ভ্রমণ পোস্ট || ওয়াইফকে নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ (দ্বিতীয় পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করবো। এর আগে আমি আপনাদের সাথে কক্সবাজার ভ্রমণের প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম এবং আজকে দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক আমরা সেন্ট মার্টিন রিসোর্টে চেক-ইন করে বেশ কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে, সমুদ্রে নেমে গোসল করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে হোটেল থেকে বের হলাম। তখন দুপুর হয়ে গিয়েছিল। তাই আমরা প্রথমে একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম লাঞ্চ করার জন্য। আমরা এবারের ট্যুরে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করেছিলাম। যেমন নিরিবিলি রেস্তোরাঁ,ঝাউবন রেস্টুরেন্ট এবং পউষী রেস্টুরেন্টের খাবারের মান বেশ ভালো। আপনারা কেউ কক্সবাজার গেলে এসব রেস্টুরেন্ট গুলোতে গিয়ে খাবার খেতে পারেন।
কক্সবাজার গেলে আমি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ ট্রাই করার চেষ্টা করি। কারণ মাংস তো আমরা সব জায়গাতেই খেতে পারি। কিন্তু সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে এসে তাজা তাজা সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা। তো আমরা কোরাল মাছ এবং রুপচাঁদা মাছ নিয়েছিলাম সেদিন। তাছাড়া সাথে ভাজি,ভর্তা এবং পাতলা ডাল ছিলো। তবে খাবারের ফটোগ্রাফি করতে ভুলে গিয়েছিলাম। যাইহোক খাবারের মান বেশ ভালো ছিলো। বিশেষ করে কোরাল মাছ খেতে খুবই সুস্বাদু লেগেছিল। যাইহোক আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে লাবণী বিচের দিকে চলে গিয়েছিলাম গোসল করার জন্য। মোটামুটি অনেক মানুষ গোসল করছিলো লাবণী বিচে। বিচে গিয়ে প্রথমেই দুটি সিট ভাড়া করলাম ১ ঘন্টার জন্য। প্রথমে সিটে শুয়ে শুয়ে আমি ও আমার ওয়াইফ গল্প করতে লাগলাম এবং আশেপাশের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করতে লাগলাম। আমার ওয়াইফ সমুদ্রের পানিতে নামবে না বলে আমি একাই নেমেছিলাম।
তখন ফেব্রুয়ারি মাস ছিলো বিধায় সমুদ্রের পানি বেশ ভালোই ঠান্ডা ছিলো। যাইহোক আমি গোসল করার পাশাপাশি বারবার সমুদ্র থেকে উপরে উঠে, ওয়াইফ এর সাথে কথাবার্তা বলার পাশাপাশি কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম। ঘন্টা খানেক লাবণী বিচে থাকার পর,আমরা দুজন সমুদ্রের কিনারা দিয়ে পা ভিজিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সুগন্ধা বিচের দিকে যেতে লাগলাম। তখন যে কি ভালো লাগছিলো, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সমুদ্রের কিনারা দিয়ে হাঁটার সময় আমি সমুদ্রের পানিতে নেমে গোসলও করছিলাম বারবার। আমাদের হোটেলের অবস্থান ছিলো লাবণী বিচ এবং সুগন্ধা বিচের মাঝামাঝি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সুগন্ধা বিচ পর্যন্ত গিয়ে, তারপর অটো নিয়ে হোটেলে পৌঁছে যাবো। কারণ ভেজা শরীরে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে আমার বিরক্ত লাগে। যাইহোক সমুদ্র সৈকতে হাঁটতে হাঁটতে সুগন্ধা বিচের দিকে গেলাম এবং সেখানে যাওয়ার পর দেখলাম প্রচুর লোকজন।
