বাহারি ফুল(১০% @shy-fox এর জন্য)
তারিখ-০৮.০৬.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালো আছি। দেখতে দেখতে একটা সপ্তাহ পার করে ফেললাম। প্রত্যেকটা সপ্তাহ আসে আর নতুন করে মনে হয় টার্গেট ছুঁতে হবে। গত সপ্তাহের প্রায় রোজই বোধহয় পোস্ট করেছি। এ সপ্তাহতেও সেই রকমই চেষ্টা থাকবে। আগে থেকেই কোনরকম কনফার্মেশন দেব না। তবে চেষ্টা এটাই থাকবে গত সপ্তাহের মতই।আজকে পোস্ট নিয়ে এলাম একটু অন্য ধরনের কিছু ফুলের ছবি। কিছু ফুল সকলেরই ভীষণভাবে চেনা।আবার কিছু ফুল একদমই নতুন।অন্তত আমার কাছে তো নতুন। আপনারা দেখলেও দেখতে পারেন।আর আমি খুব একটা ফুল চিনি না।তাই যদি কিছু ভুল হয় অবশ্যই ধরিয়ে দেবেন।
এ পৃথিবীতে এমন মানুষ খুব কম আছে যারা ফুল ভালোবাসে না। আর ফুলের ভ্যারাইটি যদি বেশি হয় দেখতে তা ততই বেশি ভালো লাগে। আমার মনে পড়ে আমি একবার বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়েছিলাম, সেখানে গিয়ে ফুলের ভ্যারাইটি দেখে দলছুট হয়ে গিয়েছিলাম। মানে কলেজের এক্সকার্শন ছিল। সবাই ফুল,গাছে সব দেখতে দেখতে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি পিছিয়ে পড়েছিলাম ফুলের ভ্যারাইটি দেখে।সেই সময় হাতে মোবাইল টোবাইল ছিল না। যা ছিল সে দিয়ে সুন্দর ছবি তো আসতো না।সেই কারণে আর ছবি তোলার কথা অতো মাথায় আসেনি। কলকাতায় যদি কখনো আসেন,অবশ্যই ফুলের সময় আসবেন, যাতে বোটানিক্যাল গার্ডেনে ভারত তথা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ আপনারা দেখতে পারেন। আজকে যদিও যে ফুলগুলোর ছবি তুলেছি আমাদের পাড়াতেই এক বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের গাছ আছে তাদের বাগান থেকেই তোলা ছবি।
প্রথম আলোকচিত্র-
প্রথম যে ফুলের ছবিটা দিলাম এটা একটি রোডো ক্যাকটাস প্রজাতির ফুল।লোকাল নাম কি আমি ঠিক জানিনা এর। রোডোক্যাকটাস সেটুকুই জানি। আর যেহেতু জীব বিদ্যার ছাত্রী আমি, সে কারণে প্রথমেই বিজ্ঞানসম্মত নামটাই মাথায় আসে। কিন্তু গাছটাকে বা ফুলটাকে দেখলে কেউ কিন্তু ক্যাকটাস প্রজাতি বলে বুঝবে না। ভাববে আমাদের এই ট্রপিকাল অঞ্চলে যে ধরনের ফুল গাছগুলো জন্মায়, তারই মধ্যে একটা। একেই হয়তো বলে প্রকৃতি এবং পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে অভিযোজিত করা। ফুলের রংটা উজ্জ্বল কমলা বর্ণের পাতাগুলো একটু মোটার দিকে। তবে জেনুইন ক্যাকটাসের মতো নয়।
দ্বিতীয় আলোকচিত্র-
দ্বিতীয় ছবিটি রাজ টগরের। দেখতেই পাচ্ছেন ধবধবে সাদা আর মাঝে হলুদের হালকা আভা আছে। সাধারণ টগরের থেকে অনেকটাই আলাদা। সাধারণ টগর গুলোর পাঁপড়ি এতটা ঘন হয় না। রাজ টগরের পাপড়ি যথেষ্ট ঘন হয়। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম Tabernaemontana divaricata ।থাক আর উচ্চারণ করলাম না। দাঁত প্রায় ভেঙে যাওয়ার মত। আমাদের মত বাঙ্গালীদের কাছে রাজটগর হিসেবেই চির পরিচিত থাকুক।
তৃতীয় আলোকচিত্র-
এই তৃতীয় ছবিটি আমাদের সকলের পরিচিত দোপাটি ফুল। টকটকে লাল রঙের ফুলটি গাছে ফুটে থাকলে দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। কিন্তু হাতে নিলেই খুব তাড়াতাড়ি মুর্ছে যায়।যদি ওই ফুল ছেঁড়া বা ফুল তোলা কোনটারই পক্ষপাতি আমি নই। ঈশ্বরের পায়ে দেওয়ার জন্য যেটুকু প্রয়োজন তার বাইরে অকারণে ফুল ছাড়া আমার ভালো লাগেনা। দোপাটিকে নিয়ে আমার মনে হয় এমন কোন কবি বা লেখক নেই যে তাদের লেখাতে দোপাটিকে বর্ণনা করেননি।
চতুর্থ আলোকচিত্র-
আপনারা এটাকে কি ফুল বলেন আমি জানিনা।আমরা এখানে ঝর্ণা ফুল বলি। ঝোপের আশেপাশে এই ফুলটা হতে দেখা যায়। এর ইংরেজি নাম স্পাইডার লিলি। যদিও স্পাইডার লিলি কেউ বলে ডাকে না এখানে।আর গন্ধটা এত সুন্দর হয় আমার তো বেশ মন মাতানো মনে হয়। আসলে যে কোন ফ্লোরাল স্মেল আমার ভীষণ পছন্দের।
পঞ্চম আলোকচিত্র-
এটাকে আমরা তারা গাঁদা বলে চিনি। গাঁদা ফুলে যেমন ঘন পাঁপড়ি হয়,কিন্তু তারা গাঁদাতে পাতলা পাঁপড়ি হয়। আর পাতাগুলো গাঁদার থেকে একটু আলাদা কিন্তু দেখে সকলেই বুঝতে পারবে এটা গাঁদার প্রজাতি। এটা মনে হয় সকলেরই খুব চেনা ফুল।
ষষ্ঠ আলোকচিত্র-
আমার খুব পছন্দের ফুলের মধ্যে একটা।আর আমার মনে হয় মেয়েরা বিশেষ করে এই ফুলটা খুবই পছন্দ করে। অর্থাৎ বেলি ফুল। ছাদে লাগাও, বাগানে লাগাও সন্ধ্যেবেলা হলেই গন্ধে মম করতে থাকে। পরিবেশকে এবং মনকে ভালো করার জন্য এই ফুল যথেষ্ট। এত ছোট্ট কিন্তু তীব্র গন্ধ। তবে লোকে বলে এই ফুলের তীব্র ঘ্রাণে কখনো সখনো সাপ এসে গাছে জড়িয়ে থাকে। আমাদের বাড়ির গাছটাতে যদিও কখনো আমি সেসব দেখিনি।
সপ্তম আলোকচিত্র-
সকলের খুবই পরিচিত কিন্তু একটু অপরিচিত আমাদের প্রিয় জবা। সত্যি বলতে এই রংয়ের জবা আমি নিজেও এর আগে কখনো দেখিনি। জবার অনেক ভ্যারাইটি দেখেছি কিন্তু এরকম হালকা বেগুনি রংয়ের জবাব জীবনে প্রথম দেখলাম। কতক্ষণ যে গাছটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম বলে বোঝাতে পারবো না। কত যে পৃথিবীতে ফুলের প্রজাতি রয়েছে আমরা না দেখলে না,জানলে কোনদিনই কল্পনাতেও আনতে পারব না। এই হল প্রকৃতি মায়ের খেলা।
ছবি | ফুল |
---|---|
তারিখ | ১.০৬.২০২৩ |
ডিভাইস | রেডমি নোট ১০ প্রো ম্যাক্স |
স্থান | কল্যাণী, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
আজ এখানেই শেষ করছি। ছবিগুলো কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে।সকলে খুব ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ফুলের ফটোগ্রাফি আমার কাছে বরাবরই খুবই ভালো লাগে। ফুল ভালোবাসে না এমন লোক খুব কমই আছে। অসাধারণ কিছু ফুলের ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে আমার কাছে জবা ফুলের ফটোগ্রাফি ও বেলি ফুলের ফটোগ্রাফি বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি কিন্তু খুবই সুন্দর সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন। এত সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি দেখে আমি তো একেবারেই মুগ্ধ। প্রত্যেকটা ফুলের নাম সহ বর্ণনা খুব সুন্দর ভাবে দিয়েছেন।দিদি আমার মনে হয় পঞ্চম নাম্বারে থাকা ফুলটি কসমস ফুল। গাঁদা ফুল আরো একটু ভিন্ন রকমের হয়। যাইহোক জবা ফুলসহ অন্যান্য সব রকমের ফুলের ফটোগ্রাফি কিন্তু জাস্ট অসাধারণ ছিল বলতেই হয়।
কসমস কে আমাদের এখানে তারা গাঁদা বলে। 😐
বাহারি কিছু ফুলের ফটোগ্রাফি আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলোর মধ্য থেকে আমার কাছে দোপাটি ফুলের ফটোগ্রাফি এবং জবা ফুলের ফটোগ্রাফি খুবই ভালো লেগেছে।
দিদি আপনি অনেক দিন পর নিয়মিত পোস্ট করছেন। দেখে খুব ভালো লাগে। আশা করি শত ব্যস্ততার মাঝেও নিয়মিত পোস্ট করে যাবেন। আপনি ঠিক বলেছেন ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি এককথায় দুর্দান্ত। তবে প্রথম, পঞ্চম এবং সপ্তম ফটোগ্রাফি গুলো সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। যাইহোক এতো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
বাহ আপনি খুব চমৎকার ভাবে বাহারি ফুলের ফটোগ্রাফি করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। আমার কাছে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর বর্ণনা দিয়ে ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ওয়াও দিদি আপনার তোলা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে, আমি তো কোনো রকমেই চোখ ফেরাতে পারছিনা। জাস্ট অসাধারণ কিছু ফুলের ফটোগ্রাফি নিয়ে আপনি আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন, যেগুলো দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। কোনটা রেখে কোনটা দেখবো এটাই তো ভেবে পাচ্ছিলাম না আমি। প্রত্যেকটা ফুলের সৌন্দর্যতা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। আসলে ফুলের ফটোগ্রাফি দেখতে আমি একটু বেশি পছন্দ করি। এক কথায় অসাধারণ ছিল আপনার তোলা প্রত্যেকটা ফুলের ফটোগ্রাফি বলতে হয়।
ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো আমি বেশি পছন্দ করে থাকি এইজন্য যে এখানে বিভিন্ন প্রকার ফুল দেখতে পাওয়া যায় এবং অনেক ফুলের সাথে পরিচিত লাভ করা যায়। আর ভালো ডিভাইস দিয়ে তোলা অসাধারণ ফুলগুলো যেন মন ছুঁয়ে যায়।