সুখী মানুষ।steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ - ১৪ই, পৌষ |১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | শীতকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।




happy-g85288b055_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

কেমন আছেন সকলে ? আশা করি ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তবে বর্তমানের এই পরিস্থিতিতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সারা বছর ধরে সর্দি, কাশি, জ্বর এ সমস্যাগুলো তো থাকেই তবে শীতের এই সময়টাতে এটা বেড়ে গিয়েছে আরো কয়েক গুণ হারে। চারদিকে জ্বর, সর্দি, কাশিতে বেশিরভাগ লোকই এখন অসুস্থ। তবে বড়দের তুলনায় বিশেষ করে বাচ্চারা এই সকল ঠান্ডা জনিত প্রবলেমগুলো বেশি দেখা দিচ্ছে।

বেশিরভাগ বাচ্চারা এখন ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে আমার এক কাজিন তিন বছর বয়স তার । হঠাৎ করে সাধারণ ঠান্ডা থেকে নিউমোনিয়াই আক্রান্ত হয়ে হসপিটালে আই সি ইউ তে ভর্তি করানোর প্রয়োজন হয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল কেননা তার অবস্থা খুবই আশঙ্কা জনক ছিল। প্রচন্ড জ্বর হাওয়ায় খিঁচুনি দিয়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছিল তাই তাকে দ্রুত ইমারজেন্সিতে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রতিটি হসপিটালেই আই সি ইউর সিটগুলো বুকিং ছিল। কোন সিট খালি ছিলনা। কেননা বেশিরভাগ বাচ্চাদের এখন একই সমস্যায় ভুগছে। কয়েকটি হসপিটালে যাওয়ার পর অবশেষে একটি আইসিইউতে সিট খালি পাওয়া যায় এবং ওখানে তাকে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে সে অনেকটাই ভালো আছে এবং তাকে হসপিটাল থেকে বাসায় নিয়ে আনা হয়েছে। তাই বলছিলাম বাচ্চাদের এই সময়টাতে খুবই সতর্ক এবং সাবধানে রাখতে হবে। যাতে তাদেরকে ঠান্ডা জনিতে সমস্যাগুলো থেকে দূরে রাখা যায়।

এছাড়াও দিন দিন শীতের প্রভাবটা বেড়েই চলেছে। আমাদের এদিকে গতকাল রাতের বৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই আকাশে সূর্যের খুব একটা দেখা নেই। যার কারণে পুরো পরিবেশটা অন্ধকার অন্ধকার এবং নিস্তব্ধ হয়ে আছে। আসলে শীতকালের এই বৃষ্টিগুলো পরিবেশটাকে আরো বেশি শীতল করে তুলে। খবরে জানা গেছে গতকাল থেকে দেশের প্রায় অনেক জায়গায় এই বৃষ্টিটা হয়েছে। যাই হোক, সামনেই জানুয়ারি মাস আসছে আর ওই মাসটা শীতকালের মধ্যে সবথেকে শীতলতম একটি মাস।

যাই হোক, অন্য অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে করলাম তবে এবার আসি মূল আলোচনা নিয়ে।

আমরা প্রত্যেকেই জীবনে সুখী হতে চাই। সুখের পিছনে ছুটি। কিন্তু আমার প্রকৃতপক্ষে কয়জনেই বা সুখী? সুখী হতে যে শুধুমাত্র টাকা পয়সা ধন সম্পত্তির প্রয়োজন হয় তা কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল। সব ক্ষেত্রে টাকা পয়সা ধনসম্পদ মানুষের জীবনে সুখ আনতে পারে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অল্প জিনিস এখন অল্পপ্রাপ্তিতে মানুষের জীবনকে সুখী করে তোলে।

একেক জনের কাছে সুখ আসলে একেক রকম। কেউ সুখ খুঁজে পায় সকলের সাথে মিলে থাকতে আর কেউ সুখ খুঁজে পাই একাকীতে। কেউ ক্ষমতা প্রতিপত্তির মধ্যে সুখ খুঁজে পায় আর কেউ এসব থেকে মুক্তির মাধ্যমে সুখ খুঁজে পাই। কেউ সম্পর্ক গড়ে তোলে সুখ খুঁজে পাই আর কেউ সম্পর্কে বিচ্ছিন্ন করে সবকিছু পাই। আর তাই প্রত্যেকের জীবনে সুখের বিষয়গুলো হয় ভিন্ন।

