ফোটোগ্রাফি পোস্ট - সিরাজ উদ্যানে কিছুক্ষণ

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কিছুদিন আগে টিনটিন বাবুর হঠাৎই ইচ্ছে হলো একটু বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসতে । তো, দ্রুত আমি বিকেলের মধ্যে হাতের কাজ সেরে নিলাম । এরপরে সবাই সাজু গুজু করে বেরিয়ে পড়লাম । আমাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রথম শপিংয়ে যাবো, এরপরে আমার নিউ এক জোড়া গ্লাস কিনে সিরাজ উদ্যানে সন্ধ্যেটা কাটিয়ে রেস্তোরাঁতে খেয়ে বাড়ি ফিরবো ।

তো, বেরিয়ে তো পড়লাম । প্রথমে কিছু টুকটাক শপিং করলাম । এরপরে Lenscart এ গেলাম । এক সপ্তাহে অর্ডার করা আমার নতুন চশমাজোড়া এসে গিয়েছে । সেগুলো ডেলিভারি নিয়ে নিলাম । এ যাবৎ হাফ রিম গ্লাস পরে এসেছি সবসময় । এবারই প্রথম ফুল ফ্রেম অর্ডার করলাম । চশমা জোড়ার ফ্রেম দুটো আসলেই চমৎকার দেখতে । পরলে স্মার্ট লাগবে ।

এরপরে সোজা সিরাজ উদ্যানে । কথিত আছে আছে এই উদ্যানের ঠিক মাঝখানে যে সরোবরটি আছে তার পাশে একটি বিশ্রামগৃহ ছিল । নবাব সিরাজ উদ দৌলা কলকাতায় এলে এই বিশ্রামগৃহে সাময়িক বিশ্রাম গ্রহণ করতেন এবং নবাবের হাতি-ঘোড়া এই সরোবরের জল পান করে বিশ্রাম নিতো । নবাব কলকাতায় এলে প্রচুর হস্তী থাকতো তাঁর সাথে । এত হাতির তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিশাল এই সরোবরই ছিল একমাত্র উপযুক্ত জলাশয় । তাই এই সরোবরটির নাম হয়ে গিয়েছিলো "হাতি পুকুর" । এখনো এই নামই আছে ।

টিকিট কেটে ভিতরে তো ঢুকে পড়লাম । কিন্তু, দিনটি ছিল দারুন ভ্যাপসা গরম একটি দিন । তাই, হাঁটতে আমার আর টিনটিনের বেশ কষ্ট হচ্ছিলো । বিশাল হাতি পুকুরের পাশ দিয়ে সুন্দর বাঁধানো রাস্তা । দু'পাশে ফুলের কেয়ারী । কিছুদূর অন্তর অন্তর রাস্তার দু'পাশে অসংখ্য বেঞ্চি পাতা । সান্ধ্যকালীন কপোত কপোতীর ঠেলায় কোথাও একটু বসার মতো নিরিবিলি ফাঁকা স্থান পেলাম না । প্রত্যেকটা বেঞ্চ দখল করে জড়াজড়ি করে বসে রয়েছে এক জোড়া করে কপোত-কপোতী । কেউ আলিঙ্গনাবদ্ধ তো কেউ চুম্বনাবদ্ধ । তাদেরকে দেখলে লজ্জা নিজেই লজ্জা পেয়ে ভ্যানিশ হয়ে যাবে ।

তো, হাঁটার আগ্রহটাই তাই হারিয়ে ফেললাম আমি । ইচ্ছে ছিল টিনটিনকে নিয়ে টয় ট্রেনে উঠে সরোবরটিকে একটি পাক দেবো । কিন্তু, ইচ্ছেটাই মরে গেলো । সরোবরের ঠিক মাঝখানে দারুন সুন্দর একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে দেখলাম । অবশেষে টাওয়ার অফ লন্ডনের ধাঁচে তৈরী করা একটা টানা ব্রিজের উপর দিয়ে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলাম । টিনটিন বাবু আর তনুজা আইসক্রিম খেলো । আমি কিছুই খেলাম না । এরপরে আমরা ফেরার পথ ধরলাম । বাড়ি ফেরার আগে একটা বুফে রেস্টুরেন্টে রাতের খাওয়া শেষ করলাম ।


IMG_20220727_171125.jpg

IMG_20220727_171130.jpg

বেড়ু করতে যাওয়ার আগে গাড়ির বনেটের উপর বসে টিনটিনবাবুর পোজ

তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২২
সময় : বিকেল ৫ টা ২০ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


