বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়া-২য় পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ19 days ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও কিন্তু ভালো আছি। আর এই পৃথিবীতে আমাদের সুস্থ এবং সুন্দর করে জীবন যাপন করতে হলে সকল হতাশা দুঃখ গ্লানি কষ্টগুলো দূরে ঠেলে দিয়ে মনটাকে ভালো রাখতে হবে। আর ভালো রাখার জন্য আমাদের মাঝে মাঝে সময় নিয়ে হারিয়ে যেতে হবে কাছে বা দূর দুরান্তে প্রকৃতির মাঝে বা কোন হাসি খুসি অনুষ্ঠানগুলোর মাঝে । আমি ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। মন চায় নিজেকে কোলাহল মুক্ত প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে ফেলতে। আজও তাই হারিয়ে গিয়েছিলাম আমার এই পোস্টের মধ্যে। আর হারিয়ে যেতে যেতে আপনাদের মাঝে আমি একটি ভ্রমন পোস্ট নিয়ে এলাম।আশা করি আমার আজকের এই ভ্রমন পোস্টি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।

আবারও নিয়ে এলাম রমনা পার্কের ভ্রমন পোস্টের দ্বিতীয় পর্বটি নিয়ে। আমি আমার প্রতিটি পোস্টে চেষ্টা করি আপনাদের জন্য ভালো কিছু লিখতে। চলে যাই আমার মনের গভীরের থেকে আপনাদের জন্য সকল কথার ফুল ঝড়িয়ে আপনাদের জন্য সুন্দর একটি পোস্ট তৈরী করতে। জানিনা কতটুকু পারি বা পেরেছি। আমরা সবাই জানি এবার ঈদ-উল-ফিতর ও পহেলা বৈশাখ একই সাথে উদযাপন হয়েছিল। ঈদের ৩ দিন পর, দীর্ঘ কয়েক বছর পর বাঙ্গালীদের আরও একটি উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। আর এই দিনটিকেও ঘিরে সবার মনে থাকে হাজারো রঙ্গে রাঙ্গায়িত অনেক আনন্দ উল্লাস।ছোট বড় ও পরিবার বর্গ সবাই যেন মেতে ওঠে এই উৎসবটির মাঝে আর অপেক্ষা করে এই দিনটির জন্য। গত পর্বে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম পহেলা বৈশাখে রমনাপার্কের ভোরের বেলা যাওয়ার কিছু অংশ নিয়ে ।অ। আজ আমার পহেলা বৈশাখে রমনাপার্কের উৎসবের ভ্রমনের দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।

Untitled design.png

বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়া-২য় পর্ব

image.png

এরপর গান গাইতে গাইতে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর চারিপাশে তাকাতেই সকালের ভোরের অপূর্ব সিগ্ধ বাতাস আর প্রভাতের সূর্য উঠি উঠি বলে। আর এর মাঝে ভেসে আসা গানের সাথে রমনাপার্কের ব্রীজের মধ্যে যেই আলোটুকু পড়েছে তাতে ব্রীজটি যেন সত্যি অপূর্ব লাগছিল। আমিতো মনে প্রশান্তি নিয়ে হাটছিলাম আর দূর থেকে ব্রীজের মধ্যে সূর্য ওঠার মূহুর্ত এবং বৈশাখীর সাজে ব্রীজে থাকা মানুষগুলোর দৃশ্য দেখছিলাম। সেই সাথে সিগ্ধ সকালের ও চারিপাশের ফটোগ্রাফি ও ভিডিও করছিলাম।

image.png

এবার ফটোগ্রাফিেএবং ভিডিও করতে করতে যখন আর একটু সামনের দিকে যাচ্ছি। ঠিক তখন চোখ গেল পানির মধ্যে। দেখে আর চোখ ফেরাতে পারলাম না। পানির দিকে তাকিয়ে দেখি ভোরে অন্ধকারের ভাঁজ খুলে সূর্যের ডানায় নেমে এসেছে নতুন একটি দিন। দেখি পাখির গানে আর চারিপাশের গানে অরুণের মাঝে সূর্যের আলো যেন রমনাপার্কের লেকের পানিতে ও সমস্ত রমনা জুরে সূর্যের আলোয় মানুষের মন ঝলমল করছে। আর আমিও এত সুন্দর দৃশ্যটি দেখে সাথে সাথে আমার ক্যামেরায় বন্দি করে নিলাম অপারপ দৃ্শ্যটি। তখন কেন যেন একটি গান মনে পরলো- ”আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে, এ জীবন পুণ্য করো,এ জীবন পুণ্য করো,এ জীবন পুণ্য করো,এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে।’’ বিশ্বাস করেন এই গানগুলো আমার অনেক ভালো লাগে। এবার আবারও বৈশাখীর রমনাপার্ক উপভোগ করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম।

