"ঠিকানা'' - নাটকের রিভিউ
হ্যালো বন্ধুরা , কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালো আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম , আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করবো ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷
আসলে নাটক দেখতে আমার বরাবরই ভীষণ ভালো লাগে ৷ আমি সময় পেলেই নাটক দেখার চেষ্টা করি ৷ আগে প্রচুর নাটক দেখতাম , যদিও এখন তেমন একটা দেখা হয় না ৷ তবে অবসর সময় পেলে আমি অবশ্য নাটক দেখার চেষ্টা করি ৷ আসলে প্রত্যেকটা নাটকে কিছু বিষয়বস্তু থাকে , সেটা আমাদের বিনোদন দেয় - নয়তো শিক্ষা দেয় ৷ আমি মূলত সময়টাকে উপভোগ করার জন্যই নাটক দেখি ৷ পাশপাশি নাটকের শিক্ষনীয় বিষয় গুলো নিজের মাঝে ধারণ করার চেষ্টা করি ৷ যাই হোক , আজকেও চলে আসলাম নতুন একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷ তো চলুন এবার নাটকের কাহিনী সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করি ৷ আশা করি সবার ভালো লাগবে ৷ অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি ভিজিট করার চেষ্টা করবেন ৷
নাটক | ঠিকানা |
---|---|
পরিচালক | মেহেদী হাসান হৃদয় |
শিল্পী | মুশফিক আর ফারহান, ফারিন খান, খালেদা আক্তার কল্পনা, নরেশ ভূঁইয়া, রতন মন্ডল, আশা মজিদ রোজী, জয়নাল জ্যাক, খান রোসনে, তুহিন রহমান, নাসিব খান ও মেজাবিন নুর ও আরো অনেকে |
চিত্রগ্রহণ | মোস্তাক মোর্শেদ |
প্রযোজক | আফরিনা রহমান |
ভাষা | বাংলা |
দৈর্ঘ্য | ৪৪ মিনিট |
প্রকাশ | ইউটিউব , ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং |
হাসান এবং মারিয়া এই গল্পের নায়ক এবং নায়িকা ৷ গল্পের শুরুটা হয় হাসানকে দিয়ে ৷ সে তার অফিসের কিছু কাজ আগেভাগেই গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করছে ৷ ছুটি পেলে গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাবে ৷ গ্রামের বাড়িতে তার সদ্য বিবাহ করা স্ত্রী এবং মা আছেন ৷ হাসান একাই ঢাকাতে থাকেন তার চাকরির জন্য ৷ গ্রামের বাড়িতে মা এবং স্ত্রী থাকেন ৷ হাসানের এই ছোট পরিবার ৷ হাসানের মা তার বৌউমাকে গুছিয়ে চলাফেলা করতে বলেন ৷ যাতে এলাকার মানুষ খারাপ কিছু না বলে ৷ তাছাড়া বৌউমা টুকটাক ভুল করলে সেটা ধরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করেন হাসানের মা ৷ যাতে একই ভুল বারবার না করেন মারিয়া ৷ তাছাড়া মারিয়া সব সময় ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন ৷ এসব নিয়ে হাসানের মা টুকটাক কথা বললেই মারিয়া রেগে যায় ৷ এবং শ্বাশুড়ি র সাথে রাগারাগি করে বাবার বাড়ি চলে আসে মারিয়া ৷
