ছেলে মেয়ের সমান অধিকার।

in আমার বাংলা ব্লগ19 days ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17638752599736750950149424979939.jpg


সোর্স



আমাদের সমাজে বলা হয় প্রত্যেকটা সন্তানের সমান অধিকার আছে সেটা ছেলে হোক বা মেয়ে। কিন্তু মুখে বলা আর মনের মধ্যে সেই কথাটাকে স্থান দেওয়া এবং সমাজে মর্যাদা দেওয়া এর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আমাদের কোন কিছু বলতে বাধা নেই এবং কোন কথা বলার জন্য আমাদের অর্থ খরচ করতে হয় না তাই আমরা অনেক কিছুই বলে থাকি কিন্তু সেগুলোর কোনটাই আমরা পালন করতে পারি না বা করি না। সমাজে ছেলে-মেয়ের সমান অধিকার এ কথা আমরা বলে থাকলেও সমাজে কোথাও কোনোভাবেই আমরা তার দৃষ্টান্ত বা তেমন কার্যকলাপ কিছুই দেখতে পাই না। বরং সমাজে প্রতিনিয়ত প্রত্যেকটা মেয়েকে পিছিয়ে আসতে এবং বিভিন্ন বাধায় পিছিয়ে পড়তেই দেখতে পাই। যেখানে আমরা দেখতে পাই ছেলেরা নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ায় সেখানে মেয়েদের বাড়ি থেকে বেরোনোর জন্য নির্দিষ্ট একটা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার পরে যেখানে ছেলেরা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায় সেখানে মেয়েদের সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বেরোনো নিষিদ্ধ। চাকরি করা, ব্যবসা করা অথবা যে কোন সৎ উপায় অর্থ উপার্জন করে নিজে আর্থিকভাবে সক্ষম হওয়া যেখানে ছেলেদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সেখানে মেয়েদের পিছিয়ে রাখা হয় এবং ছেলেদের উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করা হয়।


যেখানে মেয়েদের সংসার সামলানো পরিবারের মানুষের দেখাশোনা করা এবং সন্তান লালন পালন করা প্রতিদিন রান্না করে সকলকে খাওয়ানো বাধ্যতামূলক সেখানে সংসারের কোনরকম কাজ করা ছেলেদের জন্য কোনোভাবেই বাধ্যতামূলক নয় এবং কোন ছেলেই সংসার কোন কাজ করে থাকে না। মেয়েরা যদি বাইরে অর্থ উপার্জন করে নিজের সম্পূর্ণ হওয়ার চেষ্টা করে আর্থিক দিক থেকে তবুও তাদের সংসার পরিচালনা এবং পরিবারের সভার দেখাশোনা সেবা যত্ন আর সন্তান লালন পালন করার দায়িত্ব থেকে কোনভাবেই মুক্ত হতে পারে না এমনকি সেই মেয়েটার সাথে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না। একটি মেয়ের পড়ে এই সমাজে অনেক বেশি দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং বিভিন্নভাবে মান সম্মানের দোহাই দিয়ে তাকে পিছিয়ে রাখা হয় সে দিক থেকে ছেলেদের উপর অর্থ উপার্জন ছাড়া অন্য কোন দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয় না তারা স্বেচ্ছায় স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারে। যেখানে প্রত্যেকটি ছেলের অসংখ্য বন্ধু-বান্ধব থাকে আর তাদের সাথে বিকালবেলা বা সন্ধ্যার সময় আড্ডা দিতে যেতে পারে এবং রাত করে বাড়ি ফিরতে পারে। সেখানে মেয়েদের রাত করে বাড়িতে এত দূরের কথা কোথাও বন্ধু বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দেওয়া নিষিদ্ধ এবং বদনামের মধ্যে পড়ে।


প্রত্যেকটি ছেলে তাদের নিজস্ব ইচ্ছা এবং মত অনুসারে পোশাক-আশাক পড়তে পারে সেটা শরীর পুরো ঢাকা হোক বা অর্ধেকের বেশি বের করা হোক না কেন ছেলেরা সব ধরনের পোশাক নিজের পছন্দমত পড়তে পারে, কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রতিটা জিনিসের মত পোশাক আশাকের থাকে অনেক বেশি বাধা এবং নিষিদ্ধ। শরীরের একটা অংশ দেখা গেলে সেই মেয়েটাকে চরিত্রহীন বলে আখ্যা দেওয়া হয়, যত ভালো পোশাকে পড়া হোক না কেন মেয়েটাকে একটু সুন্দর দেখতে লাগলে নানা জনে নানা মত প্রকাশ করতে থাকে। মেয়েরা কোন ছেলের সাথে যদি একটু হেসে কথা বলে তবে সেই মেয়েটি হয়ে যায় চরিত্রহীন কিন্তু কেউ বিচার করে দেখেনা যে মেয়েটি ছেলেটির সম্পর্ক কি? কিন্তু কোন ছেলে কোন মেয়ের সাথে কথা বললে বা বিভিন্ন মেয়েদের সাথে মেলামেশা করলেও ছেলেদের চরিত্র নিয়ে কোন রকম কোন কুমন্তব্য শোনা যায় না। আসলে আমাদের সমাজে বিভিন্নভাবে মেয়েরা খারাপ কথা শুনে চলে এবং বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে থাকে। ছেলে মেয়েরা শুধু নামেই সমান অধিকার পায় আসলে এই সমাজে মেয়েরা এখনো ছেলেদের থেকে অনেক বেশি পিছিয়ে রয়েছে।


আগেকার সময়ে মেয়েরা অনেক বেশি পিছিয়ে থাকতো এবং অশিক্ষার অন্ধকারে ছিল কিন্তু বর্তমানে তুলনামূলক দেখা যায় মেয়েরা অনেক বেশি আধুনিক হয়েছে এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ আর আর্থিকভাবে সক্ষম হওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। শিক্ষার হার বারার সাথে সাথে ছেলে-মেয়ে সমান তালে চলার চেষ্টা করছে বটে কিন্তু কোনো না কোনো ভাবে এখনো মেয়েরা অনেক বেশি পিছিয়ে পড়ছে। আগেকার সময় থেকে বর্তমান সময়ে মেয়েরা যতটা উন্নত করেছে ধীরে ধীরে আরো অনেক বেশি উন্নত করবে এবং মেয়েরা নিজের অধিকার বুঝে নিতে সক্ষম হবে। তাই আমাদের প্রত্যেককের উচিত ছেলে মেয়ে উভয়কে সমান অধিকার দেওয়া তবেই আমাদের সমাজ সুন্দরভাবে গড়ে উঠতে পারবে এবং ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও আমাদের সমাজকে সুন্দর ভবে গড়ে তুলতে পারবে। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশের মেয়েরাও নিজেদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে এবং আমাদের দেশের নাম উজ্জ্বল করে তুলতে পারবে। সেই জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত মেয়েদের সুরক্ষা এবং মেয়েদেরকে তার অধিকার দিতে হবে। বিভিন্নভাবে সুযোগ করে দিতে হবে প্রত্যেকটা মেয়ে যেন তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে পারে এবং পরিবারের জন্য আর দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারে।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।