শীতের আমেজে ঘরের তৈরি ম্যারা পিঠার উৎসব।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। প্রতিটি ঋতুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আলাদা আলাদা রঙ, স্বাদ আর সংস্কৃতি। তবে শীত ঋতু এলেই যেন আমাদের বাঙালির জীবনে আলাদা এক আনন্দ নেমে আসে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাস মানেই কুয়াশাভেজা সকাল, নরম রোদ আর তার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় পিঠা-পুলির উৎসব। শীতকালে গ্রাম থেকে শহর সব জায়গাতেই পিঠার ঘ্রাণে ভরে ওঠে পরিবেশ।
শীতের পিঠার কথা বলতে গেলে প্রথমেই চোখে ভাসে ভাপা পিঠা, পুলি পিঠা, খোলা পিঠা, চিতই পিঠা, আর অবশ্যই ম্যারা পিঠা। শহর কিংবা গ্রামে সন্ধ্যার পর রাস্তার পাশে, বাজারের কোণে কোণে ভাপা পিঠার দোকান দেখা যায়। খেজুরের গুড়, সাধারণ গুড় কিংবা নারিকেল দিয়ে তৈরি গরম গরম ভাপা পিঠার স্বাদ শীতের রাতে আলাদাই অনুভূতি এনে দেয়।
গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে বেশ ভালোই শীত পড়েছে। ঠান্ডার এই আবহাওয়ায় হঠাৎ করেই মনে পড়ে গেল শীতের আরেকটি বিশেষ পিঠার কথা আর সেটা হলো ম্যারা পিঠা। ম্যারা পিঠাকে অঞ্চলভেদে চোয়া পিঠা, মুঠা পিঠা ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। নাম ভিন্ন হলেও স্বাদ আর ঐতিহ্য একই।
আজকের দিনটা আমাদের বাসায় একটু অন্যরকম ছিল। অফিস থেকে আজকে একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরেছি। কারণ আগেই প্ল্যান করা ছিল, আজ বাসায় ম্যারা পিঠা বানানো হবে। শীতের সন্ধ্যায় ঘরের সবাই মিলে পিঠা বানানোর আনন্দই আলাদা।
কিছুদিন আগে গ্রাম থেকে আসার সময় সঙ্গে করে চাউলের গুড়ো নিয়ে এসেছিলাম। গ্রামের চাল দিয়ে তৈরি গুড়োর গন্ধ আর মান শহরের গুড়োর থেকে একেবারেই আলাদা। প্রথমে চাউলের গুড়ো ভালোভাবে চালনি দিয়ে চেলে নিলাম, যেন কোনো দানা বা ময়লা না থাকে। এরপর চুলায় আগুন জ্বালিয়ে একটি পাতিল বসানো হলো। সেই পাতিলে গুড়োগুলো হালকা করে গরম করে নেওয়া হলো।
গুড়ো একটু গরম হওয়ার পর ধীরে ধীরে গরম পানি দিয়ে কাই করে নেওয়া হলো। কাই করার সময় হাতের তালু দিয়ে মথে নেওয়া হয়, যেন মিশ্রণটা নরম হয় কিন্তু বেশি নরম না হয়ে যায়। তারপর সেই কাই থেকে অল্প অল্প নিয়ে ছোট ছোট আকারে ম্যারা পিঠা বানানো হলো। একটার পর একটা পিঠা বানিয়ে আগুনে ভাপ দেওয়া হলো।
এক সময় দেখা গেল, অনেকগুলো পিঠা তৈরি হয়ে গেছে। পুরো বাসায় যেন উৎসবের আমেজ। গরম পিঠার ঘ্রাণে মনটাই ভালো হয়ে যায়। এই পিঠাগুলো আমরা শুধু আজ নয়, প্রতিদিন সকালবেলাও আগুনে গরম করে খেয়ে থাকি। বিভিন্ন ধরনের ভর্তা শুঁটকি ভর্তা, আলু ভর্তা, মরিচ ভর্তা কিংবা সরিষার তেল দিয়ে ম্যারা পিঠার সঙ্গে খেতে অসাধারণ লাগে।
আসলে পিঠা শুধু খাবার নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের শীতের স্মৃতি। পরিবার-পরিজন একসঙ্গে বসে পিঠা বানানো, গল্প করা, হাসাহাসি এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই জীবনের বড় আনন্দ। এর আগেও আমাদের বাসায় অনেকগুলো পিঠা বানানো হয়েছিল, আর সেগুলো খেয়ে সবার খুব ভালো লেগেছিল। সেই ভালো লাগার কারণেই আজ আবার ম্যারা পিঠা বানানো হলো। নুসাইবাও আমাদের সাথে পিঠা বানানোর উৎসবে যোগ দিয়েছে কাই নস্ট করে..😛
শীতের এই সময়টুকু, পিঠার এই আনন্দ সব মিলিয়ে মনে হয়, এটাই তো বাঙালির শীতের আসল সৌন্দর্য।
Photographer- @joniprins
Device- Realme C53
Location-Dhaka
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server





















