৮ম বারের মতন রক্ত দান।
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমিও আছি চমৎকার। দেখতে দেখতে কিন্তু অর্ধেক রোজা শেষ হয়ে গেলো। বুঝিও নি কিভাবে চলে গেলো। আসলে অফিসে ব্যস্ততার কারণে সময় কেটে যায়। তবে এটা ভালো। ছোট বেলায় তো রমজান মাস যেনো শেষই হইতোনা। কখন ঈদ আসবে এই ভেবে ভেবে। তো যাই হোক আজ আবারো রক্তদিলাম। এটা আমার ৮ম বারের মতন রক্তদান। আজ সে নিয়েই কথা বলবো।
রক্তদান আমার কাছে মানবতার সেরা এক কাজ মনে হয়। আমার একটু রক্ততে যদি একজন মানুষ এর জীবন বেচে যায় তাহলে তার থেকে ভালো কাজ আর কি হতে পারে। আমার ক্ষেত্রে রক্তদান করাটা একটু নেশার মতন হয়ে গিয়েছে। সময় সুযোগ পেলেই চেষ্টা করি নিজেকে মানবতার সেবায় বিলিয়ে দেওয়ার। এতে করে অনেক ভালো লাগা কাজ করে। এর শুরুটা হয় ২০১৭ সালে। আমাদের পলিটেকনিক এর ক্যাম্পাসে ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প থেকে। সেবারই প্রথম রক্ত দিয়েছিলাম। আর এরপর থেকে এখন পর্যন্ত সময় সুযোগ পেয়ে ৮ বার রক্ত দিয়েছি। আরো দিয়ে যাবো যতদিন সক্ষমতা থাকবে। সময় সুযোগ ঠিক মত হলে হয়তো এই সংখ্যাটা আরো একটু বেশি হতো। তবে ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় পরিস্থিতির কারণে রক্ত দিয়ে উঠতে পারিনা। কিছু দিন আগে আমার এক বন্ধুর ছাত্রীর ব্লাড লাগবে। আমাকে বলেছিলো। তবে আমার সময় হয় ইফতারের পর। আর রোজা রেখে রক্ত দেওয়া খুবই কঠিন এক কাজ। রক্তের ফ্লো হয়না ঠিক মতন যেহেতু পানি শূন্যতা থাকে। তাই বলেছি সেদিন পারবোনা। পরের দিন ইফতারির পর লাগলে জানাতে। পরে আর আমাকে কিছু জানায়নি।
তো গতকাল আছর এর নামাজ পরে অফিসে বসে হিসাব তুলতেছিলাম এক্সেল ফাইলে। যেনো শেষে প্রেশার কম হয়। তখনই হঠাৎ সে ছাত্রীর কল মেসেঞ্জারে। কল রিসিভ করার পর জানালো যে ইমার্জেন্সি রক্ত লাগবে। ইফতারের পর পর। আমি বললাম ঠিক আছে দেওয়া যাবে। তখনই বলেদিলাম হাসপাতালে যিনি আছেন তাকে আমার নাম্বার দিয়ে দিতে। ও আমার নাম্বার নিয়ে তাকে দিলো। সাথে সাথেই তার কল। বললো কামাড়পাড়া কেন্সার হাসপাতাল এ যেতে হবে। আমি জানিয়ে দিলাম ইফতারের পর অফিস শেষে রউনা দিবো। এইদিকে আমার বন্ধু প্লাবন এসে পরলো। তখন ওরে জিজ্ঞেস করলাম আমার সাথে যেতে পারবে কিনা। ও বললো যাবে। এরপর আর কি আমি ইফতারি করে নামাজ পড়ে এসে বাইক নিয়ে রউনা দিলাম। মাঝে মহাখালী তে বাইকে ফুয়েল লোড করলাম। যাতে রাস্তায় সমস্যায় না পরে যাই। এরপর নিকুঞ্জ এসে হালকা পাতলা কিছু খেয়েনিলাম। ইফতারিতে বেশি খাইনি তাই নিকুঞ্জ নেমে কিছু খেয়ে রউনা দিলাম। এইদিকে আজমপুর পার হয়ে যে সাইড দিয়ে যাবো সে খেয়াল ছিলোনা। ফ্লাই ওভার এ উঠে যাই। আর যেটা আমাদের নিয়ে যায় একদম টংগি ষ্টেশন রোড। যাওয়ার কথা আবদুল্লাহ পুর হয়ে। কি আর করা ষ্টেশন রোড নেমে ম্যাপ বের করে দেখলাম সামনেই একটা বাইপাস রোড আছে। সেটা দিয়ে চলে গেলাম হাসপাতাল এ।
