আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-৬৭|| শীতকালীন সবজির সুস্বাদু রেজালা রেসিপি ।
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি সবার মত করে এই কমিউনিটির মাঝে রেসিপি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য একটি রেসিপি পোস্ট নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি। আপনারা সবাই আমাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন বলে আপনাদের সবাইকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ। তাহলে চলুন আজ আমি এ প্রতিযোগিতায় কি রেসিপি নিয়ে অংশগ্রহণ করেছি ও আমার রেসিপিটি কেমন হয়েছে দেখে আসি।
বন্ধুরা আজ আমি চলে এলাম আমাদের প্রিয় কমিউনিটির সবার প্রিয় শীতের সবজি রেসিপি কনটেস্ট প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য। আমার সাথে যারা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন তাদের সবাইকে জানাচ্ছি অনেক অনেক শুভকামনা। আজ আপনাদের মত করে আমিও আপনাদের সাথে একজন সহযাত্রী হয়ে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চলে এলাম। আর এই প্রতিযোগিতাগুলোতে আমরা সবাই খুব আনন্দের সাথে সাধ্যমত অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করি। হয়তো কেউ অংশগ্রহণ করতে পারি কেউ পারি না। আমি তো কখনোই কোন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারি না। তবে আজ শীতের সবজি কনটেস্ট দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। দৌড়ে চলে গেলাম বাজারে। যদিও দেরি হয়ে গিয়েছে।
শীতের সবজি দিয়ে আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি করতে অনেক পছন্দ করি। আর আজকের রেসিপিটি আমার একটি প্রিয় রেসিপি। শীত আসলেই আমি এই রেসিপিটি তৈরি করি। বিশেষ করে সকালে তন্দুর রুটি বা পরোটা বা রাতে নান রুটির সাথে খেতে অনেক স্বাদ লাগে। আসলে আমি এই রেসিপিটি রান্না করার জন্য প্রতিবছর শীতের সবজির জন্য অপেক্ষা করি। তাই এই আজ আমার এই প্রিয় রেসিপি নিয়ে এই কনটেস্টে যোগ দিলাম। আমি জানি এখানে অনেক বড় বড় আর প্রতিভাবান রন্ধনশিল্পী অংশগ্রহণ করেছে। আসলে কোন কনটেস্টে অংশগ্রহণ করে প্রাইস পেতে হবে এমন কোন কথা নেই। কোন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারাটাই আসল বিষয়। মাঝে মাঝে এ কনটেস্ট গুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারি এটাই আমার জন্য অনেক আনন্দ লাগে। আজ আমার কন্টেস্টে অংশ গ্রহণে আশা করি আপনাদের সবার কাছে এই রেসিপিটি অনেক ভালো লাগবে।চলুন এ প্রতিযোগিতায় আমার রেসিপিটি কিভাবে রান্না করলাম তার পুরো প্রসেসটি দেখে আসি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ :
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
ফুলকপি | ১ টা |
পনির | পরিমাণ মতো |
গাজর | ২৫০ গ্রাম |
ক্যাপসিকাম | ২৫০ গ্রাম |
টমেটো | ২টি |
মটরশুটি | পরিমাণ মতো |
কাঁচামরিচ | ৫-৬টা |
হলুদের গুঁড়া | ১ টেবিল চামচ |
মরিচের গুঁড়া | ১ টেবিল চামচ |
জিরা গুড়া | ১ টেবিল চামচ |
ধনিয়া গুড়া | ১ টেবিল চামচ |
কাজুবাদাম | পরিমাণ মতো |
পোস্ত দানা | পরিমাণ মতো |
দারচিনি | পরিমাণ মতো |
এলাচ | পরিমাণ মতো |
লবঙ্গ | পরিমাণ মতো |
তেজপাতা | পরিমাণ মতো |
আদা | পরিমাণ মতো |
চিনি | ১ চা- চামচ |
লবন | পরিমাণমতো |
তেল | পরিমাণমতো |
রান্নার বিবরণ :
ধাপ - ১ :