IMG_20220724_200614.jpg

আমার নতুন চশমা । ফুল ফ্রেম ।

তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৬ টা ০০ মিনিট
স্থান : LensCart, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


IMG_20220727_190648.jpg

IMG_20220727_190707.jpg

সন্ধ্যায় টিনটিনবাবুর পার্কে রাইডিং এর কিছু পিক তুললাম ।

তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৬ টা ২০ মিনিট
স্থান : সিরাজ উদ্যান, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


IMG_20220731_185307.jpg

IMG_20220731_185403.jpg

সরোবরের মধ্যিখানের সেই রেস্টুরেন্টে ঢোকার টাওয়ার অফ ব্রিজের প্রবেশদ্বার ।

তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিট
স্থান : সিরাজ উদ্যান, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


IMG_20220731_191311.jpg

IMG_20220731_191324.jpg

IMG_20220731_191358.jpg

IMG_20220731_191405.jpg

IMG_20220731_191434.jpg

IMG_20220731_191456.jpg

সরোবরের চারিপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রমান সাইজের পাথরের স্ট্যাচু । নবাব সিরাজের হাতি, ঘোড়সওয়ার আর পদাতিক বাহিনী, অসংখ্য হাতি আর ঘোড়া এবং রবার্ট ক্লাইভ সহ বেশ কিছু ইংরেজের স্ট্যাচ্যু । সবই প্রমান মাপের ।

তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৬ টা ৫০ মিনিট
স্থান : সিরাজ উদ্যান, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


IMG_20220731_191550.jpg

IMG_20220731_191559.jpg

একটি ফোয়ারা ও কামান

তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ০০ মিনিট
স্থান : সিরাজ উদ্যান, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


IMG_20220722_204135.jpg

আমার একটা সেলফি পার্ক থেকে বেরিয়ে আসার পর তোলা ।

তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ১০ মিনিট
স্থান : সিরাজ উদ্যান, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ



পরিশিষ্ট


প্রতিদিন ১৫০ ট্রন করে জমানো এক সপ্তাহ ধরে - ৬ষ্ঠ দিন (150 TRX daily for 7 consecutive days :: DAY 06)


trx logo.png




টার্গেট ০৩ : ১,০৫০ ট্রন স্টেক করা


সময়সীমা : ৩১ জুলাই ২০২২ থেকে ০৬ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত


তারিখ : ০৫ আগস্ট ২০২২


টাস্ক ২০ : ১৫০ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

১৫০ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 82b18420575dcd39a81ed7ed1506864d9f5101007b6d9f122a2aee58d01db25f

টাস্ক ২০ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png

Sort:  
 2 years ago 

প্রথমেই বলবো চশমা পড়ে টিনটিন বাবাকে বেশ ভালোই লাগছে । ওকে সম্ভবত এবারই প্রথম এই লুকে দেখলাম। তবে যাই বলেন ভাই , চশমা দুটো আসলেই বেশ স্মার্ট। যাইহোক পার্কের এমন কপোত কপোতিদের এহেন অবস্থা যদি এখন সিরাজ সাহেব বেঁচে থেকে দেখতেন ,না জানি ওনার যে কি হতো । তা বলা খুবই মুশকিল।

 2 years ago 

টিনটিন বাবুর ছবিগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো দাদা। টিনটিনকে অনেকদিন পর দেখলাম। সুন্দর কোন জায়গায় ঘুরতে গেলে ভালো লাগে। তবে পরিবার-পরিজন নিয়ে গেলে অনেক সময় বিপাকে পড়তে হয়। কারণ বিভিন্ন পার্কে বা সুন্দর কোন জায়গায় কপোত কপতিদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ পরিবার নিয়ে ঘুরতে যেতে লজ্জা বোধ করে। দাদা আপনার কেনা চশমা গুলো কিন্তু দারুণ হয়েছে। শুভকামনা রইল দাদা।

 2 years ago 

টিনটিন বাবুকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্তটা সত্যিই চমৎকার ছিল। বিশেষ করে সিরাজ উদ্যানে কাটানো মুহূর্তটা সত্যিই টিনটিন বাবু সেখানে দারুন মুহূর্ত অতিবাহিত করেছে। তাছাড়া এই পার্কে কপোত কপত্তিদের রোমান্টিকতার বিষয়টি জানতে পেরে আমিও লজ্জাবোধ করছি দাদা। সত্যি এই ধরনের কিছু দেখলে আমি নিজেই লজ্জা পাই অনেক সুন্দর একটা মুহূর্ত পার করেছিলেন। যেটা আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগলো।

