স্কুলে অনুষ্ঠিত অ্যানুয়াল ডে অনুষ্ঠানের কিছু ঝলক।
স্কুলের অ্যানুয়াল ডে উদযাপন অনুষ্ঠান
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
স্কুলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল অ্যানুয়াল ডে বা অ্যানুয়াল ফেস্ট প্রোগ্রাম ২০২৫। এই উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে স্কুল মাঠে একেবারেই যেন সাজো সাজো রব। কয়েকদিন ধরে ছাত্রদের রিহার্সাল করানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবস্থাপনা করতে করতেই সময় কেটে গেছে বেশিক্ষণ। স্কুলে ক্লাস যতক্ষণ হতো তার থেকে বেশিক্ষণ চলতে অনুষ্ঠানের রিহার্সাল। বছরে একদিন এই অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয় আমার বিদ্যালয়ে। সেই উপলক্ষে মেতে ওঠে সকল শিক্ষার্থী, ছাত্র-ছাত্রী সমেত সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা। এ যেন একেবারে মহাযজ্ঞ। আর এই বিশাল অনুষ্ঠানকে উপলক্ষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উন্মাদনার শেষ ছিল না। অবশেষে বিগত শনিবার অর্থাৎ একুশে ডিসেম্বর সেই উন্মাদনার মধ্যেই অনুষ্ঠিত হলো স্কুলের অ্যানুয়াল ডে অনুষ্ঠান।
একেবারে কচিকাঁচা থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা পর্যন্ত সকলেই এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল নিজেদের মতো করে। তারা বিভিন্ন রকম নাটক, গান, বাজনা বা নাচের মধ্য দিয়ে তাদের বিভিন্ন রকমের প্রতিভা প্রদর্শন করলো অনুষ্ঠানের বিশাল মঞ্চে। অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপারসন এবং কয়েকজন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও সঙ্গীত শিল্পীরা। তাঁদের উপস্থিতিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা প্রদীপ জ্বেলে অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন। তারপর সকাল ৯ টা থেকে কচিকাচাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সূচনা হলো অ্যানুয়াল ডে অনুষ্ঠানের।
এই উপলক্ষে আমাদের অর্থাৎ শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও ব্যস্ততার শেষ ছিল না। বিগত প্রায় একমাস ধরে আমরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এই অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। আর তারপর অবশেষে এলো সেই দিনটি। শনিবার অর্থাৎ অনুষ্ঠানের দিন বিদ্যালয় পৌঁছে দেখলাম বিশাল মাপের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েছে অনুষ্ঠানের জন্য। সেখানেই সারাদিন ধরে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করল। তার মধ্যে একদম কচিকাঁচাদের নাচ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের শিশু উপযোগী নাটক এবং তার সঙ্গে গান অনুষ্ঠিত হলো। আমি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের গানের দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলাম। তাদের নিয়ে বিগত মাস জুড়ে আমার রিহার্সাল চলেছে প্রত্যেকদিন। তাদের পরীক্ষার মধ্যেই এই রিহার্সাল করতে হচ্ছিল বলে সমস্যার শেষ ছিল না। কিন্তু আজকালকার শিশুরা সবকিছুতেই বড় স্মার্ট। তাই তারা পরীক্ষা শেষ করেই প্রতিদিন চলে আসতো রিহার্সালের জন্য। এমনও হয়েছে যে পরের দিন অংক পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও আমি ডেকেছি বলে দ্বাদশ শ্রেণীর দুজন ছাত্র চলে এসেছে অনুষ্ঠানের স্বার্থে। তাদের নিয়মানুবর্তিতা আমাকে অবাক করেছে বরাবর। আর সেই নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার ফলাফল হলো শনিবারের এই সফল অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছিল খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাপনা। বিখ্যাত কেক শপ মিও আমোরে থেকে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা রেখেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাই প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী খুব আনন্দ নিয়ে অনুষ্ঠান করেছিল সেই দিন। অনুষ্ঠানে কিছু অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-ছাত্রীদের উন্মাদনা এবং আনন্দ সবকিছুকে জয় করে নিয়েছিল। তারা অনুষ্ঠানটাকে সফল করার জন্য বদ্ধপরিকর ছিল একরকম। আর তার ফলস্বরূপ আমরা স্কুলের তরফে একটি ঝকঝকে সুন্দর অনুষ্ঠান সন্ধ্যা উপহার দিতে পারলাম সকল দর্শককে। আমার গানের টিমটিও দারুন সুন্দর পারফরম্যান্স দিল মঞ্চের উপর। সাতজন গায়ক এবং তিনজন বাজনা নিয়ে আমি অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। বিভিন্ন রকমের পল্লীগীতি ও লোকসংগীত এর উপর ভিত্তি করে একটি কোলাজ উপস্থাপনা করেছি মঞ্চ থেকে। সকল দর্শকদের তা ভালো লাগা আমার কাছে এক অনন্য প্রাপ্তি ছিল। শনিবারের অনুষ্ঠানের যে প্রত্যাশা আমাদের ছিল তা একেবারে কানায় কানায় ভর্তি করল ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা পড়াশোনার পাশাপাশি যে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ তা বিশেষভাবে দেখিয়ে দিল মঞ্চ থেকে।
এই প্রতিবেদনের সাথে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম সেদিনের অনুষ্ঠানের কিছু ছবি। আমাদের স্কুলের অনুষ্ঠান বিষয়ক এই পোস্ট যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে নিশ্চয়ই কমেন্ট এর মাধ্যমে আমাকে তা জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1871208317294633272?t=hOazkrjbeYnGj5ouoUpflw&s=19
Daily Tasks-
বাহ্ আজকে দেখছি আপনি আমাদের মাঝে স্কুলে অনুষ্ঠিত অ্যানুয়াল ডে অনুষ্ঠানের কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আসলে সত্যি বলতে আমি আমাদের এলাকায় বা অন্য কোথাও দূরে যদি কোথাও অনুষ্ঠান হয় আমি অনুষ্ঠানে যাবই আমার যতই কাজ থাকুক না কেন। অনুষ্ঠান দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
তাহলে তো আপনার বাড়ি আমাদের স্কুলের কাছাকাছি হলে আপনাকে নিশ্চয়ই ডাকতাম। সুন্দর মন্তব্যটি করবার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।