ঈদের আগে আমার বাইকের সার্ভিসিং
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমিও আছি চমৎকার। ঈদের ছুটি কাটিয়ে সবাই কর্মজীবনে ফিরছেন। আবার সেই ব্যস্ত লাইফ। এভাবেই চলছে এভাবেই চলবে। আমি ঈদের আগে মোটামুটি ভালো লেভেলের ব্যস্ত ছিলাম। আর ঈদে গ্রামে গিয়ে পরিবারের সাথে ভালো সময় কাটিয়েছি তাই খুব ভালোভাবে পোস্ট করা হয়নি। আজ থেকে শুরু করব ঈদের আগের কাহিনী গুলো নিয়ে পোস্ট।
বাইক নিয়ে এটা আমার প্রথম ঈদ। তাই খুব ভালো একটা উত্তেজনা কাজ করছিল নিজের মধ্যে। আহা মানুষের বউ নিয়ে প্রথম ঈদ হয়, আর আমার বাইক নিয়ে প্রথম ঈদ। হাসি পায় হাসি পায়। যেহেতু বাইক নিয়ে প্রথম ঈদ ছিল, সেহেতু আমার প্ল্যান ছিল এবার ঈদে বাড়িতে যাবো বাইক নিয়ে। হয় বাইক লঞ্চে করে নিয়ে যাব অথবা ডিরেক্ট বাই রোডে যাবো। যেহেতু লং ট্যুরের মত হতে চলেছে। সেহেতু বাইকের একটা সার্ভিস দরকার। মূলত বাইকে টুকটাক কিছু সমস্যা ছিল যেমন ট্যাপেট সাউন্ড এডজাস্ট, এয়ার ফিল্টার ক্লিন অথবা রিপ্লেস, সামনে চাকায় গ্রিজিং ও পিছনে চাকায় গ্রিজিং, কার্বুরেটর ক্লিন, সুইং আর্ম গ্রিজিং। এছাড়াও আরো টুকটাক ভালোই কাজ হয়েছিল। সাধারণত আমি কাজ তেমন জমতে দেই না। ছোটখাটো কাজ হলে এই ইমিডিয়েট সেরে ফেলি। সার্ভিস সেন্টারে যেহেতু আছি এটুকু ফ্যাসিলিটি তো নেওয়া উচিত। তো আমাদের ইয়ামাহার কিছু দক্ষ টেকনিশিয়ান কে আগেই বলে রেখেছিলাম যে আমার বাইকটি সার্ভিস করে দিতে হবে। তবে শেষের দিকে এমন চাপ শুরু হলো তারা সময় করতে পারছিল না। আবার ইফতারের পর তাদের উপর জোর করতেও নিজের কাছে কেমন জানি লাগতো। কারন সারাদিন রোজা রেখে অনেকগুলো বাইকের কাজ করে। আবার আমার গাড়ির কাজ ধরবে, নিজের কাছে কেমন জানি লাগতো।
কিন্তু কি আর করা সার্ভিস তো করাতেই হবে। প্রথমে তিন দিন সার্ভিস করাবো বলে ঠিক করেও ছিলাম কিন্তু শেষে সময় এর অভাবে করতে পারিনি। অবশেষে আমার গাড়ি সার্ভিস করানোর সিডিউল পেলাম। আমাদের দক্ষ টেকনিশিয়ান কাওসার ভাই ও বাবু ভাই মিলে আমার বাইকের কাজ শুরু করলো। প্রথমে আমার বাইকের সাইট প্যানেল খুলে ফেলল তারা। তারপর বাবু ভাই হাত দিল কার্বুরেটর এ। বাবু ভাই যখন কার্বুরেটর এর কাজ করতে ছিল। তখন কাওসার ভাই সিলিন্ডার হেড খুলে ফেলেছিল। সিলিন্ডার হেড খুলে ফেলার কারণ হচ্ছে ট্যাপেট অ্যাডজাস্ট করতে হবে। আমি আগেই তাদেরকে আমার গাড়ির ট্যাপেট এডজাস্ট এর মাপ বলে দিলাম। ইন্টেক ০.০৮ মিলিমিটার আর একজস্ট হবে ০.২৪ মিলিমিটার। বাবু ভাই দেখলাম কার্বুরেটর পুরা খুলে ভাগাভাগা দিয়ে ফেলেছে। অনেক ময়লা ছিল কার্বুরেটরে। এজন্য নাকি মাইলেজ কম পেতাম। আবার আরো একটা সমস্যা দেখাইলো সেটি হচ্ছে আমার কার্বুরেটর এর পিস্টন ক্ষয় হয়ে গিয়েছে। আমি আবার তখন এগুলোর দাম চেক করলাম। বিষয়টা তেল কম বেশি খাওয়ার সাথে জড়িত। বাবু ভাই বললেন কিছু পার্টস পাল্টাতে হবে যার মধ্যে রয়েছে এয়ার ফিল্টার এবং সামনে চাকার একটি বিয়ারিং। আমি আর বাবু ভাই মিলে সেগুলো নিয়ে আসলাম। ইয়ামাহার গাড়ি হলে তো ঝামেলায় ছিল না। আমার এখান থেকেই লাগিয়ে দেওয়া যেত। আমার গাড়ি সার্ভিস চলতে থাকলো খুব সুন্দরভাবে। এদিকে কাওসার ভাই গাড়ি গরম করে ট্যাপেট এডজাস্ট করে ফেললেন।