 2 years ago 

জায়গাটি অনেক সুন্দর।এখন সব জায়গা তেই কপোত কপোতির ভিড়। পরিবার নিয়ে কোথাও হাটার জো নেই।আর টিন টিন বাবুর চশমা টা ওকে অনেক মানিয়েছে।

 2 years ago 

পার্কটিতে প্রবেশের পর কি একটু ও কি সিরাজুদ্দৌলার মত ফিলিংস এসেছিল দাদা?? তার সৈন্য সমান্তের অস্তিত্ব তো এখনো রয়েই গেছে স্ট্যাচুর মাঝে।
তবে একটা কথা কিন্তু মানতেই হবে সেই সময়ে সিরাজুদ্দৌলার চেয়ে কিন্তু এখন ওখানে তার চেয়ে বেশি প্রশান্তিতে কিছুটা সময় কাটাতে পারবে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাহন, আশ্রয় এবং যতটা সম্ভব শীতল পানি। যার কোনটার স্বাদ এত বড় রাজ্বত্যের অধিকারী হয়েও সিরাজুদ্দৌলার পক্ষে সম্ভব হয়নি।

তবে বাঁধ সাদবে ওই একটি কাজে কিছুটা পথ চোখ বন্ধ করে পার হতে হবে যে। সিরাজুদ্দৌলা এটা অবশ্যই চোখে দেখে সহ্য করতো না জরুরী আইন করে তাদের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা অবশ্যই নিত।

আমিও একসময় হাফ ফ্রেম চশমা ব্যবহার করতাম কয়েক বছর হলো ফুল ফ্রেম এ ট্রান্সফার করেছি। এবার দেখি আপনাকে অনুকরণ করতে ইচ্ছে হচ্ছে। ওমন ফ্রেম কি অর্ডার করেই ফেলবো কিনা।

টিনটিন বাবুকে সব সময়ের জন্য ফ্রেশ লেগেছে।

 2 years ago 

শেষমেষ আপনিও সাজুগুজু করে বের হলেন?
আপনার চশমা দেখে আমারও মনে পড়ে গেল যে চশমা বানাতে হবে। সময়ের অভাবে যেতে পারছি না। ছোট বাচ্চার যন্ত্রনায় চশমা রাখা যায় না। শুধু নিয়ে ভেঙে ফেলে। খুব মজা লাগলো যে কপত কপতির যন্ত্রণায় আপনার ঘোরার আগ্রহ হারিয়ে গেল। এমন যুগল দেখে আগ্রহতো আরো বেড়ে যাওয়ার কথা ছিল😜😜।
সিরাজউদ্দৌলা এই জায়গায় বিশ্রাম করতো দেখেই কি এই জায়গার নাম সিরাজ উদ্যান হয়েছে। যাইহোক জায়গাটি বেশ চমৎকার ছবি দেখে মনে হল।

 2 years ago 

এই জায়গাটির নাম অনেকবার শুনেছি, ইতিহাসটাও জানি ।কিন্তু কোন সময় যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তার অন্যতম প্রধান কারণ হলো এই জায়গাটি সম্পর্কে সঠিক আইডিয়া ছিল না আমার। তবে আজকে আপনার পোস্ট দেখে মোটামুটি একটা আইডিয়া পেলাম, এবং এই জায়গাটির সাথে আমার সাক্ষাৎ যে খুব বেশি দেরি নেই সেটাও আইডিয়া করতে পারলাম।😂

 2 years ago 

দাদা সিরাজ উদ্যান এর চমৎকার একটি সময় কাটিয়েছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। হ্যাঁ এ গরমে ঘুরাঘুরি করা খুব ক্লান্তির একটি বিষয়। টিনটিন বাবু খুব চমৎকার আনন্দঘন একটি সময় কাটিয়েছিলেন। সবগুলো ফটোগ্রাফ অনেক চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ প্রিয় দাদা আপনার আনন্দঘন একটি সময় আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago (edited)

টিন টিন বাবুর ছবিগুলো সত্যিই সুন্দর লাগছে 😍
উদ্যানের ভেতরের পরিবেশ বেশ দারুন দেখলাম, তবে এধরনের জায়গায় মানুষ প্রেম নিবেদন করতে বেশি যায় বলে পরিবার নিয়ে সত্যিই বেশ ইতস্তত লাগে।
যাক তবুও রেস্টুরেন্টে গিয়ে বেশ সময় কাটিয়েছেন।
চশমাগুলো কিন্তু বেশ সুন্দর ছিল।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.26
TRX 0.11
JST 0.032
BTC 64799.61
ETH 3102.94
USDT 1.00
SBD 3.83