হাসান অফিস থেকে ছুটি পেলে গ্রামের বাড়িতে আসেন ৷ গ্রামের বাড়িতে এসে দেখে তার স্ত্রী বাড়িতে নেই ৷ মায়ের সাথে কথা বলে সব জানতে পারেন ৷ এরপর স্ত্রীকে আনতে শশুড় বাড়ি যায় ৷ কিন্তু মারিয়া কিছুতেই বাড়ি আসবেনা ৷ হাসানকে আলাদা করে ঢাকায় বাসা ভারা নিতে বলে ৷ সে তার মায়ের সাথে থাকবে না বলে জেদ ধরে ৷ তবুও হাসান বোঝানোর চেষ্টা করে ৷ কিন্তু মারিয়া তার সিদ্ধান্ত অটুট ৷ এরপর হাসার মায়ের কাছে চলে আসেন এবং মায়ের সাথে কথা বলেন ৷ যদিও হাসান মায়ের সাথেই মারিয়া কে রাখতে চায় , তবে তার মা তাদের আলাদা করে ঢাকায় বাসা ভারা নিতে বলে ৷ যাতে বৌউমা খুশি হয় এবং ছেলেও ভালো থাকেন ৷ হাসান শেষমেশ ইচ্ছে বিরুদ্ধে গিয়ে ঢাকায় নতুন বাসা ভারা নেন এবং স্ত্রী মারিয়াকে নিয়ে আসেন ৷ মাকে নিয়ে আসতে চাইলেও মা আসেন না গ্রাম ছেড়ে ৷
নতুন বাসা পেয়ে অনেক খুশি হয় মারিয়া ৷ তার ইচ্ছে মতো বাসাটা সাজিয়ে গুছিয়ে নেয় ৷ এরপর নতুন বাসায় দাওয়াত দেন তার সম্পূর্ণ পরিবারকে ৷ কিন্তু হাসান তার মাকে নিয়ে আসতে চাইলে না করে দেয় মারিয়া ৷ মারিয়া বাবার গোটা পরিবার আসে , সবাই মিলে সময়টা দারুণ ভাবে উপভোগ করে ৷ বেশ কিছু দিন থেকে যায় তারা ৷ হাসান তার মায়ের কথা বললেই মারিয়া এবং তার গোটা পরিবার কেমন জানি বাজে আচরন করেন ৷ হাসান যাতে মায়ের কথা ভুলে যায় তার জন্য তাবিজ ও করে নিয়ে আসেন মারিয়ার মা ৷
এদিকে সবাই মিলে বেশ ভালোই সময়টা উপভোগ করেন ৷ অন্যদিকে হাসানের মা একা একাই গ্রামের বাড়িতে থাকেন এবং চলাফেলা করেন ৷ হাসান এদিকে তার পরিবার নিয়ে ব্যস্ত ৷ মায়ের খোঁজও নেন না তেমন একটা ৷ তার মা গ্রামের বাড়িতে নিজের মতো একাই থাকেন ৷ ছেলে বৌউ থেকেও আজ যেনো তার কেউ নেই আপন ৷
এভাবেই দিন কেটে যায় ৷ কিছু দিন পর হাসান জানতে পারে সে বাবা হতে যাচ্ছে ৷ এই খরব পেয়ে সে অনেক বেশি খুশি হয় ৷ তার বাবা হওয়ার এই খবর তার মাকে জানাতে চায় ৷ এজন্য মারিয়াকে বলে তারা গ্রামের বাড়িতে যাবে মায়ের কাছে ৷ কিন্তু মারিয়া তার মায়ের কথা শুনেই না করে দেন ৷ হাসান একা একাই গ্রামে তার মায়ের কাছে যান ৷
হাসানের মা নিজের ছেলেকে অনেক দিন পর কাছে পেয়ে অনেক খুশি হয় ৷ হাসানও মায়ের কাছে আসতে পেরে অনেক খুশি ৷ মা ছেলে নিজের মতো সময়টা উপভোগ করছে ৷ অনেকদিন পর ছেলেকে কাছে পেয়ে একটু আদর যত্ন করে হাসানের মা হাসানকে ৷ কিন্তু একটু পর পর ফোন দিয়ে মারিয়ার কাছে আসতে বলে মারিয়ার পরিবার ৷ একটা রাত ঠিক মতো মায়ের কাছে থাকতে পারেনা ৷ একটু পর পর ফোন দিয়ে নানান কথা বলে মারিয়ার পরিবার ৷ এসব দেখে মায়ের মনও খারাপ হয়ে যায় ৷ কিন্তু কিছু বলতে পারেনা ৷
পরের দিন হাসান মারিয়ার কাছে এসে একটু রাগারাগি করে ৷ সে নিতে পারে না আর এই যন্ত্রণা ৷ তবে মারিয়া তাকে বোঝানোর বদল উল্টো রেগে যায় ৷ হাসান একা একাই কষ্ট পেতে থাকে ৷ এভাবেই যাচ্ছে তাদের দিন ৷
একদিন রাতে হঠাৎ হাসানের ফোনে ফোন আসে ৷ গ্রাম থেকে ফোন এসেছে ৷ কল রিসিভ করতেই জানতে পারে তার মা আর নেই ৷ এমন খবর পেয়ে হাসান কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ৷ সে কি করবে বুঝতে পারেনা ৷
এরপর হাসান তার মায়ের দাফন কাজ সম্পূর্ণ করে ৷ হাসান তার মাকে হারিয়ে একা হযে যায় ৷ কিছুতেই মানতে পারেনা তার মা আর নেই ৷ কারণ সে তার মাকে অনেক বেশি ভালোবাসাতো ৷ কিন্তু স্ত্রীর জন্য সে মায়ের কাছাকাছি থাকতে পারেনি ৷ মায়ের ঠিকঠাক খোজ নিতে পারেনি ৷ মাকে হারিয়ে অনেক গুলো দিন কেটে যায় হাসানের ৷
২৫ বছর পর..
