শেষ হয়েও হলো না শেষ

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আজ--০১ বৈশাখ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বসন্তকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি হতাশামূলক পোস্ট শেয়ার করব, আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • শেষ হয়েও হলো না শেষ
  • আজ-০১লাবৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • রবিবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ রাত্রি সবাইকে......!!


কিছু কিছু সময় আমরা হতাশার একদম চরম মাত্রায় পৌঁছে যাই। এই হতাশা যেন আমাদের কখনোই শেষ হয় না। কিছু কিছু হতাশা আছে যে হতাশাগুলো আমাদেরকে অনেকটাই নিঃশেষ করে দেয়। হতাশার মাঝে আমরা এতটাই নিমজ্জিত হয়ে যাই যে কোন কিছুই আর তখন ভালো লাগেনা সেই বিষয়টা নিয়ে বা সেই ব্যাপারটা নিয়ে সবসময়ই অনেক বেশি টেনশন কাজ করে নিজের মধ্যে। কিছুদিন আগেই ভার্সিটির তৃতীয় পর্বের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম যে যেহেতু রমজান মাস আর এই রমজান মাসের পরীক্ষাটা হয়তোবা ঈদের পরে শুরু হবে। কিন্তু আমাদেরকে অবাক করে দিয়ে হঠাৎ করেই ভার্সিটি থেকে নোটিশ পাঠানো হলো যে ঈদের মধ্যেই আমাদের পরীক্ষা। তবে তখন পর্যন্ত এটা জানানো হয়েছিল না যে কবে বা কোন তারিখে আমাদের পরীক্ষা হবে। প্রথম পর্যায়ে আমরা সকলেই ভেবেছিলাম যে ঈদের আগে যদি পরীক্ষা শেষ হয়ে যায় তাহলে কোন টেনশন আর থাকবে না ঈদটা বাসায় গিয়ে ভালো মতোই উপভোগ করতে পারব। আবারো ভার্সিটি থেকে কয়েকদিন পরে নোটিশ পাঠানো হয় অর্থাৎ আমাদের পরীক্ষার রুটিন পাবলিশ করা হয়। পরীক্ষার রুটিন টা দেখে এতটা হতাশ হয়েছিলাম এবং এতটাই খারাপ লাগছিল যে আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না। কিছু কিছু খারাপ লাগা আছে যে খারাপ লাগা গুলো কখনো বর্ণনা করা সম্ভব নয়।

রুটিনটা এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যে, ঈদের আগে আমাদের দুটো পরীক্ষা হবে আবার ঈদের সাত দিন পরেই আরো দুটো পরীক্ষা নেবে। যেহেতু ফ্রাইডে শিফটে আমি লেখাপড়া করি যার কারণে সেই প্রথম সেমিস্টার থেকেই একই দিনে দুটো করে পরীক্ষা দিয়ে আসছি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়, রুটিনটা সেইরকম ভাবেই সাজানো হয়েছে প্রথম শুক্রবার দুটো পরীক্ষা দিতে হবে আবার ঈদের কয়েকদিন পরে শুক্রবারে আবার দুটো পরীক্ষা দিতে হবে। এতোটুকু অবদি সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল নিজের মন মানসিকতা সবকিছু ঠিক করেই নিয়েছিলাম। গত সপ্তাহে ঈদের আগে শুক্রবার দুটো পরীক্ষা শেষ করে অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম। কিন্তু একটা কথা আছে যে, অভাগা যেদিকে যায় নদীও শুকিয়ে যায় আমাদের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হয়েছে। এমনিতেই রমজান মাস আর রমজান মাসে রোজা রেখে পরীক্ষা দেওয়াটা কতটা কষ্টের যারা রমজান মাসে পরীক্ষা দিয়েছেন একমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন। রমজান মাসে একই দিনে দুটো পরীক্ষা ছিল একটা পরীক্ষা ছিল সকাল ৯ টা থেকে ১২:৩০ পর্যন্ত। আর একটা পরীক্ষা ছিল সন্ধ্যে ৭:০০ থেকে রাত্রি ৯:০০ পর্যন্ত। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ইফতার করার পরে আমাকে আর একটুও বিশ্রাম নেওয়ার কোন অবস্থা নেই চলে যেতে হবে ভার্সিটিতে।

যদিও আমি আর এক বড় ভাই বাসায় ইফতার না করে আমরা ইফতারির আগেই বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম। যেহেতু আমাদের বাসা থেকে ভার্সিটি টা একটু দূরে যার কারণে পরীক্ষার সময় বিবেচনা করে আমরা আগে থেকেই বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম এবং ভার্সিটির সামনে গিয়ে একটা দোকানে ইফতারি করেছিলাম। সারাদিন রোজা রাখার পরে ইফতারি খুব একটা ভালোভাবে সেদিন করতে পারিনি অনেকটাই তাড়াহুড়োর উপরে ইফতারি করেছিলাম। ইফতার শেষ করে হাতে আর মাত্র ছিল ২০ থেকে ২৫ মিনিট, থেকে ২৫ মিনিট একটু রেস্ট করার সময় পর্যন্ত আমরা পাইনি, কিছুক্ষণের মধ্যেই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হয়েছিল।