এদিকে বাবু ভাই ও কাওসার ভাইয়ের সাথে একজন হেলপার ছিল। ও পেছনের চাকার গ্রিজ করল তারপর সুইং আর্ম খুলে ভালোমতো ক্লিন করে সেটাও গ্রিজ করে দিলো। এরপর সামনের চাকা খুলে সেটিও গ্রিজ করে দিলো। এবার সামনের পিছের ব্রেক ক্যালিপার পরিষ্কার করালাম খুব ভালোভাবে। ব্রেকিংয়ে মজা পাওয়া যাবে। এছাড়া ব্রেক প্যাড গুলো ঘষে দেওয়া হল ডিস্কগুলো ভালোমতো ঘসে দেওয়া হল। কাজ শেষে একটা টেস্ট ড্রাইভ দিয়ে দেখি গাড়িতে একটু ঝামেলা রয়ে গিয়েছে। তা হচ্ছে পিকাপ খুব ধীরে ধীরে নামে যার কারণে গাড়ির গিয়ার শিফটিং করতে খুব ঝামেলা হয়। যাই হোক গাড়ি বাসায় নিয়ে যাই। পরের দিন এই গাড়ির এই সমস্যা সলভ করা হয়। সেক্ষেত্রে হেল্প করে আমাদের ফ্লোর সুপারভাইজার রতন ভাই। ওনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এভাবে আমার গাড়ি সার্ভিস হয়ে যায়।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সবাই বউ নিয়ে ঈদ করে আর আপনি বাইক নিয়ে ঈদ করেছেন কথাটি মজা লাগলো ভাইয়া। আসলে আমাদের সিঙ্গেল দের পুরো জীবনটাই বেদনা। কিন্তু কি করার আর। যাইহোক আপনি দেখছি আপনার বাইক সার্ভিসিং করাতে ভালোই ঝামেলায় পড়েছিলেন। আর রোজা থাকার পর ইফতারের পর কাউকেই কোনোভাবেই কাজের জন্য জোর করাটাই উচিত নয় সেটাই আপনি করেছেন শুনে বেশ ভালো লাগলো। এত ঝামেলার পরেও আপনি আপনার বাইক সার্ভিসিং করাতে পেরেছেন এটা ভালো খবর ছিল আপনার জন্য। কেননা যেহেতু আপনি বাইক নিয়ে বাসায় যাওয়ার প্লানিং করেছিলেন। বাইক সার্ভিসিং করার সুন্দর কিছু অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সমস্যা কিসের ইনশা-আল্লাহ বউ একদিন হবে। যাই হোক যেহেতু লং ড্রাইভের একটি ব্যাপার তাই খুব ভালো কাজ করেছেন গাড়িটাকে একটু সার্ভিসিং করে। আসলে গাড়ি মাঝে মাঝে একটু সার্ভিসিং করা দরকার না হলে দেখা যাবে ভিতরে ভিতরে অনেক সমস্যায় রয়ে যাবে। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার গাড়ি সার্ভিসিং নিয়ে এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ভাই, বউ নিয়ে ঈদ করার থেকে, বাইক নিয়ে ঈদ করা অনেক ভালো। হা হা হা... 🤭😂😂 যাইহোক, যেহেতু লং ট্যুরে যাবেন সেক্ষেত্রে বাইক সার্ভিসিং করে নেওয়াই ভালো, এতে সমস্যা কম হয়। তবে আপনি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে বাইক সার্ভিসিং নিয়ে এত সুন্দর উপস্থাপন করেছেন, মনে হচ্ছে আমি নিজেও কিছুটা শিখে গেছি, এই সম্পর্কে। হা হা হা..
ঈদের আগে দেখছি আপনার মোটরসাইকেলের খুব সুন্দর সার্ভিসিং করেছেন। আসলে আমাদের সকলের উচিত নিজের জিনিসকে পরিপাটি করে ঠিকঠাক করে রাখা। আর বিশেষ করে ঈদের সময় তো অনেক ঘোরাঘুরি করার প্রয়োজন। এই মুহূর্তে নিজের প্রয়োজনীয় গাড়িটা যদি ঠিক না থাকে তাহলে তো ঈদ মাটি। বেশ ভালো লাগলো আপনার গাড়ি ঠিকঠাক করেছেন দেখে।