||ছোট থেকে বড় হওয়ার কিছু গল্প||১০%@shy-fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ14 days ago

আমার বাংলা ব্লগের সকলসদস্যবিন্দু আমার নতুন একটি ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম !
আমি @mdemaislam00 বাংলাদেশ থেকে।আজ সোমবার, মে ০৬/২০২৪


touch-2579147_1280.jpg

Source




হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি। কোনদিন আমি আপনাদের সাথে রেসিপি ফটোগ্রাফি বা ড্রাই পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে থাকি। কিন্তু আজকে আমি আপনাদের সাথে ছোট থেকে বড় হওয়ার কিছু গল্প শেয়ার করতে এসেছি। ছোট থেকে বড় হওয়ার পেছনে হয়তো সবারই কিছু না কিছু গল্প রয়েছে। ঠিক আমাদেরও ছোটবেলার সেই দিনের কিছু গল্প রয়েছে ।তাহলে চলুন বন্ধুরা দেরি না করে শুরু করা যাক। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ।আমার প্রথমে একটা বড় বোন আছে তারপর আমি আর ইমন দুইজনা জমজ ।আমার আম্মু আমাদেরকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছে ।ইমন কে হয়তো আপনারা সবাই চিনে থাকবেন ।আগেকার মানুষেরা পেটে বাচ্চা থাকলেও অনেক পরিশ্রম করত ।আমার মা ও ঠিক তেমনি কাজ করতো ।যখন আমরা দুজন পেটেছিলাম তখন আমার আম্মু জানতো না যে আমরা দুজন জমজ ।তখনকার দিনে তেমন মানুষেরা আলতাসনোগ্রাফি করতে যেতো না ।আমি আর@emonv যখন জন্মগ্রহণ করেছিলাম তখন আমার আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল ।আম্মুর রক্তের প্রয়োজন হয়েছিল তখন তেমন একটা রক্ত মেলাতে পারছিল না ।অনেক চেষ্টা করার পর রক্ত মিলেছিল। সেই ভদ্রলোক আম্মুকে রক্ত দেওয়ার পর আম্মু সুস্থ হয়েছিল । আসলেই সেই ভদ্রলোকের কারণে হয়তো আমার আম্মু আজ আমাদের সামনে বেঁচে আছে।



siblings-817369_1280.jpg



Source


আমার বড় আপু আমাকে এবং ইমনকে দেখে অনেক খুশি হয় ।আমার আপু আমাদের থেকে প্রায় ছয় বছরের বড় ।ছোট বেলায় আপু আমাদেরকে অনেক যত্ন করতো। আমি তেমন একটা আম্মুকে বিরক্ত করতাম না। কিন্তু ইমন অনেক কান্না করত। ইমন এত কান্না করছিল যে প্রায় একদিন এক রাত কান্না করার পর ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ার পর কান্না কমেছিল ।আমি এবং ইমন হওয়ার পর আমার নানী আমাদের বাসায় প্রায় এক বছর ছিল ।আমার আম্মু আমাদের দুজনাকে তেমন একটা কেয়ার করে রাখতে পারত না। আপনারা হয়তো সবাই জানেন বাচ্চা সামলানো কত ঝামেলা ।নানি সবসময় আমাদের যত্ন নিত ।যখন আমরা একটু বড় হয়ে গেলাম আমি একটু চিকন ছিলাম। কিন্তু ইমন একটু মোটা ছিল সেজন্য আপু ইমনকে তেমন একটা কোলে নিতে পারত না ।আমাদের বয়স যখন প্রায় এক বছর হয়ে গেল তখন মামার একটা মেয়ে বাচ্চা হয়েছিল ।সেজন্য আমাদেরকে রেখে মামুদের বাসায় চলে গিয়েছিল। তখন আমাদের অনেক কষ্ট হতো আম্মু এবং আপু আমাদের তেমন একটা সামলাতে পারতো না। আপুরো তখন খেলার বয়স ,আপু খুব ইচ্ছে করত খেলা করতে কিন্তু কি করবে এদিকে আমাদের না দেখলে মায়ের অনেক কষ্ট হতো ।মাঝেমধ্যে আপু আমাদেরকে রেখে খেলা খেলতে চলে যেয়ে। আর বাসায় আসতো না ভাবতো বাসায় গেলে আমাদের নিতে হবে ।ইমন একটু মোটা ছিল বলে ইমনকে তেমন একটা কোলে নিতে পারত না ।আপু সকালে গেলে বাসায় প্রায় বিকেলে আসতো ।খাবার পর্যন্ত খেতে আসতো না আমাদের কোলে নেওয়ার ভয়ে।


