মানুষ মানুষের জন্য

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? এই প্রচন্ড গরমে? দোয়া করি যে যেখানে থাকেন ভালো থাকেন। আজ শরীরটা বেশী খারাপ লাগছিল। কেমন যেন নড়াচড়া করতে ইচ্ছে করছিল না। আর সকাল থেকে ভাবছি কি পোস্ট দিব। কেন যেন কিছুই করতে ইচ্ছে করছিল না। একবার ভাবছিলাম যে, ফটোগ্রাফি পোস্ট দিব। আবার ভাবছিলাম পেইন্টিং দিব। তাই শত অস্থির লাগার পরও পেইন্টিং নিয়ে বসেছিলাম। হঠাৎ @maksudakawsar ‍ আপু, যে কিনা আমার বড় বোন এবং বান্ধবী। তার একটি ফোন এলো। তার সাথে একটু বাহিয়ে যেতে হবে। তার প্রচন্ড জরুরী কাজ। অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে। এই গরমে তার একা বাহির হতে ইচ্ছে করছে না। তাই কি আর করা আমার তো আবার মায়ার শরীর। কেউ কিছু বললে না করে থাকতে পারিনা। ভাবলাম যে, প্রচন্ড রোদে একা একা যাবে। তারপর আবার বলল যে, যেই কাজে যাচ্ছে অনেক সময় লাগতে পারে। ভাবলাম এই গরম বা রোদে তাকে একা না ছেড়ে একটু তাকে সাহায্য করি। তাই এই ভেবে আমার করা পেইন্টিংটি স্থগিত রেখে তাকে একটু সময় দিলাম।

তো তার সাথে গেলাম আর গিয়ে বাহিরের পরিস্থিতি দেখে ভাবলাম যে পৃথিবীতে এখনও মানুষ আছে যারা কিনা মানুষের পাশে এসে দাড়াঁয়। আর এই নিয়ে কিছু কথা আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার আরও একটি ব্লগ নিয়ে এলাম। আর আমার ব্লগটি হলো মানুষ মানুষের জন্যে। তাহলে চলুন আজ আমার পোস্টি একটু কষ্ট করে পড়ে আসি।

image.png

মানুষ মানুষের জন্য

image.png

image.png

সকালবেলা আপুর সাথে আপুর অফিসিয়াল কাজে একটু এজি অফিসে গেলাম। মানে কাকরাইল মৎস রাজস্ব ভবন। যাবার সময় দেখতে পেলাম যে প্রচন্ড রোদ। তো সেখানে অনেকক্ষন কাজের জন্য থাকতে হয়েছে। কাজ শেষে যেই ভাইয়ার কাছে গেলাম সেই ভাইয়া আমাদের কিছু না খাইয়ে আসতে দেবে না। নিয়ে গেল একটি ফুড কর্ণারে। সেখানে ভাইয়া ৩টা চিকেন বার্গার আর ৩টা সফট ড্রিংকস অর্ডার দিল। আমি এই গরমে শুধু ঠান্ডা খেয়ে বার্গারটি পার্সেল করে নিয়ে এলাম।

image.png

আসার সময় ছিল আরও দুপুর। তখন দুপুর ১.০০টা। প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমের তাপদাহে রিক্সা ওয়ালা বা জনজীবনে নেমে এসেছে অস্থিরতা। কোন রিক্সা এই গরমে আসতে চাইছিল না। আবার যারা আসতে চাইলো তার প্রচুর দাম চাইলো। যেখানে ৮০ টাকায় গিয়েছি সেখানে ১৩০ টাকা ভাড়ায় আসতে হলো।তবে আজ নাকি সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল শুনলাম। তো আসার সময় দেখতে পেলাম যে, প্রতিটি জায়গায় জায়গায় কিছু সংগঠন কর্মী বা ভালো মানুষ রিক্সাচালকদের টাং, লেবু, স্যালাইন দিয়ে বানানো ঠান্ডা পানির শরবত খাওয়াচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যে, পচন্ড গরমে রিক্সাচালকদের খুব কষ্ট হচ্ছে। কেউ বা একটু রিক্সা চালিয়ে আর চালাতে পারছে না। ক্লান্ত হয়ে বসে বসে ঘাম মুছার কাজে ব্যাস্ত। আবার কেউ কেউ ছায়ায় রিক্সা থামিয়ে বসে আছে।

image.png

image.png

আবার কিছু জায়গায় দেখা গে্ছে বড় পেন্ডেল করে বিশ্রামগার বানিয়েছে । পথচারীরা যেন ক্লান্ত বা গরমে অসুস্থ হয়ে গেলে একটু রেস্ট নিতে পারে। আর তাদের কথা চিন্তা করে যারা এত সুন্দর একটা পদক্ষেপ নিয়েছে তারা আসলেই অনেক বড় ভালো কাজ করছে। আর এই কাজগুলো দেখে বঝুলাম যে,পৃথিবীতে এখনও অনেক ভালো মানুষ রয়েছে।আর ঠিক তখনি আমার একটি কথা মনে পড়ে গেল -মানুষ মানুষের জন্যে জীবন জীবনের জন্যে একটু সহানুভূতিকি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু। আসলে এই মানুষগুলো আছে বলেই আজ এই তীব্র গরমে ছোট বড় সবাই মনে কি আনন্দ নিয়ে গরীব অসহায় সবার পাশে দাড়িঁয়েছে।