প্রথমে আদা ও কাঁচা মরিচ আর পোস্ত দানা, কাজুবাদাম বেটে নিলাম। আর পনিরগুলোকে টুকরো টুকরো করে কয়েক টুকরা কেটে গুছিয়ে নিলাম।
ধাপ - ২ :
এরপর চুলায় প্রথমে প্যান বসিয়ে তার মধ্যে তেল দিয়ে তেল গরম হলে টুকরো করে কেটে রাখা পনির গুলো হালকা করে ভেজে নিলাম।
ধাপ - ৩:
এবার কেটে রাখা ফুলকপি গুলো তেলের মধ্যে রেখে কিছুক্ষণ ভেজে ফুলকপিগুলো তুলে নিলাম।
ধাপ - ৪ :
এবার আবারও সেই প্যানে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে তার মধ্যে দুটি তেজপাতা পরিমাণ মতো দারচিনি এলাচ লবঙ্গ দিয়ে একটু ভেজে নিলাম।
ধাপ - ৫ :
এবার গরম মসলা গুলোর মধ্যে কিউব করে কেটে রাখা টমেটোগুলো দিয়ে এগুলোর সাথে একটু ভেজে নিলাম।
ধাপ - ৬ :
এরপর যখন দেখলাম টমেটোগুলো একটু নরম হয়ে আসছে। তখন তার মধ্যে বেটে রাখা আদা ও কাঁচামরিচ পেস্ট গুলো দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ৭ :
এবার একটি বাটিতে এক চামচ হলুদ গুঁড়া, এক চামচ মরিচ গুঁড়া, এক চামচ জিরা গুঁড়া ও এক চামচ ধনে গুড়া দিয়ে তার মধ্যে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে সবগুলো একসাথে মিক্সড করে একটি পেস্ট বানিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৮ :
এবার সেই বানানো পেস্টগুলো টমেটো গুলোর মধ্যে দিয়ে সবগুলো একসাথে টমেটো গুলোর মধ্যে দিয়ে কষিয়ে একটু লাল করে নিলাম।
ধাপ - ৯ :
এবার মসলাগুলোর মধ্যে মটরশুটি গুলো দিয়ে সবগুলো আবার মিক্স করে একসাথে কষিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১০ :
এবার কষানো মটরশুটিগুলোর মধ্যে বেটে রাখা পোস্ত দানা কাজুবাদাম পেস্টগুলো দিয়ে আবার সব একসাথে নাড়া দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ১১ :
এবারের এর মধ্যে কেটে রাখা গাজর আর ক্যাপসিকামগুলো দিয়ে সবগুলো একসাথে নাড়া দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ১২ :
এবার ক্যাপসিকাম ও গাজর গুলো সিদ্ধ হয়ে এলে তার মধ্যে ভেজে রাখা ফুলকপি গুলো দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ১৩ :
এরপর ফুলকপি গুলো দিয়ে একটু নাড়া দিয়ে তার মধ্যে পরিমাণ মতো গরম পানি দিয়ে সবগুলো একসাথে নাড়া দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ১৪ :
যখন দেখলাম সবজিগুলো সব সিদ্ধ হয়ে আসছে। এখন সবজিগুলোর মধ্যে ভেজে রাখা পনিরগুলো দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ১৫ :
এবার সবজিগুলো নামানোর একটু আগে সবজিগুলোর মধ্যে স্বাদ আরেকটু বাড়িয়ে দেয়ার জন্য হাফ চামচ পরিমাণ চিনি দিয়ে দিলাম এবং রান্নাটি যখন পারফেক্ট সম্পন্ন হয়ে আসছে তখন চুলা থেকে গরম গরম পরিবেশনের সকালের নাস্তা তন্দুর রুটি জন্য নামিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১৬:
ফাইনাল আউটপুট :
এই হল আমার আজকের অনেক লোভনীয় আর মজাদার পনির আর ফুলকপির শাহী রেজালা। আর মজার রান্নাটি আপনারা আপনাদের পরিবারের জন্য বাসায় রান্না করতে পারেন। আর এই মজার সবজির রেসিপিটি সকালে রুটি বা পরোটার সাথে বা দুপুরে গরম ভাত বা রাতে ডিনারের সাথে খুব মজা করে খেতে পারবেন। আজ তাহলে এই পর্যন্তই। আবার কোন সময় নতুন কোন রেসিপি নিয়ে আপনাদের সামনে আমার ব্লগ নিয়ে হাজির হব। এ পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন। সবার জন্য শুভকামনা রইল আল্লাহ হাফেজ।
আমার পরিচিতি
আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।
আপু আপনি তো দেখছি সবজি দিয়েই রেজালা তৈরি করে ফেলেছেন। খেতে নিশ্চয়ই অনেক সুস্বাদু ছিল। পনির কাজু বাদাম সবকিছুই ব্যবহার করেছেন। খেতে নিশ্চয়ই অসাধারণ ছিলো। রেসিপিটা একদিন ট্রাই করে দেখব। একদম ভিন্ন ধরনের একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
জি আপু একবার খেয়ে দেখবেন আশা করি। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আহা বেশ লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আজকে আপনি। 😋
ফুলকপি যে তরকারিতে রয়েছে সেটা আমার কাছে সবথেকে বেশি ভালো লাগে, মানে বোঝাতে চাইলাম ফুলকপি আমার সবথেকে প্রিয় সবজি গুলোর মধ্যে একটি। আর সেই ফুলকপির সমন্বয়ে আপনি চমৎকার একটি রেসিপি আমাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। আর আপনার ডেকোরেশন দেখে ভীষণ খেতে ইচ্ছে করছে। অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার রেসিপি পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আমারও ফুলকপি অনেক ভালো লাগে। সুন্দর করে প্রশংসিত মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
শীতকালীন সবজির মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। এই রেসিপির পরিবেশনে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে,মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
রেসিপির কালার দারুন এসেছে আপু। যাই বলেন না কেন আমার তো লোভ সামলানো যাচ্ছে না। আবার আপনি রুটির ফটোগ্রাফিও দিলেন। এই ধরনের সবজির সাথে রুটি পরোটা খেতে খুব ভালো লাগে। অনেক ইউনিক একটি রেসিপি আপনি শেয়ার করলেন। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেন তাই।
হ্যাঁ আপু সবজি দিয়ে রুটি পরোটা আমার অনেক পছন্দ। প্রশংসিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।
আহা কি লোভনীয় রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। ভাগ্যিস কম্পিটিশনটা ছিল তাই সবার থেকেই চমৎকার সব রেসিপি জানতে পারছি। মিক্স ভেজ রেজালার রেসিপি দেখে এবং রান্নার প্রসেস দেখে যা মনে হচ্ছে ভাত পাতে আর কিছুই লাগবে না। জিভে জল আসছে পুরো।
হ্যাঁ আপু আমার তো আবার ভাব বসাতে হয়েছে। গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
https://x.com/mahfuzanila94/status/1874405139798491404
সবজির সুস্বাদু রেজালা রেসিপি তৈরি করেছেন বেশ ভালো হলো। সবজির সুস্বাদু রেজালা খেতে খুব ভালো লাগে। আপনার রন্ধন প্রক্রিয়া খুবই দুর্দান্ত হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর রেসিপি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
গঠন মূলক মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সব্জি রেজালা বেশ সুন্দর রেসিপি।কখনও খাওয়া হয়নি। বেশ লোভনীয় লাগছে। মনে হচ্ছে বেশ সুস্বাদু হবে খেতে। একদিন বানাবো এই শীতে। ধন্যবাদ রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।
সুন্দর করে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সবজি দিয়ে রেজালা তৈরি করা যায় আগে জানতাম না আপু। ব্যাপারটা কিন্তু বেশ মজার মনে হচ্ছে। আর ইউনিক একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপনি। মনে হচ্ছে খেতেও দারুন হয়েছিল। এভাবে একদিন বাসায় ট্রাই করবো আপু।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।