“মনপুরা” মুভি রিভিউ।। গরীব ও সৎ কর্মচারীর সাথে বিশ্বাসঘাতক মুনিবের গল্প।।
বাংলা ভাষাভাষীদের এক মিলন মেলা।।
হ্যালো বাংলা ভাষাভাষী বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। এই গরমে কেমন ভালো আছেন। সেটা তো বুঝতে পারছি। তারপরও ভালো থাকার শত চেষ্টা করতে হবে। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে খুবই আলোচিত একটি রোমান্টিক মুভি রিভিউ শেয়ার করবো। আশা করি রিভিউটি সবার পছন্দ হবে।
মুভির কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য-
- মুভির নাম-মনপুরা
- রচনা ও পরিচালনা- গিয়াস উদ্দিন সেলিম
- প্রযোজক-অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু
- অভিনয় করেছেন- চঞ্চল চৌধুরী,ফারহানা মিলি, ফজলুর রহমান বাবু, মনির খান শিমুলসহ আরও অনেকে।
- সময়- ২ ঘন্টা ১৬ মিনিট
- মুক্তির তারিখ- ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
- ভাষা-বাংলা
- দেশ-বাংলাদেশ।
প্রধান চরিত্র
- চঞ্চল চৌধুরী-সোনাই
- ফারহানা মিলি- পরী
মুভির সংক্ষিপ্ত রিভিউ-
অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু প্রযোজিত , গিয়াস উদ্দিন সেলিম রচিত ও পরিচালিত খুবই আলোচিত একটি মুভি হলো মনপুরা। এই মুভিটির মাধ্যমে গিয়াস উদ্দিন সেলিম প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ছবি নির্মাণ করেন। গ্রামবাংলার দ্বীপের পটভূমিতে নির্মিত, পারিবারিক প্রেমের গল্পের এই ছবিটিতে প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী ও ফারহানা মিলি। চঞ্চল চৌধুরী মনপুরা মুভি করার পরেই দর্শকদের মনে সারা ফেলে। তারপর থেকে ধীরে ধীরে চঞ্চল চৌধুরী অনেক গুলো মুভি করেছে। আর সে যত গুলো মুভি করেছে অধিকাংশ মুভি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
মনপুরা দ্বীপ হচ্ছে বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগর এলাকার উত্তরদিকে মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত একটি দ্বীপ। এটি ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলায় কিছুটা অংশ জুড়ে অবস্থিত। মুভিটি নির্মাণ করার আগে মনপুরা নামটা তেমন পরিচিতি ছিল না। মুভিটির মাধ্যমে দ্বীপের নামটা সারা বাংলাদেশের মানুষের মুখে মুখে উঠে আসে। মুভিটি ২০০৯ সালে যখন রিলিজ হয় তখন আমি খুবই ছোট। তখন মুভিটি দেখার কোন পদ্ধতি আমার ছিল না। ঢাকায় আসার পরে মুভিটি দেখেছিলাম। একজন প্রভাবশালী মনিব মিথ্যা, কুমন্ত্রণা এবং ভয়ানক বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে গরীব ও সৎ এক কর্মচারীর জীবনকে কিভাবে অনিশ্চয়তার বেড়াজালে ফেলে দেয় । সেই কাহিনীটা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরছি।
ঘটনা শুরু হয় মূলত মামুনুর রশীদ তথা গাজী সাহেবের বাড়ির এক কাজের মেয়ের হত্যাকান্ড দিয়ে। গভীর রাতে হত্যাটা করে প্রভাবশালী গাজী সাহেবের মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে হালিম গাজী। এখন গাজী সাহেব ও তার স্ত্রী বিষয়টা এলাকায় জানাজানি হওয়ার আগেই সমাধন করার চেষ্টা করে। আর সে জন্য গাজী সাহেব নিজের ছেলেকে রক্ষা করতে স্ত্রীর পরামর্শে বাড়ির এতিম কাজের ছেলে সোনাইকে মনপুরা দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। যাতে সবাই সোনাইকে খুনি, দোষী ভাবতে পারে। আর সেই অনুযায়ী সকাল বেলা সূর্য উঠার আগেই একটি নৌকা দিয়ে একজন মানুষ বেচেঁ থাকার প্রয়োজনীয় সকল জিনিষ পত্র নিয়ে মনপুরা দ্বীপে সোনাইকে দিয়ে আসে। সোনাই সেখানে জীবন যাপন করতে থাকে। সোনাই দ্বীপে কথা বলার মানুষ না পেয়ে গরু ছাগল ও পাখির সাথে কথা বার্তা বলে। এভাবেই তার দিন কাটতে লাগলো। গাজী সাহেব সোনাইকে বলেছে সে যেন কোন মানুষের সাথে কথা না বলে।