image.png

আমাদের রিক্সা যখন দাড়ঁ করালো। আর আমাদের রিক্সা ওয়ালা ভাইকে শরবত দিল তখন আমরাও রিক্সাটি দাড়ঁ করিয়ে তাদের সাথে একটু কথা বললাম। জানতে চাইলাম যে, তারা কিভাবে এত সুন্দর পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে। তখন তারা বলল যে, সকল বন্ধু চাঁদা তুলে বা কারও পরিবার থেকে চাঁদা তুলে এটি করছে। আবার কোথাও ছোট বড় বিভিন্ন সংগঠন কর্মী এই মহৎ কাজটি করছে। যাই হোক সকলে আমরা সকলের তরে প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। আর এই ভাবে যেন সকল সমস্যায় আমাদের দেশের মানুষগুলো এক একজন একএকজনের পাশে এসে দাঁড়ায় সবসময় এই আশাই করি। পরবর্তীতে বাসাই এসে শুনতে পেলাম যে আজ নাকি সারা দেশে ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা। রিক্সাওয়ালারা বা খেটেখাওয়া মানুষগুলো বলছে,কিছু করার নেই। এর চেয়ে বেশী তাপমাত্রা নামলেও তাদের পেটের দায়ে নামতে হবে।

image.png

পরিশেষে আর কি লিখব। মহান আল্লাহর কাছে রহমতের ঠান্ডা চাওয়া ছাড়া আর কিছু বলার নেই। আর এই টুকু আমাদের সবইকে একটু সাবধানে থাকতে হবে। সবাই সবার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কিছুক্ষন পর পর পানি শরবত বা জুস খাবেন। পারলে চোখে মুখে পানি দিবেন। নিজের ও পরিবারের দিকে খেয়াল রাখবেন।

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার নাম @mahfuzanila আমমি পছন্দ করি ঘোরাঘুরি ও ভ্রমন ছবি আঁকা, বিভি ন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও গান গাইতে ঘুরতে যেতে আর সবচেয়ে বেশী ঘুমাতে।

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last month 

সত্যি ই আপু প্রতিদিন কি পোস্ট করবো এটা ভেবে ও সময় চলে যায়। আপনি আজ ফটোগ্রাফি নয়ত পেইন্টিং দেয়ার কথা ভাবলে ও তা আর হলোনা।বড় বোনকে সময় দিলেন।আর তাইতো আজকের পোস্ট লেখার চমৎকার একটি বিষয় আপনি পেয়ে গেলেন।এই গরমে খেটে খাওয়া মানুষ গুলো বাইরে বের হবেই।আর তাদের কথা চিন্তা করে কিছু মানুষ যে উদ্যোগ নিয়েছেন।তা সত্যি প্রশংসার দাবীদার।ভালো মানুষ পৃথিবীতে এখনো আছে।যারা স্বার্থহীন ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ায়।অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্টটি পড়ে। এটা খুব সত্যি ই মানুষ মানুষের জন্য।

 last month 

ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের মাধ্যমে এমন সুন্দর করে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।

 last month 

বেশ গরম ছিল আজ। আজ মনে হলো পুরো শহর যেন আগুনে পুড়ছে। আর সবচেয়ে বেশী কষ্ট করছে খেটে খাওয়া মানুষ গুলো। তবুও মনে হয়েছে যে এখনও পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে। গরমে পুড়ে যাওয়া মানুষ গুলো যখন পিপাসা নিবারনের জন্য শরবত খাচ্ছিলো তখন এসব দৃশ্য দেখে বেশ মায়াই হচ্ছিলো।

 last month 

আমারও আপু বেশ মায়াই হচ্ছিলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

 last month (edited)

বাহ! পড়ে তো বেশ ভালো লাগলো আপু। যেহেতু আপনার মায়ার শরীর নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন আপুর সাথে। আর আপনার ব্লগ না পড়লে অনেক কিছু অজানা থেকে যেত। ঢাকা শহরে তো দেখছি বেশ ভালোই কাজ করছে মানুষ মানুষের জন্য। যেহেতু এই গরমে রিক্সাওয়ালারা খুব কষ্টে কাজ করেন তাদেরকে একটু সেবা যত্ন করা দরকার। স্বেচ্ছাসেবীরা এভাবে কাজ করলে দেখতে বেশ ভালোই লাগে। তবে বিশ্রামাগারটা বেশ ভালো লেগেছে। অনেক মানুষ আছেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে কাজ করে।। যদি সেখানে বসে একটু বিশ্রাম নিয়ে বের হওয়া যায় তাহলে বেশ আরাম পাবে।

 last month 

জি আপু ঢাকা শহরের চারদিকে এখন শুধু মানবতার ফেরিওয়ালা ঘুরে বেড়াচেছ। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 last month 

বর্তমান সময়ে অনেকেই ফেসবুকের একটি ভাইরাল টপিক হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে ডেকে নিয়ে শরবত খাওয়ানো। বিশেষ করে শহরের মধ্যে রিকশা ওয়ালা মামা গুলো কে কিছু মানুষ শরবত খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।এটা নিতান্তই একটি ভালো কাজ।এই গরমের মধ্যে একজন মানুষ কে এক গ্লাস শরবত খাওয়াতে পারলে সে মানুষ টি অনেক বেশি খুশি হয়ে যায়।

 last month 

ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 71238.01
ETH 3865.22
USDT 1.00
SBD 3.51