অমর একুশে বই মেলায় ঘুরাঘুরি//পর্ব:--প্রথম

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আজ--০৪ বৈশাখ| ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বুধবার | গ্রীষ্মকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে অমর একুশে বইমেলায় ঘুরাঘুরির মুহূর্ত শেয়ার করব, আমি চেষ্টা করব ধারাবাহিকভাবে আপনাদের মাঝে পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরার। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • অমর একুশে বইমেলায় ঘোরাঘুরি--প্রথম পর্ব।
  • আজ--০৪ষ্ঠাবৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • বুধবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ দুপুর সবাইকে......!!


Picsart_24-04-05_20-47-28-001.jpg

কভার ফটো তৈরিতে--@jibon47



বইমেলায় ঘুরাঘুরি করতে পছন্দ করে না এরকম মানুষ খুব কমই আছে। বিশেষ করে আমার এটাই মনে হয় যে মানুষ আর কোথাও ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করুক বা না করুক প্রত্যেক বছরেই যদি তার সুযোগ হয় তাহলে সে বই মেলাতে যাবে এটাই স্বাভাবিক। এর আগে আমি যখন ঢাকাতে ছিলাম তখন কখনোই বইমেলা ঘোরাঘুরি করতে যাওয়া হয়নি, হয়তোবা তখন অনেকটাই ব্যস্ত ছিলাম আর ব্যস্ততার কারণে বইমেলায় ঘুরাঘুরি করা হয়ে ওঠেনি। তবে এবছর যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন অনেক আগে থেকেই চিন্তা-ভাবনা করে রেখেছিলাম যে এবছর বইমেলায় যাবই সেটা যেভাবেই হোক আর যত ব্যস্তই থাকি। যেহেতু আমরা ভাই ব্রাদার সবাই তখন একই জায়গায় এক বাসাতেই থাকতাম যার কারণে ঘুরাঘুরি করাটা আরো বেশি সহজ ছিল। এলাকার ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘুরাঘুরি করার মাঝে যতটা আনন্দ রয়েছে সেই আনন্দ আমি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরাঘুরি করেও পাই না। বইমেলা শুরু হওয়ার আগেই আমরা সবাই মিলে ঠিক করে রেখেছিলাম যে এবারের একুশে বইমেলায় আমরা বই কিনি বা না কিনি সেটা বড় কথা নয় বইমেলায় ঘুরতে যাবে। এলাকার আরো কিছু ভাই ব্রাদার ঢাকার অন্যান্য জায়গায় ছিল তাদের আগেই বলে রেখেছিলাম যে একদিনের ছুটি নিয়ে হলেও আমাদের বাসায় আসতে হবে।

আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমাদের বাসা থেকে সকলে মিলে আমরা একসঙ্গে বইমেলায় ঘুরতে যাব। যেমন ভাবা তেমনি কাজ আমরা হঠাৎ একদিন দিন তারিখ ঠিক করে সিদ্ধান্ত নিলাম বইমেলায় ঘুরতে যাব আর তার আগের দিনেই সকলে আমাদের বাসায় এসে উপস্থিত হয়েছিল। যেহেতু একদিন আগে সবাই আমাদের বাসায় চলে এসেছিল তাই সেদিন রাত্রে আমরা অনেকটাই ইনজয় করেছিলাম সবাই মিলে। এরকম ইনজয় করেছিলাম আরো দু থেকে তিন মাস আগে যখন আমরা সবাই গ্রামের বাসায় ছিলাম। আমরা গ্রামের বাসায় থাকাকালীন প্রায় প্রত্যেক দিন রাত্রেই সবাই মিলে একটা জায়গায় আড্ডা দিতাম আর আজকে যেহেতু সবাই একসঙ্গে যার কারণে রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে অনেকটাই লেট হয়ে গিয়েছিল। যদিও আমরা ইচ্ছে করেই রাত জেগে ছিলাম সেদিন অনেকেই রাত জেগে জেগে কার্ড খেলেছিল, যদিও আমি কার্ড খেলতে পারি না তবে লেখালেখির দায়িত্বটা আমার উপরে ছিল। আমি কার্ডের হিসাব ভালোমতো লিখতেও পারি না যার কারণে অনেকেই এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেক হাসি তামাশা করে। যাইহোক কার্ড খেলতে পারি বা না পারি তাদের সঙ্গে রাত জাগতে হবে এটা ভেবেই অনেকটা রাত জেগে ছিলাম।

