ডাক্তার দেখাতে গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে জুস খাওয়ার অভিজ্ঞতা।
তবে সমস্যা হচ্ছে আমরা যেই দাঁতের ডাক্তারের কাছে যায় তার কাছে প্রচুর রোগী আসে। আবার তার কাছে ফোনে সিরিয়াল দেয়া যায় না। সেখানে গিয়ে নিজে উপস্থিত হয়ে সিরিয়াল লিখতে হয়। আগে থেকে সিরিয়াল না লিখে গেলে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হয়। যেহেতু আমরা দুজনেই ব্যস্ত থাকি তাই আসলে দীর্ঘক্ষণ সেখানে গিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। তাই সেদিন আমার স্ত্রীর দাঁতের ব্যথাটা বেশি হওয়ার কারণে দুপুর বেলায় দুজনে সরাসরি চলে গিয়েছিলাম ডাক্তারের কাছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম ডাক্তার কেবল রোগী দেখা শুরু করেছে। সিরিয়ালের খাতা দেখে বুঝতে পারলাম এক নম্বর সিরিয়ালের রোগী কেবল চেম্বার এর ভেতরে গিয়েছে। আর আমার স্ত্রীর সিরিয়াল যখন লিখলাম তখন তার সিরিয়াল নাম্বার ছিল ২০। বুঝতে পারলাম আমাদের দুই থেকে তিন ঘন্টা বসে থাকতে হবে। যেহেতু আমাদের বাসা ডাক্তারের চেম্বারের কাছেই তাই চিন্তা করলাম দুজন খালি খালি এত সময় বসে না থেকে বাসায় চলে যাই। পরবর্তীতে ফোন করে তারপর আসবো।
সেদিন দুপুরবেলা বেশ গরম পড়েছিলো তাই আমি আমার স্ত্রীকে বললাম চলো ঠান্ডা কিছু খাই। তখন আমার স্ত্রী আমাকে জিজ্ঞেস করলো কি খাবো? আমি তখন বললাম ডাক্তার চেম্বারের পেছনের দিকে জুসের দোকান রয়েছে। সেখান থেকে কোল্ড কফি বা যে কোন ধরনের জুস খেতে পারো। তখন আমার ওয়াইফ বললো চলো গিয়ে দেখি। আমরা যে দোকানের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম সেই দোকানটা বন্ধ পেলাম। কিন্তু তার পাশেই আরেকটি দোকান ছিলো খোলা। আমি তখন আমার স্ত্রীকে নিয়ে সেই দোকানে গেলাম। সেখানে গিয়ে মেনু কার্ড দেখে আমি আমার জন্য মিন্ট লেমোনেড আর স্ত্রীর জন্য মালটার জুস অর্ডার করলাম। অবশ্য আমার স্ত্রী প্রথমে লাস্যি খেতে চেয়েছিলো। পরে সে মত পরিবর্তন করে জানালো সে মালটার জুস খাবে। তখন আমি তার অর্ডার পরিবর্তন করে তাদেরকে মাল্টার জুস দিতে বললাম। আমরা সেখানে গিয়ে বসার কিছুক্ষণ পরে প্রথমে তারা টেবিলে মিন্ট লেমোনেড পরিবেশন করলো। আমি স্ত্রীকে বললাম তুমি আগে একটু খেয়ে টেস্ট করে দেখো। এই ড্রিঙ্কসটা আমার খুবই পছন্দের। কিন্তু আমার স্ত্রী খুব একটা বেশি পছন্দ করে না। তবে সেদিন সে একটু খেয়ে জানিয়েছিলো সাদটা ভালোই লেগেছে তার কাছে। এদিকে আমার মিন্ট লেমনেড খাওয়া প্রায় শেষ হয়ে গেলো। তখন দেখি মাল্টার জুসের খবর নেই।
আমি তখন দোকানদারকে বললাম একটু তাড়াতাড়ি জুসটা পরিবেশন করতে। বলার কিছুক্ষণের ভেতরেই টেবিলে মাল্টার জুস চলে এলো। মালটার জুস এলে আমার স্ত্রী বলল সেটা একটু টেস্ট করে দেখতে। আমিও সেখান থেকে একটু জুস খেলাম খেয়ে দেখলাম। মালটার জুসটাও বেশ মজার। আমার স্ত্রীর কাছে বেশ ভালো লেগেছিলো। তখন আমি তাকে বললাম এখন থেকে মাঝে মাঝে ডাক্তারের কাছে এলে মালটার জুস খাওয়া যাবে। জুস খাওয়া শেষ হলে বিল মিটিয়ে দুজন বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আসলে আমাদের প্রিয়জনের সাথে মাঝে মাঝে একান্ত কিছু সময় কাটানো উচিত। কিন্তু আমরা সংসারে এমন ভাবে জড়িয়ে পড়ি যে শেষ পর্যন্ত নিজেদের জন্য কোন সময় বরাদ্দ থাকে না। বাচ্চা কাচ্চা পরিবার সবকিছু নিয়ে আমরা এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়ি যে এটা ভুলে যাই নিজেদের জন্য কিছুটা সময় রাখা দরকার। যদিও ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম। তার পরেও স্ত্রীর সাথে কাটানো সময়টা বেশ ভালো লেগেছে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমে আপনার স্ত্রীর জন্য সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া। দাঁতের ব্যথা খুব মারাত্মক। আল্লাহ তাকে তাড়াতাড়ি সুস্থতা দান করুন এটাই কামনা করছি। তবে আপনি আপনার ওয়াইফের সাথে দারুন মুহূর্ত পার করেছেন পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। আর ভাবলাম আমার জীবনেও যে এরকম সময় কবে আসবে আল্লাহই জানে 😄😄। যাইহোক ডাক্তার দেখাতে যেয়ে ওয়াইফের সাথে জুস খাওয়া নিয়ে আপনার অনুভূতিমূলক পোস্টটি পড়ে মনে বেশ আনন্দ অনুভূত হলো।