children-5833685_1280 (1).jpg




Source


যখন আমরা একটু বড় হয়ে গেলাম তখন আমাদেরকে খেলা দিলে খেলা খেলতাম। আমি ইমনের সাথে খেলা খেললেও খেলা ইমনকে দিতে চাইতাম না ।আমার খেলনা নিলে আমি ওর কাছ থেকে কেড়ে নিতাম বা কান্না করতাম । ছোট বেলায় হয়তো আমি একটু হিংসুটে ছিলাম।একদিন আমি ঘুমিয়ে আছি আম্মু সরিষার তেল বাটিতে রেখে দিয়েছিল ।ইমন তখন সেই তেল নিয়ে যেয়ে আমার দুই চোখে দিয়ে দিয়েছিল। ও জানতো না সরিষার তেল চোখে দিলে চোখ জ্বালা করে। যখন আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় তখন তাকিয়ে আমার চোখ অনেক জ্বালা করছে কান্না করছিলাম। আম্মু তখন পানি দিয়ে আমার চোখ ধুয়ে দিয়েছিল ।আমরা অনেক ছোট ছিলাম তাই ছোট বেলার সেই কান্ডগুলো বললে অনেক হাসি পায় ।এখন আম্মু সেই কাণ্ডগুলো যখন আমাদের সামনে বলে তখন শুনতে অনেক ভালো লাগে ।আমি সবসময় একা একা খেলাম করতাম ।আমাকে কেউ খেলনা দিলে বসে বসে খেলা করতাম কিন্তু ইমন তেমন একটা খেলা করতে চাইতো না ।ও সব সময় কোলে হেঁটে বেড়াতে চাইতো ‌মামার মেয়ে যখন একটু বড় হয়ে গেল তখন আমার নানী আবারও আমাদের বাসায় ফিরে এলো ।নানী যখন আমাদের বাসায় ফিরে এলো তখন আম্মুর একটু সুবিধা হতো । নানী আমাদেরকে দেখাশোনা করত আম্মু বাসার কাজ করতো।


school-work-851328_1280.jpg




Source


আমরা তিন ভাই বোন পড়াশোনা করে আল্লাহর রহমতে এখন আমরা ভালো পর্যায়ে আছি‌ আমার আব্বু আমাদের তিন ভাই বোনকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েছে । ইমন পড়াশোনা করতেছে বড় আপু পড়াশোনা করতেছে শুধু আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আল্লাহর রহমতে আমার ছোট একটা ফুটফুটে ছেলে সন্তান হয়েছে। তাকে নিয়েই সারাদিন আমার দিন কেটে যায়। যখন ছোট ছিলাম তখন কাদামাটি নিয়ে অনেক খেলাধুলা করেছি ।কিন্তু এখন আর তেমন কাদামাটি ব্যবহার করা হয় না ।আপনারদের জীবনে হয়তো ছোট থেকে বড় হওয়ার কিছু গল্প রয়েছে। সে গল্পগুলো আপনারা আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন ।আশা করি আমার ছোট থেকে বড় হওয়ার গল্পটি আপনাদের ভালো লেগেছে ।কতটা ভালো লেগেছে আশা করি কমেন্টে জানাবেন ।

🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹

আশা করি আমার ছোট থেকে বড় হওয়ার কিছু গল্প আপনাদের ভালো লাগবে । আজকে এই পর্যন্ত শেষ করছি অন্য দিন নতুন কিছু নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হব।

ফটোগ্রাফার@mdemaislam00
ফটোগ্রাফি ডিভাইসvivo12a

Sort:  
 14 days ago 

জ্বী আপু ইমন ভাইয়াকে আমরা ভালোভাবেই চিনি। তবে আপনারা দুইজন যে জমজ এটা আমি আজকেই জানলাম। আসলেই আমাদের একটা বাচ্চা নিয়ে অনেক বেশি কষ্ট হয়। আর দুইজন বাচ্চা হলে তো আরো বেশি কষ্ট হওয়ারই কথা। তবে প্রথম এক বছর আপনার নানু আপনাদের সাথে ছিল এটাই ‌ অনেক সৌভাগ্য আমি মনে করি। আপনার আপুও দেখছি আপনাদের জন্য অনেক কষ্ট করেছে। বড়রা সব সময় ছোটদের জন্য কষ্ট করে থাকে। তবে এত কষ্টের পরেও যে আপনারা ভালোভাবেই মানুষ হয়েছেন এটাই বেশ ভালো লাগলো।

 13 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু নানু আমাদের বাসায় এক বছর ছিল এটা আমাদের জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার।

 14 days ago 

বেশি ভালো লাগলো ছোটবেলার ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছে দেখে। তবে সমস্ত কিছু আমাদের হাতের উপরে। ছোটবেলার স্মৃতি স্মরণ করলে যেমন ভালো লাগে তেমনি ভালো লাগে এই সমস্ত বিষয়গুলো পুনরায় গল্প করতে। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো বিস্তারিত জানা।

 13 days ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া পুনরায় গল্পগুলো শুনতে আসলে অনেক ভালো লাগে।

 14 days ago 

ছোট বোন অনেক সুন্দর গল্প শেয়ার করেছে তুমি। বেশ ভালো লাগলো তোমার জীবনের এই সমস্ত বিষয়গুলো জেনে। আসলে এই ঘটনা শেয়ার করলে অন্যজনের জানার সুযোগ হয়। আমিও আমার ছোটবেলার গল্প শেয়ার করব এখন থেকে।

 13 days ago 

শুনে অনেক ভালো লাগলো এখন থেকে আপনি ছোটবেলার গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 66503.40
ETH 3078.67
USDT 1.00
SBD 3.70