অসুস্থতার দুশ্চিন্তায় এক বাটি চটপটিতেই স্বস্তি।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
গত কয়েকদিন ধরে সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না। আমি আর আমার ছোট্ট মেয়ে নুসাইবা দুজনেই ভীষণ অসুস্থ। ঠান্ডা লাগা আসলে ছোট কোনো সমস্যা না, কিন্তু যে ভোগান্তিটা হয়, সেটা কেবল ভুক্তভোগীরাই বোঝে। নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়া, মাথা ভার হয়ে থাকা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, এই অবস্থায় ঠিকভাবে কাজ করাও সম্ভব হয় না। সবকিছুতেই এক ধরনের অস্বস্তি লেগেই থাকে।
কিছুটা স্বস্তির আশায় মন্টিলুকাস্টের দুটি ট্যাবলেট খাওয়ার পর সামান্য আরাম পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু মনটা শান্ত না। কারণ আমার নিজের অসুস্থতার চেয়েও বড় চিন্তার জায়গা হলো আমার মেয়ে নুসাইবা।
গাজীপুর যাওয়ার আগেই নুসাইবার হালকা ঠান্ডা ছিল। তখন তেমন গুরুত্ব দেইনি। ভেবেছিলাম, একটু বিশ্রাম পেলেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু গাজীপুর থেকে ফেরার পর সেই হালকা ঠান্ডাই যেন ভয়ংকর রূপ নিল। রাত হলেই তার প্রচণ্ড জ্বর আসে। প্রথম রাতেই শরীর ছুঁয়ে বুঝলাম জ্বরটা স্বাভাবিক না। থার্মোমিটার ধরতেই দেখা গেল ১০২ ডিগ্রি!
একজন বাবা হিসেবে সেই মুহূর্তের দুশ্চিন্তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। রাতেই নিজে গিয়ে এইচ সাসপেনসন সিরাপ এনে দেই। দুই দিন ধরে নিয়ম করে খাওয়াচ্ছি, কিন্তু জ্বর ঠিকভাবে কমছে না। দিনে কিছুটা কমে, রাতে আবার বেড়ে যায়। সারাদিন-সারারাত সে অস্থির, কান্নাকাটি করছে। বারবার ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিচ্ছি, এইটুকুই তখন আমার হাতে থাকা সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
আমি আসলে চাইছিলাম না এন্টিবায়োটিক দিতে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক নিয়ে সবসময় একটা ভয় কাজ করে। কিন্তু যখন দেখি জ্বর কমছেই না, তখন আর সিদ্ধান্তহীনতায় থাকা যায় না। আজকে মনে হয় এন্টিবায়োটিক নিয়েই যেতেই হবে।
আরেকটা বড় সমস্যা হলো নুসাইবা কিছুই খাচ্ছে না। ভাত, ফল, কেক, চিপস, নুডলস সবই ট্রাই করেছি। কিন্তু কিছুতেই আগ্রহ নেই। অসুস্থ বাচ্চা যখন খেতে চায় না, তখন বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা দ্বিগুণ হয়ে যায়।
হঠাৎ করেই সে বললো ঘুগনি খাবো। কথাটা শুনে একটু অবাকই হলাম। বাসায় ঘুগনির বুট ছিল ঠিকই, কিন্তু সেগুলো তো কাঁচা। তখন বিকেলে বুট ভিজিয়ে রাখলাম। সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে নিজেই বুট সিদ্ধ করলাম। সাথে সামান্য লবণ আর সশা কেটে দিলাম। খুব বেশি না, কিন্তু অল্প একটু হলেও নুসাইবা খেলো এইটুকুতেই যেন মনে হলো বিশাল একটা যুদ্ধ জিতে গেছি।
বুট ভিজানো ছিল একটু বেশি, তাই নিজের জন্যও কিছু করার চিন্তা করলাম। সিদ্ধ বুটের সাথে সশা, সেদ্ধ ডিম, কুচি করা ধনেপাতা, কাঁচামরিচ আর লেবুর রস দিয়ে হালকা একটা চটপটি বানালাম। ঝাল কম, স্বাদটা একেবারে ঘরোয়া। অবাক করার মতো বিষয় হলো খেতে অসম্ভব ভালো লাগলো।
এই এক বাটি চটপটি যেন কয়েকদিনের ক্লান্তি, টেনশন আর দুশ্চিন্তার ভেতর সামান্য স্বস্তি এনে দিল। হয়তো খাবারটা খুব সাধারণ, কিন্তু সেই মুহূর্তে এটা ছিল নিজের জন্য একটু যত্ন নেওয়ার ছোট্ট চেষ্টা।
অসুস্থতার সময়টা আমাদের অনেক কিছু শেখায়। শেখায় ধৈর্য, শেখায় পরিবারের গুরুত্ব, শেখায় ছোট ছোট সুখের মূল্য। নুসাইবার জ্বর দ্রুত সেরে উঠুক এই দোয়া আর অপেক্ষাই এখন সবচেয়ে বড় ভরসা। সবার কাছেই দোয়া প্রার্থী।🤲
Photographer- @joniprins
Device- Realme C53
Location-Dhaka
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server


















