নবান্ন উৎসব
"হ্যালো",
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। নবান্ন অর্থ হচ্ছে নতুন ধান বা নতুন অন্য। আর নবান্ন উৎসব হচ্ছে আমন ধান কেটে সে ধান কাটা মাড়াই করে সেদ্ধ করে থেকে রান্না করা প্রথম খাবার। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম আমাদের গ্রামে এই উৎসব হতো। দিনটাকে অনেকটা ঈদের দিনের মতো মনে হতো। ঘরে মাংস রান্না করা হতো এবং আত্মীয় স্বজন আসতো। এবং ভাতের চাল দিয়ে এবং গুড় দিয়ে ক্ষীর বানানো হতো। এটা অনেকটা পায়েসের মতো খেতে কিন্তু পায়েস রান্না করা হয় আতপ চাল দিয়ে এবং এই ক্ষীর বানানো হয় সেদ্ধ ভাতের চাল দিয়ে।
যাইহোক মানুষের মনের পরিবর্তনই হোক কিংবা যুগের পরিবর্তনেই হোক এটা অনেকটাই মুছে গিয়েছিল আমাদের গ্রাম থেকে। যেহেতু এখন গ্রামে বসবাস করছি তাই সেদিন হঠাৎ করে জানতে পারলাম যে এবার নাকি গ্রামে নবান্ন উৎসব পালন করা হবে। ঘরে ঘরে নতুন ধান এসেছে তাই এমন আয়োজন করেছে গ্রামের কিছু মুরব্বি।যদিও অনেক গ্রামে ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। আসলে এখনকার যে নতুন প্রজন্ম এরা তো এই উৎসবের সঙ্গে শুধুমাত্র নামেই পরিচিত কিন্তু কখনো পালন করেনি। সবার মধ্যে অনেকটাই আগ্রহ কাজ করছিল। যেমনটা আমারও অনেক দিন পর নতুন করে আবারো এমন উৎসবের সঙ্গে আমি হতে পারছি এটা আমার জন্য অনেক ভালোলাগার ছিল।
দুপুরবেলার সবাই রান্নাবান্না শেষ করে গ্রামের মসজিদে নামাজে যাওয়ার সময় প্রায় কয়েকটা বাড়ি থেকেই ক্ষীর নিয়ে যাওয়া হয় মসজিদে পুরো গ্রামে দেওয়ার জন্য। যাতে পুরো গ্রামের মানুষই নতুন ধানের তৈরি খাবার খেতে পারে। আমি নিজেও রান্না করেছিলাম দুপুরে এবং আমার বাবার দ্বারা মসজিদে পাঠিয়েছি। এরপর নামাজ শেষে খাওয়া-দাওয়া পর আমার এক ভাইয়ের ছেলেকে দেখলাম সে কলা পাতায় করে খাবার নিয়ে বাসায় আসছে। আমি যখন ছোট ছিলাম কলা পাতায় খেয়েছিলাম। আমি আমার ভাইয়ের ছেলেকে বললাম আমি তোমার একটা ছবি তুলি। আমার ভাইয়ের ছেলে তো খুবই খুশি কলা পাতায় খেতে পেরে।
রাতে আমার কিছু গেস্ট এসেছিল। তাদের জন্য আরও অনেক কিছু রান্না করেছিলাম। সেটা অন্য একটা ব্লগে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারো নতুন কোনো বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
# ❤️আমার পরিচয়❤️আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনাদের বেশ তাড়াতাড়ি নবান্ন উৎসব হয় ভাবি৷ আমাদের এই উৎসব হতে এখনও দুই মাস৷ তবে এই দুইমাস প্রতি বৃহস্পতিবার নবান্ন উৎসবের অল্প অল্প পালন হয়৷ তাই নিয়ে লিখব একদিন৷ আপনারা যেমন মসজিদে ক্ষীর পাঠান আমরাও তেমনি মকর পাঠাই। আসলে বাংলার উৎসবগুলো একই ধরণের শুধু সামান্যই আলাদা৷ আমাদের নবান্ন উৎসব এখনও হয়।
কৃষি প্রধান দেশের মানুষ আমরা, ধান চালকে গুরুত্ব দিয়ে চাষির বাড়ির আনন্দ উৎসব, এতে মানুষ ও মানুষের খিদে নিবারণই আসল উদ্দেশ্য। এই উৎসব চালু হওয়ার পেছনে মস্ত কারণ ছিল৷ তা নিয়েও লিখব একদিন৷
ভালো লাগল ভাবি আপনা পোস্ট পড়ে৷ অনেক কিছু মনে এলো।
সত্যি ই আপু নবান্ন উৎসব নিয়ে বইতে পড়েছি।কিন্তু কখনও নিজের চোখে এই উৎসব দেখার সুযোগ হয়ে উঠেনি।আয়োজনটা বেশ ভালোই করেছেন।সবাই মিলে মসজিদে দিয়ে এলে গ্রামের সবাই একই সাথে নবান্ন উৎসব কাটাতে পারে এটা ভীষণ আনন্দের।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ই ভালো লেগেছে আপু। ধন্যবাদ জানাচ্ছি শেয়ার করার জন্য।
কৃষকেরা যখন নতুন ধান কেটে নিয়ে আসে,তখন কৃশানীরা সেই নতুন ধান দিয়ে নবান্ন উৎসব পালন করে এমনটা বয়ে পড়েছি। আপনাদের ওখানে ক্ষীর রান্না করে নবান্ন উৎসব পালন করা হয়েছে। আমাদের এখনো নতুন ধান ঘরে ওঠেনি নতুন ধান ঘরে উঠলে মা প্রত্যেক বছর নতুন ধানের আতপ চালের পায়েস রান্না করে নবান্ন উৎসব পালন করে। তবে গ্রামের সবাই মিলে একসাথে নবান্ন উৎসব পালন করার মজাই আলাদা। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো আপু। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।