দুই দিনে দুই বিদায়।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
জীবন কখনো কখনো আমাদের এমন কিছু পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করায়, যেগুলো আমরা আগে কল্পনাও করতে পারি না। গতকাল এবং আজ এই দুই দিন আমার জীবনে ঠিক এমনই দুই রকম বিদায়ের অভিজ্ঞতা এনে দিয়েছে। একটি বিদায় ছিল চিরস্থায়ী, আরেকটি বিদায় ছিল জীবিকার টানে দূর দেশে যাওয়ার জন্য।
গত পরশু রাতে আমার চাচি শাশুড়ি মারা গেলেন। খবর পাওয়ার সাথে সাথেই সকালে ঢাকা থেকে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। জানাজা, দাফন এবং কবরের কাজ শেষ করতে করতে দিন পার হয়ে যায়। আসলে কোনো মানুষকে শেষ বিদায় দেওয়া কখনোই সহজ নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে নিশ্চিত সত্য হলো মৃত্যু। যে এসেছে তাকে একদিন না একদিন চলে যেতেই হবে। এই বাস্তবতা জানলেও কাছের মানুষের বিদায় মনকে ব্যথিত করে তোলে।
পরিকল্পনা ছিল দাফনের কাজ শেষ করে আবার দুপুরের দিকে ঢাকায় ফিরে আসব। কিন্তু জীবনের পথ সবসময় আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে না। আজকে শুক্রবার ছিল, আর ঠিক আজই আমার একমাত্র শ্যালকের সৌদি আরব যাওয়ার ফ্লাইট নির্ধারিত ছিল। তাই শ্বশুরবাড়ির সবাই বললেন ঢাকায় যেহেতু ফিরছো, তাহলে শ্যালককেও সঙ্গে করে নিয়ে যাও। কথা শুনে ঠিকই মনে হলো, এটাই যুক্তিযুক্ত। তাই পরিবারের সবার অনুরোধে সিদ্ধান্ত নিলাম, আজই সবাই একসাথে ঢাকায় ফিরব।
দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে তিতাস ট্রেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ভ্রমণের ক্লান্তি থাকলেও আজ তিতাস ট্রেনের সার্ভিস সত্যিই ভালো ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ছাড়ার পর ঠিক বিকেল ৫টার মধ্যেই আমরা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে যাই। এরপর সোজা এয়ারপোর্টে চলে গেলাম। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থেকে তিনতলায় গিয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নেই। তারপর আমার দুই ভায়রা ভাইয়ের সাথে দেখা করে শ্যালককে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিমানবন্দরের ভেতরে পাঠিয়ে দিই।
এতসব কাজের পর শরীরটাকে সত্যিই ভীষণ ক্লান্ত লাগছিল। তারপরও মনকে ভালো লাগছিল এই ভেবে যে, শ্যালককে সুন্দরভাবে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পেরেছি। সব ঠিকঠাক চলছিল… কিন্তু এর মধ্যেই এলো নতুন দুশ্চিন্তার খবর।
রাতে ১১টার সময় তার ফ্লাইট ধরার কথা ছিল। আরাবিয়া এয়ারলাইন্সের G9511 ফ্লাইট। কিন্তু কিছুক্ষণ আগে শ্যালক ফোন দিয়ে জানালো, তাদের ফ্লাইট ২ ঘণ্টা লেট করে দেওয়া হয়েছে। এখন ফ্লাইট ছাড়বে রাত ১টায়। তাকে এখনো ইমিগ্রেশনে যেতে দেওয়া হয়নি, এবং বিমানবন্দরের ভেতরেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই পরিবার থেকে শুরু করে সবার মনেই টেনশন কাজ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সে ইমিগ্রেশন পার হয়ে বোর্ডিং গেটে না পৌঁছায়, ততক্ষণ দুশ্চিন্তা পুরোপুরি কাটবে না।
তারপরও আশা এবং বিশ্বাস রেখে আমরা বলছি—আল্লাহ যেটাই করেন, বান্দার ভালোর জন্যই করেন। তার যাত্রা যেন নিরাপদ হয়, সে যেন সুস্থ-সুন্দরভাবে তার কর্মস্থলে পৌঁছতে পারে। এই দোয়া করছি।
সত্যি কথা বলতে, গত দুই দিনে অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা, তারপর এয়ারপোর্ট, এরপর আবার নারায়ণগঞ্জে কর্মস্থলে ফেরা। এই সব মিলিয়ে শরীর ক্লান্ত হলেও মন এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতায় ভরে গেছে। জীবনের এই ওঠানামা, দুঃখ-সুখের মিলন, বিদায় আর আশা এসবই আমাদের প্রতিদিন নতুন করে শেখায় যে জীবন কখনোই এক রঙের হয় না।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server



