এভাবেই সোনাই দিন সাপ্তাহ মাস পার করতে থাকে। এই দ্বীপে বা চরের আশে পাশে কোন মানুষজন না আসলেও হঠাৎ করে মনপুরা চরে সোনাইয়ের সঙ্গে দেখা হয় পরীর। পরী হাকিম মাঝির মেয়ে, সে মনপুরা দ্বীপের দিকে বাবার সঙ্গে মাছ ধরতে এসেছিল। এক দেখাতেই তাদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। একজন অপর জনকে না দেখে থাকতে পারে না। রাতে ঘুমাতে পারে না। এভাবে যত দিন গড়ায় সোনাই আর পরী ততই একে অপরের কাছাকাছি আসে। একদিন চরে এসে গাজী সাহেব পরীকে সোনাইয়ের সাথে দেখে ফেলে । আর তখনই ঠিক করে তার পাগল ছেলে হালিমের সঙ্গে পরীর বিয়ে দেবে। কারন গাজী সাহেবের পীর সাহেব বলেছে বিয়ে দিলে হালিমের মাথা ঠিক হয়ে যাবে। সে সোনাইকে বুঝায় কোন ভাল ঘরের মেয়ে হালিমের কাছে মেয়ে বিয়ে দিবে না। এই মেয়ে সুন্দর এবং গরিব। অতএব মেয়ের বাবাকে লোভ দেখিয়ে পাগল ছেলে হালিমের সাথে পরীর বিয়ে ঠিক করে। এই খবর সোনাই শুনতে পেরে সে আর পরী পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু যেদিন পালিয়ে যাবে সেদিনই সোনাই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এরপর গাজী সাহেব পাগল হালিমের সঙ্গে অনেকটা জোর করেই পরীর বিয়ে দেয়।
বিয়ের পরে পরী পাগল হালিমের ঘরে থাকে না। সে শ্বাশুড়ির সাথে থাকে। এভাবেই দিন যায় মাস যায় পরী সোনাইকে আর ভুলতে পারে না। শ্বাশুড়ি একদিন পরীকে মিথ্যা বলে যে সোনাইয়ের ফাঁসি হবে। এমনকি শ্বাশুড়ি দিন তারিখ ও সময়ও বলে দেয়। এ খবরটা পরী সহ্য করতে পারে না। যেদিন বলেছিল সোনাইয়ের ফাঁসি হবে সেদিন রাত বারোটার সময় পরী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। সোনাই পরের দিন জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গাজী সাহেবের বাড়ি এসে দেখে পরী চিরনিদ্রায় চলে গেছে। শত ডাকলেও পরী আর সোনাইয়ের কথার জবাব দিবে না।
নিজের মতামত-
মুভিটি খুবই সুন্দর হয়েছে। অন্যান্য মুভিতে কোথাও না কোথায় অমিল থাকে। তবে এই মুভিতে আমি কোথাও অমিল পায়নি। মুভিটি দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। গাজী সাহেবের মত বিশ্বাসঘাতক মনিব এখনও দুনিয়াতে আছে। আর সোনাইয়ের মত গরীব ও সৎ কর্মচারীও আছে। আমাদের সমাজে এমন ঘটনা গঠছে বলেই মুভিটি নির্মাণ করা হয়েছে। আর সমাজের মানুষ সবসময় ক্ষমতাশালী মানুষের পিছনেই ঘুরে। তার পক্ষেই কথা বলে। গরীব মানুষের পক্ষে কেউ কথা বলে না। আশা করি মুভিটি দেখলে অনেক কিছু বুঝতে ও শিখতে পারবেন।
ধন্যবাদ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
আপনি খুবই জনপ্রিয় একটা মুভির রিভিউ আমাদের মধ্যে শেয়ার করেছেন। আমার মনে হয় মনপুরা ছবি দেখেনি এরকম মানুষ খুব কমই আছে আমি এই মনপুরা ছবি বেশ কয়েকবার দেখেছি। আসলেই বর্তমান সময়ে গাজী সাহেবের মত এমন অনেক মনিব আছে যারা কিনা সব সময়ই তার কর্মচারীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। যাইহোক আপনার এই রিভিউ করে অনেক বেশি ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া গাজী সাহেবের মত অনেক মানুষ রয়েছে। যারা তার কর্মচারির সাথে বিশ্বাঘাতকতা করে। ধন্যবাদ।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