তবে আমি মনে করি জীবনে যায় যত কম আছে সেই ততো সুখী। সুখী মানুষের গল্পটি নিশ্চয়ই আমরা সকলেই কম বেশি জানি।

রাজার এক কঠিন অসুখ হয়েছিল কোন ডাক্তার, কবিরাজ রাজা সেই অসুখ সরাতে পারছিল না। তবে এক কবিরাজ তাকে বলে যে এই অসুখ ছাড়াতে পারে এরকম একটি ওষুধ আছে। আর সেটি হচ্ছে একজন সুখী মানুষের জামা। তাই রাজ্য জুড়ে অভিযান চলতে থাকে সুখী মানুষের জামার পাওয়ার আশায়। সেনাপতিরা যায় প্রত্যেকটি রাজ্যের প্রত্যেকটি মানুষকে জিজ্ঞেস করে সেই সুখী কিনা। আর এ প্রশ্নে প্রত্যেকটি মানুষের উত্তর একই হয় একই , যে তা সুখী নয়। কেননা কারো জীবনে এটা নেই, কারো জীবনে ওটা নেই আর এভাবে প্রত্যেকটি মানুষই কোন না কোন দিক থেকে অসুখী। রাজ্যজুড়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন কোন সুখী মানুষই পাওয়া যায়নি তখন একজন লোক এসে নিজেকে পরিচয় দিয়েছে যে, সে পৃথিবীর সবথেকে সুখী ব্যক্তি। রাজা সেনেরা তখন তাকে বলছে তাহলে তোমার একটি জামা দাও। তখন সে বলছে আমার তো কোন জামা নেই। আমার তো কোন কিছুই নেই তাই আমার কোন কিছু হারানোর ভয় নেই, পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নেই আর তাই তো আমি সব থেকে সুখী।

সুখ আসলে আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে। আমাদের মধ্যে যত আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশা কম হবে তাতেই আমরা জীবনে সুখী হতে পারব। আর নিজেকে সুখী দেখতে চাইলে অবশ্যই নিজের অবস্থান থেকে খারাপ থাকা মানুষগুলোর দিকে দেখতে হবে।
যারা কিনা দুই বেলা খাবার জোগাড়ের জন্য কতটা কষ্ট করে আর তাদের তুলনায় আমরা কথাটা সুখী। হসপিটালের বেডে শুয়ে থাকা মানুষগুলো বেঁচে ফেরার জন্য তাদের আর্তনাদ আর তাদের তুলনায় আমরা কতটা সুখে আছি। আর এভাবেই আমরা আমাদের জীবনে সুখ খুঁজে পাবো।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 2 years ago 

এই শীতকাল বাচ্চাদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।আপনার কাজিনের তো বেশ খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছিল।যার আকাঙ্খা নেই,হারাবার কিছু নেই প্রকৃতপক্ষে তারাই বেশি সুখী।আপনার এই গল্পটি শুনেছি অনেক আগে, আসলেই যার যত বেশি আছে,সে ততো বেশি চেয়ে থাকেন।এটাই মানুষের সব থেকে বড় সমস্যা।নিজের থেকে খারাপ অবস্থানের মানুষের দিকে তাকালেই বোঝা যায় আসলে আমরা কতটা ভালো আছি।ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো লিখেছেন।

 2 years ago 

তাই বলছিলাম বাচ্চাদের এই সময়টাতে খুবই সতর্ক এবং সাবধানে রাখতে হবে। যাতে তাদেরকে ঠান্ডা জনিতে সমস্যাগুলো থেকে দূরে রাখা যায়।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া,এখন এই সময়টায় বাচ্চাদের যতটা সম্ভব ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে।আমার ছেলেরও গত কয়েকদিন আগে সর্দি-কাশি হয়েছিল।বেশি হওয়ার আগেই ডাক্তার দেখিয়েছি।আলহামদুলিল্লাহ এখন গত কয়েকদিন থেকে ভালো আছে।এখন ও ভালো থাকলেই আমাদের ভালো থাকা।
সুখের কথা কি বলব।এখন হয়তবা আমরা কেউই সুখী মনে করি না নিজেকে।কোনো কমতি থাকলেই মনে করি সুখী নই।কিন্তু সবার কথা ভাবলে তখন বুঝা যায় আমরা হয়তবা অন্যদের থেকে ভালোই সুখে আছি।