওয়ার দৌড়ে শামিল করার জন্য। আমরা উন্নয়নের নতুন রোড ম্যাপ তৈরী করেছি, সবুজ প্রকৃতি ও সবুজ গাছগুলোকে অন্যায়ভাবে কেটে কেটে বিরানভূমি বানিয়েছি।
যার প্রভাবে আজকের বর্তমান পরিবেশ, যার কারনেই আজকের এই ভিন্ন চেহারা প্রকৃতি ও পরিবেশের। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো আমরা মোটেও সত্যটাকে স্বীকার করছি না এবং নিজেদের ভুলগুলোকে মেনে নিচ্ছি না। বিগত কয়েক বছরে আমরা কতগুলো জীবন্ত অক্সিজেনের ফ্যাক্টরিকে বন্ধ করেছি অনাকাংখিতভাবে গাছগুলোকে কেটে, বিগত কয়েক বছরে আমরা কতগুলো নতুন গাছ লাগিয়েছি নতুন অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি তৈরী করার জন্য? এই প্রশ্ন আমরা সামনে আনছি না বা আনতে ভয় পাচ্ছি। আজকের প্রকৃতি কিংবা পরিবেশ সেটাতো আমাদের নিজেদের সৃষ্টি, কারন আমরা প্রকৃতি নির্মল সতেজতায় মুগ্ধ থাকতে পারছি না বরং হাজার হাজার টাকা খরচা করে এসির ভিতরে বসে তৃপ্তির ঢেকুর ছাড়তে স্বাচ্ছন্দ্য করছি।
প্রকৃতি তার নিজের জায়গায় আছে এবং থাকবে কিন্তু আমরা কি আমাদের আগের জায়গায় আছি? প্রতিবছর আমাদের স্কুলে পরিবেশ দিবস পালন করা হতো এবং প্রতিটি ছাত্রকে নানাভাবে শিক্ষকরা অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করতেন, যাতে প্রতি বছর প্রতিটি ছাত্র দুটো করে গাছ লাগান। কোন বছর যেমন ফলজ গাছকে প্রাধান্য দেয়া হতো আবার কোন বছর কাঠ জাতীয় গাছকে প্রাধান্য দেয়া হতো। সেই বিষয়টি কিন্তু এখন আর নেই, কোথায়, কেউ, কোনভাবে আর কাউকে অনুপ্রাণীত করছে না গাছ লাগাতে এবং প্রকৃতিকে সবুজ ও সতেজ রাখতে। তাহলে বলুন প্রকৃতি কেন এমন হবে না? প্রকৃতির দোষটা কোথায়?
যে কথাটা আমি প্রায় লেখা শেষ করার সময় বলে থাকি, পরিবর্তন আসুক আমাদের মানসিকতায়, আজও সেই কথাটা দিয়েই শেষ করবো। কারন আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন না আসলে আমরা আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারবো না, আগের মতো সবুজ ও সুন্দর প্রকৃতি ফিরে পাবো না। প্রকৃতিকে তার সুন্দর অবস্থা যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ফিরিয়ে দিতে না পারবো ততক্ষণ পর্যন্ত এই পরিস্থিতির কোন উন্নতি হবে না।
Image taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
যাদের টাকা আছে তারা গরমে এসি এবং শীতে হিটার ব্যবহার করতেই পারে। কিন্তু এটা তো পারমানেন্ট কোন সমাধান না। বরং এতে করে আরও সমস্যা বাড়বে। আমাদের উচিত চিরস্থায়ী সমাধান এর জন্য প্রকৃতি কে ঠিক রাখা। প্রকৃতি কে তার নিজের মতো করে চলতে দেওয়া। আমাদের উচিত প্রকৃতির উপর শাসন কমানো।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে প্রকৃতির এই অস্বাভাবিক আচরণের জন্য আমরাই দায়ী। সেটা কোনভাবেই মেনে নিচ্ছি না আর বলছি প্রকৃতি পুরোটাই চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে । আসলে একবার চিন্তা ভাবনা করা উচিত ছিল সবার কেন এই ধরনের পরিবর্তন । আমি ছোট্ট সময় দেখেছি রাস্তার পাশে অনেক বড় বড় গাছ । আর বর্তমান সময়ে খোলামেলা পরিবেশ আমার বাড়ির পাশে একটি বড় বটগাছ ছিল যেখানে মানুষ গরমের সময় চড়াট পেতে শীতলতা অনুভব করতো। সেই রকম জায়গা এখন নেই। এর জন্য আমরাই দায়ী আজকের এই ফলাফল ভোগ করতে হচ্ছে।