যেহেতু বাইক নিয়ে এসেছি তাই হাসপাতাল এ নেমেই একটু চিন্তায় পরলাম বাইক রাখবো কোথায়। আসলে বাইকার দের এই একটা টেনশন। যেখানেই যাই না কেনো বাইক কোথায় রাখবো এটা অনেক ভাবতে হয়। সোজা ভেতরে চলে গেলাম। দেখলাম বেজমেন্ট আছে। তখন বুঝলাম তাহলে পার্কিং ও থাকবে। সোজা নেমে গেলাম। এরপর দেখলাম সামনেই পার্কিং। বাইক পার্কিং এ রেখে গেলাম ৪র্থ তলায়। সেখানে প্রায় ১ ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছে। আমি ডোনার অথচ আমাকে রিসিভ করার মতন কেউ ছিলোনা। প্রায় বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ১ ঘন্টা পর রুগীর পক্ষ থেকে একজন আসলো। এরপর কিছু ফর্ম ফিল-আপ করতে হলো। এবার ক্রস ম্যাচিং এর জন্য স্যাম্পল দিয়ে আসলাম। এবার ১ ঘন্টার অপেক্ষা। ১০ টা ২০ এ গেলাম ব্লাড দিতে। এরপর সুন্দর মতন ব্লাড দিয়ে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে দ্রুতো বাসার উদ্দেশ্যে রউনা দিলাম। কারণ ১১ টা ৩০ এ আবার আমার বাসার গেট এবং গ্যারেজ এর গেট বন্ধ হয়ে যায়। বাসার গেট খুলতে পারবো চাবি আছে। তবে গ্যারেজ বন্ধ হলে বাইক নিয়ে বিরাম্বনায় পরতে হবে। এরপর বাসায় চলে আসি বন্ধু কে ওর বাসায় নামিয়ে দিয়ে এসে।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
রক্তদানের মতো অত্যন্ত মানবিক একটি কার্যক্রমে আপনার অংশগ্রহণ দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আসলে এভাবে রক্তদান করলে অনেক মুমূর্ষু মানুষের বিশাল আকারে উপকার হয়। আমি আশা করি আপনি আপনার এই রক্তদানের কার্যক্রম আগামী দিনেও অব্যাহত রাখবেন।
আসলে রক্ত দান করতে বেশ লাগে। আমার রক্তে যদি কারো উপকার হয় এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে।
রক্তদান কর্মসূচি সত্যিই মহৎ গুণ। বিশেষ প্রয়োজনে মানুষের রক্ত পাওয়ার তাগিদে ছুটে বেড়ায় বিভিন্ন দিকে, সেই মুহূর্তে যদি কোন মহান হৃদয় রক্ত দিতে এগিয়ে আসে এতে শুধু সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তির পরিবার নয়,মহান সৃষ্টিকর্তা খুশি হয়ে যান। আরে যাবত আপনি ৮ বার রক্ত প্রদান করেছেন জেনে অনেক ভাল লেগেছে আমার। রক্ত দান করলে রক্ত কমে না বরঞ্চ শরীরের রক্ত আরো বৃদ্ধি পায় এবং নতুন হয়।
আমিও এটাই মনে করি ভাই। রক্ত দান করা সত্যি ভালো কাজ ।
একজন মানুষের কয়েক ফোঁটা রক্তের মাধ্যমে যদি আরেকজন মানুষ বাঁচে, তাহলে এর থেকে ভালো পৃথিবীতে আর কি আছে! আপনি একজন অসুস্থ মানুষ কে রক্তদান করেছেন দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো। আসলে সকল মানুষ এই মহৎ কাজে অংশ নিতে চায় না। আপনি এই মহৎ কাজের মধ্যে অংশ নিয়েছেন দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো।
সেটাই ভাই। একজন এর কয়েক ফোটা রক্তে যদি আরেকটি প্রাণ বেঁচে যায় তাহলে এর চেয়ে মহৎ কাজ আর কি হতে পারে।