অনেক সুন্দর একটি মুভির রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। মুভিটির রিভিউ পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এই মুভিটি আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি মুভি। একই সাথে মুভিটি আমাদের জন্য বেশ শিক্ষামূলক। তাই চমৎকার এই মুভিটি জীবনে একবার হলেও আমাদের দেখা উচিত।
ভাইয়া মুভিটা যে এত সুন্দর সেটা আমি জানতাম না। দেখার পরে বুঝতে পেরেছি। ধন্যবাদ।
খুব জনপ্রিয় এবং সুন্দর একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। মুভিটি দেখে আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে।আজ আপনার রিভিউ পড়ে আমার কাছে আরো বেশি ভালো লাগলো। এই ছবির গানগুলো বেশ ভালই ছিল। সুন্দর একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জী আপু মুভিটার নাম সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল। ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের ছবির ইতিহাসে এটা অন্যতম সেরা একটা ছবি। আমি অসংখ্য বার দেখেছি ছবিটা। এই ছবি টার একটা সংলাপ আমার মনে আছে এবং বাস্তব সত্য সেটা। "গরীবের পিয়ারি থাকতে নাই। আসলেই তাই। মুভিটা অসাধারণ একটা কাহিনীর উপর নির্মিত। বিশেষ করে একেবারে শেষে সোনাই অর্থাৎ চঞ্চলের নদীর মাঝে গিয়ে নৌকার বৈঠা ছেড়ে দেওয়া প্রমাণ করে তার জীবনের আর কোন চাওয়া পাওয়া গন্তব্য নাই। দারুণ রিভিউ করেছেন মুভি টার।
জী ভাইয়া গরীবের পিয়ারি থাকতে নাই। কারন সেই পিয়ারি অন্য কেউ নিয়ে যায়। ধন্যবাদ।
মনপুরা চঞ্চলচৌধুরীর সেরা একটা সিনেমা ছিল ২০০৯ সালে বিসেস করে এই সিনেমার গান সোনারুপা লংকের ঘরে রেখে বেধে ছিলেম তারে গানটা এতো টা জনপ্রিয় ছিল বলার বাহিরে এখনো অনেক জনপ্রিয়।এক সৎ কর্মচারির প্রতি জঘন্য বিচার করার একটা গল্প সুন্দর উপস্থাপন ছিল সবার অভিনয় ছিল দারুন।ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাইয়া ঐ গানটির কারনেই মুভিটা এতো আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ধন্যবাদ।
বাংলা চলচ্চিত্রের ভাবমূর্তির উন্নয়ন হয়েছে কিছু ছবির জন্য আর তার মধ্যে এটি একটি। খুবই জনপ্রিয় ও মনে রাখার মত একটি মুভি ছিল। পুরো মুভিটি অনেকবার দেখেছি। আর গানগুলো বেশ অসাধারণ ছিল। যাইহোক ভাই জনপ্রিয় একটি ছবির রিভিউ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
জী ভাইয়া যেমন গান গুলো তেমন কাহিনী। কেউ ভুলতে পারে না মুভিটির কথা। ধন্যবাদ।
মনপুরা মুভিটি বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে। মুভির গল্পটি ছিলো জাস্ট অসাধারন। এধরনের ভিন্ন রকম গল্পের মুভি দেখতে পছন্দ করি। আপনার রিভিউ দেখে মুভিটা আর একবার দেখার আগ্রহ হলো। সময় করে দেখে নিবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
জী ভাইয়া মুভিটি দেখবেন । অনেক মজা পাবেন। ধন্যবাদ।
এই মুভিটি আমি অনেকবার দেখেছি। তবে এই মুভিটির কাহিনী এখনো মনে আছে। আসলে মনিবকে অতিরিক্ত বিশ্বাস করলে সেই ক্ষতি করে এই মুভিতে বুঝা যায়। আর এই মুভিটি এত সুন্দর করেছেন যেই একবার দেখে বারবার দেখতে মন চাইবে। এবং আপনি মুভিটি খুব সুন্দর করে কাহিনী আমাদের মাঝে তুলে ধরছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে মুভিটি আমাদের মাঝে রিভিউ করার জন্য।
ভাইয়া গাজীর মত মুনিব এখনো আছে। তাই সবাধান থাকতে হবে। ধন্যবাদ।
https://x.com/ArianKh29670721/status/1783887502702702667