image.png

আর এভাবে চারিদিকে দেখছিলাম আর মুগ্ধ হচ্ছিলাম। সকালের গাছের পাতা ঝরা গাছ আর সবুজ ঘাসের মাঠ আর দূরের রাস্তা দিয়ে ঝাকে ঝাকে দল বেধে মানুষগুলো বৈশাখী সাজে যেন সকালের রমনাপার্ক করে তুলেছে এত সাজের রঙে রাঙায়িত। আর সিগ্ধতায় মনের সকল ক্লান্তি মুছে সকলের সাথে কিছুটা মনের আনন্দ ভাগাভাগি ও উপভোগ করতে আসছিল সকল মানুষগুলো। আর তখন প্রকৃতিও যেন গেয়ে উঠল- বলো বৈশাখা আলো লাগলো চোখে লাগলো চোখে, বুঝি দীপ্তি রূপে ছিলে সুর্যলোকে, ছিল মন তোমারই প্রতীক্ষা করি,যুগে যুগে দিন রাত্রি ধরি, ছিল মর্ম বেদনা ঘন অন্ধকারে, জনম জনম গেল বিরহ শোকে।

image.png

image.png

রমনাপার্কের ভেতরের রাস্তা অনেকগুলো। আমরাও এক রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম আর দেখছিলাম যে রমনাপার্কের অন্য রাস্তাগুলো দিয়ে সবাই আসতে আসতে রমনাপার্কে আসছে। ছোট বড়পরিবার বর্গ একত্রিত হয়ে সেজেগুজে। আমরাও সামনের দিকে তাদের সাথে এগুতে লাগলাম।আর মনে মনে ভাবছিলাম যে পরিবারের কেউ সাথে থাকলে আরও ভালো লাগতো। এই সময়টুকু পরিবারের মানুষ ছাড়া কোন আনন্দ মনের মত উপভোগ করা যায় না। এই ভাবতে ভাবতে পানির পিপাসা পেয়ে গেল।

image.png

আর তাই হাটছি আর পানি খুঁজছি। আর আপার সাথে বলছি যে ভুলে পানিও নিয়ে আসলাম না। বলতে বলতে সামনের দিকে দেখি যে সবাই পানি নিচ্ছে। আমি ভাবলাম যে পানি ওখানে বিক্রি করছে দৌড়ে গেলাম পানি কিনতে। কারন তখন মোটামুটি রোদ ছিল আর হাটতে হাটতে এতটাই পানির পিপাসা পেয়েছে যে যেভাবেই হোক পানি কিনে খেতে হবে। আর সামনে গিয়ে দেখতে পেলাম যে পুলিশ কমিটির সকল সদস্য বিনা মূল্যে সবাইকে পানি দিচ্ছে। তখন আমিও খুশি মনে একটি বতোল নিলাম। আর আপাকেও সামনের দিকে এগিয়ে দিলাম। এরপর শান্তি মনে পানি খেলাম। আর ভাবলাম যে, এই যে এত সকালে রমনাপার্কে আশা এত মানুষগুলোকে বিনা পয়সায় পানি দিচ্ছে, পরবতীতে তো আরও মানুষ আসবে তারও কি এই রকম ফ্রি সার্ভিসটা পাবে। তবে এটি কিন্তু একটি মহৎ কাজ করছিল যা আমার অনেক ভালো লেগেছে।

image.png

আর পানি খেতে খেতে সামনের দিকে এভাবে যেতে থাকলাম । আর সুন্দর সুন্দর বটমুলে চারুকলার শিল্পীদের গান শুনছিলাম। আর সামনের দিকে যেতে থাকলাম তখন দেখলাম সামনের দিকেতো অনেক মানুষজন এরা কি রাতের বেলা এসে বসেছিল নাকি। আবার সাথে দেখছি ছোট শিশুও রয়েছে। কি সুন্দর বৈশাখী জামা পড়ে পরিবারের সাথে এত সকালে বৈশাখী উদযাপন করতে এলো । আর এত ভির দেখে আমি আপার হাত ধরে রেখেছি। যেন আমরা কেউ একজন থেকে একজন না ছুটে যাই। আর এভাবে হাত ধরে হটছিলাম। আর সাথে কিন্তু ঐ রমনাপার্কের গানের সাথে গানও গাচ্ছিলাম।কন্ঠ আমার ভালো না। কিন্তু তাই এত সুন্দর গান আমিই গাই, আমি শুনি ।