অবশ্যই আমরা নিজেরাই দায়ী, কারন আমাদের মানসিকতা এবং অতি মুনাফার লোভ প্রকৃতিকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে আসছে। ধন্যবাদ
পরিবেশ কে আমরা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করছি।একসময় আমাদের গ্রামের রাস্তায় দুই পাশে অজস্র গাছ ছিলে আর সেই গাছের ছায়াতলে সবাই আড্ডা দিত কিন্তু এখন সেগুলো নেই সবাই উজার করেছে এই বন গুলো। এভাবে আসতে আসতে হয়তো গ্রাম ও শহরে পরিনত হবে যার ফল পাবো আমরা অতিরিক্ত গরম এবং তীব্র শীত।
হ্যা, আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী আমরা নিজেরাই সেটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
কথায় তো আসে ঢিলটি মারলে পাটকেল টি খেতে হয়।তাই প্রকৃতির অবস্থাও হয়েছে সেরকম। আমরা সারা জীবন ধরে প্রকৃতিকে শুধু ঢিল মেরে এসেছি, এখন তো প্রকৃতি আমাদের কে পাটকেল মারবে। তবে আমরা তো মানুষ তাই সত্যটা সামনে আনতে ভয় পাই। দারুন ছিল ভাইয়া আজকের লেখাটি।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটা কথা আছে যখন কোন একটি ডিজিজ মহামারী রূপ ধারন করে তখন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভ্যাকসিন দেয়া হয়। যেমন : করোনার সময় মডার্না, ফাইজার, অক্সফোর্ড এস্ট্রাজেনেকার ডোজ দেয়া হতো।
তখনো কিন্তু মানুষ রোগটি দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে আবার ভালো হচ্ছে প্রতিনিয়ত কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলতেন, যদি ৮০% মানুষ টীকা নেয়, তখন কোভিড প্রায় নির্মূল হয়ে যাবে।
এ বিষয়টি গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে শতভাগ সত্য, জনসচেতনতা বাড়ালেই শুধু চলবে না, সবাই যে যার জায়গা থেকে নিজেদের আঙিনায় গাছ রোপণ করলে, যদি সিংহভাগ মানুষ যত্নশীল হয় এ ব্যাপারে তখন পরিবেশ আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কতভাগ মানুষ সত্যিকার অর্থে তা করে দেখাবে ?
ঘুরেফিরে যা বললেন দিনশেষে দেখা যাবে একটি বিরাট অংশই স্বার্থচিন্তায় ব্যস্ত।
এমন বাস্তবতায় ভালো কিছু আশা করা কঠিন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এটা একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া প্রকৃতি নিজের জায়গাতে থাকলেও আমরা নিজের জায়গায় নেই। আমরা এখন আর আগের মতো পরিবেশের প্রতি যত্নশীল নই। তাই তো পরিবেশ তার ভয়ঙ্কর রূপ আমাদেরকে দেখাচ্ছে। পরিবেশের এই খারাপ পরিস্থিতি আমাদের দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছে। দারুন লিখেছেন ভাইয়া। ভালো লাগলো লেখাগুলো পড়ে।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
প্রকৃতিকে তার সুন্দর অবস্থা যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা ফিরিয়ে দিতে পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত এই পরিস্থিতির কোন উন্নতি হবে না, এই কথাটা একেবারেই সঠিক। আমরা তো নিয়মিত প্রকৃতির উপর অত্যাচার করছি, গাছপালা কেটে ফেলছি। এখন তো অনেকের ঘরে এয়ারকন্ডিশন বসানো রয়েছে, যে কারণে প্রকৃতি আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রকৃতি তো তার নিয়মেই চলছে, আমরাই প্রতিনিয়ত অন্যায় করছি প্রকৃতির উপর। তবে আমি মনে করি এখন থেকে যদি আমরা সচেতন না হই, তাহলে অবস্থা ভবিষ্যতে আরো অনেক বেশি খারাপ হবে।