দুপুর নাগাদ ঘুম থেকে উঠে আমরা সকলেই বইমেলায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রেডি হচ্ছিলাম,যদিও ঘুম থেকে সবার থেকে দেরি করে আমি উঠে ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে দ্রুত রেডি হয়ে আমরা প্রায় সাত থেকে আট জন চলে যাই বইমেলার উদ্দেশ্যে। বুঝতেই পারছেন সাত থেকে আট জন যখন বইমেলায় ঘুরতে যাচ্ছি তাহলে সেখানে কতটা মজা হবে। এরপরে আমরা মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে একটা বাসে করে বইমেলার উদ্দেশ্যে রওনা দেই সেদিন রাস্তায় অনেকটাই জ্যাম ছিল। ঢাকা শহরের জ্যামের ব্যাপারে আর কি বলবো আপনারা সকলেই জানেন ঢাকা শহরের জ্যামের অবস্থা খুবই খারাপ। আর সেই সাথে বাস ড্রাইভার গুলোও একটু স্বার্থবাদী, এরা সব সময়ই বাস এতটা বেশি স্লো চালায় আর এত জায়গায় স্টপ দেয় যে মাঝে মাঝে অনেক বেশি রাগ উঠে যায়। যাইহোক কি আর করার যেহেতু বইমেলায় যেতে হবে কিছু করার ছিল না বাসের মধ্যে চুপ করে আমরা সবাই মিলে বসে ছিলাম।

IMG20240210172606.jpg

IMG20240210172609.jpg

IMG20240210172612.jpg

IMG20240210172616.jpg

IMG20240210172619.jpg

IMG20240210172639.jpg

রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম থাকার কারণে আমরা শাহবাগ মেট্রোলের আগেই নেমে পড়েছিলাম এবং সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে বইমেলার দিকে যাচ্ছিলাম। বইমেলার গেটে প্রবেশ করাতেই মনটা অনেক বেশি ভালো হয়ে গেল। চারিদিকে এত এত মানুষ জন দেখে বোঝাই যাচ্ছিল যে বই মেলাতে প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছে। যদিও প্রথম অবস্থায় আমরা ভিন্ন একটা পথে প্রবেশ করেছিলাম, ভিন্ন একটা পথে প্রবেশ করাতেই দেখতে পারলাম চারদিকে সবুজ প্রকৃতি আর সবুজ প্রকৃতির মাঝ দিয়ে রাস্তা এই রাস্তা ধরে হেঁটে যেতে ভীষণ ভালো লাগছিল। যেতে যেতেই আমরা দেখেছিলাম যে কিছু বিদেশী মানুষ যারা কিনা বইমেলা দেখতে এসেছে ভিন্ন দেশ থেকে। তাদের আচরণ এবং চেহারার গঠন দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে তারা টুরিস্ট, পাশেই অনেকটা কম্প্রেসার ব্যবহার করে আগুন জ্বলছিল আগুনের দাও দাও দৃশ্য দেখতে বেশ ভালই লাগছিল। এরপরে আমরা চলে যাই রেসকোর্স ময়দানের সামনের দিকে যেখানে অনেক বড় একটা টাওয়ার তৈরি করে রাখা হয়েছে। আপনারা যারা বইমেলায় গিয়েছেন তারা এটা দেখেছেন নিশ্চয়ই।

যেহেতু আমি প্রথমবারের মতো বই মেলায় গিয়েছি এর আগে কখনোই বইমেলায় যাওয়া হয়নি। তাই প্রথমবার গিয়ে রীতিমত অবাক হয়েছিলাম এবং সকল কিছু আমার কাছে একদম নতুন নতুন মনে হচ্ছিল। নতুন নতুন মনে হলেও আশেপাশে ভাই ব্রাদার থাকার কারণে খুব একটা বেশি সমস্যায় পড়তে হয়নি সকলে আমরা সেখানে গিয়ে কিছুটা সময় বসে ছিলাম। আমি শুধু বারবার বলছিলাম যে বইমেলায় কখন যাব আর বইমেলাটা কোথায় হচ্ছে কারণ আশেপাশে কোন বইয়ের দোকান দেখতে পাচ্ছিলাম না। পরবর্তীতে জানতে পারলাম যে বইয়ের দোকানটা আরেকটু ওপাশে আমরা সেই বড় টাওয়ারের ওখানে গিয়ে অনেকটা সময় অতিবাহিত করেছিলাম। এ যেন এক অন্যরকম এক মুহূর্ত এই মুহূর্তের বর্ণনা কখনো শেষ করা সম্ভব নয়।