image.png

আর গাইতে গাইতে আরও সামনের দিকে গিয়ে দেখতে পেলাম এত সাজে সাজিত মানুষ জন আর তাদের সাথে প্রকৃতিও দেখেন কি সুন্দর কালারে সেজেছে। আর আমরাও তাদের সাজে আর ভিরের মাঝে হারিয়ে গেলাম। পহেলা বৈশাখের মাঝে। নাই বা সাজলাম বৈশাখী সাজে। বৈশাখী আনন্দটুকু না হয় একটু উপভোগ করালাম। তবে আনন্দ উপভোগ করাতো আর হবে না। আমার পাশের আপা এসেছে রমনার বৈশাখী পানি ভাত খেতে। কিছুক্ষন পর পর আমাকে জিজ্ঞেস করছে কোথায় পাবো পানি ভাত? আমিও জানি না। তাই ঐ ভিরের মাঝে কাউকে জিজ্ঞেস করছিলাম। সবাই বলল সামনের দিকে পাবো । আর তাই সামনের দিকে যেতে থাকলাম।

আজ শরীরটা অনেক ক্লান্ত। আজ এখানেই আমার আজকের ব্লগটি শেষ করে দেই। আর এভাবেই শেষ করে নিলাম আমার আজকের পহেলা বৈশাখে হঠাৎ ঘুরতে যাওয়ার ২য় পর্ব। কেমন লাগলো আমার আজকের এই পহেলা বৈশাখে হঠাৎ ঘুরতে যাওয়ার দ্বিতীয় পর্ব ভ্রমন পোস্টি? আশা রাখি আপনাদের সবার অনেক ভালো লেগেছে। আমার আজকের এই পোস্ট। সবার জীবনের মঙ্গল কামনা করে আর এই গরমে সকলের গ্লানি আর ক্লান্তিগুলো দূর হয়ে যাক এই কামনাই করে আমার আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন।

পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরনভ্রমন
ডিভাইসVIVO
মডেলVIVO-Y22S
স্থানরমনা, ঢাকা

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার নাম @mahfuzanila আমার পছন্দ ঘোরাঘুরি ভ্রমন করা ,ছবি আঁকা, বিভি ন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি,ডাই প্রজেক্ট বানাতেও দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও গান গাইতে আর সবচেয়ে বেশী ঘুমাতে।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 19 days ago 

পুরো পোস্ট পড়ে যা বুঝলাম আপু মজা তো আর কম করেন নাই। আবার বলে গান ও করেছেন। আমাকে একটু নিলে কি আপনার কম পরে যেত। বৈশাখীর আনন্দ আপনি একা একাই উপভোগ করলেন। আপনার লেখা গুলো পড়দে পড়তে আমি নিজেও একটু আনন্দ করলাম। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 18 days ago 

আপু ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 19 days ago 

রমনা পার্কে মেলায় ঘুরতে যাওয়ার মজাই অন্যরকম। বৈশাখ উপলক্ষে যে আয়োজন সেখানে হয় বিশেষ করে বটমূলের গান, চারুশিল্পীদের পরিবেশন আর বাঙালীয়ানা খাবার, রংবাহারী তৈজসপত্রের সমাহার সত্যিই একটি দিন ভালো করার জন্য যথেষ্ট।

আপনি দারুণভাবে সময়টা আর এত মানুষের ভীড়ের পরিবেশটা উপভোগ করেছেন জেনে ভালো লাগলো। এবার বৈশাখে রমনায় যাওয়া হয় নি আমার, তাই ছায়ানটের পরিবেশনাও শুনতে পারি নি।

আশা করি, পরেরবার সুযোগ ও সময় মিলবে।

অনেক ধন্যবাদ মেলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার জন্য। পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। 🥰💐

 18 days ago 

ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়েও কিন্তু আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 68118.65
ETH 3786.47
USDT 1.00
SBD 3.70