সুগন্ধা বিচে এখন প্রায় সবসময়ই মানুষের ভিড় থাকে। যাইহোক তারপর সুগন্ধা বিচ থেকে অটোতে করে হোটেলে পৌঁছে, ভালোভাবে গোসল করে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্রাম নিয়ে, সন্ধ্যার পর বের হলাম সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই খাওয়ার জন্য সুগন্ধা পয়েন্টের দিকে। সুগন্ধা পয়েন্টের দিকে মাছের ফ্রাই এবং বারবিকিউ খাওয়ার জন্য মানুষের প্রচুর ভিড় থাকে। যাইহোক সেখানে গিয়ে অবশ্যই দামাদামি করে মাছ কিনে ফ্রাই কিংবা বারবিকিউ করার জন্য অর্ডার দিতে হবে। তবে আমার কাছে মাছের বারবিকিউ এর চেয়ে ফ্রাই বেশি ভালো লেগেছিল। আমরা সন্ধ্যার পর ৩ দিন একটানা বিভিন্ন ধরনের মাছের ফ্রাই খেয়েছিলাম। তবে প্রথম দিন মাছের ফ্রাই করার ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন কোরাল এবং চিংড়ি মাছের ফ্রাই খেয়েছিলাম। টমেটো সস দিয়ে মাছের ফ্রাই খেতে খুবই ইয়াম্মি লেগেছিল। যাইহোক তারপর আমরা সুগন্ধা বিচে গিয়েছিলাম সময় কাটাতে। সেই গল্প পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | ভ্রমণ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২০.৪.২০২৪ |
লোকেশন | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
X-promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সারাদিন ঘুরে বেড়ানোর পর সন্ধ্যার দিকে আপনারা সুগন্ধ পয়েন্টের দিকে মাছের ফ্রাই খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি ধারণ করেছেন। দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। সুগন্ধ পয়েন্টে গিয়ে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ আপু সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে আমরা মাছের ফ্রাই খেয়ে সুগন্ধা বিচে গিয়েছিলাম। সেটা পরবর্তী পর্বে অবশ্যই জানতে পারবেন। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। (আপু বানানের দিকে একটু খেয়াল রাখবেন)
ভাইয়া আপনার কক্সবাজারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে পুরোনো কথা যেনো মনে পড়ে গেলো। আমি লাবনী পয়েন্টের কাছেই একটি হোটেলে উঠে ছিলাম। আপনার মতো আমিও সেখানে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাছ আর ভর্তা খেয়েছি। আমিও চিন্তা করেছি মাংস সবসময়ই খাওয়া হয় কিন্তু সামুদ্রিক মাছ যেহেতু তেমন বেশি খাওয়া হয়না সেজন্য বরং সেখানে গিয়ে খেয়েছিলাম। তাছাড়া সেখানের ভর্তার কোনো তুলনা হয়না। আমি সমুদ্রে নামতে খুব ভয় পাই সেজন্য বেশি দূর যেতে পারিনি। চিন্তা করেছি এই সুন্দর জায়গায় ছেলেকে নিয়ে একবার ঘুরে আসবো। যাই হোক কক্সবাজার ঘোরাঘুরির পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আমি প্রতিবারই কক্সবাজারে গেলে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করি। অবশ্যই ছেলেকে নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়া দরকার। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
পরিবারকে সাথে নিয়ে বাইরের পরিবেশে ঘুরতে গেছেন দেখে খুবই ভালো লেগেছে ভাইয়া। আমাদের সকলের এভাবে মন-মানসিকতা ভালো রাখার জন্য বাইরের পরিবেশে ঘুরতে যাওয়া প্রয়োজন রয়েছে। এতে স্বামী স্ত্রীর মিলবন্ধন সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সুন্দর মুহূর্ত অতিক্রম করা যায়। খুবই ভালো লেগেছে কক্সবাজারের সুন্দর কিছু চিত্র দেখে।
হ্যাঁ আপু ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বাহিরে ঘুরতে গেলে দারুণ সময় কাটানো যায়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কক্সবাজার ভ্রমণের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম৷ আজকে এর দ্বিতীয় পর্ব দেখে খুবই ভালো লাগছে। আসলে সব সময় এরকম সুন্দর জায়গা ভ্রমন করার মাধ্যমে আমরা অনেকে অনেক কিছু দেখে আসছি৷ আজকে আপনি খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমাদের মাঝে অনেক কিছু শেয়ার করেছেন৷ পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷
কক্সবাজার ঘুরতে গেলে আসলেই খুব সুন্দর সুন্দর জায়গা দেখার সুযোগ হয়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
একেবারে ঠিক বলেছেন৷ এত সুন্দর জায়গা আর কোথাও দেখে হয়নি।