IMG20240210172812.jpg

IMG20240210172815.jpg

IMG20240210172758.jpg

IMG20240210172933.jpg

IMG20240210173043.jpg

IMG20240210173052.jpg

IMG20240210173113.jpg

আমরা সেই টাওয়ারের উপর বসে অনেকটা সময় অতিবাহিত করেছিলাম সন্ধ্যার আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন আমরা বইমেলায় প্রবেশ করব। কারণ সন্দেহ হবার পর নাকি বইমেলাতে কিছুটা ভিড় কম থাকে আর ভিড়ের মধ্যে বইমেলাতে গিয়ে শুধু শুধু অতিষ্ঠ হওয়ার কোন মানেই হয় না। এরপরে আমরা সেখানেই বসে ছিলাম পাশেই দেখতে পারছিলাম যে গিটার নিয়ে অনেক ছেলেপেলে যারা গান গাইছে। সেই সাথে অনেক কপোত কপোতি একে অপরের সঙ্গে বসে বসে গল্প করছে। ঢাকা শহরে কোন একটা পার্ক অথবা কোথাও যদি কোন মেলা হয় তাহলে এই দৃশ্যটা আমরা সব থেকে বেশি দেখি। যাইহোক অনেকেই আবার দেখছিলাম ছোটবেলার স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছে অর্থাৎ তারা ছোটবেলায় আমরা যেরকম কানামাছি, স্যান্ডেল চুরি,মনদাদী এই খেলা গুলো খেলতাম তারা অনেকটা বড় হবার পরেও এই খেলাতে মেতে উঠেছে। সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমরা তাদের খেলা দেখছিলাম ভীষণ ভালো লাগছিল।

অনেকদিন পরে সবাই মিলে একত্রে ঘুরতে বের হয়ে নিজের মধ্যে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিল। যদিও এই ভালোলাগাটা কখনো বর্ণনা করে সম্ভব নয় তবে আমি আপনাদের মাঝে পুরো ব্যাপারটা চমৎকারভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করব। এ পর্বে বাসা থেকে শুরু করে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত যাওয়ার মুহূর্ত আপনাদের মাঝে তুলেছি আমি খুব দ্রুতই আপনাদের মাঝে বইমেলায় প্রবেশ করার মুহূর্ত তুলে ধরবো। আশা করছি আমার এই বইমেলায় ঘোরাঘুরির প্রথম পর্বটা আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়বইমেলায় ঘুরাঘুরির মুহূর্ত--প্রথম পর্ব
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source


এটাই আমি..!!

IMG-20231204-WA0004-02.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@jibon47



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last month 

বইমেলায় ঘুরতে যাওয়ার এক দারুণ অনুভূতি আপনি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন। আপনার এই অসাধারণ একটি অনুভূতিমূলক পোস্ট আমার ভালো লেগেছে এই জন্য যে বই হচ্ছে জ্ঞানের ভান্ডার। আর সেখানে আপনারা অনেকজন একসাথে গিয়েছেন এবং বিশেষ বিশেষ কিছু অভিজ্ঞতা সেখানে খুঁজে পেয়েছেন। তবে দেরি করে ওঠার বিষয়টা আমার কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। চেষ্টা করতে হবে লিমিটেডের মধ্যে আসার।

 last month 

বইমেলায় ঘুরাঘুরি করার মজাই আলাদা। আজকে আপনি সে বই মেলায় ঘোরাঘুরি করে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে। একইসাথে এখানে আপনি ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমাদের মাঝে অনেক কিছুই ফুটিয়ে তুলেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 68055.12
ETH 3813.21
USDT 1.00
SBD 3.72