exam-6350373_1280.jpg

source

মোটামুটি ভাবে গত সপ্তাহের শুক্রবারটা কেটেছে অনেকটাই ব্যস্ততায়। মাঝে মাঝে এরকম হঠাৎ করেই এত বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ি যে নিজেকে এক মিনিট সময় দেবো সে সময়টুকুও নেই। যাইহোক পরীক্ষা শেষ করে রাত্রি সাড়ে এগারোটায় বাসায় আসলাম। হঠাৎ করেই ম্যান গ্রুপে মেসেজ করলো যে আপনাদের যে পরীক্ষাটা ঈদের পরে নেওয়ার কথা ছিল সেই পরীক্ষার এসাইনমেন্ট দিতে হবে। এবার তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা হতাশায় পড়ে গিয়েছিলাম। যদিও এসাইনমেন্ট লেখার জন্য অনেকটা সময় দিয়েছে তবে ঈদের আগে অথবা ঈদের পরে কি আর কখনো এসাইনমেন্ট লেখা সম্ভব আপনারাই বলুন..?? ঈদের মধ্যে ভেবেছিলাম বাসায় গিয়ে একটু ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করব কিন্তু এত বেশি অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছে যে বলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। প্রায় ১০ থেকে ১২ টা ম্যাথ এবং থিওরি দিয়েছে যার হিসেব করলে মোটামুটি ভাবে ৩০ থেকে ৪০ পৃষ্ঠা হবে বলে মনে হচ্ছে। এত এত অ্যাসাইনমেন্ট ঈদের মধ্যে বাসায় গিয়ে লেখা কি আদেও সম্ভব..!! আমার কাছে অনেকটাই কষ্টদায়ক মনে হচ্ছে। আর প্রত্যেক বার ভার্সিটির স্যার এবং ম্যামেরা এই কাজটাই করে আমি জানি না তারা এই কাজ করে কি এমন আনন্দ পায়।

অনেকটাই ভেবে রেখেছিলাম পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে ঈদের আগেই কিন্তু পরীক্ষা শেষ হয়েও যেন হলো না শেষ। ঈদের পরে আবার এসে পরীক্ষা দিতে হবে একই দিনে দুটো সাবজেক্ট। এখন কথা হচ্ছে বাসায় গিয়ে এই দুটো সাবজেক্টে প্রিপারেশন নিব নাকি অ্যাসাইনমেন্ট লিখব সেটাই ভেবে পাচ্ছিনা। মাঝে মাঝে মন চায় ছোট ভাই ব্রাদারের দিয়ে এসাইনমেন্ট লিখে নিই কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট লিখে নিলে তো আর আমি কিছু করতে পারলাম না আমি কিছু জানতেও পারলাম না যার কারণে নিজের কষ্ট হলেও সব সময় চেষ্টা করি নিজের এসাইনমেন্ট নিজেই লেখা। এতে করে কিছুটা হলেও নিজের পড়া হয়ে যায়। যাইহোক ঈদের পরে এসে আবার নতুন একটা প্যারা নিতে হবে।

teenager-8656620_1280.jpg

source

স্টুডেন্ট লাইফ টা হয়তোবা এমনই, স্টুডেন্ট লাইফে আপনি ভেবে রাখবেন একরকম কিন্তু কর্তৃপক্ষ থেকে আপনাকে জানাবে অন্যরকম ঠিক তখনই আপনি হতাশার মধ্যে ডুবে যাবেন। কিন্তু হতাশার মধ্যে ডুবে যাওয়া চলবে না গভীর সমুদ্রে সাঁতার কাটা না গেলেও ছোট্ট পুকুরে তো আমরা সাঁতার ঠিকই কাটতে পারি। এটা যদিও গভীর সমুদ্রের মতোই তবে এটাকে গভীর সমুদ্র ভাবা চলবে না পুকুর ভেবেই সাঁতার কেটে উপরে উঠতে হবে। যাইহোক হতাশার চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেলেও চেষ্টা করছি নিজেকে শক্ত রাখার। এটাই ছিল আমার আজকের পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের ভালো লেগেছে। আজ আর নাই এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়শেষ হয়েও হলো না শেষ
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source


এটাই আমি..!!

IMG-20231204-WA0004-02.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@jibon47



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 months ago 

মাঝে মাঝে মনে হয় এরা আমাদের মানুষ মনে করে না। ঈদের আগে দুইটা ঈদের পরে দুইটা পরীক্ষা ভাবা যায়। এটা রীতিমতো ফাজলামি ছাড়া আর কিছু না। আবার পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয় যে পরীক্ষার পরিবর্তে অ‍্যাসাইনমেন্ট নেবে এটা কোন কথা। একেবারে ভোগান্তির সর্বোচ্চ প্রান্তে আছেন। আপনাকে আমি ধৈর্য্য ধারণ করা ছাড়া আর কোন বুদ্ধি দিতে পারছি না।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 70853.78
ETH 3811.42
USDT 1.00
SBD 3.43