আপনি যেভাবে আপনার স্ত্রীর সাথে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার অভিজ্ঞতা এবং তারপর জুস খাওয়ার মুহূর্তগুলো বর্ণনা করেছেন, তা সত্যিই হৃদয়স্পর্শী। আপনার লেখায় সাধারণ জীবনের একটি সাধারণ দিনকে কীভাবে বিশেষ মুহূর্তে পরিণত করা যায় তার এক অনন্য উদাহরণ ফুটে উঠেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
ডাক্তারের কাছে গিয়ে অপেক্ষা করার মতো বিরক্তিকর বিষয় সম্ভবত আর নেই। আর দাঁতের ডাক্তারের ক্ষেএে দেরী টা আরও বেশি হয়। জুসের কালার টা বেশ লাগছে। দেখেই মনে হচ্ছে স্পেশাল। ঠিকই বলেছেন ভাই মাঝে মাঝে আমাদের প্রিয়জনের সাথে কিছু মূহূর্ত কাটানো উচিত।
আসলেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে অপেক্ষা করতে খুব বিরক্ত লাগে। কারণ ডাক্তারের কাছে মানুষের যখন যায় তখন কোন একটা সমস্যা নিয়েই যায়। অবশ্য অপেক্ষা না করেও তো উপায় নেই। তবে জুসটা খেতে আসলেই ভালো ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
এটা একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া সংসার জীবনে হয়তো প্রিয়জনের সাথে সেই সুন্দর সময়টা কাটানো হয়ে ওঠেনা। তাইতো সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসা বেরঙিন হয়ে যায়। যাই হোক আপুর দাঁতের সমস্যার কথা শুনে সত্যিই অনেক খারাপ লেগেছে। অনেকদিন থেকেই বেশ কষ্ট পাচ্ছে। দোয়া করি আপুর সমস্যাটা যেন দ্রুতই ঠিক হয়ে যায়।
দাঁতের সমস্যা একবার শুরু হলে আর সহজে এ থেকে মুক্তি মেলেনা। তবে এখন সে কিছুটা ভালো আছে।
আসলেই আপনি সঠিক কথা বলেছেন ভাই। সংসার বা বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ততা তো লেগেই থাকবে সারাজীবন ই, তবুও মাঝে মাঝে দুজনের একান্ত কিছু সময় কাটানোটা ভীষণ জরুরি একটা বিষয়। এর জন্য খুব বেশি পরিকল্পনার ও প্রয়োজন হয় না। কাজের ফাঁকেই দুজনের কিছুটা কোয়ালিটি টাইম কাটানো টা বরং সম্পর্কটাকে আরোও দারুণ করে তোলে। আর ভাবীর দাঁতের সমস্যা যেন জলদি ঠিক হয়ে যায় সেই দোয়া রইলো।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আপনার মতো আমাকেও হসপিটালে দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে আমার ওয়াইফকে নিয়ে। হসপিটালে গেলেই দেখা যায় রোগীর অভাব নেই। যাইহোক সুমা আপুর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। হসপিটাল থেকে জুসের দোকানে গিয়ে, জুস খাওয়ার পাশাপাশি দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাই। প্রিয়জনের সাথে এভাবে সময় কাটালে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা বাড়ে। জীবনে নানান ধরনের ব্যস্ততা থাকবেই। তবে ফাঁকে ফাঁকে অবশ্যই নিজেদেরকে একটু সময় দেওয়া উচিত। যাইহোক এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই ঠিক বলেছেন হাসপাতালে রোগীর অভাব নেই। হাসপাতালগুলোতে গেলে মনে হয় বাইরে যত সাধারণ মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার থেকে অসুস্থ মানুষের জন্য সংখ্যা বেশি।
ডাক্তার দেখাতে এসে প্রিয়জনের সাথে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন, এর থেকে ভালো কি হতে পারে দাদা। তবে আমার কাছে ডাক্তারের ওই সিস্টেমটা বেশ খারাপ মনে হলো । কারণ ফোনের মাধ্যমে যদি সিরিয়াল দেওয়া যেত তাহলে হয়তো আপনাদের এই ভোগান্তিটা আর হতো না। যাইহোক, ভোগান্তি হলেও দু'জনে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন, জুস খেয়েছেন, এটাই আনন্দের ব্যাপার। অনেক ভালো লাগলো দাদা আপনার এই পোস্ট টি পড়ে।