পৃথিবীতে বেঁচে থাকার রসদ হিসাবে এক আশ্চর্য প্রাণশক্তির উদাহরণ। একটি আলোচনা।

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

পৃথিবীতে বেঁচে থাকার রসদ হিসাবে এক আশ্চর্য প্রাণশক্তির উদাহরণ

💮💮💮💮💮💮💮💮💮


land-4026259_1280.jpg
সোর্স


🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏


এই পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার রসদ হিসেবে এক তীব্র প্রাণশক্তির কথা আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আন্তর্জাতিক স্পেশ স্টেশনে থাকাকালীন এবং সেই স্থান ছাড়ার ঠিক আগের মুহূর্তেও সুনিতা উইলিয়ামরা কিছু ছবি তুলেছিলেন। সেইসব ছবি একেবারে হাসিমুখে এবং প্রাণোচ্ছলভাবে। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে থাকাকালীন তাদের সেই হাসিমুখটাই আমাদের কাছে ধরা পড়েছে বারবার। কী অসম্ভব প্রাণশক্তির উদাহরণ। তাই না? যে মানুষগুলো নিজেরাই জানেন না যে আকাশের অন্ধকারে আগামী কিছু ঘন্টা কোন কোন চরম প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে তাদের যেতে হবে, এমনকি প্রাণরক্ষা নিয়েও যেখানে অনিশ্চয়তা প্রতি প্রহরে, সেখানে হাসিমুখে ক্যামেরায় পোজ দেওয়া এই মানুষগুলোর দিকে আমি অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকি মাঝেমাঝে। এঁরা মানুষ নাকি অতিমানব, সেই কথাই মনে হয় আমাদের ভাবায়। পরিবার নিয়ে নিরাপদে বেড়াতে গিয়ে ঠিক আপনি যেমন করে হাসিমুখে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ক্যামেরায় পোজ দেন, ঠিক সেভাবেই এঁরাও দাঁড়িয়েছেন৷ দীর্ঘ ৯ মাসের কর্মক্ষেত্রে স্পেশ স্টেশন ত্যাগ করার পূর্ব মুহূর্তেও এদের কত আনন্দ। কিন্তু অবাক করা কথাটা কী জানেন? এঁরা কিন্তু পৃথিবীর বুকে ট্রেনে চেপে বা প্লেনে চেপে নিশ্চিন্তে নিজের ঘরে ফিরবেন না৷ এঁদের জন্য অপেক্ষা করে আছে মহাকাশে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার চরম অনিশ্চয়তার এক যাত্রাপথ। যে পথে কখন কোন বিপদ আসতে পারে সে বিষয়ে নাসার বিজ্ঞানীরাও চিন্তায়৷ হয়ত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের মুহূর্তে সম্পূর্ণ ভস্মীভূতও হয়ে যেতে পারে স্পেশ ড্রাগন মহাকাশযান। যার মধ্যে এই চারজন রক্তমাংসের মানুষ বসে থাকবেন৷ কল্পনা চাওলার অভিজ্ঞতা মনে আছে আপনাদের? মহাকাশ থেকে ফিরে আসবার পথে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল তাদের মহাকাশযান কলম্বিয়া। সেই ইতিহাস কিন্তু তাঁদেরকেও বিচলিত করতে পারত। কারণ জীবন আর মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষগুলো চরম এক অনিশ্চয়তার মধ্যেই ছিল৷ কিন্তু কোন কিছুতেই এরা বিচলিত নয়।

মাত্র ৮ দিনের জন্য মহাকাশে যাওয়ার পর পৃথিবীতে ফেরাটাই প্রায় অনিশ্চিত হয়ে গেছিল তাদের। তারপর দীর্ঘ নয় মাস সেখানেই ঘর সংসার। কিন্তু তাতেও কত হাসি মুখ তাদের। এঁদের মুখের দিকে একবার তাকিয়ে দেখেছেন? কী অসম্ভব প্রাণোচ্ছল। কী অসম্ভব আত্মপ্রত্যয়। যেন পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছেন৷ আর সেখানেই ক্যামেরার সামনে হাসিমুখে ধরা দিচ্ছেন বারবার। এটাই আসলে জীবন। কিছুক্ষণের জন্য হলেও বেঁচে নেওয়া৷ এই মানুষগুলো বর্তমান ও আগামীর প্রজন্মের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে গেল। আমরা যেখানে পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়ে সামান্য ট্রেনের গন্ডগোল হলেই মুখের হাসি হারিয়ে ফেলি, বাড়ি ফেরার চিন্তায় অধীর হয়ে সকলের কাছে সেই মানসিক চাপ প্রকাশ করে ফেলি, সেখানে এই মানুষগুলোর কথা ভাবুন তো। এঁদেরও ঘর আছে, পরিবার আছে, একটা আস্ত পৃথিবী আছে। জীবনে চরম অনিশ্চয়তার সামনে দাঁড়িয়েও তবু তারা হাসতে জানেন। এটাই কি জীবনের কাছে শিক্ষার একটি ঘটনা নয়? তাদের হাসিমুখের ছবিগুলি আজীবন নিজের কাছে রেখে দিলাম। যখনই প্রয়োজন হবে একবার তাকিয়ে দেখব। হয়তো জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোকে কাটিয়ে উঠতে ভীষণভাবে সাহায্য করবে।


🙏 ধন্যবাদ 🙏


(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)



1720541518267-removebg-preview.png

Onulipi_07_27_10_21_22.jpg


Yellow Modern Cryptocurrency Instagram Post_20240905_213048_0000.png

new.gif

1720541518267-removebg-preview.png


--লেখক পরিচিতি--

IMG_20240303_181107_644.jpg

কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।

Drawing_11.png

44902cc6212c4d5b.png

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjo1LsUc8S2zjHiaW6UcX2M5SAfbrPcxiCjQzCc6aZJSjUDgt85bSStrwGCUjZMWCDKxNata4NQ2cZTKGxsY.png

FrDSZio5ZCzUamf35asauSgs1tnNGCc8exBrDii52qi3JpjTyYCF9oFoYfs1EV4VTnFw6faxzt5X7uHiwMAHmLS3ef2Jb2JcxHBkpRBd2y...Qa3Q3c7Biv4c8mKsr8DHNVYqqpVomFSv1wmkMCbhs7oCjb14sjkA3vxAfSRk8QPzNZ5UirrZUzvHCXygHCV49RVVZBeTFCeo47WcQXnjLYGy2RNdJQycJW4cN.jpeg

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif