নদীর পারে ভূত দেখার গল্প//পর্ব-৩ ( শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। আসলে জীবনে ফেলে আসা সেই দিনগুলো যেন এখন স্মৃতি হয়ে জমা হয়ে রয়েছে আমাদের জীবনের পাতায়। এই স্মৃতিগুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। তবে ছোটবেলার মুহূর্ত গুলো বেশি ভালো লেগেছে। যখন মামা বাড়িতে থাকতাম অনেক বেশি ভালো লাগতো। সকল বন্ধু-বান্ধবের সাথে সেই মুহূর্তগুলো আনন্দের সাথে উপভোগ করতাম।ছোটবেলা মামা বাড়িতে কত মজা হত, আসলে যখন নানী- নানা বেঁচে থাকত তখনই যেন মামা বাড়ি আনন্দ ছিলো।তারা মারা গেলে আর এই আনন্দ থাকে না। এখন আর আগের মতো যেতেও মন চায় না, গেলেও কেমন জানি লাগে। আসলে ছোটবেলায় এত ভালো লাগতো মামা বাড়িতে যাওয়ার জন্য যেন মন ছুটে যেত। আর আমি মামা বাড়িতেই বেশি থাকতাম কারণ আমার সমবয়সী অনেক মামাতো ভাই থাকতো এবং তাদের সাথে আমি খুবই আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তগুলো পার করতাম। তো বন্ধুরা আপনাদের সাথে মামা বাড়িতে গিয়ে নদীর পাড়ে ভূত দেখার গল্প শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি ভূত দেখার সেই গল্পটি শেষ পর্ব পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


lamp-2903830_1280.jpg

source

তো আমার মামাতো ভাইদের সাথে যখন নদীর পারে আমি গিয়েছিলাম, নদীর পাড়ে একটি বড় গাছ ছিল, সেই গাছের ভূত থাকতো আর ওই দৃশ্যটি আমি দেখেছিলাম। যার কারণে ঘুমের মধ্যে আমার বারবার সেই দৃশ্যটি যেন চোখে সামনে ভাসতো। আর নানীকে আমি বললাম নানী বলল ঠিক আছে তোকে তাহলে হুজুর কাছে নিয়ে যাবো এবং পরের দিন আমরা রিকশায় করে একটি হুজুরের বাড়িতে আসলাম। হুজুর বাড়িতে এসে হুজুর আমাকে দেখেই জানি কি রকম করলো। আমি তো অনেক ভয় পেয়ে গেলাম, আমার হাতের কোন আঙ্গুলের চাপ দিলেও কি কি যেন বলতে ছিলো এবং চোখে পানি দিতে লাগলো,তার মধ্যে কি হয়ে গেল আমি বুঝতে পারি নাই, জ্ঞান ফিরে দেখি হুজুর আমাকে তেল মালিশ করছে, এর মধ্যে কি হয়েছে সেটা আমি নিজেও জানিনা।


তারপরে হুজুর আমাকে একটা তাবিজ দিয়েছিলো, সেই তাবিজ পড়ে থাকতে হয়েছে। আর তাবিজ পড়ে থাকা অনেক কষ্টকর, কারণ অনেকের অনেক কথা শুনতে হয়। আর মাঝেমধ্যে এই তাবিজ যখন নষ্ট হয়ে যেত, তখন আমার সাথে অনেক ভয়ানক কিছু হয়ে যেত।আসলে এভাবে ভূত যে দেখেছিলাম সেই দৃশ্যটি যেন চোখের সামনে এখনো ভাসছে। কারণ সাদা ড্রেস পড়া ছিল আর কিভাবে উড়ে এসে গাছের উপরে বসল, এই দৃশ্যটি যেন আমার এখনো মনে পড়ে। আসলে আমি জীবনে প্রথম ভূত দেখেছিলাম, আর যার কারণে অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তারপরে থেকে নানীর বাড়িতে গেলে আমি আর ওই নদীর পাড়ে যেতাম না। নদীর অন্য সাইটে যেতাম। কখনো সেই গাছের কাছে আর আমি যাইনি।


fantasy-2847724_1280.jpg

source

তবে সেই নদীর পাড়ে গাছে অনেক ভূত থাকতো, এই গল্প যেন অনেক বার শুনেছি। বিশেষ করে নানী একটা গল্প বলেছিল মামাকে নিয়ে, সেই গল্পটি হল আমার বড় মামা যখন নদীর পাড়ে মাছ ধরতে গিয়েছিল। তখন নাকি মামা অনেক বড় বড় মাছ জালে ধরে মাছ ধরার পাত্রে রেখেছিল। যখন বাড়িতে নিয়ে এসেছে, দেখে তার ভিতরে কোন মাছ নেই। শুধু মাছের কাঁটা পড়ে রয়েছে। এই গল্পটি শুনেই যেন অনেক ভয় পেয়ে গেলাম। তারপরে নানীকে বললাম নানি মামা ভয় পাইনি। তখন বলল যে তোর মামাতো তারপরে থেকে আর ওখানে মাছই ধরতে চাইনি। কারণ অনেকগুলো বড় মাছ ধরেছিল, আর মাছ ধরে রেখেছিল সেই গাছের কাছে। পরে দেখে ভিতরে কোন মাছ নেই, এটা আসলে অনেক ভয়ঙ্কর একটা ঘটনা ছিল।


নদীর পাড়ে সেই গাছটি অনেক পুরনো। গাছ সেই ব্রিটিশদের আমল থেকে এই গাছটি ছিল। যার কারণে এই গাছে অনেক ভয়ানক কিছু ছিল। এটা গ্রামবাসী প্রায় সকলেই জানে। যার কারণে এখানে অনেকেরই জীবনের অনেক ভূত দেখার গল্প রয়েছে। সেই মুহূর্তগুলো নানা নানীর কাছে অনেক শুনেছি। আর এই গল্পগুলো শুনতে পেয়ে নিজের ভিতর যেন অনেক ভয় হচ্ছিল। তবে ভয় হলেও ভূতের গল্প গুলো এত আকর্ষণীয় যে এগুলো ভয় পেয়েও যেন শুনতে ইচ্ছা করে। আসলে জীবনে অনেক ভূতের গল্প শুনেছি। ভয়ও পেয়েছি, তারপরে শোনার ইচ্ছাটা যেন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।


আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ভূত দেখার ছোট বড় অনেক গল্প রয়েছে। আর এই স্মৃতিময় গল্পগুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। আসলে ভূতের গল্প আমরা শুনতেও অনেক ভালোলাগে এবং পড়তেও অনেক ভালোলাগে। ভুতের গল্প পড়লে এবং দেখলে ভয় লাগেও তারপরেও যেন এই ভূতের গল্পের প্রতি অন্যরকম একটা আকর্ষণ কাজ করে। বিশেষ করে ছোটবেলা নানা নারীর কাছে শুয়ে ভুতের গল্প শুনতাম। তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের মাঝে নদীর পাড়ে ভূত দেখার সেই স্মৃতিময় গল্পের শেষ পর্ব শেয়ার করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। আশা করছি শেষ পর্ব পড়ে আপনাদের ও ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও আপনাদের মাঝে ভিন্ন কোন গল্প নিয়ে হাজির হবো, সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইল। 🙏🤲🙏


আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last month 

সত্যি বলতে কি এমন ঘটনাগুলো পড়ে আর ভয় লাগে না। কিন্তু ছোটবেলায় এই সমস্ত কাহিনী শুনতে ভালো লাগতো ভয়ও পেতাম খুব। বিশেষ করে রাত্রে বেলায় বেশি ভয় লাগতো। যাইহোক খুবই উপভোগ করলাম আপনার লেখা পড়ে।

 last month 

মামা বাড়িতে গিয়ে নদীর পাড়ে ভূত দেখার মুহূর্তটা আপনার জীবনে অনেক ভয়ংকর একটা মুহূর্ত ছিল। আসলে সেই ভূতের কারণে আপনার জীবনে অনেক প্রভাব ফেলেছে। মাঝেমধ্যে আপনি ভয় পেতেন। আসলেই ভূতের গল্প পড়তেও আমাদের খুবই ভালো লাগে এবং ভূতের গল্প করতে ভালো লাগে, কিন্তু ভয়ও পায় আমরা, তারপরে যেন কিরকম একটা আকর্ষণ থাকে এই গল্পের প্রতি।

 last month 

পুরাতন গাছে এমন ভয়ের সমস্যা থেকে থাকে। আর বিশেষ করে নির্জন এরিয়া মাঠ পুকুর বা নদী বা শ্মশান ঘাট জায়গা গুলো হার্ট দুর্বল মানুষের জন্য নিরাপদ নয়। আগে এই সমস্যা একটু বেশি ছিল এখন হয়তো নেই বললেই চলে তারপরেও এগুলো জানার পর সাবধানে থাকা উচিত। যাইহোক আপনার এই গল্প পড়ে বেশ ভালো লাগলো আমার।

 last month 

মামার বাড়িতে ভুত দেখার এই গল্পের সবগুলো পর্ব আমার পড়া হয়েছে৷ আজকের শেষ পর্বটি পড়েও খুবই ভালো লাগছে৷ আসলে এরকম ঘটনা আমাদের সবসময় মনে থেকে যায় এবং এরকম ঘটনা ঘটলে মনের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করতে থাকে। এই ভয় থেকে আপনার জীবনে অনেক প্রভাব পড়েছে৷ একইসাথে এর ফলে এই গল্প পড়ার প্রতি আমার অনেক ভালো লাগে ৷ এরকম গল্প পড়ে অনেক কিছু জানতে পারি৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷ পরবর্তীতে নতুন গল্পের আশায় রইলাম৷

 last month 

নদীর পাড় কিংবা অনেক গভীর জঙ্গলের পুরনো গাছগুলো সম্পর্কে এই ধরনের অনেক গল্প রয়েছে, যে সেখানে নাকি ভূত থাকে। তবে আপনি যেহেতু জীবনে প্রথমবার ভূত দেখেছিলেন, তার মানে ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। আর ভূত দেখার পর থেকে আপনার উপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে যা দেখছি ভাই। যাইহোক, আপনি যে এখন সুস্থ আছেন আর কোন সমস্যা হয়নি, এটাই অনেক বড় ব্যাপার।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 66791.52
ETH 3092.76
USDT 1.00
SBD 3.73