হাসান এবং মারিয়া দুজনই এখন বৃদ্ধ হয়েছে ৷ তাদের ছেলে সন্তান হয়েছে এবং তার বিয়েও হয়ে গেছে ৷ আজ তাদের ছেলে এবং বৌউমা এসেছে তাদের দু'জনকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে ৷ ছেলে এবং বৌউমা - হাসান এবং মারিয়াকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে চলে গেলো ৷ হাসান মারিয়াকে সেই আগের কথা মনে করিয়ে দিলো ৷ যেভাবে সে তার মাকে একা করে দিয়ে এসেছিলো ৷ আজ তাদের সাথেও এমন হলো ৷ হাসান হাসতে হাসতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো মায়ের কথা ভেবে ৷ আর এখানেই গল্পটা শেষ হলো ৷
রেটিং:-১০
আমার মতামত:-
ঠিকানা এই নাটকটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে ৷ মুশফিক আর ফারহানের নাটক গুলো বরাবরই আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে ৷ এই নাটকটিও ছিলো খুবই সুন্দর এবং বাস্তবিক ৷ তাছাড়া সবার অভিনয় এবং নাটকের গল্প দু'টোই বেশ চমৎকার ছিলো ৷ আসলে এই নাটকের গল্প অনেকটাই বাস্তবতার সাথে মিলে যায় ৷ বাস্তবতাকেই যেনো গল্পে তুলে ধরেছে ৷ আমাদের মাঝে এমন অনেক মেয়েই আছে , যাদের জন্য মা ছেলের ভালোবাসার সম্পর্কটা থাকে না ৷ তবে যাই হোক , আপনি যেমনটা করবেন , আপনার সাথে তেমনই হবে ৷ যেটা এই গল্পে বেশ ভালো ভাবে তুলে ধরা হয়েছে ৷ যাই হেক , হাতে সময় থাকলে এই নাটকটি দেখবেন , আশা করি সবার ভালো লাগবে ৷ ধন্যবাদ সবাইকে ৷
নাটকের লিংক
https://twitter.com/Nirob7000/status/1789330567391310124?s=19
নাটকটি আমি কিছুদিন আগেই দেখেছি।বেশ ভালো ছিল।মুশফিক ফারহানের সকল নাটকই আমার দেখা হয়। আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছিল শেষের অংশটুকু। কথায় আছে "দুনিয়ার ধার দুনিয়াতেই শোধ হয়।" যাইহোক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
একদম ঠিক যে যেমন কর্ম করবে তেমন কর্মফল ভোগ করবে। বর্তমানের নাটক গুলো যেমন শিক্ষনীয় থাকে তেমনি দেখতেও খুব ভালো লাগে। আপনি আজ খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। যদিও এই নাটক এখনো দেখা হয়নি তবে আপনার রিভিউ পড়ে নাটক দেখা হয়ে গিয়েছে। সম্পূর্ণ নাটকের রিভিউ সুন্দর ভাবে তুলে ধরলে নাটক দেখার প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া মুশফিক আর ফারহানের নাটক দেখতে সবসময়ই ভালো লাগে। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আপনি সবসময় আমাদের মাঝে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু নাটকের রিভিউ শেয়ার করে আসছেন। আজকেও বেশ অসাধারন একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন এবং এই নাটকটি আমি কিছুদিন আগেই ডাউনলোড করে রেখেছিলাম। তবে এখনো দেখে নেওয়ার সময় হয়ে উঠেনি৷ অবশ্যই চেষ্টা করবো এই নাটকটি অতি তাড়াতাড়ি দেখে নেওয়ার৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এই নাটক এর রিভিউ শেয়ার করার জন্য৷