মানব সেবার মধ্যে রক্তদান অনেক বড় একটি সেবা। লাল ভালবাসা আপনি আট বারের মতো দান করেছেন। সত্যি ভাই এটি অনেক বড় একটি গৌরব, রোগীদের জীবন বাঁচানো। আসলে রক্ত দেওয়া মানে রোগীদের জীবন বাঁচানো, আর এটি অনেক বড় একটি ইবাদতের মধ্যে পড়ে। আপনার এই লাল ভালোবাসার দেওয়ার কথা শুনতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন রক্তদান অনেক বড় একটি সেবা।
অনেকেই আছে রমজান মাসে রক্ত দিতে চায় না তবে আপনাকে বলার সঙ্গে সঙ্গেই আপনি রক্ত দিতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আসলে রক্ত দেওয়া অনেক বড় মানবিকতার পরিচয়।
রোজা রেখে রক্ত দেওয়া একটু কষ্টের। পানি শূণ্যতা থাকায় রক্তের ফ্লো হয়না ঠিক মতন। আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই হয়তো অনেকে রক্ত দিতে চায়না রোজার সময়।
রক্তদান একটি মহৎ কাজ।
আপনি অষ্টম বারের মতো রক্ত দিয়েছেন এবং সেটা আবার রমজান মাসে। আসলে রমজানের সময় রক্ত দেয়া একটু কঠিন কারন পানি স্বল্পতার কারণে ঠিকমতো ফ্লো হয় না। যাইহোক আপনি ইফতারের পর রক্ত দিতে পেরেছেন ভালোভাবে এটাই বড় বিষয়। আমি নিজেও দুবার রক্ত দিয়েছি, আসলে রক্ত দেয়ার পর ভীষণ ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাই অনুভূতি মেশানো পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
জ্বি ভাই। তাইতো ডক্টর পানি পান করিয়েছে রক্ত দেওয়ার আগে।
পোষ্ট টি পড়ার আগেই অনেক ভালো লাগলো ৷ আসলে মানব সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে ভালোই লাগে ৷ আর তার চেও বড় কথা যখন এক ব্যাগ রক্তের বিনিময়ে একটা জীবন বেঁচে যায় ৷ এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে ৷ আমি এ পযন্ত দু-বার রক্ত দিয়েছি ৷ আমি মনে করি সবার উচিত এমন মানব সেবায় নিয়োজিত হওয়া ৷
আমি সব সময় চেষ্টা করি মানবিক কাজে নিজেকে মেলে ধরার।
ব্লাড দিতে গিয়েও আপনাকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। কোথায় যাবেন আবদুল্লাহ পুর না একেবারে টঙ্গী চলে গেলেন। রক্তদান মহৎ একটা কাজ। অনেক বড় মানব সেবা। এবার দিয়ে ৮ বার রক্ত দিলেন ব্যাপার টা বেশ দারুণ। আশাকরি আপনি এভাবে রক্তদান করতে পারবেন আরও অনেকদিন। আপনার জন্য শুভকামনা।
হ্যা ভাই। আসলে ফ্লাই ওভার মারতে যেয়ে এই হাল হয়েছে।
রক্তদানের মত এত মহৎ কাজ হয়তো খুব কমই রয়েছে। তবে আমি একটা জিনিস জেনে খুব অবাক হলাম ভাই, আপনি এই নিয়ে সর্বমোট ৮ বার রক্ত দিয়েছেন এবং আপনার রক্ত দিতে অনেক বেশি ভালো লাগে। যদিও সেটার প্রমাণ আমি পেলাম। কারণ আপনি এত কষ্ট করেও ছাত্রীর ফোন পেয়ে ইমারজেন্সি রক্ত দিতে ছুটে চলে গেলেন হসপিটাল। এরকম মানসিকতা খুব কম মানুষেরই থাকে।
ঠিক বলেছেন আপু। আসলেই রক্তদান একটি মহৎ কাজ। ৮ বার হয়েছে আশা আছে এই সংখ্যাটাকে অনেক উপড়ে নিয়ে যাওয়ার।